ঢাকা ১০:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
২৫ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ পালনের ঘোষণা আনিসুল হকের মুক্তি চেয়ে পোস্টার দিল্লিতে গৃহবন্দী শেখ হাসিনা? গ্যাস-বিদ্যুতে ভয়াবহ ভোগান্তির আশঙ্কা ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ মোদি-হাসিনা মাইনাস: ট্রাম্পের আস্থায় এখন ড. ইউনূস! মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসি গ্যাবার্ডের বাংলাদেশ নিয়ে ভাইরাল ভিডিওর আসল ঘটনা আমি ফিরব, আমাদের শহিদদের প্রতিশোধ নেব’: শেখ হাসিনা অপরাধী হাসিনাকে নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপে ভারত ইন্টারপোলের জালে বেনজীর হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর দাবি জোরদার হচ্ছে ভারতে! এটুআই ছিল মিলেমিশে লুটপাটের প্রকল্প আওয়ামী লুটপাটে পঙ্গু ইডিসিএল বিদেশেও বিচার সম্ভব শেখ হাসিনার ‘দুঃখিত, আপা! এটাই শেষ!!’ : হাসিনার উদ্দেশ্য প্রেস সচিব জাতীয় সংসদ ভোটের পর পুলিশে পদকের মচ্ছব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে ঐকমত্য কমিশন প্রফেসর ইউনূস ও তার দাবার চাল। পদত্যাগ করছেন উপদেষ্টা নাহিদ, আসছে নতুন দল

পারফেক্ট পানি খাওয়ার শিডিউল?

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৪:২৫:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 17
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

একবারে অনেক বেশি পানি খেলে সেটা অস্বস্তিকর হতে পারে তাহলে সারাদিনে পানি খাওয়ার Schedule কেমন হওয়া উচিত? কোন সময়ে পানি খাওয়া avoid করা উচিত? কতক্ষন পর পর পানি খাওয়া উচিত? বিস্তারিত জানা যাক….

✍️সারাদিনে পর্যাপ্ত পানি পান করা খুব গুরুত্বপূর্ণ, তবে একবারে বেশি পানি খেলে তা অস্বস্তিকর হতে পারে। তাই পানি খাওয়ার জন্য একটা ব্যালান্সড শিডিউল মেনে চলা ভালো। নিচে একটি পারফেক্ট পানি খাওয়ার রুটিন দেওয়া হলো:

পারফেক্ট পানি খাওয়ার শিডিউল:
✅ সকালে (৭:০০ – ৮:০০ AM): ঘুম থেকে উঠেই ১-২ গ্লাস গরম বা সাধারণ পানি পান করুন। এটি হজম প্রক্রিয়া ও মেটাবলিজম বুস্ট করে।
✅ ব্রেকফাস্টের ৩০ মিনিট আগে: ১ গ্লাস পানি (খাবারের সঙ্গে বেশি পানি না খাওয়াই ভালো)।
✅ ব্রেকফাস্টের ৩০-৪৫ মিনিট পর: ১ গ্লাস পানি।
✅ বেলা ১১:০০ – ১২:০০ PM: ১ গ্লাস পানি, শরীরে পানির ঘাটতি না হওয়া নিশ্চিত করতে।
✅ লাঞ্চের ৩০ মিনিট আগে: ১ গ্লাস পানি (লাঞ্চের সময় বেশি পানি না খাওয়া ভালো, কারণ এটি হজমে সমস্যা করতে পারে)।
✅ লাঞ্চের ৩০-৪৫ মিনিট পর: ১ গ্লাস পানি।
✅ বিকেল ৪:০০ – ৫:০০ PM: ১ গ্লাস পানি, সঙ্গে হালকা নাশতা খেতে পারেন।
✅ ডিনারের ৩০ মিনিট আগে: ১ গ্লাস পানি।
✅ ডিনারের ৩০-৪৫ মিনিট পর: ১ গ্লাস পানি।
✅ ঘুমানোর ৩০-৬০ মিনিট আগে: ১ গ্লাস পানি, তবে খুব বেশি না খাওয়াই ভালো, নয়তো ঘন ঘন বাথরুমে যেতে হতে পারে।

পানি খাওয়ার ক্ষেত্রে যা এড়িয়ে চলবেন:
❌ খাবারের একদম সঙ্গে বা খাওয়ার পরপরই বেশি পানি খাবেন না। এটি হজমের অ্যাসিডকে দুর্বল করে ফেলে।
❌ একবারে অনেক বেশি পানি পান করবেন না। এতে bloating বা অস্বস্তি হতে পারে।
❌ অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি এড়িয়ে চলুন, বিশেষ করে খাওয়ার সময়। এটি হজম প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
❌ রাতে ঘুমানোর আগে অতিরিক্ত পানি পান করবেন না। এটি ঘন ঘন বাথরুমে যাওয়ার কারণ হতে পারে, ফলে ঘুম ব্যাহত হতে পারে।

✍️কতক্ষণ পরপর পানি খাওয়া উচিত?
সাধারণত ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা পরপর ১ গ্লাস পানি খাওয়া ভালো।
তবে ঘাম হলে বা ব্যায়াম করলে বেশি পানি পান করা প্রয়োজন।
পানি পান করার সময় ধীরে ধীরে চুমুক দিয়ে পান করাই ভালো, একসঙ্গে পুরো গ্লাস শেষ করা উচিত নয়।
এই রুটিন অনুসরণ করলে শরীর হাইড্রেটেড থাকবে, হজম ভালো হবে এবং কাজের সময় নড়াচড়ায় সমস্যা হবে না।

 

প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিদিন কতটুকু পানি পান করা উচিত?

 

শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত, প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের জন্য প্রতিদিন প্রায় ২.৭ লিটার এবং পুরুষদের জন্য ৩.৭ লিটার পানি গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়। এই পরিমাণে খাবার (যেমন ফলমূল ও সবজি) এবং অন্যান্য পানীয় (যেমন চা, দুধ, শরবত) থেকে প্রাপ্ত পানিও অন্তর্ভুক্ত। তবে, এই চাহিদা নির্ভর করে বয়স, ওজন, দৈনন্দিন কাজকর্ম, আবহাওয়া এবং স্বাস্থ্যগত অবস্থার ওপর।

 

যেমন, গরমের সময় বা শারীরিক পরিশ্রমের ক্ষেত্রে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর পানি হারায়। এ সময় শরীরের পানির ঘাটতি পূরণে সাধারণ চাহিদার তুলনায় বেশি পানি পান করা প্রয়োজন। তদ্রূপ, অসুস্থতার সময়—যেমন জ্বর, ডায়রিয়া বা বমি হলে—শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বেরিয়ে যায়, এবং সেই ঘাটতি পূরণে বাড়তি পানি পান করা জরুরি।

 

যথেষ্ট পানি না পান করলে শরীরে পানির অভাব বা ডিহাইড্রেশন হতে পারে। এর ফলে ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, মনোযোগে সমস্যা এবং দীর্ঘমেয়াদে কিডনির জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই, নিজের জীবনযাত্রা এবং পরিবেশ অনুযায়ী প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান নিশ্চিত করা খুবই প্রয়োজন, যা সুস্থ এবং স্বাভাবিক জীবনযাপনে সহায়ক।

ওজন অনুযায়ী পানি পানের নিয়ম

 

আপনার দৈনিক পানি চাহিদা নির্ণয়ে ওজন একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী, আপনার ওজনের প্রতি কেজির জন্য ৩০-৩৫ মিলিলিটার পানি পান করা উচিত। যেমন, যদি আপনার ওজন ৭০ কেজি হয়, তাহলে ৭০ × ৩০ = ২১০০ মিলিলিটার বা ২.১ লিটার পানি পান করা উচিত।

 

Age Group

Weight Range (kg)

Daily Water Intake (liters)

Number of Glasses (approx.)

শিশু (১-৩ বছর)

১০-১৫ কেজি

১-১.২ লিটার

৪-৫ গ্লাস

শিশু (৪-৮ বছর)

১৬-২৫ কেজি

১.৩-১.৭ লিটার

৫-৭ গ্লাস

কিশোর/কিশোরী (৯-১৩ বছর)

২৬-৪৫ কেজি

১.৮-২.৪ লিটার

৭-১০ গ্লাস

তরুণ/তরুণী (১৪-১৮ বছর)

৪৬-৬৫ কেজি

২.৫-৩ লিটার

১০-১২ গ্লাস

প্রাপ্তবয়স্ক (১৯-৫০ বছর)

৬৬-৮০ কেজি

২.৭-৩.৭ লিটার

১১-১৫ গ্লাস

বয়স্ক (৫০+ বছর)

৭০-৮৫ কেজি

২.৫-৩ লিটার

১০-১২ গ্লাস

 

 

সঠিক পানি পানের সময়সূচী

 

সারাদিনে সুষমভাবে পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ।

  • খাবার খাওয়ার আগে ও পরে পানি পান হজমে সহায়তা করে।

  • শারীরিক পরিশ্রমের আগে, পরে এবং সময়েও পানি পান করা উচিত, বিশেষ করে গরম আবহাওয়ায়।

  • তৃষ্ণা অনুভব করার আগেই পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তোলা ভালো, কারণ তৃষ্ণা পাওয়া শরীরে পানি স্বল্পতার সংকেত।

 

কতক্ষণ পর পর পানি খাওয়া উচিত?

 

একজন সুস্থ ব্যক্তির প্রতি ১-২ ঘণ্টা অন্তর অন্তর পানি পান করা উচিত। এটি শরীরের স্বাভাবিক কাজ বজায় রাখতে সহায়ক।

রাতে পানি খাওয়ার নিয়ম

 

রাতে ঘুমানোর আগে খুব বেশি পানি খাওয়া উচিত নয়, কারণ এটি বারবার প্রস্রাবের চাপ তৈরি করতে পারে। তবে, হালকা গরম পানি পান করলে হজম ভালো হয় এবং শরীর রিল্যাক্স করে। রাতে অতিরিক্ত পানি পান করলে ঘুম ব্যাহত হতে পারে। তাই রাতে মাত্রা রেখে পানি পান করা উচিত।

পানি পান করার কিছু উপকারিতা 

 

যেমন গাছের শিকড় যদি ঠিকমতো পানি না পায়, তবে গাছ শুকিয়ে যায়—তেমনি আমাদের শরীরও পানির অভাবে ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। পর্যাপ্ত পানি পান করলে শরীর হাইড্রেট থাকে এবং সারাদিন কর্মক্ষম থাকা যায়।

 

  • পানি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে কিডনি ও লিভারকে সুস্থ রাখে।

  • পানি ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে এবং উজ্জ্বলতা বাড়ায়।

  • গরমের দিনে পানি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

  • পানি খাবার ভাঙতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি কমায়।

  • পর্যাপ্ত পানি পান করলে মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি উন্নত হয়।

  • পানি রক্তকে ঘন হতে বাধা দেয় এবং সঞ্চালন সহজ করে।

  • ক্ষুধা কমিয়ে ক্যালোরি গ্রহণ কমায় এবং ওজন কমাতে সহায়তা করে।

  • পানি জয়েন্টের লুব্রিকেশন বজায় রাখে এবং পেশির কার্যক্ষমতা বাড়ায়।

 

অতিরিক্ত পানি পানের ক্ষতি

 

যদিও পানি আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য, তবে অতিরিক্ত পানি পানের ফলে শরীরে কিছু নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ঠিক যেমন অতিরিক্ত সার দিলে গাছ মরে যেতে পারে, তেমনি বেশি পানি পান করাও শরীরের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।

 

অতিরিক্ত পানি গ্রহণে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কমে যেতে পারে, যা হাইপোন্যাট্রেমিয়া নামে পরিচিত।

অতিরিক্ত পানি পানের ফলে  দুর্বলতা, মাথাব্যথা, খিঁচুনি এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া, কিডনি প্রতি ঘণ্টায় নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করতে পারে; অতিরিক্ত পানি গ্রহণে কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে।

 

উপসংহার

 

প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা সুস্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। তবে অতিরিক্ত পানি পানের ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। আপনার শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পানি পান করুন এবং তৃষ্ণা, প্রস্রাবের রং ও শারীরিক অবস্থার ওপর নজর রাখুন। সঠিক পানি পানের অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে আপনি আপনার স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে পারবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

পারফেক্ট পানি খাওয়ার শিডিউল?

আপডেট সময় : ০৪:২৫:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

একবারে অনেক বেশি পানি খেলে সেটা অস্বস্তিকর হতে পারে তাহলে সারাদিনে পানি খাওয়ার Schedule কেমন হওয়া উচিত? কোন সময়ে পানি খাওয়া avoid করা উচিত? কতক্ষন পর পর পানি খাওয়া উচিত? বিস্তারিত জানা যাক….

✍️সারাদিনে পর্যাপ্ত পানি পান করা খুব গুরুত্বপূর্ণ, তবে একবারে বেশি পানি খেলে তা অস্বস্তিকর হতে পারে। তাই পানি খাওয়ার জন্য একটা ব্যালান্সড শিডিউল মেনে চলা ভালো। নিচে একটি পারফেক্ট পানি খাওয়ার রুটিন দেওয়া হলো:

পারফেক্ট পানি খাওয়ার শিডিউল:
✅ সকালে (৭:০০ – ৮:০০ AM): ঘুম থেকে উঠেই ১-২ গ্লাস গরম বা সাধারণ পানি পান করুন। এটি হজম প্রক্রিয়া ও মেটাবলিজম বুস্ট করে।
✅ ব্রেকফাস্টের ৩০ মিনিট আগে: ১ গ্লাস পানি (খাবারের সঙ্গে বেশি পানি না খাওয়াই ভালো)।
✅ ব্রেকফাস্টের ৩০-৪৫ মিনিট পর: ১ গ্লাস পানি।
✅ বেলা ১১:০০ – ১২:০০ PM: ১ গ্লাস পানি, শরীরে পানির ঘাটতি না হওয়া নিশ্চিত করতে।
✅ লাঞ্চের ৩০ মিনিট আগে: ১ গ্লাস পানি (লাঞ্চের সময় বেশি পানি না খাওয়া ভালো, কারণ এটি হজমে সমস্যা করতে পারে)।
✅ লাঞ্চের ৩০-৪৫ মিনিট পর: ১ গ্লাস পানি।
✅ বিকেল ৪:০০ – ৫:০০ PM: ১ গ্লাস পানি, সঙ্গে হালকা নাশতা খেতে পারেন।
✅ ডিনারের ৩০ মিনিট আগে: ১ গ্লাস পানি।
✅ ডিনারের ৩০-৪৫ মিনিট পর: ১ গ্লাস পানি।
✅ ঘুমানোর ৩০-৬০ মিনিট আগে: ১ গ্লাস পানি, তবে খুব বেশি না খাওয়াই ভালো, নয়তো ঘন ঘন বাথরুমে যেতে হতে পারে।

পানি খাওয়ার ক্ষেত্রে যা এড়িয়ে চলবেন:
❌ খাবারের একদম সঙ্গে বা খাওয়ার পরপরই বেশি পানি খাবেন না। এটি হজমের অ্যাসিডকে দুর্বল করে ফেলে।
❌ একবারে অনেক বেশি পানি পান করবেন না। এতে bloating বা অস্বস্তি হতে পারে।
❌ অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি এড়িয়ে চলুন, বিশেষ করে খাওয়ার সময়। এটি হজম প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
❌ রাতে ঘুমানোর আগে অতিরিক্ত পানি পান করবেন না। এটি ঘন ঘন বাথরুমে যাওয়ার কারণ হতে পারে, ফলে ঘুম ব্যাহত হতে পারে।

✍️কতক্ষণ পরপর পানি খাওয়া উচিত?
সাধারণত ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা পরপর ১ গ্লাস পানি খাওয়া ভালো।
তবে ঘাম হলে বা ব্যায়াম করলে বেশি পানি পান করা প্রয়োজন।
পানি পান করার সময় ধীরে ধীরে চুমুক দিয়ে পান করাই ভালো, একসঙ্গে পুরো গ্লাস শেষ করা উচিত নয়।
এই রুটিন অনুসরণ করলে শরীর হাইড্রেটেড থাকবে, হজম ভালো হবে এবং কাজের সময় নড়াচড়ায় সমস্যা হবে না।

 

প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিদিন কতটুকু পানি পান করা উচিত?

 

শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত, প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের জন্য প্রতিদিন প্রায় ২.৭ লিটার এবং পুরুষদের জন্য ৩.৭ লিটার পানি গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়। এই পরিমাণে খাবার (যেমন ফলমূল ও সবজি) এবং অন্যান্য পানীয় (যেমন চা, দুধ, শরবত) থেকে প্রাপ্ত পানিও অন্তর্ভুক্ত। তবে, এই চাহিদা নির্ভর করে বয়স, ওজন, দৈনন্দিন কাজকর্ম, আবহাওয়া এবং স্বাস্থ্যগত অবস্থার ওপর।

 

যেমন, গরমের সময় বা শারীরিক পরিশ্রমের ক্ষেত্রে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর পানি হারায়। এ সময় শরীরের পানির ঘাটতি পূরণে সাধারণ চাহিদার তুলনায় বেশি পানি পান করা প্রয়োজন। তদ্রূপ, অসুস্থতার সময়—যেমন জ্বর, ডায়রিয়া বা বমি হলে—শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বেরিয়ে যায়, এবং সেই ঘাটতি পূরণে বাড়তি পানি পান করা জরুরি।

 

যথেষ্ট পানি না পান করলে শরীরে পানির অভাব বা ডিহাইড্রেশন হতে পারে। এর ফলে ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, মনোযোগে সমস্যা এবং দীর্ঘমেয়াদে কিডনির জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই, নিজের জীবনযাত্রা এবং পরিবেশ অনুযায়ী প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান নিশ্চিত করা খুবই প্রয়োজন, যা সুস্থ এবং স্বাভাবিক জীবনযাপনে সহায়ক।

ওজন অনুযায়ী পানি পানের নিয়ম

 

আপনার দৈনিক পানি চাহিদা নির্ণয়ে ওজন একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী, আপনার ওজনের প্রতি কেজির জন্য ৩০-৩৫ মিলিলিটার পানি পান করা উচিত। যেমন, যদি আপনার ওজন ৭০ কেজি হয়, তাহলে ৭০ × ৩০ = ২১০০ মিলিলিটার বা ২.১ লিটার পানি পান করা উচিত।

 

Age Group

Weight Range (kg)

Daily Water Intake (liters)

Number of Glasses (approx.)

শিশু (১-৩ বছর)

১০-১৫ কেজি

১-১.২ লিটার

৪-৫ গ্লাস

শিশু (৪-৮ বছর)

১৬-২৫ কেজি

১.৩-১.৭ লিটার

৫-৭ গ্লাস

কিশোর/কিশোরী (৯-১৩ বছর)

২৬-৪৫ কেজি

১.৮-২.৪ লিটার

৭-১০ গ্লাস

তরুণ/তরুণী (১৪-১৮ বছর)

৪৬-৬৫ কেজি

২.৫-৩ লিটার

১০-১২ গ্লাস

প্রাপ্তবয়স্ক (১৯-৫০ বছর)

৬৬-৮০ কেজি

২.৭-৩.৭ লিটার

১১-১৫ গ্লাস

বয়স্ক (৫০+ বছর)

৭০-৮৫ কেজি

২.৫-৩ লিটার

১০-১২ গ্লাস

 

 

সঠিক পানি পানের সময়সূচী

 

সারাদিনে সুষমভাবে পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ।

  • খাবার খাওয়ার আগে ও পরে পানি পান হজমে সহায়তা করে।

  • শারীরিক পরিশ্রমের আগে, পরে এবং সময়েও পানি পান করা উচিত, বিশেষ করে গরম আবহাওয়ায়।

  • তৃষ্ণা অনুভব করার আগেই পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তোলা ভালো, কারণ তৃষ্ণা পাওয়া শরীরে পানি স্বল্পতার সংকেত।

 

কতক্ষণ পর পর পানি খাওয়া উচিত?

 

একজন সুস্থ ব্যক্তির প্রতি ১-২ ঘণ্টা অন্তর অন্তর পানি পান করা উচিত। এটি শরীরের স্বাভাবিক কাজ বজায় রাখতে সহায়ক।

রাতে পানি খাওয়ার নিয়ম

 

রাতে ঘুমানোর আগে খুব বেশি পানি খাওয়া উচিত নয়, কারণ এটি বারবার প্রস্রাবের চাপ তৈরি করতে পারে। তবে, হালকা গরম পানি পান করলে হজম ভালো হয় এবং শরীর রিল্যাক্স করে। রাতে অতিরিক্ত পানি পান করলে ঘুম ব্যাহত হতে পারে। তাই রাতে মাত্রা রেখে পানি পান করা উচিত।

পানি পান করার কিছু উপকারিতা 

 

যেমন গাছের শিকড় যদি ঠিকমতো পানি না পায়, তবে গাছ শুকিয়ে যায়—তেমনি আমাদের শরীরও পানির অভাবে ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। পর্যাপ্ত পানি পান করলে শরীর হাইড্রেট থাকে এবং সারাদিন কর্মক্ষম থাকা যায়।

 

  • পানি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে কিডনি ও লিভারকে সুস্থ রাখে।

  • পানি ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে এবং উজ্জ্বলতা বাড়ায়।

  • গরমের দিনে পানি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

  • পানি খাবার ভাঙতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি কমায়।

  • পর্যাপ্ত পানি পান করলে মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি উন্নত হয়।

  • পানি রক্তকে ঘন হতে বাধা দেয় এবং সঞ্চালন সহজ করে।

  • ক্ষুধা কমিয়ে ক্যালোরি গ্রহণ কমায় এবং ওজন কমাতে সহায়তা করে।

  • পানি জয়েন্টের লুব্রিকেশন বজায় রাখে এবং পেশির কার্যক্ষমতা বাড়ায়।

 

অতিরিক্ত পানি পানের ক্ষতি

 

যদিও পানি আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য, তবে অতিরিক্ত পানি পানের ফলে শরীরে কিছু নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ঠিক যেমন অতিরিক্ত সার দিলে গাছ মরে যেতে পারে, তেমনি বেশি পানি পান করাও শরীরের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।

 

অতিরিক্ত পানি গ্রহণে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কমে যেতে পারে, যা হাইপোন্যাট্রেমিয়া নামে পরিচিত।

অতিরিক্ত পানি পানের ফলে  দুর্বলতা, মাথাব্যথা, খিঁচুনি এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া, কিডনি প্রতি ঘণ্টায় নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করতে পারে; অতিরিক্ত পানি গ্রহণে কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে।

 

উপসংহার

 

প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা সুস্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। তবে অতিরিক্ত পানি পানের ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। আপনার শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পানি পান করুন এবং তৃষ্ণা, প্রস্রাবের রং ও শারীরিক অবস্থার ওপর নজর রাখুন। সঠিক পানি পানের অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে আপনি আপনার স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে পারবেন।