একজন দক্ষ,মানবিক ওসি মিজানুর রহমানের জীবনের গল্প
- আপডেট সময় : ০৬:০৬:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৪৩ বার পড়া হয়েছে
মাঈন উদ্দিন সরকার রয়েল,কেন্দুয়া প্রতিনিধিঃ নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে ২৩ সেপ্টেম্বর রবিবার দুপুরে যোগদান করেছেন ওসি মিজানুর রহমান । ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার পর তাঁর অফিস কক্ষে একান্ত সাক্ষাৎকার গ্রহণকালে প্রশ্ন উত্তরের আলোচনায় উঠে আসে একজন মানবিক পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের জীবনের গল্পের বিভিন্ন বিষয়।
অতি সাবলীল ভাষায় প্রাঞ্জল উপস্থাপনায় অভিব্যক্তি প্রকাশ করার সময় তাঁর চেহারায় পরিলক্ষিত হয় মানবিকতার ছাপ । দুচোখে শান্তি শৃংখলা বজায় রেখে দৃঢ়তার সাথে সামনে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন। কথা বার্তায় সুদক্ষ, মেধাবী ও চৌকস অফিসারের গুণাবলী বিদ্যমান।
অতীত অভিজ্ঞতা সম্পন্ন,কাজে দক্ষ,আচরণে মানবিক ওসি মিজানুর রহমান ১৯৮১ সালের ২২ আগষ্ট ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগন্জ উপজেলার তারুন্দিয়া ইউনিয়নের কাজীর বাহেরা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবার মাস্টার বাড়ীতে জন্ম গ্রহন করেন। তাঁর পিতা একজন শিক্ষকতার মহান পেশায় নিয়োজিত থেকে মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি শামসুল হক মাস্টার হিসেবে এলাকায় সুপরিচিত । তাঁর গর্ভধারিণী মাতার নাম জাহেরা বেগম । দুই ভাই এক বোনের তিনি বাবা-মায়ের বড় সন্তান। ছোট ভাই এম.বি.এ সম্পন্ন করে একটি প্রজেক্টে কর্মরত এবং ছোট বোন গৃহিনী।
সোয়াইন নদীর তীরে অবস্থিত, ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ জেলার অন্তর্গত ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার একটি ঐতিহ্যবাহী ইউনিয়ন তারুন্দিয়া। কাল পরিক্রমায় আজ তারুন্দিয়া ইউনিয়ন শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, খেলাধুলা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার নিজস্ব স্বকীয়তায় আজও সমুজ্জ্বল। উত্তরে গৌরিপুর উপজেলার ডৌহাখলা ও রামগোপালপুর ইউনিয়ন, পশ্চিমে গৌরিপুর উপজেলার ভাংনামারি ইউনিয়ন, দক্ষিণে উচাখিলা ইউনিয়ন এবং পূর্বে বরহিত ইউনিয়নের মাঝেই তারুন্দিয়া ইউনিয়নের অবস্থান।
এ তারুন্দিয়া ইউনিয়নের কাজীর বাহেরার আলো বাতাস আর মা-মাটি-মানুষের ভালবাসায় কেটেছে ওসি মিজানুর রহমানের শৈশব-কৈশোর জীবন।
কেন্দুয়া থানার নবাগত ওসি মিজানুর রহমানের পড়াশোনার হাতে খড়ি স্থানীয় কোনাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থেকেই শুরু হয় । প্রাথমিকের গন্ডী পেরিয়ে তারুন্দিয়া জগত মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি পাশ করেন। ময়মনসিংহ নাসিরাবাদ সরকারী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ডিগ্রী অর্জন করে;নেত্রকোনা সরকারী কলেজ থেকে প্রাণী বিদ্যায় বি.এ অনার্স সম্পন্ন করেন। পরে তিনি ময়মনসিংহের প্রাচীন বিদ্যাপীঠ আনন্দ মোহন সরকারী কলেজে এম.এস.সি তে অধ্যায়ন করে কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন ।
পড়াশোনা শেষ করে তিনি ২০০৫ সালে সাব-ইন্সপেক্টর হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন । বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী রাজশাহীর সারদায় প্রশিক্ষণ শেষে প্রফেশনাল সাব ইন্সপেক্টর হিসেবে নেত্রকোনা জেলায় যোগদান করেন ।
তিনি ২০০৮ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে দাম্পত্য জীবন শুরু করেন । সুখী দাম্পত্য জীবনে তিনি দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক।
পরবর্তীতে তিনি ২০১০ সালে ঢাকা আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশে সাব-ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন । সেখানে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে ২০১২ সালে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানা ও ২০১৫ সালে টাঙ্গাইল জেলার বাসাইলে সাব-ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব করেন । অতঃপর ২০১৬ সালের জুলাই মাসে পুলিশ পরিদর্শক হিসেবো পদোন্নতি পেয়ো বদলী সূত্রে ময়মনসিংহ রেঞ্জে নেত্রকোনার যোগদান করেন । ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল নাগাদ তিনি নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা থানায় ওসি তদন্ত হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন এবং সততা,আদর্শ,নীতি ও কাজের দক্ষতার স্বীকৃতি অর্জন করে নেত্রকোনা জেলায় বার বার শ্রেষ্ঠ ওসি তদন্ত হিসেবে নির্বাচিত হয়ে প্রশংসা কুড়িয়ে সুনাম অর্জন করেছেন । ২০১৯-২০২২ সাল পর্যন্ত একই জেলার বারহাট্টা থানার ওসি হিসেবে দৃঢ়তা ও সততার প্রতীক হয়ে উঠেন সেখানকার জনমানুষের কাছে ।
২০২২ সাল হতে ২০২৪ সালের সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২৩ তারিখে কেন্দুয়ায় থানায় যোগদানের পূর্ব সময় নাগাদ তিনি নেত্রকোণা সদরে পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইও-১) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ।
কর্মজীবনের তিনি প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সততার সাথে দায়িত্ব পালন করে কৃতিত্বের স্নাক্ষর রেখে জনমানুষের আস্থা ও ভালবাসা সিক্ত হয়েছেন বার বার। বর্তমানে তিনি নেত্রকোনা জেলার লাইট পোস্ট হিসেবে খ্যাত কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ যোগদানের প্রথম দিন থেকেই কেন্দুয়া উপজেলার সকল শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে অমায়িক আন্তরিকতা ও সৌহার্দ পূর্ণ আচরণের মাধ্যমে ভালবাসা ও আস্থার জায়গা তৈরী করে নিচ্ছেন ।
এ প্রতিনিধির সাথে একান্ত সাক্ষাতকারে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিনি কেন্দুয়া উপজেলার আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখার সর্বাত্বক চেষ্টা অব্যাহত রেখে; মাদক,জুয়া,ইভটিজিং,ডাকাতি,কিশোরগ্যাং সহ সমাজের অবক্ষয় ঘটতে পারে- এমন সব কাজ নির্মূলের লক্ষ্যে সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করবেন বলে জানান।
এজন্য তিনি দলমত নির্বিশেষে কেন্দুয়ার সকল স্তরের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ,সমাজের গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ,সামাজিক,সাংস্কৃতিক,শিক্ষক,সাংবাদিক,ব্যবসায়ী,ছাত্র-জনতা-তরুণ সমাজ,স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ,সুশীল সমাজসহ সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এ সময় কেন্দুয়া থানার ওসি মিজানুর রহমান-আসন্ন শারদীয় দূর্গাপূজায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা জোরদার করা হবে জানিয়ে বলেন-দূর্গাপূজাঁয় সর্বোচ্চ নজরধারী থাকবে। গ্রাম পুলিশ,আনসার বাহিনী ও পুলিশের সমন্বয়ে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদানে পূর্ণ আশ্বাস প্রদান করেন।
অতীতে বিভিন্ন থানায় দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে মানবিক দায়িত্ব পালন করে আসা বর্তমানে কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান পরিশেষে,আরও বলেন-মেধা ও মননের সবটুকু দিয়েই নিজের পরিবারের মতই কেন্দুয়াবাসীসহ কর্মক্ষেত্রেও সহকর্মী এবং অধিনস্তদের প্রতি সহায়কের ভূমিকা পালন করে জনগণের জান মালের নিরাপত্তা প্রদানের লক্ষ্যো সকলের সেবায় নিরলসভাবে মানবিক ভূমিকা পালন করবো ইনশাআল্লাহ। এ ক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা কামনা করছি।