ঢাবিতে ‘ঘৃণার প্রতীক’ হাসিনার সেই ছবি আবার আঁকা হল
- আপডেট সময় : ০৪:৪৪:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 43
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য সংলগ্ন মেট্রোরেলের পিলারে পতিত শাসক শেখ হাসিনার মুছে ফেলা গ্রাফিতি আবারো আঁকা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এই আঁকার কাজে অংশ নেন।
রোববার রাত ১টায় গ্রাফিতি আঁকা শুরু হয়; সোমবার সকাল পর্যন্ত সেই কাজ চলে।
বিগত সরকারের সময়ে আওয়ামী লীগের প্রচারের অংশ হিসেবে মেট্রোরেলের পিলারে শেখ হাসিনার ওই ছবি আঁকা হয়েছিল। গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ অগাস্টে সরকার পতনের পর শেখ হাসিনার ওই ছবিতে লাল রঙের ছোপ দিয়ে তাতে জুতার মালা পরিয়ে দেওয়া হয়। ছবিটি জনতার ক্ষোভ ও ঘৃণার প্রতীক হয়ে ওঠে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশে শনিবার ছবিটি মুছে ফেলা হলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। একদল শিক্ষার্থী সেখানে শেখ হাসিনার একটি ব্যাঙ্গচিত্র আঁকেন। তবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাদের দাবি ছিল, আগের রূপেই আঁকতে হবে শেখ হাসিনার ছবি।
নতুন করে গ্রাফিতিটি আঁকেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি শিমুল কুম্ভকার, চারুকলা অনুষদের ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য মৃধা রাইয়ান, ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক প্রচার সম্পাদক মমিন মুক্তার সবুজ।
ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ক্রিয়াশীল সকল ছাত্র সংগঠনকে নিয়ে এ গ্রাফিতি আঁকা হয়েছে। এটা একটা ভালো লক্ষণ যে সকলে মিলে এটি করেছে। তবে আগের গ্রাফিতি মুছে ফেলায় ইতিহাসের একটি দলিল মোছা হয়েছে। সেজন্য আমরা প্রশাসনকে এত সহজে ছাড় দিতে পারি না।”
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এ গ্রাফিতি কারো একার সম্পদ নয়, এটা সকলেরই সম্পদ। ৩ অগাস্ট বাংলাদেশের মানুষ প্রাণের ভয় না করে টিএসসিতে এসে শেখ হাসিনার ছবিতে জুতা নিক্ষেপ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। সেই দলিলটা মুছে গেছে।
“প্রক্টর এটা কেন করলেন সেটার জবাব দেওয়া উচিৎ। এখন ছবিটা আঁকা হচ্ছে নতুন করে, তবে আসল জিনিসটা আর থাকল না।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রিফাত রশিদ বলেন, ” শেখ হাসিনার ছবির পরে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিও আঁকা হবে। বেলা ১টায় জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।”
শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দপ্তর রোববার এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মেট্রোরেলের ওই পিলারকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ঘৃণাস্তম্ভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।
“ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার এই ঘৃণাকে যুগ যুগ ধরে সংরক্ষণের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গ্রহণ করবে।”
ছবি মুছে ফেলার কাজটি ‘নিষ্পাপ সিদ্ধান্ত’ ছিল দাবি করে দুঃখ প্রকাশ করেন প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “এটি প্রক্টরিয়াল টিমের অনিচ্ছাকৃত ভুল। এজন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে আমরা আরো সতর্ক থাকার অঙ্গীকার করছি।”