ঢাকা ০৪:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ইইউ’র ২৭ রাষ্ট্রদূতের বৈঠক ৯ ডিসেম্বর জাতীয় সরকারের গুঞ্জন ড: মুহাম্মদ ইউনুস ইন্ডিয়ার জায়গামত আঘাত করেছে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় রাজনৈতিক দলের ঐক্য ভারত আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরে বাধ্য: ড. ইউনূস মুন্নী সাহা সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টে বেতনের বাইরে জমা হয় ১৩৪ কোটি জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশকে আ. লীগের দৃষ্টিতে দেখা বন্ধ করতে হবে : ভারতকে নাহিদ ইসলাম “ছাত্রদের ভূমিকা ও রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা” অশান্তির জন্য মহম্মদ ইউনূসকেই দায়ী করলেন শেখ হাসিনা৷ ফেরত চাওয়া হবে শেখ হাসিনাকে, মানতে বাধ্য ভারত: ড. ইউনূস আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্নীতি ও অর্থ পাচার: শ্বেতপত্রে উন্মোচিত সাংবাদিক মুন্নী সাহা গ্রেপ্তার অচিরেই কুমিল্লাকে বিভাগ ঘোষণা: উপদেষ্টা আসিফ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত কেন তথ্যযুদ্ধে নেমেছে? ভারতের দ্বিচারিতা নিন্দনীয় ও আপত্তিকর: আসিফ নজরুল কোটি টাকার বাস ৯০ লাখে বানাবে বিআরটিসি ভয়েস অব আমেরিকার জরিপ: সংখ্যালঘুরা ‘আগের তুলনায় বেশি নিরাপত্তা পাচ্ছে’ বাংলাদেশে ভারতীয় চ্যানেল বন্ধের খবর ভুয়া ধানমন্ডি লেকে হবে ‘বিদ্রোহী চত্বর’

এই মুহূর্তে শিক্ষা খাতে ১৩ চ্যালেঞ্জ

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৭:১৬:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৮১ বার পড়া হয়েছে
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে ৩ বছরে বরাদ্দ ২ লাখ ৭৫ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা * প্রাথমিক শিক্ষার মান সবচেয়ে কম, মাধ্যমিকে বিভাগভিত্তিক ভর্তির ধারা উদ্বেগজনক, মাদ্রাসা শিক্ষা কর্মের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কম এবং উচ্চ শিক্ষায় নানা সমস্যা

প্রতিবছর শিক্ষা ক্ষেত্রে খরচ হয় কয়েক হাজার কোটি টাকা। গত ৩ অর্থবছরে শিক্ষা ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা। এরপরও নিশ্চিত হয়নি শিক্ষার গুণগতমান। রয়েছে নানা সংকট।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে শিক্ষা খাতে ১৩টি চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-প্রাক-প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ না করা, প্রাথমিকে ঝরে পড়া, মাধ্যমিক শিক্ষায় অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষার্থী ভর্তি, ভর্তির ক্ষেত্রে ধনী-গরিবের ব্যবধান এবং মাদ্রাসা শিক্ষার মান চাকরির বাজারে সঙ্গে সামঞ্জস্য নয়।

এসব বিষয় চিহ্নিত করে প্রথমবারের মতো অ্যাকশন প্ল্যানের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। শিগগিরই এটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। শিক্ষা খাতের অন্যান্য চ্যালেঞ্জগুলো হলো-উচ্চ শিক্ষায় সরকারি কলেজে একই শিক্ষক দিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা দেওয়া এবং শিক্ষক সংকট। এছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান ও গবেষণা পরিচালনার জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত সন্তোষজনক নয়।

আরও আছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরতদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোনো একক নীতিমালা নেই, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিরা নিজেদের মালিক মনে করেন এবং গবেষণার জন্য মানসম্মত ফ্যাকাল্টি না থাকা। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষায় প্রচলিত ধ্যান-ধারণা আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা থেকে অনেকটাই ভিন্ন এবং কারিগরি শিক্ষায় নারীদের কম অংশগ্রহণ ও চাহিদা অনুযায়ী দক্ষতা তৈরির অভাব।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আব্দুর রউফ যুগান্তরকে বলেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং তৃতীয় স্তরের শিক্ষা সুযোগ সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনন্য কৃতিত্ব অর্জন করেছে। প্রাথমিক শিক্ষায় সর্বজনীন প্রবেশাধিকারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। এক্ষেত্রে মোট অন্তর্ভুক্তি ২০২৪ সালে ১০৯ দশমিক ১৪ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ১১০ দশমিক ৪৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

Advertisement

এভাবে শিক্ষার সব স্তরেই উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু গুণগত মান অর্জন শিক্ষার অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখা দিয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকা সেক্টর প্ল্যান তৈরি ও বাস্তবায়ন করে তাৎপর্যপূর্ণ উন্নয়ন করেছে। আমাদের দেশেও অ্যাকশন প্ল্যান করা হচ্ছে হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন দ্রুতই এই অ্যাকশন প্ল্যান চূড়ান্ত করা হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে পরিচালক ও উন্নয়ন মিলে চলতি অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ আছে ১ লাখ ১১ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সংশোধিত বরাদ্দ ছিল ৮৯ হাজার ১২ কোটি টাকা এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৩১ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ৩ অর্থবছরে বরাদ্দ দাঁড়ায় ২ লাখ ৭৫ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা।

পরিকল্পনা কমিশনের তৈরি খসড়া কৌশলপত্রে বলা হয়েছে, প্রাক প্রাথমিক শিক্ষার জন্য আলাদা কোনো অবকাঠামো নেই। ফলে বর্তমান প্রাথমিক বিদ্যালয়েরই ২-৩টি কক্ষ এই কাজে ব্যবহার করা হয়। এতে বাড়ি থেকে দূরত্ব বেশি হওয়ায় অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে নিয়ে যেতে চান না। এজন্য শিশুদের বাসস্থানের কাছেই প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন জরুরি। এই শিক্ষার জন্য আলাদা শিক্ষক নিয়োগ দরকার। আরও বলা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি সত্ত্বেও নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

প্রাথমিকে ভর্তির হার শতভাগ হলেও ঝরে পড়ার হার এখনো প্রায় ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এছাড়া বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী ৩৩ শতাংশের বেশি শিশু সঠিকভাবে একটি গল্পের সব শব্দ পড়তে পারেনি। অর্ধেকের বেশি শিশু মৌলিক গঠন দক্ষতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। একইভাবে সংখ্যাগত জ্ঞানে ৫০ শতাংশের বেশি শিশু সফলভাবে সংখ্যা গঠন ও সংখ্যার পার্থক্য করতে পারেনি।

প্রায় ৬৬ শতাংশ প্যাটার্ন উপলব্ধি করার কাজ শেষ করতে পারেনি। দেশে ১ লাখ ১৪ হাজার ৪২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও এর মধ্যে মাত্র ৬৫ হাজার ৫৫৬টি সরকারি বিদ্যালয়, বেসরকারি মাদ্রাসা বা এনজিও নিয়ন্ত্রিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষিত শিক্ষক প্রয়োজন। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার মানোন্নয়ন দরকার।

খসড়ায় মাধ্যমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক শিক্ষার অন্যতম চ্যালেঞ্জ হলো কম ভর্তি হওয়া। বিভাগভিত্তিক শিক্ষার্থীদের ভর্তির এ ধারা উদ্বেগজনক। উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও অর্থনৈতিক কাঠামোগত পরিবর্তনের ফলে বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর থাকা দরকার। মানসম্মত শিক্ষক বিশেষ করে বিজ্ঞানের শিক্ষকের প্রকট সংকট রয়েছে।

বিদ্যালয় পরিচালনায় অভিভাবকরা সম্পৃক্ত হন না, যা মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের অন্তরায়। মাদ্রাসা শিক্ষার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, মাদ্রাসা শিক্ষার মান চাকরির বাজারে সঙ্গে খুব বেশি প্রাসঙ্গিক নয়। সাধারণ শিক্ষার্থী ও মাদ্রসা শিক্ষার্থীদের শিখন ও ফলের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এই ধারার পরীক্ষায় ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের স্কোর কম। এছাড়া অন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা।

যেগুলো সরকারি কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়াই স্বাধীনভাবে চলে। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার অ্যাফিলিয়েটে কলেজগুলোর জন্য রয়েছে আলাদা চ্যালেঞ্জ। এছাড়া পাবলিক বিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আলাদা আলাদা চ্যালেঞ্জ আছে। পাশাপাশি উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা তথা দক্ষতা উন্নয়ন ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

এই মুহূর্তে শিক্ষা খাতে ১৩ চ্যালেঞ্জ

আপডেট সময় : ০৭:১৬:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে ৩ বছরে বরাদ্দ ২ লাখ ৭৫ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা * প্রাথমিক শিক্ষার মান সবচেয়ে কম, মাধ্যমিকে বিভাগভিত্তিক ভর্তির ধারা উদ্বেগজনক, মাদ্রাসা শিক্ষা কর্মের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কম এবং উচ্চ শিক্ষায় নানা সমস্যা

প্রতিবছর শিক্ষা ক্ষেত্রে খরচ হয় কয়েক হাজার কোটি টাকা। গত ৩ অর্থবছরে শিক্ষা ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা। এরপরও নিশ্চিত হয়নি শিক্ষার গুণগতমান। রয়েছে নানা সংকট।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে শিক্ষা খাতে ১৩টি চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-প্রাক-প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ না করা, প্রাথমিকে ঝরে পড়া, মাধ্যমিক শিক্ষায় অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষার্থী ভর্তি, ভর্তির ক্ষেত্রে ধনী-গরিবের ব্যবধান এবং মাদ্রাসা শিক্ষার মান চাকরির বাজারে সঙ্গে সামঞ্জস্য নয়।

এসব বিষয় চিহ্নিত করে প্রথমবারের মতো অ্যাকশন প্ল্যানের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। শিগগিরই এটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের। শিক্ষা খাতের অন্যান্য চ্যালেঞ্জগুলো হলো-উচ্চ শিক্ষায় সরকারি কলেজে একই শিক্ষক দিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা দেওয়া এবং শিক্ষক সংকট। এছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান ও গবেষণা পরিচালনার জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত সন্তোষজনক নয়।

আরও আছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরতদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোনো একক নীতিমালা নেই, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টিরা নিজেদের মালিক মনে করেন এবং গবেষণার জন্য মানসম্মত ফ্যাকাল্টি না থাকা। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষায় প্রচলিত ধ্যান-ধারণা আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা থেকে অনেকটাই ভিন্ন এবং কারিগরি শিক্ষায় নারীদের কম অংশগ্রহণ ও চাহিদা অনুযায়ী দক্ষতা তৈরির অভাব।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আব্দুর রউফ যুগান্তরকে বলেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং তৃতীয় স্তরের শিক্ষা সুযোগ সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনন্য কৃতিত্ব অর্জন করেছে। প্রাথমিক শিক্ষায় সর্বজনীন প্রবেশাধিকারের কাছাকাছি পৌঁছেছে। এক্ষেত্রে মোট অন্তর্ভুক্তি ২০২৪ সালে ১০৯ দশমিক ১৪ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ১১০ দশমিক ৪৮ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

Advertisement

এভাবে শিক্ষার সব স্তরেই উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু গুণগত মান অর্জন শিক্ষার অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখা দিয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকা সেক্টর প্ল্যান তৈরি ও বাস্তবায়ন করে তাৎপর্যপূর্ণ উন্নয়ন করেছে। আমাদের দেশেও অ্যাকশন প্ল্যান করা হচ্ছে হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন দ্রুতই এই অ্যাকশন প্ল্যান চূড়ান্ত করা হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে পরিচালক ও উন্নয়ন মিলে চলতি অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ আছে ১ লাখ ১১ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সংশোধিত বরাদ্দ ছিল ৮৯ হাজার ১২ কোটি টাকা এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৩১ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ৩ অর্থবছরে বরাদ্দ দাঁড়ায় ২ লাখ ৭৫ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা।

পরিকল্পনা কমিশনের তৈরি খসড়া কৌশলপত্রে বলা হয়েছে, প্রাক প্রাথমিক শিক্ষার জন্য আলাদা কোনো অবকাঠামো নেই। ফলে বর্তমান প্রাথমিক বিদ্যালয়েরই ২-৩টি কক্ষ এই কাজে ব্যবহার করা হয়। এতে বাড়ি থেকে দূরত্ব বেশি হওয়ায় অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে নিয়ে যেতে চান না। এজন্য শিশুদের বাসস্থানের কাছেই প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন জরুরি। এই শিক্ষার জন্য আলাদা শিক্ষক নিয়োগ দরকার। আরও বলা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি সত্ত্বেও নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

প্রাথমিকে ভর্তির হার শতভাগ হলেও ঝরে পড়ার হার এখনো প্রায় ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এছাড়া বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী ৩৩ শতাংশের বেশি শিশু সঠিকভাবে একটি গল্পের সব শব্দ পড়তে পারেনি। অর্ধেকের বেশি শিশু মৌলিক গঠন দক্ষতা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। একইভাবে সংখ্যাগত জ্ঞানে ৫০ শতাংশের বেশি শিশু সফলভাবে সংখ্যা গঠন ও সংখ্যার পার্থক্য করতে পারেনি।

প্রায় ৬৬ শতাংশ প্যাটার্ন উপলব্ধি করার কাজ শেষ করতে পারেনি। দেশে ১ লাখ ১৪ হাজার ৪২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও এর মধ্যে মাত্র ৬৫ হাজার ৫৫৬টি সরকারি বিদ্যালয়, বেসরকারি মাদ্রাসা বা এনজিও নিয়ন্ত্রিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষিত শিক্ষক প্রয়োজন। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার মানোন্নয়ন দরকার।

খসড়ায় মাধ্যমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক শিক্ষার অন্যতম চ্যালেঞ্জ হলো কম ভর্তি হওয়া। বিভাগভিত্তিক শিক্ষার্থীদের ভর্তির এ ধারা উদ্বেগজনক। উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও অর্থনৈতিক কাঠামোগত পরিবর্তনের ফলে বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর থাকা দরকার। মানসম্মত শিক্ষক বিশেষ করে বিজ্ঞানের শিক্ষকের প্রকট সংকট রয়েছে।

বিদ্যালয় পরিচালনায় অভিভাবকরা সম্পৃক্ত হন না, যা মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের অন্তরায়। মাদ্রাসা শিক্ষার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, মাদ্রাসা শিক্ষার মান চাকরির বাজারে সঙ্গে খুব বেশি প্রাসঙ্গিক নয়। সাধারণ শিক্ষার্থী ও মাদ্রসা শিক্ষার্থীদের শিখন ও ফলের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এই ধারার পরীক্ষায় ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের স্কোর কম। এছাড়া অন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা।

যেগুলো সরকারি কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়াই স্বাধীনভাবে চলে। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার অ্যাফিলিয়েটে কলেজগুলোর জন্য রয়েছে আলাদা চ্যালেঞ্জ। এছাড়া পাবলিক বিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আলাদা আলাদা চ্যালেঞ্জ আছে। পাশাপাশি উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা তথা দক্ষতা উন্নয়ন ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ।