আলোচনায় অভ্যুত্থানকারীদের রাজনৈতিক দল গঠন, ভিন্ন কিছুর আভাস
- আপডেট সময় : ১২:৪৬:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ৭০ বার পড়া হয়েছে
অভ্যুত্থানকারী তরুণদের রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি আবারও আলোচনায়। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যালট বিপ্লবের ডাক দেয় জাতীয় নাগরিক কমিটি। তাত্ত্বিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক আবুল কাসেম ফজলুল হক মনে করেন, অন্য সময়ে দল গঠনের উদ্যোগ মুখ থুবড়ে পরলেও এবার ভিন্ন কিছু ঘটতে পারে।
‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত’–জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীদের এ ঘোষণা কি কেবল রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন নাকি নতুন দল উত্থানের আকাঙ্ক্ষা–তা নিয়ে কৌতূহল আছে জনমনে, রাজনৈতিক পরিসরে।
এটি আরও জোরালো হয় যখন, সারা দেশে থানা পর্যন্ত কমিটি গঠন শুরু করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও তরুণদের জাতীয় নাগরিক কমিটি। সবশেষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যালট বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত হওয়ার কথা বলেছেন তারা। তরুণদের নতুন দলকে ক্ষমতায় নিয়ে আসতে চাই–এমন হ্যাশট্যাশে স্ট্যাটাস দিতেও দেখা যাচ্ছে অভ্যুত্থানকারীদের প্ল্যাটফর্ম থেকে।
কেন এই ঘোষণা? এর ব্যাখ্যা দিলেন তরুণ নেতাদের মুখপাত্র সামান্তা শারমিন। সময় সংবাদকে তিনি বলেন, ‘নাগরিক কমিটির জায়গা থেকে আমরা মনে করি যে তরুণদের অসংখ্য দল থাকুক। আমরা চাই, তরুণদের একটা দলই ক্ষমতায় যাক। আমাদের নাগরিক প্ল্যাটফর্মের জায়গা থেকে যেভাবে সহযোগিতা করতে পারি, সেখানে আমরা পুরোপুরি ওপেন আছি।’
কিন্তু বহুধারার অসংখ্য রাজনৈতিক দল থাকার পরও কেন আলাদা শক্তি হিসেবে আবির্ভূত চান তরুণরা? এ বিষয়ে সামান্তা বলেন,
আমাদের সব রাজনৈতিক দল বলে, জনগণ জনগণ। তাহলে ওই জনগণ কি শুধু ওই দলের অডিয়েন্স? ওই রাজনৈতিক দলগুলো কি আমাদের তরুণদের আকাঙ্ক্ষা ধরতে পেরেছে? ছাত্র এবং তরুণদের যে অংশটা অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিলো, সেই অংশটাকে নিয়ে কারও কোনো বিশেষ পরিকল্পনা আছে বলে আমরা দেখতে পাচ্ছি না।
‘আমরা মনে করি, সামনের দিনগুলোতে রাজনৈতিক যে দৃশ্যপট আছে, সেখানে নতুন রাজনৈতিক দল মানুষ আকাঙ্খা করছে। আর সেটা হওয়াও উচিত। আমাদের জায়গা থেকে এ নিয়ে পূর্ণ সমর্থন জানাই। আমরা মনে করি, সেটা দ্রুতই হওয়া উচিত’, যোগ করেন তরুণ নেতাদের মুখপাত্র।
যদিও বাস্তবতা বলছে, বহুবারই হোঁচট খেয়েছে নতুন দল গঠনের উদ্যোগ। এবারও তেমন কিছু হয় কিনা, উড়িয়ে দেয়া যায় না সে সংশয়ও। এ বিষয়ে রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক ভিন্ন কিছু দেখছেন এবার।
তিনি বলেন,
যেসব লক্ষণ দেখেছি, তাতে আমরা মনে হয় যে আগামী নির্বাচন আসার আগে আগে একটা ভিন্ন রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে তারা সামনে আসবে। এই শূন্যতার মধ্যে নতুন দল হলে একেবারে খারাপ হবে না। সম্পূর্ণ বিজয়ী হতে না পারলেও অনেকটাই বিজয়ী হতে পারে। এ ছাড়া অন্য কোনো কোনো দলের সঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী কোয়ালিশন করে তারা সরকারও গঠন করতে পারে। সেইসঙ্গে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বাইরের কোন কোন শক্তি কীভাবে কাজ করছে, সেটাও বুঝতে হবে।
ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের লক্ষ্যে গত ৮ সেপ্টেম্বর গঠিত হয় জুলাই অভ্যুত্থানকারীদের নতুন প্ল্যাটফর্ম জাতীয় নাগরিক কমিটি। আর ২২ অক্টেোবর আত্মপ্রকাশ ঘটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কমিটির।