ঢাকা ০২:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
দুর্গাপূজার ছুটি বাড়ছে একদিন চতুর্থ প্রজন্মের ৬ ব্যাংকে ৬ হাজার কোটি টাকা উদ্ধৃত্ত তারল্য কে এই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মিল্টন’, আঘাত হানবে যেখানে সচিবদের ২৫টি নির্দেশনা প্রধান উপদেষ্টার প্রত্যাশা পূরণে আশাবাদী রাজনৈতিক নেতারা পাঁচ সদস্য নিয়ে পুঁজিবাজার সংস্কারের জন্য টাস্কফোর্স গঠন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে বিশেষ টাস্কফোর্স শেয়ারবাজার সংস্কারে ৫ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন বিশ্বের প্রভাবশালী মুসলিমের তালিকায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা সংকট ‘একটি তাজা টাইম বোমা’ শেয়ারবাজারে এক সপ্তাহে নেই ১৩ হাজার কোটি টাকা ‘কাউন্টডাউন শুরু’ স্ট্যাটাস দেয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওএসডি নিহত আবু সাঈদকে ‘সন্ত্রাসী’ বললেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মি নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই, পূজা নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণভাবে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চার দেয়ালের মধ্যে কেমন আছেন ভিআইপিরা? দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা ৭ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ নয়টি রাজনৈতিক ব্যাংকের অবস্থা নাজুক নতুন কাগুজে নোটে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি বাদ বিজয় সরণিতে এআই সিগন্যাল সিস্টেম স্থাপন

বাজারে চাঁদাবাজি-সিন্ডিকেট

‘আগে বলতো জয় বঙ্গবন্ধু, এখন বলে জয় ইউনূস’

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৯:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৪০ বার পড়া হয়েছে
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর কিছুটা স্বস্তি এসেছিল বাজারে। এ সময় চাল-মুরগীসহ নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা কমলেও আবার তা বাড়তে শুরু করেছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সরকার পতনের পর কয়েকদিন বন্ধ থাকলেও সিন্ডিকেট আর চাঁদাবাজরা আবার সক্রিয় হয়েছে৷ এই চক্রের ওপর ক্ষোভ থেকে এক ব্যবসায়ী নেতা বলেন, এরা আগে বলতো জয় বঙ্গবন্ধু, এখন বলে জয় ইউনূস৷

gnewsদৈনিক ইত্তেফাকের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
এ বিষয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, এখন আবার আগের অবস্থায় চাঁদাবাজ ও সিন্ডিকেট ফিরে এসেছে৷ শুধুমাত্র ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হাতবদল হয়েছে৷

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাজার ঘুরে দেখা যায়, মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চালের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে ছয় টাকা বেড়েছে ৫২ থেকে ৬০ টাকা হয়েছে৷ একই পরিমাণ বেড়েছে মিনিকেট চালের দামও৷

বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম খোরশেদ আলম খান বলেন, চালের দাম বাড়ার কারণ নিয়ে প্রশ্ন করলে ব্যবসায়ীরা বলবে বাজারে ধান কম, তাই চালের দাম বেড়েছে৷ বন্যার কথাও বলবে তারা৷ কিন্তু আসল ঘটনা অন্য জায়গায়৷ এখন বাজারে ধান কম থাকলেও ধান আছে উত্তরাঞ্চলের চাতাল মালিকদের কাছে৷ তারা আগেই ধান কিনে স্টক করে রেখেছে৷ এখন তারা সুযোগ পেয়ে দাম বাড়িয়ে মুনাফা লুটছে৷ সর্বোচ্চ ৩০জন চাতাল মালিক এটা নিয়ন্ত্রণ করছে৷

তিনি আরও বলেন, তারা সরকার পতনের পর কয়েকদিন ভয়ে সক্রিয় হয়নি৷ তখন চালের দাম বাড়েনি৷ কিন্তু এখন তারা আবার সক্রিয় হয়েছে৷ তারা আগে ছিলেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্রের লোক, এখন তারা ভোল পালটে নতুনদের লোক হয়ে সিন্ডিকেট শুরু করেছে৷ আগে বলত জয় বঙ্গবন্ধু, এখন বলে জয় ইউনূস৷

ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে গেছে৷ দুই সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৭০ টাকা, যা এখন ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে৷ কোথাও কোথাও আরো বেশি৷ সোনালি মুরগির দামও কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে ২৬০ টাকা হয়েছে৷ ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের দাম ডজনপ্রতি পাঁচ টাকা বেড়েছে৷ প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা দরে৷ আর ফার্মের মুরগির সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ডজন ১৫০ টাকা দরে৷ এখনেও পাঁচ টাকা বেড়েছে৷

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার গণমাধ্যমকে বলেন, মুরগি আর ডিমের দাম নির্ভর করে পোল্ট্রি ফিডের ওপর৷ মোট উৎপাদন খরচের ৭০ ভাগই ফিডের দাম৷ ফিডের দাম কমেনি৷ আগে যা ছিল, তা-ই আছে৷ এই ফিড উচ্চমূল্যের জন্য সরকারের নীতি ও সিন্ডিকেট দায়ী৷ এরপরও দাম কমার কথা৷ কিন্তু সেটা কমছে না করপোরেটদের কারণে৷ তারা ডিম ও মুরগির দাম এখনো সিন্ডিকেট করে ঠিক করছে৷ মাত্র কয়েকজন ব্যবসায়ী বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন৷ সরকারের পতনের পর কয়েকদিন তারা কিছুটা দমে গেলেও এখন আবার সক্রিয় হয়েছে৷

চাষের মাছের দাম স্থিতিশীল থাকলে ভারতে রপ্তানি বন্ধ ও ইলিশের মৌসুম হলেও ইলিশের দাম এখনো চড়া৷এক কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ টাকায়৷ ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১৪০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা৷ আর ৫০০ থেবে ৬০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ইলিশের জন্য গুণতে হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা৷

আলু আর পেঁয়াজের দাময় অনেকদিন ধরেই বেশি৷ আলু আমদানিতে বিদ্যমান ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে৷ এছাড়া আলু আমদানিতে থাকা তিন শতাংশ এবং পেঁয়াজ আমদানিতে থাকা ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে৷ তারপরও কমেনি এ দুই পণ্যের দাম। এখনও বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়৷

কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, সরকার পতনের পর নিত্যপণ্যের দাম কমেছিল৷ তখন চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছিল৷ কিন্তু এখন আবার দাম বাড়ছে৷ কারণ, বাজারে আবার সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজরা ফিরে এসেছে৷

তিনি আরও বলেন, সরকার যদি বাজার মনিটরিংয়ে নজর দেয়, আইনের কঠোর প্রয়োগ করে, তাহলে দাম বাড়ার সুযোগ নেই৷ সরকারকে এদিকে নজর দিতে হবে৷

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বাজারে চাঁদাবাজি-সিন্ডিকেট

‘আগে বলতো জয় বঙ্গবন্ধু, এখন বলে জয় ইউনূস’

আপডেট সময় : ০৫:৫৯:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর কিছুটা স্বস্তি এসেছিল বাজারে। এ সময় চাল-মুরগীসহ নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা কমলেও আবার তা বাড়তে শুরু করেছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সরকার পতনের পর কয়েকদিন বন্ধ থাকলেও সিন্ডিকেট আর চাঁদাবাজরা আবার সক্রিয় হয়েছে৷ এই চক্রের ওপর ক্ষোভ থেকে এক ব্যবসায়ী নেতা বলেন, এরা আগে বলতো জয় বঙ্গবন্ধু, এখন বলে জয় ইউনূস৷

gnewsদৈনিক ইত্তেফাকের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
এ বিষয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, এখন আবার আগের অবস্থায় চাঁদাবাজ ও সিন্ডিকেট ফিরে এসেছে৷ শুধুমাত্র ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হাতবদল হয়েছে৷

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাজার ঘুরে দেখা যায়, মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চালের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে ছয় টাকা বেড়েছে ৫২ থেকে ৬০ টাকা হয়েছে৷ একই পরিমাণ বেড়েছে মিনিকেট চালের দামও৷

বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম খোরশেদ আলম খান বলেন, চালের দাম বাড়ার কারণ নিয়ে প্রশ্ন করলে ব্যবসায়ীরা বলবে বাজারে ধান কম, তাই চালের দাম বেড়েছে৷ বন্যার কথাও বলবে তারা৷ কিন্তু আসল ঘটনা অন্য জায়গায়৷ এখন বাজারে ধান কম থাকলেও ধান আছে উত্তরাঞ্চলের চাতাল মালিকদের কাছে৷ তারা আগেই ধান কিনে স্টক করে রেখেছে৷ এখন তারা সুযোগ পেয়ে দাম বাড়িয়ে মুনাফা লুটছে৷ সর্বোচ্চ ৩০জন চাতাল মালিক এটা নিয়ন্ত্রণ করছে৷

তিনি আরও বলেন, তারা সরকার পতনের পর কয়েকদিন ভয়ে সক্রিয় হয়নি৷ তখন চালের দাম বাড়েনি৷ কিন্তু এখন তারা আবার সক্রিয় হয়েছে৷ তারা আগে ছিলেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্রের লোক, এখন তারা ভোল পালটে নতুনদের লোক হয়ে সিন্ডিকেট শুরু করেছে৷ আগে বলত জয় বঙ্গবন্ধু, এখন বলে জয় ইউনূস৷

ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে গেছে৷ দুই সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৭০ টাকা, যা এখন ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে৷ কোথাও কোথাও আরো বেশি৷ সোনালি মুরগির দামও কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে ২৬০ টাকা হয়েছে৷ ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের দাম ডজনপ্রতি পাঁচ টাকা বেড়েছে৷ প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা দরে৷ আর ফার্মের মুরগির সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ডজন ১৫০ টাকা দরে৷ এখনেও পাঁচ টাকা বেড়েছে৷

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার গণমাধ্যমকে বলেন, মুরগি আর ডিমের দাম নির্ভর করে পোল্ট্রি ফিডের ওপর৷ মোট উৎপাদন খরচের ৭০ ভাগই ফিডের দাম৷ ফিডের দাম কমেনি৷ আগে যা ছিল, তা-ই আছে৷ এই ফিড উচ্চমূল্যের জন্য সরকারের নীতি ও সিন্ডিকেট দায়ী৷ এরপরও দাম কমার কথা৷ কিন্তু সেটা কমছে না করপোরেটদের কারণে৷ তারা ডিম ও মুরগির দাম এখনো সিন্ডিকেট করে ঠিক করছে৷ মাত্র কয়েকজন ব্যবসায়ী বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন৷ সরকারের পতনের পর কয়েকদিন তারা কিছুটা দমে গেলেও এখন আবার সক্রিয় হয়েছে৷

চাষের মাছের দাম স্থিতিশীল থাকলে ভারতে রপ্তানি বন্ধ ও ইলিশের মৌসুম হলেও ইলিশের দাম এখনো চড়া৷এক কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ টাকায়৷ ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১৪০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা৷ আর ৫০০ থেবে ৬০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ইলিশের জন্য গুণতে হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা৷

আলু আর পেঁয়াজের দাময় অনেকদিন ধরেই বেশি৷ আলু আমদানিতে বিদ্যমান ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে৷ এছাড়া আলু আমদানিতে থাকা তিন শতাংশ এবং পেঁয়াজ আমদানিতে থাকা ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে৷ তারপরও কমেনি এ দুই পণ্যের দাম। এখনও বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়৷

কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, সরকার পতনের পর নিত্যপণ্যের দাম কমেছিল৷ তখন চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছিল৷ কিন্তু এখন আবার দাম বাড়ছে৷ কারণ, বাজারে আবার সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজরা ফিরে এসেছে৷

তিনি আরও বলেন, সরকার যদি বাজার মনিটরিংয়ে নজর দেয়, আইনের কঠোর প্রয়োগ করে, তাহলে দাম বাড়ার সুযোগ নেই৷ সরকারকে এদিকে নজর দিতে হবে৷