রাজধানীর পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো এখন অপরাধী চক্রের দখলে। মাদকাসক্ত, ছিনতাইকারী, ও ছিন্নমূল মানুষের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে। এদের অবাধ বিচরণের কারণে বিনোদন স্পটগুলোতে দর্শনার্থী কমে যাচ্ছে।
সরেজমিনে রাজধানীর ওসমানী উদ্যানে দেখা গেছে, ভবঘুরে, পতিতা ও নেশাখোররা যেনো উদ্যানকে বসতবাড়ি বানিয়েছে। কেউ ঘুমাচ্ছে। আবার কেউ সিরিঞ্জ দিয়ে শরীরে নেশাজাতীয় ইনজেকশন গ্রহণ করছে।
মানুষ কর্মব্যস্ত যান্ত্রিক শহরের বিশাল বিশাল দালান-কোঠার মধ্য থেকে কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস নিতে কিছুটা সময় খোলা আকাশের নিচে কাটানোর জন্য ছুটে যান সবুজের সমারহ রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী ও চন্দ্রিমা উদ্যানে কিংবা বোটানিকেল গার্ডেনে। তাদের জন্য সেই পার্ক বা উদ্যানগুলো এখন অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠছে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে-মেয়েরা সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত পার্কের মধ্যে নানান অশ্লীল কাজে লিপ্ত হয়ে থাকে। আড়াল ও ছাতার নিচেই শিক্ষার্থীরা অশ্লীলতার নিরাপদ স্থান হিসেবে বেঁচে নেয়।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়েও দেখা গেছে একই চিত্র। একটি সূত্র জানায়, রাতের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হয়ে ওঠে মাদক ব্যবসায়ী-মাদকসেবী ও পতিতাদের আস্তানা। উদ্যানের ভেতরে গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইনসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য বিক্রি হয়।
এখানে যারা মাদক বিক্রি করে তারা অনেকটা সন্ত্রাসী প্রকৃতির। এদের মাদকদ্রব্যের গ্রাহক হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী। পুলিশ থাকা সত্ত্বেও এখানে রাতের বেলায় অসামাজিক কর্মকান্ড চলে আসছে অনেকটাই নির্বিঘ্নে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ‘আমরা কি করব? তাদের আটক করে জেলে পাঠালে পরের দিনই আবার এখানেই দেখতে পাই।‘
তিনি আরও জানান, উদ্যানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এক শ্রেণীর প্রেমিক-প্রেমিকার নির্লজ্জ উচ্ছৃংখলতা দেখে লজ্জিত না হয়ে উপায় নেই।
বর্তমানে রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্র পার্কগুলো শিক্ষার্থীদের আপত্তিকর মেলামেশার অন্যতম স্থানে পরিণত হয়েছে। এসব জায়গায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রকাশ্যেই বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হচ্ছে। তাদের এইসব কার্যকলাপ পশ্চিমাদেরও হার মানিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব বন্ধে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। সেই সাথে আমাদের শিক্ষক, অভিভাবকসহ সবারই সচেতন হওয়া দরকার। তা না হলে দিন দিন আমাদের সমাজ ধ্বংসের দিকে যাবে এবং তরুণ-তরুণীদের জীবনে অনাকাঙ্খিত ঘটনাগুলো বেড়েই চলবে।
উদ্যানগুলোতে ঘুরতে যাওয়া এক পরিবার বলেন, ‘সুস্থ কোন মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে উদ্যানগুলোতে ঘোরাফেরা করার কোন অবকাশ নেই।
বিভিন্ন তথ্যসূত্রে,দেশের প্রায় অধিকাংশ পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোর চিত্র প্রায় একইরকম!