ঢাকা ০৩:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
জাতীয় সরকারের গুঞ্জন ড: মুহাম্মদ ইউনুস ইন্ডিয়ার জায়গামত আঘাত করেছে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় রাজনৈতিক দলের ঐক্য ভারত আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরে বাধ্য: ড. ইউনূস মুন্নী সাহা সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টে বেতনের বাইরে জমা হয় ১৩৪ কোটি জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশকে আ. লীগের দৃষ্টিতে দেখা বন্ধ করতে হবে : ভারতকে নাহিদ ইসলাম “ছাত্রদের ভূমিকা ও রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা” অশান্তির জন্য মহম্মদ ইউনূসকেই দায়ী করলেন শেখ হাসিনা৷ ফেরত চাওয়া হবে শেখ হাসিনাকে, মানতে বাধ্য ভারত: ড. ইউনূস আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্নীতি ও অর্থ পাচার: শ্বেতপত্রে উন্মোচিত সাংবাদিক মুন্নী সাহা গ্রেপ্তার অচিরেই কুমিল্লাকে বিভাগ ঘোষণা: উপদেষ্টা আসিফ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত কেন তথ্যযুদ্ধে নেমেছে? ভারতের দ্বিচারিতা নিন্দনীয় ও আপত্তিকর: আসিফ নজরুল কোটি টাকার বাস ৯০ লাখে বানাবে বিআরটিসি ভয়েস অব আমেরিকার জরিপ: সংখ্যালঘুরা ‘আগের তুলনায় বেশি নিরাপত্তা পাচ্ছে’ বাংলাদেশে ভারতীয় চ্যানেল বন্ধের খবর ভুয়া ধানমন্ডি লেকে হবে ‘বিদ্রোহী চত্বর’ সারজি এবং হাসনাতের গাড়ি চাপা দেয়া ট্রাক ও ট্রাকের ড্রাইভার আটক

জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেন কি, আর নেতারা করেন কি!

বাণী ইয়াসমিন হাসি
  • আপডেট সময় : ০৭:১৩:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জুন ২০২২ ৪০ বার পড়া হয়েছে
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পাঠদান বন্ধ রেখে স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের সম্মেলন। অনেকগুলো ‌অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং জাতীয় দৈনিকের শিরোনাম এটি। খবরে প্রকাশ-লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে পাঠদান বন্ধ রেখে স্কুল মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ মে) সকালে উপজেলার মার্চেন্টস একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে করে একদিনের শিক্ষা কার্যক্রম বঞ্চিত হয়েছেন ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। যার কারণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অভিভাবকরা। 

এদিকে অনুমতিহীনভাবে পাঠদান বন্ধ রেখে সমাবেশের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। অভিভাবকদের অভিযোগ, জেলা পরিষদ মিলনায়তন বা শহরের অন্য কোনো মিলনায়তনে সম্মেলন হলে স্কুল বন্ধ রাখার প্রয়োজন হতো না।

শিক্ষার্থীরাও পাঠদান বঞ্চিত হতো না। তারা আরো বলেন, সম্মেলনকে কেন্দ্র করে এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যালয় মাঠে বিশাল প্যান্ডেল করে মঞ্চ করা হয়। এ কারণে সপ্তাহব্যাপীই শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা বিঘ্নিত হয়েছে। শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রেখে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের বিষয়ে সরকারের নিষেধাজ্ঞা এবং এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন থাকা সত্ত্বেও কিভাবে পাঠদান বন্ধ রেখে এ সম্মেলন করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে কি ? 

শুধু তাই নয়, একই জেলার চন্দ্রগঞ্জ হাজিরপাড়া হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

জাতিকে সারাক্ষণ জ্ঞান দেওয়া কেন্দ্রীয় নেতারা গলার রগ ফুলিয়ে বড় বড় কথা বলে থাকেন এসব জেলা/ উপজেলা কাউন্সিলে। ‌অথচ অনুষ্ঠানস্থলটিই যে তাদের জন্য নিষিদ্ধ এবং সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে তারা জায়গাটি ব্যবহার করছেন সে বিষয়ে তাদের মধ্যে নূন্যতম বোধও অনুপস্থিত। 

সদ্য সমাপ্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের দাপটে ভরাডুবি হয়েছে দল মনোনীত প্রার্থীদের। আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ফরিদপুর, রাজবাড়ী, নীলফামারী, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, টাঙ্গাইল, রাঙামাটি, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে দলের বিদ্রোহীদের কাছে আওয়ামী লীগের অধিকাংশ প্রার্থী হেরে গেছেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তৃণমূল গোছানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

সারাদেশে একযোগে শুরু হয়েছে জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, পৌরসভা ও ইউনিটের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি গঠনের কাজ। তৃণমূলের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আট বিভাগীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক নেতারা ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছেন। সম্মেলনে নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ে ত্যাগী ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির পুরোনোদের ফের গুরুত্ব দেয়া হবে এমন ঘোষণাই বারবার দলীয় ফোরামে এবং গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। 

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা হাততালি পাওয়ার আশায় কর্মী সমাবেশে বলেন, শেখ হাসিনার বাইরে কারো মাইম্যান দিয়ে বলয় গড়তে দেয়া যাবে না। আমরা বিভিন্ন জেলায় দেখেছি যারা নেতৃত্বে থাকেন তারা মাইম্যান দিয়ে বলয় তৈরি করতে চান। এই অভ্যাস পরিহার করতে হবে। আমরা সকলেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, আমরা শেখ হাসিনার কর্মী। এখানে বলয় থাকবে একটাই, শেখ হাসিনার বলয়। শেখ হাসিনার বাইরে কারোর ব্যক্তিগত মাইম্যান, বলয় গড়ে ওঠতে দেয়া যাবে না। কিন্তু বাস্তবতা কিন্তু ভিন্ন কথা বলে। প্রত্যেকেই নিজের পকেটের লোক দিয়ে কমিটি করেন। সেখানে বারবার উপেক্ষিত হয় জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা।

দীর্ঘ ১৯ বছর পর লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে রফিকুল হায়দার বাবুল পাঠানকে। কে এই বাবুল পাঠান ? লক্ষীপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি আমার হাতে এসেছে। চিঠিটা বেশ কয়েকবার পড়লাম। চিঠির কয়েকটি লাইন হুবহু এরকম -পৌর নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরূদ্ধে গৃহীত দলীয় সিদ্ধান্ত: সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (দায়িত্ব প্রাপ্ত চট্টগ্রাম বিভাগ) এর মৌখিক নির্দেশনায় রায়পুর পৌর নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী লক্ষীপুর জেলা ও রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জনাব রফিকুল হায়দার বাবুল পাঠানকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সংগঠন থেকে বহিস্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সে মোতাবেক উক্ত বিদ্রোহী প্রার্থীকে দল থেকে বহিস্কার করা হইলো।

এখানেই উনার কীর্তি শেষ নয়। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক জনাব হারুনুর রশীদের বিরূদ্ধে প্রার্থীতা বাতিলের জন্য বিভিন্ন দফতরে চিঠি চালাচালি এমনকি মামলা পর্যন্ত করেন। এবং নৌকার বিপক্ষে সরাসরি অবস্থান নিয়ে নৌকার প্রার্থীকে হারিয়ে দেন।

অর্ধডজন কেন্দ্রীয় নেতার উপস্থিতিতে দলীয় প্রধানের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে বারবার নৌকার বিরূদ্ধে যে অবস্থান নিয়েছে তার হাতেই তুলে দেওয়া হলো নেতৃত্বের ভার। এটা শুধু অন্যায়ই নয়, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে রীতিমতন প্রতারণা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতা কথায় কথায় দলের সভানেত্রীকে বিক্রি করেন। শেখ হাসিনার দয়ায় পদ পদবী পেয়ে আজ আপনি ক্ষমতাবান, এই সুযোগের অপব্যবহার করবেন না। এর আগে আরো অনেক বড় বড় কুতুবকেই নেত্রী বিশ্বাসভঙ্গের কারণে আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলেছেন। সময় থাকতে সাবধান হোন। নেত্রীকে অন্ধকারে রেখে আর কত ?

কর্মীবান্ধব দেশরত্ন শেখ হাসিনার মাথার মুকুট এই তৃণমূলের কর্মীরা। এই তৃণমূলের ঘাম শ্রমেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ টানা ক্ষমতায়। আপনাদের মতন চামবাজ নেতারা নেত্রীকে ক্ষমতায় আনেন নি। নেত্রীর বডি ল্যাংগুয়েজ এবং চোখের ভাষা পড়ার চেষ্টা করেন। অনেক হয়েছে, দয়া করে এবার থামেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেন কি, আর আপনারা করেন কি !

লেখক: সম্পাদক, বিবার্তা২৪ডটনেট ও পরিচালক, জাগরণ টিভি

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেন কি, আর নেতারা করেন কি!

আপডেট সময় : ০৭:১৩:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জুন ২০২২

পাঠদান বন্ধ রেখে স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগের সম্মেলন। অনেকগুলো ‌অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং জাতীয় দৈনিকের শিরোনাম এটি। খবরে প্রকাশ-লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে পাঠদান বন্ধ রেখে স্কুল মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ মে) সকালে উপজেলার মার্চেন্টস একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দিনব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এতে করে একদিনের শিক্ষা কার্যক্রম বঞ্চিত হয়েছেন ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। যার কারণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অভিভাবকরা। 

এদিকে অনুমতিহীনভাবে পাঠদান বন্ধ রেখে সমাবেশের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। অভিভাবকদের অভিযোগ, জেলা পরিষদ মিলনায়তন বা শহরের অন্য কোনো মিলনায়তনে সম্মেলন হলে স্কুল বন্ধ রাখার প্রয়োজন হতো না।

শিক্ষার্থীরাও পাঠদান বঞ্চিত হতো না। তারা আরো বলেন, সম্মেলনকে কেন্দ্র করে এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যালয় মাঠে বিশাল প্যান্ডেল করে মঞ্চ করা হয়। এ কারণে সপ্তাহব্যাপীই শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা বিঘ্নিত হয়েছে। শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রেখে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের বিষয়ে সরকারের নিষেধাজ্ঞা এবং এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন থাকা সত্ত্বেও কিভাবে পাঠদান বন্ধ রেখে এ সম্মেলন করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে কি ? 

শুধু তাই নয়, একই জেলার চন্দ্রগঞ্জ হাজিরপাড়া হামিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

জাতিকে সারাক্ষণ জ্ঞান দেওয়া কেন্দ্রীয় নেতারা গলার রগ ফুলিয়ে বড় বড় কথা বলে থাকেন এসব জেলা/ উপজেলা কাউন্সিলে। ‌অথচ অনুষ্ঠানস্থলটিই যে তাদের জন্য নিষিদ্ধ এবং সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে তারা জায়গাটি ব্যবহার করছেন সে বিষয়ে তাদের মধ্যে নূন্যতম বোধও অনুপস্থিত। 

সদ্য সমাপ্ত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের দাপটে ভরাডুবি হয়েছে দল মনোনীত প্রার্থীদের। আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ফরিদপুর, রাজবাড়ী, নীলফামারী, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, টাঙ্গাইল, রাঙামাটি, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে দলের বিদ্রোহীদের কাছে আওয়ামী লীগের অধিকাংশ প্রার্থী হেরে গেছেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তৃণমূল গোছানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

সারাদেশে একযোগে শুরু হয়েছে জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, পৌরসভা ও ইউনিটের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি গঠনের কাজ। তৃণমূলের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আট বিভাগীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক নেতারা ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছেন। সম্মেলনে নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ে ত্যাগী ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির পুরোনোদের ফের গুরুত্ব দেয়া হবে এমন ঘোষণাই বারবার দলীয় ফোরামে এবং গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। 

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা হাততালি পাওয়ার আশায় কর্মী সমাবেশে বলেন, শেখ হাসিনার বাইরে কারো মাইম্যান দিয়ে বলয় গড়তে দেয়া যাবে না। আমরা বিভিন্ন জেলায় দেখেছি যারা নেতৃত্বে থাকেন তারা মাইম্যান দিয়ে বলয় তৈরি করতে চান। এই অভ্যাস পরিহার করতে হবে। আমরা সকলেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, আমরা শেখ হাসিনার কর্মী। এখানে বলয় থাকবে একটাই, শেখ হাসিনার বলয়। শেখ হাসিনার বাইরে কারোর ব্যক্তিগত মাইম্যান, বলয় গড়ে ওঠতে দেয়া যাবে না। কিন্তু বাস্তবতা কিন্তু ভিন্ন কথা বলে। প্রত্যেকেই নিজের পকেটের লোক দিয়ে কমিটি করেন। সেখানে বারবার উপেক্ষিত হয় জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা।

দীর্ঘ ১৯ বছর পর লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে রফিকুল হায়দার বাবুল পাঠানকে। কে এই বাবুল পাঠান ? লক্ষীপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি আমার হাতে এসেছে। চিঠিটা বেশ কয়েকবার পড়লাম। চিঠির কয়েকটি লাইন হুবহু এরকম -পৌর নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরূদ্ধে গৃহীত দলীয় সিদ্ধান্ত: সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (দায়িত্ব প্রাপ্ত চট্টগ্রাম বিভাগ) এর মৌখিক নির্দেশনায় রায়পুর পৌর নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী লক্ষীপুর জেলা ও রায়পুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য জনাব রফিকুল হায়দার বাবুল পাঠানকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সংগঠন থেকে বহিস্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সে মোতাবেক উক্ত বিদ্রোহী প্রার্থীকে দল থেকে বহিস্কার করা হইলো।

এখানেই উনার কীর্তি শেষ নয়। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক জনাব হারুনুর রশীদের বিরূদ্ধে প্রার্থীতা বাতিলের জন্য বিভিন্ন দফতরে চিঠি চালাচালি এমনকি মামলা পর্যন্ত করেন। এবং নৌকার বিপক্ষে সরাসরি অবস্থান নিয়ে নৌকার প্রার্থীকে হারিয়ে দেন।

অর্ধডজন কেন্দ্রীয় নেতার উপস্থিতিতে দলীয় প্রধানের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে বারবার নৌকার বিরূদ্ধে যে অবস্থান নিয়েছে তার হাতেই তুলে দেওয়া হলো নেতৃত্বের ভার। এটা শুধু অন্যায়ই নয়, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে রীতিমতন প্রতারণা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতা কথায় কথায় দলের সভানেত্রীকে বিক্রি করেন। শেখ হাসিনার দয়ায় পদ পদবী পেয়ে আজ আপনি ক্ষমতাবান, এই সুযোগের অপব্যবহার করবেন না। এর আগে আরো অনেক বড় বড় কুতুবকেই নেত্রী বিশ্বাসভঙ্গের কারণে আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলেছেন। সময় থাকতে সাবধান হোন। নেত্রীকে অন্ধকারে রেখে আর কত ?

কর্মীবান্ধব দেশরত্ন শেখ হাসিনার মাথার মুকুট এই তৃণমূলের কর্মীরা। এই তৃণমূলের ঘাম শ্রমেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ টানা ক্ষমতায়। আপনাদের মতন চামবাজ নেতারা নেত্রীকে ক্ষমতায় আনেন নি। নেত্রীর বডি ল্যাংগুয়েজ এবং চোখের ভাষা পড়ার চেষ্টা করেন। অনেক হয়েছে, দয়া করে এবার থামেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেন কি, আর আপনারা করেন কি !

লেখক: সম্পাদক, বিবার্তা২৪ডটনেট ও পরিচালক, জাগরণ টিভি