এদিকে অনুমতিহীনভাবে পাঠদান বন্ধ রেখে সমাবেশের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। অভিভাবকদের অভিযোগ, জেলা পরিষদ মিলনায়তন বা শহরের অন্য কোনো মিলনায়তনে সম্মেলন হলে স্কুল বন্ধ রাখার প্রয়োজন হতো না।
জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেন কি, আর নেতারা করেন কি!
- আপডেট সময় : ০৭:১৩:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জুন ২০২২ ৪০ বার পড়া হয়েছে
শুধু তাই নয়, একই জেলার চন্দ্রগঞ্জ হাজিরপাড়া হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সদ্য সমাপ্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের দাপটে ভরাডুবি হয়েছে দল মনোনীত প্রার্থীদের। আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ফরিদপুর, রাজবাড়ী, নীলফামারী, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, টাঙ্গাইল, রাঙামাটি, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে দলের বিদ্রোহীদের কাছে আওয়ামী লীগের অধিকাংশ প্রার্থী হেরে গেছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তৃণমূল গোছানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা হাততালি পাওয়ার আশায় কর্মী সমাবেশে বলেন, শেখ হাসিনার বাইরে কারো মাইম্যান দিয়ে বলয় গড়তে দেয়া যাবে না। আমরা বিভিন্ন জেলায় দেখেছি যারা নেতৃত্বে থাকেন তারা মাইম্যান দিয়ে বলয় তৈরি করতে চান। এই অভ্যাস পরিহার করতে হবে। আমরা সকলেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, আমরা শেখ হাসিনার কর্মী। এখানে বলয় থাকবে একটাই, শেখ হাসিনার বলয়। শেখ হাসিনার বাইরে কারোর ব্যক্তিগত মাইম্যান, বলয় গড়ে ওঠতে দেয়া যাবে না। কিন্তু বাস্তবতা কিন্তু ভিন্ন কথা বলে। প্রত্যেকেই নিজের পকেটের লোক দিয়ে কমিটি করেন। সেখানে বারবার উপেক্ষিত হয় জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা।
দীর্ঘ ১৯ বছর পর লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে রফিকুল হায়দার বাবুল পাঠানকে। কে এই বাবুল পাঠান ? লক্ষীপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি আমার হাতে এসেছে। চিঠিটা বেশ কয়েকবার পড়লাম। চিঠির কয়েকটি লাইন হুবহু এরকম -পৌর নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরূদ্ধে গৃহীত দলীয় সিদ্ধান্ত: সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (দায়িত্ব প্রাপ্ত চট্টগ্রাম বিভাগ) এর মৌখিক নির্দেশনায় রায়পুর পৌর নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী লক্ষীপুর জেলা ও রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জনাব রফিকুল হায়দার বাবুল পাঠানকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সংগঠন থেকে বহিস্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সে মোতাবেক উক্ত বিদ্রোহী প্রার্থীকে দল থেকে বহিস্কার করা হইলো।
এখানেই উনার কীর্তি শেষ নয়। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক জনাব হারুনুর রশীদের বিরূদ্ধে প্রার্থীতা বাতিলের জন্য বিভিন্ন দফতরে চিঠি চালাচালি এমনকি মামলা পর্যন্ত করেন। এবং নৌকার বিপক্ষে সরাসরি অবস্থান নিয়ে নৌকার প্রার্থীকে হারিয়ে দেন।
অর্ধডজন কেন্দ্রীয় নেতার উপস্থিতিতে দলীয় প্রধানের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে বারবার নৌকার বিরূদ্ধে যে অবস্থান নিয়েছে তার হাতেই তুলে দেওয়া হলো নেতৃত্বের ভার। এটা শুধু অন্যায়ই নয়, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে রীতিমতন প্রতারণা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতা কথায় কথায় দলের সভানেত্রীকে বিক্রি করেন। শেখ হাসিনার দয়ায় পদ পদবী পেয়ে আজ আপনি ক্ষমতাবান, এই সুযোগের অপব্যবহার করবেন না। এর আগে আরো অনেক বড় বড় কুতুবকেই নেত্রী বিশ্বাসভঙ্গের কারণে আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলেছেন। সময় থাকতে সাবধান হোন। নেত্রীকে অন্ধকারে রেখে আর কত ?
কর্মীবান্ধব দেশরত্ন শেখ হাসিনার মাথার মুকুট এই তৃণমূলের কর্মীরা। এই তৃণমূলের ঘাম শ্রমেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ টানা ক্ষমতায়। আপনাদের মতন চামবাজ নেতারা নেত্রীকে ক্ষমতায় আনেন নি। নেত্রীর বডি ল্যাংগুয়েজ এবং চোখের ভাষা পড়ার চেষ্টা করেন। অনেক হয়েছে, দয়া করে এবার থামেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেন কি, আর আপনারা করেন কি !
লেখক: সম্পাদক, বিবার্তা২৪ডটনেট ও পরিচালক, জাগরণ টিভি