মামলার অভিযোগে বলা হয়, ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের ৭/৮ হাজার শিক্ষার্থী ২৪ নভেম্বর রোববার বেআইনি জনতাবদ্ধে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রসহ দাঙ্গা সৃষ্টি করে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করে। তারা সরকারি অস্ত্রের (পিস্তল) গুলিভর্তি ম্যাগাজিন চুরি, সরকারি ডিউটিতে ব্যবহৃত সাঁজোয়া যান বা এপিসি (আর্মার পার্সনেল ক্যারিয়ার) ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন করে। কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ওপর আক্রমণ করা, জীবননাশের হুমকি দেওয়া এবং ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে অন্তর্ঘাতমূলক কাজ করে।
এ ছাড়া পুলিশের এপিসি কার ও ডিউটিরত পুলিশের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে দুই লাখ ৭০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে পেনাল কোড ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) ধারার অপরাধ আনা হয়েছে।
এর আগে, ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা-ভাঙচুর ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এই হামলা, লুটপাটের ন্যায়বিচারের দাবিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে তারা।
সোমবার বিকেল ৫টার দিকে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ অধ্যক্ষের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ গভীর শোক ও ক্ষোভের সঙ্গে জানাচ্ছে যে, আজ আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক নৃশংস হামলা চালানো হয়েছে। সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য কলেজের ছাত্র, বহিরাগত একদল সন্ত্রাসী প্রবেশ করে কলেজ ভবনে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, এ হামলায় শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
এতে বলা হয়, ‘হামলাকারীদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী নয় বরং সন্ত্রাসী কার্যক্রমে লিপ্ত ব্যক্তিবর্গ।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘হামলাকারীরা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, সম্পদ ও শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট, ব্যক্তিগত মালামাল লুট করেছে। এ ছাড়া কলেজ ভবনের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে তারা অধ্যক্ষের কার্যালয়সহ বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর করে। এতে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি একই ভবনে অবস্থিত ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।’
‘কলেজ কর্তৃপক্ষ বার বার প্রশাসনের স্থানীয় ও সর্বোচ্চ পর্যায়ে সহযোগিতার আবেদন করলেও, এ পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় আমাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শিক্ষার পরিবেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।’, বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে
এছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে তিনটি দাবি তুলে ধরে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ কর্তৃপক্ষ। দাবিগুলো হলো-
১. হামলার প্রকৃত দোষীদের দ্রুত শনাক্ত ও গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান।
২. শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে কলেজে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার।
৩. লুটকৃত সম্পদ উদ্ধার ও ক্ষতিগ্রস্ত নথি পুনরুদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।
এর আগে সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নাম-পরিচয় উল্লেখ করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনজন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ গভীর শোক ও ক্ষোভের সঙ্গে জানাচ্ছে যে, আজ আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক নৃশংস হামলা চালানো হয়েছে। তথাকথিত সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বহিরাগত একদল সন্ত্রাসী প্রবেশ করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এ হামলায় তিনজন শিক্ষার্থী নির্মমভাবে প্রাণ হারায় এবং শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’