দেশের নেসকো, পিডিবি, ডিসকো, ওয়েস্টজোন ইত্যাদি বিদ্যুৎ কোম্পানি গুলোর বিদ্যুতের অপচয় রোধ করতে এবং বিদ্যুতের যথাযথ হিসাব রাখতে সরকার বেশ কয়েক বছর ধরে দেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় ডিজিটাল প্রিপেইড মিটার স্থাপন করছে। গ্রাহক বান্ধব এই মিটারটিতে কোন অ্যানালগ মিটারের সমস্যা গুলো নেই। আবার মিটারে টাকা রিচার্জ করাটাও বেশ সহজ হওয়ার ফলে একদিকে যেমন গ্রাহকদের ভোগান্তি কম হবে আবার অন্যদিকে বিদ্যুৎ খাত থেকে সরকারের আয়ও প্রতিবছর বাড়বে। এই লক্ষে দেশের যেসকল এলাকাকে ডিজিটাল মিটারের আওতায় আনা হচ্ছে তাদের জেনে রাখা উচিৎ বৈদ্যুতিক প্রিপেইড ডিজিটাল মিটার ব্যবহারের নিয়মঃ
প্রিপেইড মিটার রিচার্জ সংক্রান্ত সকল তথ্যবলি:
প্রথম বার ১০০০ টাকা রিচার্জে আপনি পাবেন ৭৯২ টাকা। কারণ সমূহঃ
১। মিটার পরীক্ষার সময় আপনাকে প্রথমেই ১০০ টাকা মিটারের সাথে দেওয়া হবে। তাই প্রথম ১ বার ১০০ টাকা কাটবে।
২। ডিমান্ড চার্জ আগে প্রতি কিলোওয়াট লোডের জন্য ছিল ২৫ টাকা এখন ডিজিটাল মিটারের ক্ষেত্রে ১৫ টাকা। (যা প্রতি মাসে এক বার করে কাটবে)
৩। মিটার ভাড়া ৪০ টাকা। (যা প্রতি মাসে এক বার লাগবে)
৪। সরকারি ভ্যাট আগে ৫% ছিল যা বর্তমানে ৫% রয়েছে।
৫। সার্ভিস চার্জ ১০ টাকা। ( যা প্রতি মাসে একবার লাগবে)
বিঃদ্রঃ এই কারণে ডিজিটাল মিটারে প্রথম ১০০০ টাকার কার্ড রিচার্জে ১০০০ টাকার স্থানে ৭৯২ টাকা থাকবে, কিন্তু আপনি ঐ মাসেই যদি আবার ১০০০ টাকা রিচার্জ করেন তাহলে শুধু সরকারি ভ্যাট ৫% টাকা কাটার পর বাকি টাকা মিটারে রিচার্জ হয়ে যুক্ত হবে। এজন্য ডিজিটাল মিটারের গ্রাহকদের আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই।
বৈদ্যুতিক প্রিপেইড মিটারের প্রকারভেদ:
বাংলাদেশের বাজারে বিদ্যুতিক প্রিপেইড মিটার দুই প্রকার পাওয়া যাচ্ছে যথা-
কিপ্যাড টাইপ বৈদ্যুতিক প্রিপেইড মিটার।
স্মার্ট কার্ড টাইপ বৈদ্যুতিক প্রিপেইড মিটার।
কিপ্যাড টাইপ বৈদ্যুতিক প্রিপেইড মিটারঃ “ইউনিট ট্রান্সফার সিস্টেম” এবং “কারেন্সি ট্রান্সফার সিস্টেম” এই দুই ধরনের টেকনোলজিই এতে রয়েছে। এই টাইপের মিটারে টাকা রিচার্জ করতে হয়, ব্যালেন্স দেখা যায়, বন্ধ চালু করা ইত্যাদি সকল কাজ বোতাম টিপে বা ডায়াল করে করতে হয়।
স্মার্ট কার্ড টাইপ বৈদ্যুতিক প্রিপেইড মিটারঃ এই ধরণের মিটারে কেবল “কারেন্সি ট্রান্সফার সিস্টেম” টেকনোলজি রয়েছে। গ্রাহককে সরবরাহকৃত স্মার্ট কার্ডটি ভেন্ডিং স্টেশন থেকে রিচার্জ করে মিটারের নির্দিষ্ট জায়গায় পাঞ্চ করার মাধ্যমে টাকা রিচার্জ করা যায়। অনেকটা এটিএম মেশিনের মত আর কি।
প্রিপেইড বিদ্যুতিক মিটার ব্যবহারের নিয়ম:
কিপ্যাড টাইপ মিটার রিচার্জ করার ক্ষেত্রে মিটার নাম্বারের প্রয়োজন হবে। মিটার নাম্বার জানা না থাকলে, সংশ্লিষ্ট মিটারে ৮০৪ ডায়াল করে লাল বোতামটি চাপলে মিটার নাম্বার দেখাবে। এছাড়া গত রিচার্জের টোকেন গুলোতেও মিটার নাম্বার পাওয়া যাবে। বিদ্যুৎ অফিস, ভেন্ডিং স্টেশন কিংবা রিচার্জ সেন্টারে গিয়ে মিটার নাম্বার দিয়ে কত টাকা রিচার্জ করতে চাই তা বলতে হবে। তখন তারা ২০ ডিজিটের পিন সম্বলিত একটি টোকেন দিবে। এখন মিটারে ঐ বিশ ডিজিটের পিনটি ডায়াল করে লাল বোতামে চাপলে রিচার্জ সম্পন্ন হবে এবং মিটারে রিচার্জের পরিমাণ দেখা যাবে।
বিকাশ, রকেট ইত্যাদির মাধ্যমেও রিচার্জ করা যায়। এক্ষেত্রে এস.এম.এস এর মাধ্যমে ২০ ডিজিটের পিনটি জানিয়ে দেবে। তবে সেক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য হবে।
স্মার্ট কার্ড টাইপ মিটারের ক্ষেত্রে কার্ডটি রিচার্জ সেন্টারে নিয়ে গিয়ে রিচার্জ করে আনতে হবে। তারপর স্মার্ট কার্ডটি মিটারের নির্দিষ্ট জায়গায় পাঞ্চ করে রিচার্জ সম্পন্ন করতে হবে।
হেক্সিল ইলেকট্রিক্যাল কর্তৃক সরবরাহকৃত ‘কিপ্যাড টাইপ’ প্রিপেইড মিটারে কোনকিছু জানতে হলে নিচের কোডগুলো ডায়াল করে এন্টার বোতাম অর্থাৎ লাল বোতামটি চাপতে হবে। বৈদ্যুতিক ডিজিটাল মিটারের সকল কোড সমূহ নিচে দেওয়া হয়েছে। তবে মিটার ভেদে কিছু কোড কাজ নাও করতে পারে।
ডিজিটাল প্রিপেইড মিটারের সকল কোড সমূহ:
যে কোনো কোড
:
সংকেত (Alarm) বন্ধ করা হবে।
800
:
মোট বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিমান।
801
:
বর্তমান ব্যালেন্সের (টাকা) পরিমাণ।
802
:
বর্তমান তারিখ দেখা।
803
:
বর্তমান সময় দেখা।
804
:
মিটারের সিরিয়াল নাম্বার।
806
:
রিলে সংযোগ বিচ্ছিন্নের কারণ
807
:
মিটারের অবস্থা দেখা।
808
:
বর্তমান সংযুক্ত লোড
809
:
ট্যারিপের সূচক দেখা।
810
:
ইমার্জেন্সি ব্যালেন্সের পরিমাণ
811
:
ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স সচল (Activate) করতে
812
:
সংকেত (Alarm) বন্ধ করা
813
:
কত দিনের বিদ্যুতের ব্যবহার
814
:
বর্তমান মাসের বিদ্যুত ব্যবহারের পরিমান
815
:
সর্বশেষ রিচার্জের তারিখ
816
:
সর্বশেষ রিচার্জের সময়
817
:
সর্বশেষ রিচার্জের পরিমাণ
819
:
বিদ্যুত বন্ধের সময়
820
:
গর্ত মাসের বিদ্যুতের ব্যবহার
821
:
এক মাস আগের বিদ্যুতের ব্যবহার
মিটারের আগের বিল চেক করার নিয়ম:
822
:
দুই মাস আগের বিদ্যুতের ব্যবহার
823
:
তিন মাস আগের বিদ্যুতে ব্যবহার
824
:
চার মাস আগে বিদ্যুতর ব্যবহার
825
:
পাঁচ মাস আগের বিদ্যুতের ব্যবহার
830
:
সর্বশেষ রিচার্জের টোকেন নাম্বার
868
:
মিটারটি চালু বা বন্ধ হবে।
869
:
সংযুক্ত লোড। অর্থাৎ সর্বোচ্চ অনুমোদিত লোড (কিলোওয়াট)
870
:
ফেইজ ভোল্টেজ
874
:
ফেইজ কারেন্ট
877
:
ফেইজ পাওয়ার লোড
879
:
রিভার্স পাওয়ার
881
:
প্রতি মাসে গড় ব্যবহার
886
:
বর্তমান ব্যবহার
887
:
বর্তমান ব্যবরিত স্টেপ টেরিফ
888
:
ব্যালেন্স দেখার রিটার্ন টোকেন
889
:
বর্তমান টোকেন সিরিয়াল নাম্বার
890
:
প্রত্যাখিত টোকেন এর সময়
891
:
টোকেন গ্রহণ করার সময়
892
:
রিলে সংযোগ এর সময়
893
:
রিলে বিচ্ছিন্নের সময়
894
:
ফ্রেনলি মোডে সর্বোচ্চ ব্যবহার
মিটার ফ্রেনলিমোডে ব্যবহার কোড:
895
:
ফ্রেনলি মোডে কই দিন ব্যবহার করা যাবে।
896
:
ফ্রেনলি মোড কই দিন ব্যবহার করা হয়ছে।
897
:
ফ্রেনলি মোড শুরুর সময়।
898
:
ফ্রেনলি মোড শেষ হওয়ার সময় ।
899
:
সাপ্তাহিক ছুটির দিন ।
900
:
ফ্রেনলি মোড।
901
:
স্টেপ টেরিপ -১ এর ইউনিট দেখা।
902
:
স্টেপ টেরিপ -২ এর ইউনিট দেখা।
903
:
স্টেপ টেরিপ -৩ এর ইউনিট দেখা।
904
:
স্টেপ টেরিপ -৪ এর ইউনিট দেখা ।
905
:
স্টেপ টেরিপ -৫ এর ইউনিট দেখা।
906
:
স্টেপ টেরিপ -৬ এর ইউনিট দেখা।
907
:
স্টেপ টেরিপ -৭ এর ইউনিট দেখা।
908
:
স্টেপ টেরিপ -১ এর মূল্য দেখা ।
909
:
স্টেপ টেরিপ -২ এর মূল্য দেখা ।
910
:
স্টেপ টেরিপ -৩ এর মূল্য দেখা ।
911
স্টেপ টেরিপ -৪ এর মূল্য দেখা ।
912
:
স্টেপ টেরিপ -৫ এর মূল্য দেখা ।
913
:
স্টেপ টেরিপ -৬ এর মূল্য দেখা ।
914
:
স্টেপ টেরিপ -৭ এর মূল্য দেখা।
915
:
স্টেপ টেরিপ -৮ এর মূল্য দেখা ।
বৈদ্যুতিক মিটারের ক্রেডিট চেক:
916
:
গত মাসের পাওয়ার ফ্যাক্টর।
917
:
কম ক্রেডিট এ্যার্লাম লেভেল -১
918
:
কম ক্রেডিট এ্যার্লাম লেভেল -২
919
:
কম ক্রেডিট এ্যার্লাম লেভেল -৩
921
:
ব্যবহৃত ছুটির দিন
922
:
বর্তমান মাসের ব্যবহৃত টাকা
923
:
গত মাসের ব্যবহৃত টাকা
924
:
গত এক মাস আগের ব্যবহৃত টাকা
925
:
গত দুই মাস আগের ব্যবহৃত টাকা
926
:
গত তিন মাস আগের ব্যবহৃত টাকা
927
:
গত চার মাস আগে ব্যবহৃত টাকা
928
:
গত পাঁচ মাস আগের ব্যবহৃত টাকা
মিটারের ইউনিট জানার নিয়ম:
আপনি কত ইউনিট ব্যবহার করেছেন তা জানার জন্য ৮০০ ডায়াল করুন তাহলে ইউনিট ব্যবহার দেখা যাবে।
মিটারে ব্যালেন্স দেখার নিয়ম:
আপনার মিটারে কত টাকা ব্যালেন্স/জমা আছে তা জানতে হলে ৮০১ ডায়াল করুন তাহলে মিটারের ডিসপ্লেতে বাকি ব্যালেন্স দেখাবে।
মিটারের ইমার্জেন্সি জানার নিয়ম:
ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স জানতে ৮১০ ডায়াল করুন।
মিটার বন্ধ বা চালু করার নিয়ম:
আপনার মিটারটি চালু বা বন্ধ করতে ৮৬৮ ডায়াল করুন।
মিটারের কিলোওয়াট জানার নিয়ম:
আপনার মিটারটি কত কিলোওয়ার্টের তা জানতে ৮৬৯ চাপুন।
ডিজিটাল মিটারের সমস্যা :
বিদ্যুতের ডিজিটাল প্রিপেইড মিটার কিছু সমস্যা রয়েছে যেগুলো জেনে রাখা উচিৎ। কিছু কিছু সময় বিদ্যুতের ওভারলোডের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যেমন- এককিলোওয়াট মিটারের ক্ষেত্রে লাইট, ফ্যান, ফ্রিজ ইত্যাদি সব ইলেকট্রিক সরঞ্জাম মিলিয়ে সর্বোচ্চ এক কিলোওয়াটের অর্থাৎ ১০০০ (এক হাজার) ওয়াটের লোড ব্যবহার করা যাবে। মোট কথা এক কিলোওয়াটের বেশি লোডের যেকোনো যন্ত্রপাতি (যেমন- ইস্ত্রি, হিটার) ইত্যাদি ব্যবহার করলে অল্প সময়ের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আবার বেশি লোডের যন্ত্রপাতির ব্যবহার চালিয়ে গেলে বিদ্যুত যাওয়া আসা করতে পারে। যারা বেশি লোডের যন্ত্রপাতি নিয়মিত ভাবে ব্যবহার করবে তাদের বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করে মিটারের সংযুক্ত লোডের পরিমাণ বাড়িয়ে হাবে। তখন বেশি লোডের কারণে বিদ্যুতের যাওয়া আসার সমস্যা আর হবে না।
প্রিপেইড মিটারে সংকেত এ্যার্লাম বাজলে:
ডিজিটাল মিটারে টাকার পরিমাণ ব্যালেন্স কমে সর্বনিম্ন পর্যায়ে এলে মিটার থেকে স্বয়ংক্রিয় ভাবে অটোমেটিক সংকেত অ্যালারাম দিবে। এক পর্যায়ে যখন ব্যালেন্স এর টাকা শূন্য হয়ে যাবে তখন মিটার থেকে তথা সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। তবে একটা ভালো খবর রয়েছে- তাহলো সাপ্তাহিক বা অন্যান্য ছুটির দিনে মিটার বন্ধ হবে না। টাকা একেবারে শেষ হয়ে গেলেও ঐ দিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত মিটার চালু থাকবে। আর আপনি উক্ত সময়ের মধ্যে মিটারটি রিচার্জ করতে পারবেন।
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো ।বিডিসারাদিন২৪'এ প্রকাশিত নারীকন্ঠ,মতামত লেখার বিষয়বস্তু, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমুহ সম্পূর্ণ লেখকের নিজস্ব। প্রকাশিত সকল লেখার বিষয়বস্তু ও মতামত বিডিসারাদিন২৪ 'র সম্পাদকীয় নীতির সাথে সম্পুর্নভাবে মিলে যাবে এমন নয়। লেখকের কোনো লেখার বিষয়বস্তু বা বক্তব্যের যথার্থতার আইনগত বা অন্যকোনো দায় বিডিসারাদিন২৪ কর্তৃপক্ষ বহন করতে বাধ্য নয়। বিডিসারাদিন২৪ 'তে প্রকাশিত কোনো লেখা বিনা অনুমতিতে অন্য কোথাও প্রকাশ কপিরাইট আইনের লংঘন বলে গণ্য হবে।