ঢাকা ০৫:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ড. ইউনূস-মোদি বৈঠকের সম্ভাবনা ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ৬ ডিসেম্বর ধানমন্ডি ৩২: প্রতিশোধের ক্রোধে উন্মাদ প্রায় শেখ হাসিনা বেনজীরকে গ্রেফতারে ইন্টারপোলে রেড অ্যালার্ট জারিতে নির্দেশনা শেখ হাসিনার সরকার হটাতে মার্কিন নীলনকশার গোপন নথি ফাঁস শেখ হাসিনার সঙ্গে কী পরিকল্পনা করছিলেন শাওন ? এবার আটক অভিনেত্রী সোহানা সাবা অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন আটক শেখ হাসিনার ফাঁদে পড়ে আরও ক্ষয়ে যাচ্ছে আ. লীগ হাসিনা-রেহানাকে শেয়ারবাজারের ৩ লাখ কোটি টাকা দেন শিবলী রুবাইয়াত হাসিনার ভাষণের মুখোমুখি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন! শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কী বলছে আওয়ামী লীগ? হাসিনা-রেহানাদের ৪ বাগানবাড়ি, আছে ডুপ্লেক্স ভবন, শানবাঁধানো ঘাট, পুকুর বাংলাদেশ ব্যাংকের সব কর্মকর্তার লকার ফ্রিজ তিতুমীর আন্দোলনের পেছনে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ শেখ হাসিনাকে রেখেই ফিরছে আওয়ামী লীগ? শেখ হাসিনাকন্যা পুতুলের আড়াই মিনিটের নাচের ভিডিও ভাইরাল হাসিনার সাথে ভারতে গোপন বৈঠক করলেন ওবায়দুল কাদের লাল গালিচায় খালে নেমে খননের উদ্বোধন তিন উপদেষ্টার প্রধান উপদেষ্টা হতে রাজি হওয়ার আগে–পরে কী ঘটেছিল, জানালেন ইউনূস

ওষুধ খাওয়ার নিয়ম কানুন

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৯:০৭:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 32
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কিছু ওষুধ সেবনের নিয়ম-কানুন

কিছু ওষুধ সেবনের নিয়ম-কানুন:

১. ব্যাথানাশক ওষুধ, যেমন: ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম, ন্যাপ্রোক্সেন, আইবুপ্রোফেন, অ্যাসপিরিন ও কিটোরোলাক ইত্যাদি ভরা পেটে গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় অন্ত্র ফুটো হয়ে যেতে পারে।

২. প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর, যেমন: ওমিপ্রাজল, প্যান্টোপ্রাজল, ইসোমেপ্রাজল ইত্যাদি খাবারের আগে সেবন করতে হবে।

৩. ঠাণ্ডা-সর্দি বা অ্যালার্জির জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন, যেমন: লোরাটাডিন, সেটিরিজিন, ফেক্সোফেনাডিন খালি পেটে গ্রহণ করলে এর কার্যকারিতা বেশি হয়।

৪. অ্যান্টাসিড খাবারের পর না খেয়ে ৩০ মিনিট পর খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

৫. সিপ্রোফ্লক্সাসিন খাবার খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি দিয়ে সেবন করাই ভালো। সিপ্রোফ্লক্সাসিন গ্রহণের ২ ঘণ্টার মধ্যে দুগ্ধজাত খাবার বা ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম, আয়রন বা জিংকযুক্ত খাবার খাওয়া উচিৎ না।

৬. ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট, আয়রন ট্যাবলেট, মাল্টিভিটামিন খাবার কয়েক ঘণ্টা আগে বা পরে সেবন করতে পারেন।

৭. পেনিসিলিন খালি পেটে সেবন করাই ভালো।

৮. কিছু ওষুধ, যেমন কোট্রিম সেবন করলে বেশি পরিমাণে পানি পান করতে হবে। না হলে এটি কিডনিতে পাথর তৈরি করে সমস্যা করতে পারে।

৯. একসঙ্গে বেশ কয়েকটি ওষুধ সেবন করলে ওষুধের মধ্যে প্রতিক্রিয়ায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে ওষুধের কার্যকারিতা কমতে পারে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে ওষুধের কার্যকারিতা বাড়তে পারে। এ দুটোই বেশ ক্ষতিকর। তাই এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মানতে হবে।

১০. হাঁপানি আছে এমন ব্যক্তির ব্যথানাশক ওষুধ, বিটা ব্লকার-এটেনোলল, প্রোপানোলল সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ১১. গর্ভাবস্থায় ওষুধ সেবন গর্ভধারণ ও ভ্রূণের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। থ্যালিডোমাইড, রেটিনয়েড, ক্যান্সারের ওষুধ সেবন করলে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হতে পারে। গর্ভকালীন টেট্রাসাইক্লিন শিশুর দাঁত ও হাড়ের গঠনে বাধা দেয়। গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ওষুধ শিশুর হাইপোগ্লাইসেমিয়া করে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। তাই এ সময় ইনসুলিন নিতে হয়।

অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খাবেন।

অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের ক্ষেত্রে প্রায় সবার মধ্যেই একটি অভ্যাস লক্ষ্য করা যায়। তা হলো অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে একটা গ্যাসের ওষুধ বা অ্যান্টি–আলসার ওষুধ সেবন। প্রশ্ন হলো, সব অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গেই কি গ্যাসের ওষুধ খেতে হবে? যদি না হয়, তাহলে কোন কোন অ্যান্টিবায়োটিক খেলে গ্যাসের ওষুধ খেতে হবে? চলুন জেনে নিই।

১. অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধ মূলত নিঃসৃত অ্যাসিড প্রশমিত করে। সেইসঙ্গে অ্যাসিড নিঃসরণ হ্রাস করে। সুতরাং গ্যাসের ওষুধ বা অ্যান্টি–আলসার ওষুধ শুধু সে সব ওষুধের সঙ্গেই খেতে হবে, যা অ্যাসিড নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়।

২. যেসব ওষুধ সেবনের ফলে পেট ভরা ভরা লাগে, বুকের জ্বালাপোড়া বৃদ্ধি পায় বা বমি বমি ভাব বা ক্ষুধামান্দ্য বৃদ্ধি পায়, সেগুলোর সঙ্গেও মাঝেমধ্যে প্রয়োজনে খাওয়া যেতে পারে। এ কারণেই কোন কোন ওষুধের সঙ্গে সাময়িকভাবে গ্যাসের ওষুধ দেওয়া হয়। যেমন ব্যথার ওষুধ, স্টেরয়েড, হার্টের ওষুধ, রক্ত পাতলা করার ওষুধ, আয়রন ট্যাবলেট, কিছু অ্যান্টিবায়োটিক যেমনা টেট্রাসাইক্লিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন ইত্যাদি।

অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধ কেন খাবারের আগে খেতে হবে?

খাবারের পরে অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধ খেলে এর কার্যকারিতা ৫০ শতাংশ কমে যায়। তাই এটি খাবারের অন্তত আধঘণ্টা আগে খেতে হবে। একান্তই যদি খাওয়ার আগে ওষুধ খেতে মনে না থাকে, তাহলে খাওয়ার আধঘণ্টা পরে খাওয়া যেতে পারে। তবে তাতে কার্যকারিতা প্রায় অর্ধেক কমে যায়।

যত্রতত্র অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধ সেবনের ফলে কী কী সম্যাসা হতে পারে?

১. পাকস্থলীর উপকারী ও প্রয়োজনীয় ব্যাক্টেরিয়া মারা যায়।

২. ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, আয়রন ইত্যাদি হজমে সমস্যা হয়।

৩. অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধের প্রভাবে অন্য ওষুধের কার্যকারিতা হ্রাস পেতে পারে।

তাই অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধ সেবনের ব্যাপারে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা পরিহার করে এই ওষুধের সঠিক ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে হবে।

ওষুধ খাওয়ার  কিছু গুরত্বপূর্ণ নিয়ম

 

 

 

ওষুধ খাওয়ার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত জানুন

ওষুধ খেলেই ভালো হয়ে যাব, এমন ধারণা ঠিক নয়। কারণ ভুল নিয়মে ওষুধ গ্রহণের ফলে হিতে বিপরীত হতে পারে। ওষুধ গ্রহণের নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ

ওষুধ গ্রহণে হেরফের হলে অনেক সময় প্রত্যাশিত ফল পাওয়া কঠিন হয়। তাই এ ব্যাপারে চারটি নিয়ম মানা খুব জরুরি।

* প্রতিদিন ব্যবস্থাপত্রে নির্দেশিত ওষুধ একই মাত্রায় একই সময় গ্রহণ করতে হবে।

* কোনো বেলার ওষুধ বাদ দেওয়া যাবে না, বা অর্ধেক খাওয়া যাবে না।

* ব্যবস্থাপত্রে নির্দেশিত সময় বা কাল পর্যন্ত ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। নিজে থেকে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করা যাবে না।

অনেকে একটু ভালো বোধ করলে অ্যান্টিবায়োটিক বা প্রেশারের ওষুধ বা ডায়াবেটিসের ওষুধ গ্রহণ নিজে থেকে বন্ধ করেন, যা মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনে।
* অন্য ব্যক্তির জন্য ব্যবস্থাপত্র দেওয়া ওষুধ গ্রহণ করা যাবে না। ডাক্তারের নির্দেশমতো ওষুধ গ্রহণ খুব জরুরি।

যখন-তখন ব্যথার ওষুধ নয়

জ্বর ১০১-এর বেশি না হলেও নাপাজাতীয় ওষুধ খান অনেকে।

ব্যথা কমানোর ওষুধ মাত্রা ছাড়া দীর্ঘদিন গ্রহণে কিডনি আর লিভারের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। অনেক সময় কিডনি বিকল হয়। তাই প্যারাসিটামল বেশি খাওয়ার চেয়ে ব্যথা সহ্য করা উত্তম। যদি বাধ্য হয়ে খেতেই হয়, তবে ওষুধ ভরা পেটে খাওয়া ভালো।
পানি দিয়েই ওষুধ খান

শুধু পানি দিয়ে ওষুধ গ্রহণ বিধেয়।

অনেকে চা বা জুসের সঙ্গে ওষুধ সেবন করেন যা ক্ষতিকর। চায়ে আছে ক্যাফেইন, ট্যানিন তাই এসব রাসায়নিক ওষুধের সঙ্গে মিলে ওষুধের কার্যকারিতা কমিয়ে দেবে আর জুসের সঙ্গে খেলে ওষুধের কার্যকারিতা কমে। শরীরের ওষুধ শুষে নেওয়ার ক্ষমতা খর্ব হয়। জুস খেতে হলে আগে বা পরে পান করতে হবে। ওষুধের সঙ্গে নয়।
করণীয়

* খাওয়ার অন্তত ১০ মিনিট আগে ওষুধ খাবেন। দুই মিনিট আগে নয়।

* অনেকে একটু সুস্থ বোধ করলে ছেড়ে দেন ওষুধ, কিন্তু এতে ভয়ানক ক্ষতি হয়। জীবাণু দুর্বল হলে ভালো বোধ করে মানুষ। এর অর্থ এই নয় যে, শরীর সুস্থ হয়েছে। এতে যে ক্ষতি তা হলো জীবাণু হয় ওষুধ প্রতিরোধী। পরে এর সংক্রমণ হলে সেই ওষুধে কাজ হয় না। তাই কোর্স সম্পূর্ণ করতেই হবে।

* ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খালি পেটে খাওয়া যাবে না। ভরপেটে খেতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ওষুধ খাওয়ার নিয়ম কানুন

আপডেট সময় : ০৯:০৭:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫

কিছু ওষুধ সেবনের নিয়ম-কানুন

কিছু ওষুধ সেবনের নিয়ম-কানুন:

১. ব্যাথানাশক ওষুধ, যেমন: ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম, ন্যাপ্রোক্সেন, আইবুপ্রোফেন, অ্যাসপিরিন ও কিটোরোলাক ইত্যাদি ভরা পেটে গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় অন্ত্র ফুটো হয়ে যেতে পারে।

২. প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর, যেমন: ওমিপ্রাজল, প্যান্টোপ্রাজল, ইসোমেপ্রাজল ইত্যাদি খাবারের আগে সেবন করতে হবে।

৩. ঠাণ্ডা-সর্দি বা অ্যালার্জির জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন, যেমন: লোরাটাডিন, সেটিরিজিন, ফেক্সোফেনাডিন খালি পেটে গ্রহণ করলে এর কার্যকারিতা বেশি হয়।

৪. অ্যান্টাসিড খাবারের পর না খেয়ে ৩০ মিনিট পর খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

৫. সিপ্রোফ্লক্সাসিন খাবার খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি দিয়ে সেবন করাই ভালো। সিপ্রোফ্লক্সাসিন গ্রহণের ২ ঘণ্টার মধ্যে দুগ্ধজাত খাবার বা ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম, আয়রন বা জিংকযুক্ত খাবার খাওয়া উচিৎ না।

৬. ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট, আয়রন ট্যাবলেট, মাল্টিভিটামিন খাবার কয়েক ঘণ্টা আগে বা পরে সেবন করতে পারেন।

৭. পেনিসিলিন খালি পেটে সেবন করাই ভালো।

৮. কিছু ওষুধ, যেমন কোট্রিম সেবন করলে বেশি পরিমাণে পানি পান করতে হবে। না হলে এটি কিডনিতে পাথর তৈরি করে সমস্যা করতে পারে।

৯. একসঙ্গে বেশ কয়েকটি ওষুধ সেবন করলে ওষুধের মধ্যে প্রতিক্রিয়ায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে ওষুধের কার্যকারিতা কমতে পারে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে ওষুধের কার্যকারিতা বাড়তে পারে। এ দুটোই বেশ ক্ষতিকর। তাই এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মানতে হবে।

১০. হাঁপানি আছে এমন ব্যক্তির ব্যথানাশক ওষুধ, বিটা ব্লকার-এটেনোলল, প্রোপানোলল সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ১১. গর্ভাবস্থায় ওষুধ সেবন গর্ভধারণ ও ভ্রূণের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। থ্যালিডোমাইড, রেটিনয়েড, ক্যান্সারের ওষুধ সেবন করলে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হতে পারে। গর্ভকালীন টেট্রাসাইক্লিন শিশুর দাঁত ও হাড়ের গঠনে বাধা দেয়। গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ওষুধ শিশুর হাইপোগ্লাইসেমিয়া করে মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। তাই এ সময় ইনসুলিন নিতে হয়।

অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খাবেন।

অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের ক্ষেত্রে প্রায় সবার মধ্যেই একটি অভ্যাস লক্ষ্য করা যায়। তা হলো অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে একটা গ্যাসের ওষুধ বা অ্যান্টি–আলসার ওষুধ সেবন। প্রশ্ন হলো, সব অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গেই কি গ্যাসের ওষুধ খেতে হবে? যদি না হয়, তাহলে কোন কোন অ্যান্টিবায়োটিক খেলে গ্যাসের ওষুধ খেতে হবে? চলুন জেনে নিই।

১. অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধ মূলত নিঃসৃত অ্যাসিড প্রশমিত করে। সেইসঙ্গে অ্যাসিড নিঃসরণ হ্রাস করে। সুতরাং গ্যাসের ওষুধ বা অ্যান্টি–আলসার ওষুধ শুধু সে সব ওষুধের সঙ্গেই খেতে হবে, যা অ্যাসিড নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়।

২. যেসব ওষুধ সেবনের ফলে পেট ভরা ভরা লাগে, বুকের জ্বালাপোড়া বৃদ্ধি পায় বা বমি বমি ভাব বা ক্ষুধামান্দ্য বৃদ্ধি পায়, সেগুলোর সঙ্গেও মাঝেমধ্যে প্রয়োজনে খাওয়া যেতে পারে। এ কারণেই কোন কোন ওষুধের সঙ্গে সাময়িকভাবে গ্যাসের ওষুধ দেওয়া হয়। যেমন ব্যথার ওষুধ, স্টেরয়েড, হার্টের ওষুধ, রক্ত পাতলা করার ওষুধ, আয়রন ট্যাবলেট, কিছু অ্যান্টিবায়োটিক যেমনা টেট্রাসাইক্লিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন ইত্যাদি।

অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধ কেন খাবারের আগে খেতে হবে?

খাবারের পরে অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধ খেলে এর কার্যকারিতা ৫০ শতাংশ কমে যায়। তাই এটি খাবারের অন্তত আধঘণ্টা আগে খেতে হবে। একান্তই যদি খাওয়ার আগে ওষুধ খেতে মনে না থাকে, তাহলে খাওয়ার আধঘণ্টা পরে খাওয়া যেতে পারে। তবে তাতে কার্যকারিতা প্রায় অর্ধেক কমে যায়।

যত্রতত্র অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধ সেবনের ফলে কী কী সম্যাসা হতে পারে?

১. পাকস্থলীর উপকারী ও প্রয়োজনীয় ব্যাক্টেরিয়া মারা যায়।

২. ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, আয়রন ইত্যাদি হজমে সমস্যা হয়।

৩. অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধের প্রভাবে অন্য ওষুধের কার্যকারিতা হ্রাস পেতে পারে।

তাই অ্যান্টি–আলসার বা গ্যাসের ওষুধ সেবনের ব্যাপারে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা পরিহার করে এই ওষুধের সঠিক ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে হবে।

ওষুধ খাওয়ার  কিছু গুরত্বপূর্ণ নিয়ম

 

 

 

ওষুধ খাওয়ার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত জানুন

ওষুধ খেলেই ভালো হয়ে যাব, এমন ধারণা ঠিক নয়। কারণ ভুল নিয়মে ওষুধ গ্রহণের ফলে হিতে বিপরীত হতে পারে। ওষুধ গ্রহণের নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ

ওষুধ গ্রহণে হেরফের হলে অনেক সময় প্রত্যাশিত ফল পাওয়া কঠিন হয়। তাই এ ব্যাপারে চারটি নিয়ম মানা খুব জরুরি।

* প্রতিদিন ব্যবস্থাপত্রে নির্দেশিত ওষুধ একই মাত্রায় একই সময় গ্রহণ করতে হবে।

* কোনো বেলার ওষুধ বাদ দেওয়া যাবে না, বা অর্ধেক খাওয়া যাবে না।

* ব্যবস্থাপত্রে নির্দেশিত সময় বা কাল পর্যন্ত ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। নিজে থেকে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করা যাবে না।

অনেকে একটু ভালো বোধ করলে অ্যান্টিবায়োটিক বা প্রেশারের ওষুধ বা ডায়াবেটিসের ওষুধ গ্রহণ নিজে থেকে বন্ধ করেন, যা মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনে।
* অন্য ব্যক্তির জন্য ব্যবস্থাপত্র দেওয়া ওষুধ গ্রহণ করা যাবে না। ডাক্তারের নির্দেশমতো ওষুধ গ্রহণ খুব জরুরি।

যখন-তখন ব্যথার ওষুধ নয়

জ্বর ১০১-এর বেশি না হলেও নাপাজাতীয় ওষুধ খান অনেকে।

ব্যথা কমানোর ওষুধ মাত্রা ছাড়া দীর্ঘদিন গ্রহণে কিডনি আর লিভারের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। অনেক সময় কিডনি বিকল হয়। তাই প্যারাসিটামল বেশি খাওয়ার চেয়ে ব্যথা সহ্য করা উত্তম। যদি বাধ্য হয়ে খেতেই হয়, তবে ওষুধ ভরা পেটে খাওয়া ভালো।
পানি দিয়েই ওষুধ খান

শুধু পানি দিয়ে ওষুধ গ্রহণ বিধেয়।

অনেকে চা বা জুসের সঙ্গে ওষুধ সেবন করেন যা ক্ষতিকর। চায়ে আছে ক্যাফেইন, ট্যানিন তাই এসব রাসায়নিক ওষুধের সঙ্গে মিলে ওষুধের কার্যকারিতা কমিয়ে দেবে আর জুসের সঙ্গে খেলে ওষুধের কার্যকারিতা কমে। শরীরের ওষুধ শুষে নেওয়ার ক্ষমতা খর্ব হয়। জুস খেতে হলে আগে বা পরে পান করতে হবে। ওষুধের সঙ্গে নয়।
করণীয়

* খাওয়ার অন্তত ১০ মিনিট আগে ওষুধ খাবেন। দুই মিনিট আগে নয়।

* অনেকে একটু সুস্থ বোধ করলে ছেড়ে দেন ওষুধ, কিন্তু এতে ভয়ানক ক্ষতি হয়। জীবাণু দুর্বল হলে ভালো বোধ করে মানুষ। এর অর্থ এই নয় যে, শরীর সুস্থ হয়েছে। এতে যে ক্ষতি তা হলো জীবাণু হয় ওষুধ প্রতিরোধী। পরে এর সংক্রমণ হলে সেই ওষুধে কাজ হয় না। তাই কোর্স সম্পূর্ণ করতেই হবে।

* ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খালি পেটে খাওয়া যাবে না। ভরপেটে খেতে হবে।