ঢাকা ১১:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
নবাবগঞ্জের প্রয়াত সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নানের সুযোগ্য কন্যা মেহেনাজ মান্নান ইলিশ ধরায় খরচ ৮৩০ টাকা, ভোক্তার গুনতে হয় অন্তত ২ হাজার নির্বাচন কে সামনে রেখে উত্তাল ঢাকা-১ দোহার-নবাবগঞ্জ আসন আটপাড়ায় কালী মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর কেন্দুয়ায় মানবপাচার মামলার আসামীরা রিমান্ডে মাস্টারমাইন্ডের নাম প্রকাশ করেছে ‎ ‎কেন্দুয়ায় মানবপাচারের মামলায় চীনা নাগরিকসহ দুই আসামীকে কারাগারে প্রেরণ কেন্দুয়া থেকে তিন নারীকে চীনে পাচারের চেষ্টা; চীনা নাগরিকসহ আটক দুইজন কেন্দুয়ায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার ৫ ‎কেন্দুয়ায় প্রকল্পের অনিয়ম তদন্তের সময় হাতাহাতি: ইউএনও আহত কেন্দুয়ায় প্রশাসনের অভিযানে অবৈধ জাল ধ্বংস ওসমান হাদী দাবিতে ঘনিষ্ঠ ভিডিও প্রচার, সামনে এলো আসল সত্য ব্লাড মুন দেখা যাবে রোববার, চাঁদ লাল হওয়ার কারণ কী? তিন দলই প্রধান উপদেষ্টার অধীনে নির্বাচন চায়: প্রেস সচিব টিউলিপ বাংলাদেশি এনআইডি ও পাসপোর্টধারী, রয়েছে টিআইএনও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক নববর্ষের অঙ্গীকার: প্রধান উপদেষ্টা নরেন্দ্র মোদিকে উপহার দেওয়া ছবিটি সম্পর্কে যা জানা গেল বিমসটেকের পরবর্তী চেয়ারম্যান ড. ইউনূস বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে মোদির ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন: প্রেসসচিব চীন সফরে সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের বক্তব্যে ভারতে তোলপাড়

‘দিন দ্য ডে’ দেখে কনফিউজড

রোদেলা নীলা
  • আপডেট সময় : ০৫:০৪:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২
  • / 97
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যে সিনেমাটার ভেতর গল্পের কোন কারিশমা নেই, অভিনয়ের ছিটেফোটা নেই সেটা নিয়ে মুভি সমালোচনা আসলেও ভীষণ কঠিন ব্যাপারে। তাই আজ কোন রিভিউ নয়, একেবারেই ব্যক্তিগত মতামিত দেব ‘দিন দ্য ডে’ সিনেমাটি নিয়ে।

দুই ঘন্টা তেইশ মিনিট নয় সেকেন্ড ধরে চোখের সামনে তিনটা দেশ সারাক্ষণ ঘুরে বেড়াচ্ছে— একবার ইরান, একবার আফগানিস্তান, একবার বাংলাদেশ। এর মধ্যে তুরস্ক কখন ইন করেছে, আর কখন আউট করেছে সেটা আমি ধরতে পারিনি।

গল্পের সেতু গাঁথতে চাইছিলাম, ছটকু আহমেদ যেহেতু চিত্রনাট্য করেছেন তিনি অভিজ্ঞ মানুষ; নিশ্চয় জানেন, সিনেমায় গল্প বুনতে হয় অনেকটা ফুলের মালা গাঁথার মতো একটার পর আর একটা (প্রচলিত বাংলা সিনেমায়)। অবশ্য কেউ এই সাধারণ নিয়ম মানবেন আবার কেউ ভাঙতেই পারেন; কিন্তু ইরানি পরিচালক মোর্তেজা অতাশ জমজম, আমাদের অনন্ত জলিল এবং ছটকু আহমেদ মিলে যে ককটেল বানিয়েছেন তা দেখে এটাকে সিনেমা বলতে পারি নাকি অ্যাকশান ডকিউমেন্ট বলতে পারি তা নিয়ে বিরাট কনফিউজড আমি।

সিনেমাতে ১০০ কোটি খরচ হয়েছে নাকি হয়নি তা নিয়ে পুরনো বিতর্কে আর যাব না, তবে এটা নিয়ে দূর্দান্ত মার্কেটিং হয়েছে; দফায় দফায় নিজেদের নিয়ে জাহির করার যে প্রবণতা জলিল আর বর্ষার দেখছি সেটা সত্যি বিস্ময়কর! একটি সিনেমার সাথে আর একটি সিনেমার কোনভাবেই তুলনা চলে না, কারণ সমস্ত সৃষ্টি আলাদা আলাদা। কেউ যদি সত্যি সত্যি হাসতে বা বিনোদন পেতে টিকিট কেটে হলে যাওয়া পছন্দ করেন তার মধ্যে কোন রকম নেতিবাচক কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না। আমি হলে যাবার আগ থেকেই বুঝে গেছি আমার ৩৫০ টাকা, সাথে যাতায়াত ভাড়া আর খাবারের টাকাটা অপচয় হবে, সেটা আমি জেনেই হলে গেছি। অতএব, ‘দিন দ্য ডে’ ব্যবসাসফল ছবি, এই বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই, দ্বিতীয় সপ্তাহেও পুরো হাউজফুল চলছে।

একবার দেখে যে বিষয়গুলো চোখে লাগল

এক. বাংলাদেশ পুলিশকে দেশের বাইরে মিশনে পাঠানোর যে প্রক্রিয়া সেটা পরিচালক-চিত্রনাট্যকার দেখে নিতে পারতেন। পুলিশের চুল + ড্রেস + প্রেজেন্টেশন + রুলস, এমন বিষয়ে অনেক সচেতন হতে হবে, যা মন চায় তাই দেখানো উচিৎ নয়, দেশের পুলিশ প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

দুই. বাংলা সাবটাইটেল দেওয়া থাকলেও বিদেশি অভিনেতারা কেন বাংলায় কথা বলেছেন বুঝিনি।

তিন. একজন লেডি অফিসারকে আরো দক্ষ এবং বিচক্ষণভাবে উপস্থাপন করা যেত; কিন্তু পুরুষকে বেশি চৌকষ দেখাতে গিয়ে নারী চরিত্র ম্লান লেগেছে।

চার. বারবার ফ্লাশব্যাক দেখানোতে গল্পের মূল বিষয়টা ধরতে ব্যর্থ হয়েছে আমার মতো অনেক দর্শক।

পাঁচ. ভিএফএক্স দেখে অনেক সময় আমার মনে হয়েছে টিভিতে কার্টূন দেখছি, কোটি টাকার প্রজেক্টের কাছে আরো অনেক চাওয়া ছিল বিশেষ করে গানের দৃশ্যগুলোতে।

অনন্ত জলিল প্রতি সিনেমায় বাংলাদেশ নিয়ে বেশ পজেটিভ ভাইভ দেন, বিষয়টা ব্যক্তিগতভাবে আমি পছন্দ করি। এটা তিনি চিত্রনাট্যের সংলাপের মাধ্যমে দেন, কিন্তু চিত্রনাট্যকার অনেক বলিষ্ঠ হলে সেটা গল্পে বের করে আনতে পারেন। সিনেমা মানেই তো গল্পের মধ্য দিয়ে সবটা বলে দেওয়া, সেজন্য আলাদা করে দর্শককে পড়া বোঝানোর মতো বাড়তি উপকরণ দেওয়ার দরকার হয় না।

পরিশেষে, এতো এতো কষ্টের টাকায় বানানো একটি সিনেমায় যদি তেমন দক্ষ একজন অভিনেতা-অভিনেত্রীকে কাস্ট করা হতো তাহলে ‘দিন দ্য ডে’ অন্যরকম একটা ফ্লেভার পেতো। অনন্ত জলিল ও বর্ষার প্রতি অনুরোধ— পর্দায় নায়ক-নায়িকা না হয়ে, পর্দার পেছনে কাজ করলে খুব কী ক্ষতি হয়ে যাবে আপনাদের, দর্শকের মনোযোগ যে আপনারা এই জীবনে পেয়ে গেছেন সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।

ভুল ইংরেজি উচ্চারণ, অদ্ভুত ভঙ্গি দেখতে দেখতে এখন একঘেয়ে হয়ে গেছে সব। আসুন, নতুনদের কাজ করবার জায়গাটা ছেড়ে দেই এবার, অনেক তো হলো! বাংলা সিনেমা যুগ যুগ বেঁচে থাকুক নতুন শিল্পীদের হাত ধরে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

‘দিন দ্য ডে’ দেখে কনফিউজড

আপডেট সময় : ০৫:০৪:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২

যে সিনেমাটার ভেতর গল্পের কোন কারিশমা নেই, অভিনয়ের ছিটেফোটা নেই সেটা নিয়ে মুভি সমালোচনা আসলেও ভীষণ কঠিন ব্যাপারে। তাই আজ কোন রিভিউ নয়, একেবারেই ব্যক্তিগত মতামিত দেব ‘দিন দ্য ডে’ সিনেমাটি নিয়ে।

দুই ঘন্টা তেইশ মিনিট নয় সেকেন্ড ধরে চোখের সামনে তিনটা দেশ সারাক্ষণ ঘুরে বেড়াচ্ছে— একবার ইরান, একবার আফগানিস্তান, একবার বাংলাদেশ। এর মধ্যে তুরস্ক কখন ইন করেছে, আর কখন আউট করেছে সেটা আমি ধরতে পারিনি।

গল্পের সেতু গাঁথতে চাইছিলাম, ছটকু আহমেদ যেহেতু চিত্রনাট্য করেছেন তিনি অভিজ্ঞ মানুষ; নিশ্চয় জানেন, সিনেমায় গল্প বুনতে হয় অনেকটা ফুলের মালা গাঁথার মতো একটার পর আর একটা (প্রচলিত বাংলা সিনেমায়)। অবশ্য কেউ এই সাধারণ নিয়ম মানবেন আবার কেউ ভাঙতেই পারেন; কিন্তু ইরানি পরিচালক মোর্তেজা অতাশ জমজম, আমাদের অনন্ত জলিল এবং ছটকু আহমেদ মিলে যে ককটেল বানিয়েছেন তা দেখে এটাকে সিনেমা বলতে পারি নাকি অ্যাকশান ডকিউমেন্ট বলতে পারি তা নিয়ে বিরাট কনফিউজড আমি।

সিনেমাতে ১০০ কোটি খরচ হয়েছে নাকি হয়নি তা নিয়ে পুরনো বিতর্কে আর যাব না, তবে এটা নিয়ে দূর্দান্ত মার্কেটিং হয়েছে; দফায় দফায় নিজেদের নিয়ে জাহির করার যে প্রবণতা জলিল আর বর্ষার দেখছি সেটা সত্যি বিস্ময়কর! একটি সিনেমার সাথে আর একটি সিনেমার কোনভাবেই তুলনা চলে না, কারণ সমস্ত সৃষ্টি আলাদা আলাদা। কেউ যদি সত্যি সত্যি হাসতে বা বিনোদন পেতে টিকিট কেটে হলে যাওয়া পছন্দ করেন তার মধ্যে কোন রকম নেতিবাচক কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না। আমি হলে যাবার আগ থেকেই বুঝে গেছি আমার ৩৫০ টাকা, সাথে যাতায়াত ভাড়া আর খাবারের টাকাটা অপচয় হবে, সেটা আমি জেনেই হলে গেছি। অতএব, ‘দিন দ্য ডে’ ব্যবসাসফল ছবি, এই বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই, দ্বিতীয় সপ্তাহেও পুরো হাউজফুল চলছে।

একবার দেখে যে বিষয়গুলো চোখে লাগল

এক. বাংলাদেশ পুলিশকে দেশের বাইরে মিশনে পাঠানোর যে প্রক্রিয়া সেটা পরিচালক-চিত্রনাট্যকার দেখে নিতে পারতেন। পুলিশের চুল + ড্রেস + প্রেজেন্টেশন + রুলস, এমন বিষয়ে অনেক সচেতন হতে হবে, যা মন চায় তাই দেখানো উচিৎ নয়, দেশের পুলিশ প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

দুই. বাংলা সাবটাইটেল দেওয়া থাকলেও বিদেশি অভিনেতারা কেন বাংলায় কথা বলেছেন বুঝিনি।

তিন. একজন লেডি অফিসারকে আরো দক্ষ এবং বিচক্ষণভাবে উপস্থাপন করা যেত; কিন্তু পুরুষকে বেশি চৌকষ দেখাতে গিয়ে নারী চরিত্র ম্লান লেগেছে।

চার. বারবার ফ্লাশব্যাক দেখানোতে গল্পের মূল বিষয়টা ধরতে ব্যর্থ হয়েছে আমার মতো অনেক দর্শক।

পাঁচ. ভিএফএক্স দেখে অনেক সময় আমার মনে হয়েছে টিভিতে কার্টূন দেখছি, কোটি টাকার প্রজেক্টের কাছে আরো অনেক চাওয়া ছিল বিশেষ করে গানের দৃশ্যগুলোতে।

অনন্ত জলিল প্রতি সিনেমায় বাংলাদেশ নিয়ে বেশ পজেটিভ ভাইভ দেন, বিষয়টা ব্যক্তিগতভাবে আমি পছন্দ করি। এটা তিনি চিত্রনাট্যের সংলাপের মাধ্যমে দেন, কিন্তু চিত্রনাট্যকার অনেক বলিষ্ঠ হলে সেটা গল্পে বের করে আনতে পারেন। সিনেমা মানেই তো গল্পের মধ্য দিয়ে সবটা বলে দেওয়া, সেজন্য আলাদা করে দর্শককে পড়া বোঝানোর মতো বাড়তি উপকরণ দেওয়ার দরকার হয় না।

পরিশেষে, এতো এতো কষ্টের টাকায় বানানো একটি সিনেমায় যদি তেমন দক্ষ একজন অভিনেতা-অভিনেত্রীকে কাস্ট করা হতো তাহলে ‘দিন দ্য ডে’ অন্যরকম একটা ফ্লেভার পেতো। অনন্ত জলিল ও বর্ষার প্রতি অনুরোধ— পর্দায় নায়ক-নায়িকা না হয়ে, পর্দার পেছনে কাজ করলে খুব কী ক্ষতি হয়ে যাবে আপনাদের, দর্শকের মনোযোগ যে আপনারা এই জীবনে পেয়ে গেছেন সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।

ভুল ইংরেজি উচ্চারণ, অদ্ভুত ভঙ্গি দেখতে দেখতে এখন একঘেয়ে হয়ে গেছে সব। আসুন, নতুনদের কাজ করবার জায়গাটা ছেড়ে দেই এবার, অনেক তো হলো! বাংলা সিনেমা যুগ যুগ বেঁচে থাকুক নতুন শিল্পীদের হাত ধরে।