ঢাকা ১২:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়তেই কে ফোন করে ইউনূসের কাছে! শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক দল গঠন নিয়ে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে যা বললেন ড. ইউনূস বাংলাদেশের যে সিদ্ধান্তের কারণে মাথায় হাত ভারতের ১০ হাজার আওয়ামী কর্মী মাঠে নামলেই তো সরকার পরে যাবে সরকার উৎখাতে চক্রান্ত! কারাগারে বসেই চলছে নানা তৎপরতা আওয়ামী লীগে বিভক্তি, চ্যালেঞ্জের মুখে হাসিনা মহার্ঘ ভাতা নিয়ে যা বললেন অর্থ উপদেষ্টা কানাডার নাগরিক হয়েও বাংলাদেশে সব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত পুতুল দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা চেয়ারম্যান-মেয়র হতে লাগবে স্নাতক ডিগ্রি, হবে না সরাসরি ভোট চাল-মুরগির দাম চড়া, অন্য সব আগের মতো দেশের স্বার্থে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের সমালোচনা করে যা বললেন নাহিদ ইসলাম কিভাবে বাড়ছে বাংলাদেশের আয়তন? পাল্টে যাচ্ছে পুলিশ, র‌্যাব, আনসারের পোশাক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে পদত্যাগ করছেন পুতুল? চারটি প্রদেশ নিয়ে গঠিত হবে নতুন বাংলাদেশ! সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতার সিদ্ধান্ত যৌক্তিক : প্রেসসচিব অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন: সাংবাদিকদের নামে মামলা নতুন অডিও ফাঁস : কাঁদতে কাঁদতে যা বললেন শেখ হাসিনা

সেলসম্যান থেকে নোমান গ্রুপের প্রতিষ্টাতা নুরুল ইসলাম

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৬:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 38
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভাগ্য বদলের আশায় পকেটে ৬৫ টাকা নিয়ে এসেছিলেন ঢাকায়। দিনের পর দিন বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন ইসলামপুরের দোকানে। সেলসম্যান থেকে তিলে তিলে গড়েছেন দেশের অন্যতম শীর্ষ প্রতিষ্ঠান নোমান গ্রুপ। বিক্রয়কর্মী থেকে নোমান গ্রুপ তৈরীর এ গল্পটা নুরুল ইসলামের। যার গল্প এখন লক্ষ মানুষের অনুপ্রেরণার।

১৯৫০ সালে চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় সওদাগর মোহাম্মদ ইসমাইল ও আঞ্জুমান আরা দম্পত্তির ঘরে জন্মেছিলেন নুরুল ইসলাম। পাঁচ বোনের মধ্যে একমাত্র ভাই ছিলেন তিনি। মাত্র ৫ বছর বয়সে পিতৃহারা নুরুল ইসলামকে বহু কষ্টে মা পড়াশোনা করান। অভাব অনটনের মাঝেই ১৯৬৮ সালে তিনি আধুনগর উচ্চবিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাস করেন।

এরপরই পারিবারিক অনটনে তিনি ভাগ্যান্বেষণে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা চলে আসেন। ঢাকায় তৈয়ব আশরাফ টেক্সটাইল মিলস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। এ প্রতিষ্ঠানের অধীনে মরিয়ম টেক্সটাইল, আরটেক্স ফ্যাব্রিকস, নাজনীন ফ্যাব্রিকস নামের আরো প্রতিষ্ঠান ছিল। এসব প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত ক্যারোলিন গেঞ্জি, মশারি, ওড়না এবং পলিয়েস্টার কাপড় ইত্যাদি পণ্য বিক্রি করতেন নুরুল ইসলাম। থাকতেন খিলগাঁওয়ের একটি মেসে।

এরমধ্যে বিভিন্ন ফ্যাক্টরি থেকে নিজের পছন্দে পণ্য তৈরি করে তা বিক্রি করতেন ইসলামপুর বাজারে। দিনের একবেলা টঙ্গী-তেজগাঁওয়ের বিসিক এলাকা, তো আরেকবেলা ইসলামপুর কিংবা নারায়ণগঞ্জ। হয়ে উঠেন ফ্লাইং বিজনেসম্যান।

এর মধ্যে স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। ফিরতে হয় চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় নিজ গ্রামে। ওই বছর বিয়েও করেন। যুদ্ধ শেষে আবার ফিরে আসেন কর্মস্থলে। নতুন করে শুরু করেন সবকিছু। ব্যাংকঋণের কারণে মরিয়ম টেক্সটাইল, আরটেক্স ও নাজনীন ফ্যাব্রিকসের আর্থিক অবস্থা ক্রমেই দুর্বল হতে থাকে। তখন এসব প্রতিষ্ঠান ভাড়ায় নেন নুরুল ইসলাম। শুরুতে মশারি ও গেঞ্জির কাপড় তৈরি করতেন।

১৯৭৬ সালে পাওনা ঋণ আদায়ে এসব কারখানা একে একে নিলামে তোলে ব্যাংক। নিলামে অংশ নিয়ে যন্ত্রপাতিসহ কারখানাগুলো কিনে নেন তিনি। ১৯৭৬ সালে প্রথম আরটেক্স ফ্যাব্রিকসের চারটি মেশিন কিনেন তিনি। বিনিয়োগ করেন ৮ লাখ টাকা। তখন সেখানে কর্মরত ছিলেন ২২ জন শ্রমিক। এরপর একে একে কেনেন মরিয়ম টেক্সটাইল, নাজরীন ফ্যাব্রিকসের যন্ত্রপাতি। এ তিন প্রতিষ্ঠানের মোট ১২টি মেশিন নিয়ে শুরু হয় উদ্যোক্তা হিসেবে নুরুল ইসলামের যাত্রা।

মাত্র ২২ জন শ্রমিক নিয়ে ১৯৭৬ সালে শিল্পোদ্যোক্তা হিসেবে নুরুল ইসলামের পথচলা শুরু। বর্তমানে তাঁর গড়ে তোলা নোমান গ্রুপের কর্মীর সংখ্যা ৮০ হাজারের বেশি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

সেলসম্যান থেকে নোমান গ্রুপের প্রতিষ্টাতা নুরুল ইসলাম

আপডেট সময় : ০৪:৩৬:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫

ভাগ্য বদলের আশায় পকেটে ৬৫ টাকা নিয়ে এসেছিলেন ঢাকায়। দিনের পর দিন বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন ইসলামপুরের দোকানে। সেলসম্যান থেকে তিলে তিলে গড়েছেন দেশের অন্যতম শীর্ষ প্রতিষ্ঠান নোমান গ্রুপ। বিক্রয়কর্মী থেকে নোমান গ্রুপ তৈরীর এ গল্পটা নুরুল ইসলামের। যার গল্প এখন লক্ষ মানুষের অনুপ্রেরণার।

১৯৫০ সালে চট্টগ্রামের লোহাগড়ায় সওদাগর মোহাম্মদ ইসমাইল ও আঞ্জুমান আরা দম্পত্তির ঘরে জন্মেছিলেন নুরুল ইসলাম। পাঁচ বোনের মধ্যে একমাত্র ভাই ছিলেন তিনি। মাত্র ৫ বছর বয়সে পিতৃহারা নুরুল ইসলামকে বহু কষ্টে মা পড়াশোনা করান। অভাব অনটনের মাঝেই ১৯৬৮ সালে তিনি আধুনগর উচ্চবিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাস করেন।

এরপরই পারিবারিক অনটনে তিনি ভাগ্যান্বেষণে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা চলে আসেন। ঢাকায় তৈয়ব আশরাফ টেক্সটাইল মিলস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। এ প্রতিষ্ঠানের অধীনে মরিয়ম টেক্সটাইল, আরটেক্স ফ্যাব্রিকস, নাজনীন ফ্যাব্রিকস নামের আরো প্রতিষ্ঠান ছিল। এসব প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত ক্যারোলিন গেঞ্জি, মশারি, ওড়না এবং পলিয়েস্টার কাপড় ইত্যাদি পণ্য বিক্রি করতেন নুরুল ইসলাম। থাকতেন খিলগাঁওয়ের একটি মেসে।

এরমধ্যে বিভিন্ন ফ্যাক্টরি থেকে নিজের পছন্দে পণ্য তৈরি করে তা বিক্রি করতেন ইসলামপুর বাজারে। দিনের একবেলা টঙ্গী-তেজগাঁওয়ের বিসিক এলাকা, তো আরেকবেলা ইসলামপুর কিংবা নারায়ণগঞ্জ। হয়ে উঠেন ফ্লাইং বিজনেসম্যান।

এর মধ্যে স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। ফিরতে হয় চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় নিজ গ্রামে। ওই বছর বিয়েও করেন। যুদ্ধ শেষে আবার ফিরে আসেন কর্মস্থলে। নতুন করে শুরু করেন সবকিছু। ব্যাংকঋণের কারণে মরিয়ম টেক্সটাইল, আরটেক্স ও নাজনীন ফ্যাব্রিকসের আর্থিক অবস্থা ক্রমেই দুর্বল হতে থাকে। তখন এসব প্রতিষ্ঠান ভাড়ায় নেন নুরুল ইসলাম। শুরুতে মশারি ও গেঞ্জির কাপড় তৈরি করতেন।

১৯৭৬ সালে পাওনা ঋণ আদায়ে এসব কারখানা একে একে নিলামে তোলে ব্যাংক। নিলামে অংশ নিয়ে যন্ত্রপাতিসহ কারখানাগুলো কিনে নেন তিনি। ১৯৭৬ সালে প্রথম আরটেক্স ফ্যাব্রিকসের চারটি মেশিন কিনেন তিনি। বিনিয়োগ করেন ৮ লাখ টাকা। তখন সেখানে কর্মরত ছিলেন ২২ জন শ্রমিক। এরপর একে একে কেনেন মরিয়ম টেক্সটাইল, নাজরীন ফ্যাব্রিকসের যন্ত্রপাতি। এ তিন প্রতিষ্ঠানের মোট ১২টি মেশিন নিয়ে শুরু হয় উদ্যোক্তা হিসেবে নুরুল ইসলামের যাত্রা।

মাত্র ২২ জন শ্রমিক নিয়ে ১৯৭৬ সালে শিল্পোদ্যোক্তা হিসেবে নুরুল ইসলামের পথচলা শুরু। বর্তমানে তাঁর গড়ে তোলা নোমান গ্রুপের কর্মীর সংখ্যা ৮০ হাজারের বেশি।