দেশে দিন দিন বাড়ছে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা। সেই সঙ্গে বাড়ছে এসব মোবাইলে টাকা রিচার্জের দোকানও। টাকা রিচার্জের এসব দোকানে আজকাল সিম বিক্রি ছাড়াও গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের বিল দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। তাই অনেক কাজের কাজি এমন একটি দোকান হতে পারে আপনারও।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে দেশে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৯ কোটিরও বেশি। এসব মোবাইল ব্যবহারকারীর জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠেছে মোবাইলে টাকা রিচার্জের দোকান। এসব দোকানে আজকাল শুধু টাকা রিচার্জই নয়; পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল দেওয়ারও ব্যবস্থা আছে। এ ছাড়া আছে মোবাইল ব্যাংকিং। ব্র্যাক ব্যাংকের বিকাশ ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবাও এসব দোকান থেকে দেওয়া হয়। আর খুচরা যন্ত্রাংশ যেমন ইন্টারনেট মডেম, সিম বিক্রি তো আছেই।
যেভাবে শুরু করবেন
এ ব্যবসা করতে খুব বড় দোকান প্রয়োজন হয় না। খুব বেশি সাজসজ্জারও প্রয়োজন নেই। তবে জায়গাটি হতে হবে গুরুত্বপূর্ণ। মোটামুটি লোকসমাগম আছে_এমন একটি স্থানে ৪০০ থেকে ৫০০ বর্গফুট জায়গা হলেই এ ব্যবসা করতে পারবেন। আর পুঁজি হিসেবে দোকানের জামানত ও সাজসজ্জা বাদ দিয়ে প্রথম দিকে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা হলেই চলবে।
যোগ্যতা
আগ্রহী যে কেউ ইচ্ছে করলেই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। তবে মোবাইল ফোন অপারেটর থেকে সিম বিক্রির অনুমোদন পেতে এসএসসি পাস হতে হবে। এ ছাড়া যেসব কাগজপত্র লাগবে তা মোটামুটি সব কম্পানির জন্য একই। যেমন_ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি এবং পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি। তবে অপারেটর ভেদে প্রয়োজন অনুযায়ী দোকানের অবস্থান, মালিকের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা ইত্যাদি যাচাই করার পর সিম বিক্রির অনুমোদন দেওয়া হয়। আর শুধু মোবাইলে টাকা রিচার্জের সিমের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি এবং পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি হলেই চলে।
জামানত লাগবে কী
সিম বিক্রির অনুমতি বা টাকা রিচার্জের সিম নেওয়ার জন্য কোনো জামানত দিতে হয় না। তবে অপারেটর ভেদে সার্ভিস চার্জ বাবদ ৫০ থেকে ২৫০ টাকা দিতে হয়।
আয় কেমন
এক হাজার টাকা মোবাইল রিচার্জের বিনিময়ে কম্পানি থেকে ২৮ টাকা এবং প্রতিটি সিম বিক্রির জন্য ৫০ থেকে ১২৫ টাকা পর্যন্ত কমিশন দেওয়া হয়। তা ছাড়া পানি ও বিদ্যুৎ বিল গ্রহণের জন্য বিলের পরিমাণ ভেদে পাঁচ থেকে ২৫ টাকা কমিশন দেওয়া হয়। স্ক্র্যাচ কার্ডে গ্রামীণফোন এক হাজার টাকায় ২৫ টাকা কমিশন দেয়। গ্রামীণফোন ছাড়া অন্যান্য মোবাইল কম্পানি এবং ইন্টারনেট কম্পানি (কিউবি+বাংলালায়ন) এক হাজার টাকায় ৩০ টাকা কমিশন দেয়।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে ব্র্যাক ব্যাংকের বিকাশ ক্যাশ ইনের জন্য ৫০ থেকে ১০ হাজার ৫০০ টাকায় থাকে ৪৩ পয়সা থেকে ২৩ টাকা ৪৮ পয়সা। আর ক্যাশ আউটের ক্ষেত্রে কমিশন থাকে এক টাকা ৭৪ পয়সা থেকে ৪৬ টাকা ৯৬ পয়সা। ডাচ্-বাংলার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে টাকা জমা দিলে ১০০ টাকায় ৫০ পয়সা এবং টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে ১০০ টাকায় এক টাকা কমিশন থাকে।
কোথায় যোগাযোগ করবেন
সব মোবাইল অপারেটরের এলাকাভেদে ডিস্ট্রিবিউট পয়েন্ট আছে। আগ্রহী ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ডিস্ট্রিবিউট পয়েন্টগুলোয় যোগাযোগ করতে হবে। ডিস্ট্রিবিউটররা ব্যবসার পরিধি এবং কাগজপত্র যাচাই করে সিম দেন। আর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্ট হতে চাইলেও কম্পানিসংশ্লিষ্ট ডিস্ট্রিবিউটরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
রাখতে পারেন আরো কিছু
মোবাইলে টাকা রিচার্জ ও সিম বিক্রি কিংবা মডেম বিক্রির পাশাপাশি মোবাইলের খুচরা যন্ত্রাংশ যেমন_চার্জার, হেডফোনও বিক্রি করতে পারেন। এসব পাইকারি দামে পেতে ঢাকার গুলিস্তান আন্ডারপাসের দোকানগুলোয় যোগাযোগ করতে পারেন।