পানামা ফারুক: তাহসানের শ্বশুরের বিতর্কিত ইতিহাস
- আপডেট সময় : ০৫:২১:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫
- / 125
তাহসানের বউরে দেখে সবাই লাফাইয়া উঠছে। আমি লাফাইয়া উঠছি তার শশুরের নাম শুনে। তাহসানের শশুরের নাম হল ফারুক আহমেদ । যদিও বরিশালের সবাই তাকে চেনে পানামা ফারুক নামে। বাজার রোডের বাসিন্দা ইয়াকুব আলী বেপারীর ছেলে এই ফারুক ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বরিশালে ‘ত্রাস’ হিসেবে আবির্ভূত হন। সংগঠনে কোনো পদ-পদবী না থাকলেও তিনি নিজেকে যুবলীগ নেতা হিসাবেই সর্বত্র পারিচয় দিতেন।
সে সময় বাজার রোডে ফারুকের বাবা ইয়াকুব আলী বেপারীর রড-সিমেন্ট-ঢেউটিনের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিলো। বড় মেয়ে পানামা’র নামে তিনি (ইয়াকুব আলী) প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়েছিলেন ‘পানামা ট্রেডার্স’। আর পৈত্রিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামানুসারে ফারুক আহমেদ নগরীতে পরিচিতি পান ‘পানামা ফারুক’ নামে।
৯৬’র নির্বাচন পরবর্তী আওয়ামীলীগ শাসনমালে নগরীর উত্তরাংশ বাজার রোড-আমানতগঞ্জ এলাকায় ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিলো পানামা ফারুক।
নিজের নামে বাজার রোড এলাকায় ‘পানামা বাহিনী’ নামে একটি বাহিনী গড়ে তোলেন। আর ভাই মাহাবুবুর রহমান ছক্কু ছিলেন সেই বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড। পানামা বাহিনীর সদস্যরা বাজার রোডে একটি টর্চার সেল তৈরী করেছিলো। ব্যবসায়ী ও বিরোধী শিবিরের রাজনৈতিক নেতাকর্মিদের টর্চার সেলে ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতন চালাতো তারা।
২০০১ সালে নির্বাচনের আগে কাউনিয়ায় পৃথক ঘটনায় খুন হয় রাহাত ও পুলিশ কামাল। ওই দুই হত্যাকাণ্ডে পানামা ফারুকসহ আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পরপরই পানামা ফারুক ও ছক্কু বিদেশে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে ছক্কু ইটালীতে গিয়ে সেখানে বসবাস শুরু করে।
সরকার পরিবর্তন হলে ২০০৯ সালের ৪ অক্টোবর পানামা ফারুক বরিশালের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে। ২০১০ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাজনৈতিক বিবেচনায় কামাল হত্যা মামলাটি প্রত্যাহার করে। ২০১১ সালের ১৯ আগস্ট রাহাত হত্যা মামলার রায়েও আসামি পানামা ফারুক খালাস পায়।
২০১৩ সালে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তিনি আট নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মো. সেলিম হাওলাদারের কাছে পরাজিত হন। কিন্তু তার দখল চলতেই থাকে। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীক কোণদলের জেরে র্যাবের মাধ্যমে ‘ক্রসফায়ারে’ হত্যা করা হয় পানামা ফারুককে।
ফারুকের এক ছেলে ও এক মেয়ে। তভে তার বাবার আদিনিবাস শরীয়তপুরে। প্রায় ৫০ বছর আগে সেখান থেকে বরিশালে চলে আসে তার পিতা।
যদিও তাহসানের বউ এর এক প্রেমিককে নিয়ে বরিশাল শহরে বেশ আলোচনা হচ্ছে, সেটা নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। এটা আবার বেশি পারসোনাল ইস্যু।