ঢাকা ১১:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বে নির্বাচন সংস্কার কমিশন গঠন আমি স্যামসাং ব্যবহার করি, স্ক্রিনশট গেছে আইফোনের : জনপ্রশাসন সচিব উন্নয়নের ভ্রান্ত ধারণা: ঋণে ডুবে থাকা দেশ টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় নাহিদ ইসলাম আমার টাকা-পয়সার প্রতি লোভ নেই, ৫ কোটি হলেই চলবে এক দিনেই হাওয়া ৮ হাজার কোটি টাকার বাজার মূলধন অবশেষে দেখা মিলল আসাদুজ্জামান কামালের ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ কারাগারে কেমন আছেন ‘ভিআইপি’ বন্দীরা একটি ফোনকল যেভাবে বদলে দিয়েছে ড. ইউনূসের জীবনের গতিপথ ড. ইউনুসের Three Zeros থিয়োরি বর্তমান উপদেষ্টাদের সঙ্গে নতুন চার-পাঁচজন মুখ যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা কয়েকটি জাতীয় দিবস বাতিল করতে পারে সরকার সমবায় ব্যাংকের ১২ হাজার ভরি স্বর্ণ গায়েব: উপদেষ্টা “প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস: বাংলার গর্ব, বৈশ্বিক সম্প্রীতির প্রতীক” খেলোয়াড় সাকিবের নিরাপত্তা আছে, ফ্যাসিস্ট সাকিবের ক্ষেত্রে অবান্তর: ক্রীড়া উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সম্মেলন থেকে কী অর্জন করলেন? জাতিসংঘে তিন-শুন্যের ধারণা দিলেন ড. ইউনুস যন্ত্রণার নাম ব্যাটারি রিকশা তরুণ সমাজের অফুরান শক্তি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে— ড. ইউনূস

“প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস: বাংলার গর্ব, বৈশ্বিক সম্প্রীতির প্রতীক”

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৫:৩২:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৮ বার পড়া হয়েছে
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ড.ইউনুস! বাংলার ইতিহাসে গত ৯০ বছরে জন্ম নেয়া একমাত্র গ্লোবাল সেলিব্রেটি হলেন প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনুস। শতকরা ৮৩% লোকই জানেন না কে ড.মোহাম্মদ ইউনুস!

পৃথিবীতে সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার নোবেল, সেটা নিশ্চয়ই জানেন? সম্মানসূচক হিসেবে নোবেলের পরে কোন পুরস্কারের অবস্থান তা কি জানেন? সম্মানসূচকে,

১.নোবেল
২.অ্যামেরিকার প্রসিডেন্সিয়াল এওয়ার্ড
৩.মার্কিন কংগ্রেশনাল এওয়ার্ড

পৃথিবীর ইতিহাসে উপরের ৩ টা পুরস্কারই জিতেছেন এমন মানুষ আছে বা ছিলেন ১২ জন!বুঝতেই পারছেন পরের লাইনটা কি হবে,

হ্যা, সেই ১২ জনের একজন প্রফেসর ড.মোহাম্মদ ইউনুস 🧡

মেসিকে নিশ্চয়ই চিনেন! যদি বলি এই লিওনেল মেসি লাইনে দাড়িয়ে ছিলেন প্রফেসর ডা ইউনুসের জন্য,বিশ্বাস হয়,না হলেও সত্য!

‘অলিম্পিক গেমস’ পৃথিবীর সম্মানজনক প্রতিযোগিতার একটি। আর অলিম্পিকে সবচেয়ে সম্মানিত মেহমান হলেন মশাল বাহক, জাপানে অনুষ্ঠিত ২০২০ অলিম্পিকে মশাল বাহক ছিলেন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনুস💖

বর্তমানে বিশ্বের লিডিং ইন্টালেকচুয়ালের যেকোনো তালিকায় টপ ১০ এর ভিতরে থাকেন ডা.ইউনুস। মুসলিম বিশ্বে নোবেল বিজয়ী ইউনুসের বিকল্প খুজে পাওয়া টা খুবি কঠিন,কিন্তু তিনি আমাদের বাংলাদেশের! এদেশে আর এমন ইউনুস জন্মাবে কিনা আজও সন্দেহ!

১. মাইক্রোসফটের বিল গেটস নিজে গাড়ি ড্রাইভ করে প্রফেসর ইউনুসকে পুরো সিলিকন ভ্যালি শহর দেখিয়েছিলেন।

২. কোর্ট-কাছাড়ির ৮ তলার এজলাশে তাঁকে যখনই হাজিরা দিতে হত সেসময় কোর্ট বিল্ডিং এর লিফট বন্ধ করে দেয়া হত। ৮২ বছরের অশিতিপর এই আসামীকে প্রতিবারই হেঁটে হেঁটে ৮ তলায় যেতে হত। এবং এই ঘটনা নাকি ৪০ বারের মত ঘটেছে।
শাকুর মজিদ
নাট্যকার,লেখক,স্থপতি।
সারা পৃথিবীর ১০৭টা ইউনিভার্সিটিতে মুহাম্মদ ইউনূস সেন্টার আছে। ইউনিভার্সিটিগুলো নিজেদের উদ্যোগে এটা করেছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে তাঁর মাইক্রো-ফাইনান্স। যেটা তাঁকে এবং তাঁর গ্রামীন ব্যাংকে নোবেল শান্তি পুরষ্কার এনে দিয়েছিল।

ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসকে বিশ্রীভাবে ‘সুদখোর’ ঢাকা হয় বারবার। মজার ব্যাপার হচ্ছে- মুহাম্মদ ইউনূসকে যারা পছন্দ করেন তাদের বেশীরভাগও জানেন না, মুহাম্মদ ইউনূসের সুদের ব্যবসা নাই। গ্রামীণ ব্যাংক তার প্রতিষ্ঠিত হলেও গ্রামীন ব্যাংকে তাঁর এক টাকার মালিকানাও নাই, শেয়ারও নাই। কখনোই ছিল না।

জিনিসটা আপনার-আমার কাছে আশ্চর্যজনক মনে হতে পারে। কিন্তু এটাই সত্যি। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মাইক্রো-ফাইনান্সের ধারণার মূল ভিত্তিই হচ্ছে এটা।
এই ব্যবসার কেউ মালিক হতে পারবে না। সম্পূর্ণ নন-প্রফিট তথা অলাভজনক।
এটাকে বলে সামাজিক ব্যবসা। নির্দিষ্ট কোনো মালিক নাই। জনগণই এর মালিক।
বাইর থেকে অনুদানের টাকা এনে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ড মুহাম্মদ ইউনূস। নিজে এটি প্রতিষ্ঠা করলেও প্রতিষ্ঠানে তার এক পয়সার মালিকানাও রাখেননি। বরং এর ২৫% মালিকানা সরকারের, বাকি মালিকানা গরীব মানুষের। নিজের প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকে ড মুহাম্মদ ইউনূস মাত্র ৩০০ ডলার বেতনে চাকরী করতেন।
তিনি যে নিজের কোনো শেয়ার রাখেননি তা না, কোম্পানীকে এমনভাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন যাতে কেউ এর একক মালিক হতে না পারে। কোম্পানী অধ্যাদেশ ২৮ ধারা অনুযায়ী তিনি এটি রেজিস্ট্রেশন করেন।

শুধু যে গ্রামীন ব্যাংকে তিনি মালিকানা রাখেননি তা কিন্তু না। জর্জ সরোস, টেলিনরদের এনে তিনি গ্রামীন টেলিকম প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর কথায় টেলিনর বাংলাদেশে আসে। তাঁর কথায় তাঁর বিলিয়নিয়ার বন্ধুরা গরীবদের উন্নতির জন্য ফান্ড দেয়। তিনি গ্রামীন টেলিকম প্রতিষ্ঠা করেন। সেটাও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবেই। অনেকেই জানেন না গ্রামীন টেলিকমকে নন ফর প্রফিট কোম্পানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন ড মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানেও তিনি নিজের জন্য ১% মালিকানাও রাখেননি। তিনি চাইলে ইজিলি ১০-১৫ পার্সেন্ট মালিকানা নিজের জন্য রেখে দিতে পারতেন। অথচ লাভের এক টাকাও যাতে নিজের কাছে না আসে, সেটা নিশ্চিত করেন তিনি।

তাঁর প্রতিষ্ঠিত সরকার নিয়ন্ত্রিত গ্রামীণ ব্যাংকে এখনো সুদের হার বাংলাদেশে সর্বনিম্ন। অথচ স্বাভাবিকভাবে আপনার মনে হবে গ্রামীন ব্যাংকের মত সুদ বোধহয় কেউ নেয় না। আর নিশ্চয় এই টাকায় প্রফিট করেন ড ইউনূস!

আসলে আমাদের দেশের মানুষ এসব কল্পনাও করতে পারেন না, একজন মানুষ ব্যবসা করবে অথচ সেখান থেকে নিজে কোনো লাভ করবে না। এমন কথা আমরা ভাবতেই পারিনা। আমরা ভাবতে পারি কেবল টাকা কামানোর কথা।
যেমনভাবে ড মুহাম্মদ ইউনূস বলেন- টাকা কামানোতে আছে সুখশান্তি, অন্যের উপকারে আছে প্রশান্তি। ওনার ভাষায় ‘নিজের জন্য টাকা কামানো হয়তো হ্যাপিনেস, অন্যের উপকার হচ্ছে সুপার হ্যাপিনেস।’

মুহাম্মদ ইউনূস মনে করেন, সবাই এককভাবে সম্পত্তির মালিক হতে থাকলে গরীব আরো গরীব হয়ে যাবে, ধনী আরো ধনী হবে। ফলে বিশ্বব্যবস্থা অচল হয়ে পড়বে। এই বিশ্বাস থেকেই ওনি সব ননপ্রফিট বা অলাভজনক প্রতিষ্ঠান তৈরী করে গেছেন, নিজের কোনো মালিকানা রাখেননি।
এরকমটা কি আপনি ভাবতে পারেন? আপনি বাংলাদেশের যেকোনো কোম্পানী দেখেন, তাদের সব নিজেদের মালিকানা।
কোম্পানীর কথা বাদ দেন, এনজিও ব্র‍্যাক দেখেন! মালিকানা ফজলে হাসান আবেদের পরিবারের। বড় বড় পদে পরিবারের সদস্যরা আছে।
কিন্তু মুহাম্মদ ইউনূস সেটা করেননি। তাঁর প্রতিষ্ঠিত কোম্পানীতে নিজের বা পরিবারের কাউকে রাখেননি।

অথচ ড মুহাম্মদ ইউনূস চাইলে এসব ব্যবসায় নিজের মালিকানা রেখে ইজিলি বিলিয়নিয়ার হয়ে যেতে পারতেন। খুব ইজিলি।
তাঁর প্রায় সব বন্ধুবান্ধব বিলিয়নিয়ার, মাল্টি বিলিয়নিয়ার। তিনি সেদিকে যাননি।

অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন, তাহলে ড মুহাম্মদ ইউনূসের আয়ের উৎস কী?
আমি নিশ্চিত, এটাও অনেকে জানেন না।
ড মুহাম্মদ ইউনূস হচ্ছেন পৃথিবীর ওয়ান অব দ্যা হায়েস্ট পেইড স্পীকার। স্পীচ দেয়ার জন্য ওনাকে টাকা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ওনার বক্তব্য শোনার জন্য খরচ করতে হয় ৭৫ হাজার থেকে ১ লাখ ডলার মত। কখনো আরো বেশী।
বিশ্বের নামীদামী প্রতিষ্ঠান গুলো ওনাকে নিয়ে যান ওনার বক্তব্য শুনতে।
ওনাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনার জন্যও ডাকা হয়।
২০২৪ সালের ফ্রান্সে অনুষ্ঠিতব্য প্যারিস অলিম্পিকের আয়োজক কমিটির ৩ জনের একজন হচ্ছে মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে আরেকজন প্রেসিডেন্ট ম্যাঁখ্রো।
২০২৬ ইতালী অলিম্পিকের জন্য ইতালীয়ানরা ওনাকে পাওয়ার জন্য তদবির করছে। যাতে ওনি পরামর্শ দেন।

এদিকে আমরা মনে করি গ্রামীন ব্যাংক আর গ্রামীন টেলিকমের মত ওনার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানী থেকে টাকা পান তিনি। যেন গ্রামীন ব্যাংকের সুদগুলো সরকার খায় না, ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস খায়। এরা কখনো প্রকাশ্যে স্বীকারই করে না যে, এগুলোতে তার ০.০১% শেয়ারও নাই।

ওনি একটা বিশ্ববিদ্যালয় করতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশে, কিন্তু অনুমতি পাননি। একটা আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হতো। ওনি বললে পৃথিবীর সেরা সেরা প্রফেসররা সেখানে এসে ক্লাস নিয়ে যেতো। ওনি ডাকলে এমনকি বিল গেটস কিংবা আমেরিকান প্রেসিডেন্টও তাঁর ইউনিভার্সিটিতে স্পীচ দিতে চলে আসতো।
কিন্তু সেটা হতে দেয়া হয়নি। তাঁকে ইউনিভার্সিটি করতে দেয়া হয়নি।

ড মুহাম্মদ ইউনূসকে যত জানবেন, আপনার মনে হবে- দেশ এবং জাতি হিসেবে আমরা ড মুহাম্মদ ইউনূসকে ডিজার্ভই করিনা।

একটা প্রশ্ন করি, আপনি কি জানতেন মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীনব্যাংক কিংবা গ্রামীন টেলিকমের মত ওনার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানীতে নিজের জন্য কোনো শেয়ার রাখেননি?

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

“প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস: বাংলার গর্ব, বৈশ্বিক সম্প্রীতির প্রতীক”

আপডেট সময় : ০৫:৩২:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ড.ইউনুস! বাংলার ইতিহাসে গত ৯০ বছরে জন্ম নেয়া একমাত্র গ্লোবাল সেলিব্রেটি হলেন প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনুস। শতকরা ৮৩% লোকই জানেন না কে ড.মোহাম্মদ ইউনুস!

পৃথিবীতে সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার নোবেল, সেটা নিশ্চয়ই জানেন? সম্মানসূচক হিসেবে নোবেলের পরে কোন পুরস্কারের অবস্থান তা কি জানেন? সম্মানসূচকে,

১.নোবেল
২.অ্যামেরিকার প্রসিডেন্সিয়াল এওয়ার্ড
৩.মার্কিন কংগ্রেশনাল এওয়ার্ড

পৃথিবীর ইতিহাসে উপরের ৩ টা পুরস্কারই জিতেছেন এমন মানুষ আছে বা ছিলেন ১২ জন!বুঝতেই পারছেন পরের লাইনটা কি হবে,

হ্যা, সেই ১২ জনের একজন প্রফেসর ড.মোহাম্মদ ইউনুস 🧡

মেসিকে নিশ্চয়ই চিনেন! যদি বলি এই লিওনেল মেসি লাইনে দাড়িয়ে ছিলেন প্রফেসর ডা ইউনুসের জন্য,বিশ্বাস হয়,না হলেও সত্য!

‘অলিম্পিক গেমস’ পৃথিবীর সম্মানজনক প্রতিযোগিতার একটি। আর অলিম্পিকে সবচেয়ে সম্মানিত মেহমান হলেন মশাল বাহক, জাপানে অনুষ্ঠিত ২০২০ অলিম্পিকে মশাল বাহক ছিলেন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনুস💖

বর্তমানে বিশ্বের লিডিং ইন্টালেকচুয়ালের যেকোনো তালিকায় টপ ১০ এর ভিতরে থাকেন ডা.ইউনুস। মুসলিম বিশ্বে নোবেল বিজয়ী ইউনুসের বিকল্প খুজে পাওয়া টা খুবি কঠিন,কিন্তু তিনি আমাদের বাংলাদেশের! এদেশে আর এমন ইউনুস জন্মাবে কিনা আজও সন্দেহ!

১. মাইক্রোসফটের বিল গেটস নিজে গাড়ি ড্রাইভ করে প্রফেসর ইউনুসকে পুরো সিলিকন ভ্যালি শহর দেখিয়েছিলেন।

২. কোর্ট-কাছাড়ির ৮ তলার এজলাশে তাঁকে যখনই হাজিরা দিতে হত সেসময় কোর্ট বিল্ডিং এর লিফট বন্ধ করে দেয়া হত। ৮২ বছরের অশিতিপর এই আসামীকে প্রতিবারই হেঁটে হেঁটে ৮ তলায় যেতে হত। এবং এই ঘটনা নাকি ৪০ বারের মত ঘটেছে।
শাকুর মজিদ
নাট্যকার,লেখক,স্থপতি।
সারা পৃথিবীর ১০৭টা ইউনিভার্সিটিতে মুহাম্মদ ইউনূস সেন্টার আছে। ইউনিভার্সিটিগুলো নিজেদের উদ্যোগে এটা করেছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে তাঁর মাইক্রো-ফাইনান্স। যেটা তাঁকে এবং তাঁর গ্রামীন ব্যাংকে নোবেল শান্তি পুরষ্কার এনে দিয়েছিল।

ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসকে বিশ্রীভাবে ‘সুদখোর’ ঢাকা হয় বারবার। মজার ব্যাপার হচ্ছে- মুহাম্মদ ইউনূসকে যারা পছন্দ করেন তাদের বেশীরভাগও জানেন না, মুহাম্মদ ইউনূসের সুদের ব্যবসা নাই। গ্রামীণ ব্যাংক তার প্রতিষ্ঠিত হলেও গ্রামীন ব্যাংকে তাঁর এক টাকার মালিকানাও নাই, শেয়ারও নাই। কখনোই ছিল না।

জিনিসটা আপনার-আমার কাছে আশ্চর্যজনক মনে হতে পারে। কিন্তু এটাই সত্যি। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মাইক্রো-ফাইনান্সের ধারণার মূল ভিত্তিই হচ্ছে এটা।
এই ব্যবসার কেউ মালিক হতে পারবে না। সম্পূর্ণ নন-প্রফিট তথা অলাভজনক।
এটাকে বলে সামাজিক ব্যবসা। নির্দিষ্ট কোনো মালিক নাই। জনগণই এর মালিক।
বাইর থেকে অনুদানের টাকা এনে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ড মুহাম্মদ ইউনূস। নিজে এটি প্রতিষ্ঠা করলেও প্রতিষ্ঠানে তার এক পয়সার মালিকানাও রাখেননি। বরং এর ২৫% মালিকানা সরকারের, বাকি মালিকানা গরীব মানুষের। নিজের প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকে ড মুহাম্মদ ইউনূস মাত্র ৩০০ ডলার বেতনে চাকরী করতেন।
তিনি যে নিজের কোনো শেয়ার রাখেননি তা না, কোম্পানীকে এমনভাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন যাতে কেউ এর একক মালিক হতে না পারে। কোম্পানী অধ্যাদেশ ২৮ ধারা অনুযায়ী তিনি এটি রেজিস্ট্রেশন করেন।

শুধু যে গ্রামীন ব্যাংকে তিনি মালিকানা রাখেননি তা কিন্তু না। জর্জ সরোস, টেলিনরদের এনে তিনি গ্রামীন টেলিকম প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর কথায় টেলিনর বাংলাদেশে আসে। তাঁর কথায় তাঁর বিলিয়নিয়ার বন্ধুরা গরীবদের উন্নতির জন্য ফান্ড দেয়। তিনি গ্রামীন টেলিকম প্রতিষ্ঠা করেন। সেটাও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবেই। অনেকেই জানেন না গ্রামীন টেলিকমকে নন ফর প্রফিট কোম্পানী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন ড মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানেও তিনি নিজের জন্য ১% মালিকানাও রাখেননি। তিনি চাইলে ইজিলি ১০-১৫ পার্সেন্ট মালিকানা নিজের জন্য রেখে দিতে পারতেন। অথচ লাভের এক টাকাও যাতে নিজের কাছে না আসে, সেটা নিশ্চিত করেন তিনি।

তাঁর প্রতিষ্ঠিত সরকার নিয়ন্ত্রিত গ্রামীণ ব্যাংকে এখনো সুদের হার বাংলাদেশে সর্বনিম্ন। অথচ স্বাভাবিকভাবে আপনার মনে হবে গ্রামীন ব্যাংকের মত সুদ বোধহয় কেউ নেয় না। আর নিশ্চয় এই টাকায় প্রফিট করেন ড ইউনূস!

আসলে আমাদের দেশের মানুষ এসব কল্পনাও করতে পারেন না, একজন মানুষ ব্যবসা করবে অথচ সেখান থেকে নিজে কোনো লাভ করবে না। এমন কথা আমরা ভাবতেই পারিনা। আমরা ভাবতে পারি কেবল টাকা কামানোর কথা।
যেমনভাবে ড মুহাম্মদ ইউনূস বলেন- টাকা কামানোতে আছে সুখশান্তি, অন্যের উপকারে আছে প্রশান্তি। ওনার ভাষায় ‘নিজের জন্য টাকা কামানো হয়তো হ্যাপিনেস, অন্যের উপকার হচ্ছে সুপার হ্যাপিনেস।’

মুহাম্মদ ইউনূস মনে করেন, সবাই এককভাবে সম্পত্তির মালিক হতে থাকলে গরীব আরো গরীব হয়ে যাবে, ধনী আরো ধনী হবে। ফলে বিশ্বব্যবস্থা অচল হয়ে পড়বে। এই বিশ্বাস থেকেই ওনি সব ননপ্রফিট বা অলাভজনক প্রতিষ্ঠান তৈরী করে গেছেন, নিজের কোনো মালিকানা রাখেননি।
এরকমটা কি আপনি ভাবতে পারেন? আপনি বাংলাদেশের যেকোনো কোম্পানী দেখেন, তাদের সব নিজেদের মালিকানা।
কোম্পানীর কথা বাদ দেন, এনজিও ব্র‍্যাক দেখেন! মালিকানা ফজলে হাসান আবেদের পরিবারের। বড় বড় পদে পরিবারের সদস্যরা আছে।
কিন্তু মুহাম্মদ ইউনূস সেটা করেননি। তাঁর প্রতিষ্ঠিত কোম্পানীতে নিজের বা পরিবারের কাউকে রাখেননি।

অথচ ড মুহাম্মদ ইউনূস চাইলে এসব ব্যবসায় নিজের মালিকানা রেখে ইজিলি বিলিয়নিয়ার হয়ে যেতে পারতেন। খুব ইজিলি।
তাঁর প্রায় সব বন্ধুবান্ধব বিলিয়নিয়ার, মাল্টি বিলিয়নিয়ার। তিনি সেদিকে যাননি।

অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন, তাহলে ড মুহাম্মদ ইউনূসের আয়ের উৎস কী?
আমি নিশ্চিত, এটাও অনেকে জানেন না।
ড মুহাম্মদ ইউনূস হচ্ছেন পৃথিবীর ওয়ান অব দ্যা হায়েস্ট পেইড স্পীকার। স্পীচ দেয়ার জন্য ওনাকে টাকা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ওনার বক্তব্য শোনার জন্য খরচ করতে হয় ৭৫ হাজার থেকে ১ লাখ ডলার মত। কখনো আরো বেশী।
বিশ্বের নামীদামী প্রতিষ্ঠান গুলো ওনাকে নিয়ে যান ওনার বক্তব্য শুনতে।
ওনাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনার জন্যও ডাকা হয়।
২০২৪ সালের ফ্রান্সে অনুষ্ঠিতব্য প্যারিস অলিম্পিকের আয়োজক কমিটির ৩ জনের একজন হচ্ছে মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে আরেকজন প্রেসিডেন্ট ম্যাঁখ্রো।
২০২৬ ইতালী অলিম্পিকের জন্য ইতালীয়ানরা ওনাকে পাওয়ার জন্য তদবির করছে। যাতে ওনি পরামর্শ দেন।

এদিকে আমরা মনে করি গ্রামীন ব্যাংক আর গ্রামীন টেলিকমের মত ওনার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানী থেকে টাকা পান তিনি। যেন গ্রামীন ব্যাংকের সুদগুলো সরকার খায় না, ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস খায়। এরা কখনো প্রকাশ্যে স্বীকারই করে না যে, এগুলোতে তার ০.০১% শেয়ারও নাই।

ওনি একটা বিশ্ববিদ্যালয় করতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশে, কিন্তু অনুমতি পাননি। একটা আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হতো। ওনি বললে পৃথিবীর সেরা সেরা প্রফেসররা সেখানে এসে ক্লাস নিয়ে যেতো। ওনি ডাকলে এমনকি বিল গেটস কিংবা আমেরিকান প্রেসিডেন্টও তাঁর ইউনিভার্সিটিতে স্পীচ দিতে চলে আসতো।
কিন্তু সেটা হতে দেয়া হয়নি। তাঁকে ইউনিভার্সিটি করতে দেয়া হয়নি।

ড মুহাম্মদ ইউনূসকে যত জানবেন, আপনার মনে হবে- দেশ এবং জাতি হিসেবে আমরা ড মুহাম্মদ ইউনূসকে ডিজার্ভই করিনা।

একটা প্রশ্ন করি, আপনি কি জানতেন মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীনব্যাংক কিংবা গ্রামীন টেলিকমের মত ওনার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানীতে নিজের জন্য কোনো শেয়ার রাখেননি?