চারটি প্রদেশ নিয়ে গঠিত হবে নতুন বাংলাদেশ!

- আপডেট সময় : ০৫:১২:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫
- / 57
দেশের চারটি পুরোনো বিভাগকে প্রদেশে রূপান্তরের সুপারিশের কথা বিবেচনা করছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। কমিশন মনে করে, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো কেন্দ্রের হাতে রেখে অন্যান্য বিষয়ের ব্যবস্থাপনা প্রদেশগুলোকে দেওয়া যেতে পারে।
গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সংবিধান, নির্বাচন, পুলিশ, ও দুর্নীতি দমন কমিশনসংক্রান্ত সংস্কার কমিশন তাদের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে। যদিও পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে তাদের সম্ভাব্য কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। এর মধ্যে চারটি প্রদেশ গঠনের প্রস্তাবও রয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের অন্যতম প্রস্তাব হলো বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে চারটি প্রদেশ করা। এগুলো হলো ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, ও খুলনা। তবে প্রদেশগুলোর পরিচালনা কাঠামো এবং কার্যক্রম কী হবে, সে বিষয়ে এখনও বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
কমিশনের একটি সূত্র বলেছে, বিষয়টি এখনও আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে এবং কোনো সুপারিশ চূড়ান্ত হয়নি। প্রদেশ গঠনের বিষয়টি সংবিধানের সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ায় এ বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা দিতে সময় লাগবে।
বাংলাদেশে প্রদেশ গঠনের আলোচনা নতুন নয়। অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন তার একটি লেখায় পাঁচটি প্রদেশ করার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে ১৭ কোটি জনসংখ্যার জন্য বিকেন্দ্রীকরণ জরুরি। একটি ফেডারেল কাঠামোর অধীনে অন্তত পাঁচটি প্রদেশ গঠন করলে জনগণের কাছে সরকারকে পৌঁছানো সহজ হবে।” তার প্রস্তাবনায় প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, ও যোগাযোগের মতো বিষয়গুলো কেন্দ্রের হাতে রাখার কথা উল্লেখ করা হয়।
তবে প্রদেশ গঠনের এই ধারণা নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ। তিনি মনে করেন, “বাংলাদেশ একটি ভৌগোলিকভাবে ছোট দেশ। এখানে ভাষা ও সংস্কৃতিগত বিভাজন না থাকায় প্রদেশের প্রয়োজন নেই। বরং স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করলেই কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব।”
বর্তমানে দেশে আটটি প্রশাসনিক বিভাগ রয়েছে: ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর, ও ময়মনসিংহ। কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার আলোচনাও চলমান।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের স্বায়ত্তশাসনের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, দেশের সব বিভাগে হাইকোর্ট বিভাগের সমান এখতিয়ারসম্পন্ন স্থায়ী আসন চালুরও সুপারিশ করা হয়েছে।