শাইনপুকুর গ্রামের উর্দুভাষী এক প্রভাবশালী পরিবারের উত্থান-পতন
ফজলুর রহমান থেকে সালমান এফ রহমান
- আপডেট সময় : ০১:২৭:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৩৯ বার পড়া হয়েছে
ফজলুর রহমানের দুই ছেলে সোহেল এফ রহমান ও সালমান এফ রহমান ছবি: সোহেল এফ রহমানের ব্লগ
ঢাকার দোহার উপজেলায় পদ্মা-তীরবর্তী গ্রাম শাইনপুকুর। এ গ্রামের সবচেয়ে প্রভাবশালী পরিবারটির পত্তন ঘটেছিল দেশভাগ-পরবর্তী পাকিস্তানে, লিয়াকত আলী খান মন্ত্রিসভার এক সদস্যের হাত ধরে। তৎকালীন পূর্ববঙ্গের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের অন্যতম এ রাজনীতিকের নাম ফজলুর রহমান। ব্যবসায়ী হিসেবেও বেশ নাম করেছিলেন তিনি। দাবি করা হয়, পাকিস্তান আমলে প্রথম বাঙালি জুট মিল ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা ছিলেন ফজলুর রহমান।
শাইনপুকুরের উর্দুভাষী পরিবারটি পরে স্বাধীন বাংলাদেশে আরো প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। ব্যবসা-বাণিজ্যে তার সফলতার ধারা খুব ভালোভাবেই ধরে রাখতে পেরেছেন ফজলুর রহমানের দুই ছেলে সোহেল ফসিউর রহমান ও সালমান ফজলুর রহমান। তাদের হাত ধরে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প গ্রুপ হয়ে ওঠে বেক্সিমকো। আর সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টার পদে থেকে সালমান এফ রহমান হয়ে উঠেছিলেন গত দেড় দশকে আর্থিক খাতসহ সার্বিক অর্থনীতির অন্যতম বড় নিয়ন্ত্রক। তবে দেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এ পরিবারের প্রভাব অনেকটাই ম্রিয়মাণ হয়ে পড়েছে। সালমান এফ রহমান এখন কারাগারে। পরিবারের অন্য সদস্যরাও আছেন লোকচক্ষুর অন্তরালে।
পরিবারটি প্রথমবারের মতো প্রতিপত্তির চূড়ায় ওঠে দেশভাগের পর। পাকিস্তান আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন ফজলুর রহমান। পাকিস্তান আমলে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার সমর্থক ছিলেন তিনি। আরবি হরফে বাংলা লেখার ধারণাটির অন্যতম প্রবক্তা ছিলেন তিনি। পরিবারের সদস্যরা এখনো নিজেদের মধ্যে উর্দুতেই কথা বলেন।
ফজলুর রহমানের জন্ম ১৯০৫ সালে। পূর্ব পাকিস্তানের ধনী, শিক্ষিত ও মুসলিম পরিবারের এ সদস্য মাধ্যমিক পর্যায়ের লেখাপড়া সম্পন্ন করেন দোহারের ভারগা উচ্চ বিদ্যালয়ে। তিনি ১৯২৯ সালে ইতিহাস বিষয়ে বিএ এবং ১৯৩৩ সালে এলএলএম ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি আইন ব্যবসায় নিয়োজিত হন। কর্মজীবনের শুরুতেই মুসলিম লীগে যোগ দেন। এক পর্যায়ে বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের ওয়ার্কিং কমিটি এবং নিখিল পাকিস্তান মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। ঢাকা শহর থেকে বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য নির্বাচিত হন ১৯৩৭ সালে।
১৯৪৩ সালে ফজলুর রহমান ব্যবস্থাপক সভার চিফ হুইপ এবং ১৯৪৬ সালে বঙ্গীয় সরকারের রাজস্বমন্ত্রী নিযুক্ত হন। ১৯৪৬ সালে পুনরায় তিনি ব্যবস্থাপক সভার সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর লিয়াকত আলী খানের কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষা, বাণিজ্য ও শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৫১-৫৩ সালে খাজা নাজিমউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার শিক্ষা ও বাণিজ্যমন্ত্রী নিযুক্ত হন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগের প্রার্থী হিসেবে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৫৫ সালে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের ভোটে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পাকিস্তান দ্বিতীয় গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন ফজলুর রহমান। ১৯৫৭ সালে তিনি আইআই চুন্দ্রীগড়ের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বাণিজ্য, অর্থ ও আইনবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ফজলুর রহমান ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য, বঙ্গীয় রয়্যাল এশিয়াটিক সোসাইটির সদস্য ও পাকিস্তান হিস্টোরিক্যাল সোসাইটির প্রেসিডেন্ট।
রাজনীতির পাশাপাশি ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হিসেবেও পাকিস্তানের সম্পদশালীদের কাতারে নিজেকে তুলে আনেন ফজলুর রহমান। পাকিস্তানের জন্মের পর দেশটির বৃহত্তম শিল্প খাতগুলোর অন্যতম ছিল পাট ও বস্ত্র। কিন্তু এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর ভিত্তি ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে। বাঙালি উদ্যোক্তাদের মধ্যে কমই সে সময় নতুন ব্যবসা স্থাপনের অনুমতি পেয়েছেন। তবে ক্ষমতাঘনিষ্ঠ অবস্থানের কারণে বিষয়টি ফজলুর রহমানের জন্য খুব একটা বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। ১৯৫৬ সালে তিনি প্রথম বাঙালি হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানে নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড বা এনডিআই নামে জুট মিল প্রতিষ্ঠা করেন।
তবে তার প্রভাব খর্ব হতে শুরু করে আইয়ুব খান পাকিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর। ১৯৫৮ সালে ক্ষমতা দখলের ঠিক পরের দিন এক আদেশ জারির মাধ্যমে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেন আইয়ুব খান। এ নিয়ে পরে দুটি অধ্যাদেশ জারি করেন তিনি। এর একটি হলো পাবলিক অফিস ডিসকোয়ালিফিকেশন অর্ডার বা পোডো। অন্যটি ইলেকটিভ বডিজ ডিসকোয়ালিফিকেশন অর্ডার বা এবডো। নিয়ম করা হয়, পোডোর আওতায় কেউ আদালতে দোষী প্রমাণিত হলে এবডো আইনের অধীনে তিনি ১৯৬৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। ১৯৫৯ সালের ৪ সেপ্টেম্বর পূর্ব পাকিস্তানের ৪২ জন রাজনীতিবিদকে এবডোর মাধ্যমে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। তাদের অন্যতম ফজলুর রহমান। পাকিস্তানের প্রথম দিককার প্রভাবশালী এ ব্যক্তির রাজনৈতিক জীবনের সেখানেই পরিসমাপ্তি ঘটে। ১৯৬৫ সালে উদ্যোক্তা ও রাজনীতিবিদ ফজলুর রহমান মৃত্যুবরণ করেন।
ফজলুর রহমানের মৃত্যুর পর এক পর্যায়ে নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজের উৎপাদন সক্ষমতা দিনে চার টনে নেমে এসেছিল। এনডিআইও এক পর্যায়ে ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়ে। ফজলুর রহমানের মৃত্যুর পর তার দুই ছেলে সোহেল ও সালমান এফ রহমান ব্যবসাকে এগিয়ে নেন। এক পর্যায়ে পিতার ঋণ পরিশোধ, মিলের উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি একে সম্পূর্ণ রফতানিমুখী করে গড়ে তোলেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর বেসরকারি পাটকলগুলো রাষ্ট্রায়ত্ত করে নেয়া হয়। এনডিআইয়ের কার্যক্রম থেকে সরে অন্য খাতের ব্যবসায় মনোযোগী হন সোহেল ও সালমান এফ রহমান। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট কোম্পানি বা বেক্সিমকো। শুরু হয় ওষুধ আমদানির ব্যবসা।
১৯৫৭ সালের ড্রাগ আইনের আওতায় ১৯৭২ সালের পর বাংলাদেশের স্বল্পসংখ্যক ব্যবসায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ওষুধ আমদানির ব্যবসায় প্রবেশ করতে পারতেন। কিন্তু রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হওয়ায় আমলাতন্ত্রের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচিত ছিল তাদের। আর শেখ কামালের সঙ্গে বন্ধুত্বও ছিল সালমান এফ রহমানের। এসব পরিচিতিকে কাজে লাগিয়ে ওষুধ আমদানি ও অন্যান্য পণ্য রফতানির লাইসেন্স পান সোহেল ও সালমান এফ রহমান। বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস থেকে ওষুধ আমদানি করতে শুরু করে বেক্সিমকো। আর রফতানি করতে শুরু করে সামুদ্রিক খাবার ও হাড়ের গুঁড়া।
জিয়াউর রহমানের আমলে দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৭৮ সালে নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ফেরত পান ফজলুর রহমানের ছেলেরা। এরপর পাট খাতে তারা তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ শুরু করেন। প্রতিষ্ঠা পায় সোনালী আঁশ ও অ্যাসেস এক্সপোর্টার্স লিমিটেড। ১৯৭৯ সালে তারা প্রতিষ্ঠা করেন শাইনপুকুর জুট স্পিনার্স লিমিটেড। এরপর গত কয়েক দশকে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ হয়েছে আবাসন, সিরামিকস, আইটিসহ অন্যান্য খাতে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, ফজলুর রহমানের সময়ে শুরু হওয়া রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে বিশেষ যোগসূত্র পরিবারটিকে ওষুধ শিল্পে নিজস্ব প্রাতিষ্ঠানিক ভিত শক্তিশালী করতে সহায়তা করেছিল। বর্তমানে বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন সোহেল এফ রহমান। আর সালমান এফ রহমান আছেন ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি সালমান এফ রহমান আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যানও ছিলেন। বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের পাশাপাশি বেক্সিমকো গ্রুপের আওতায় বস্ত্র, সিরামিকস, রিয়েল এস্টেট, নির্মাণ, ট্রেডিং, সামুদ্রিক খাবার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, মিডিয়া, বিদ্যুৎ-জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে ৩০টিরও বেশি কোম্পানি রয়েছে।
বাংলাদেশে পারিবারিক ব্যবসাবিষয়ক একাধিক গবেষণায় দেখা যায়, পাকিস্তান আমল থেকেই বাংলাদেশ ভূখণ্ডে ব্যবসা ও অর্থনীতির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অংশগ্রহণ সহজ ছিল না। সম্পদশালী হওয়ার পাশাপাশি এর জন্য প্রয়োজন হতো রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শক্তিশালী যোগসূত্র, যার সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করেছিলেন সালমান এফ রহমানের বাবা ফজলুর রহমান। স্বাধীন বাংলাদেশেও সালমান এফ রহমানের মাধ্যমে ক্ষমতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র গড়ে তুলেছিল পরিবারটি। শুধু শেখ কামালের সঙ্গে বন্ধুত্ব নয়, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময়ও ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান শেখ হাসিনার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোয় ভূমিকা রেখেছিল।
পিতার মতোই রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন সালমান এফ রহমান। ঢাকা-১ আসন নবাবগঞ্জ-দোহার থেকে বিলুপ্ত দ্বাদশ সংসদে আওয়ামী লীগের এমপি ছিলেন সালমান এফ রহমান। তার বিরুদ্ধে সরকারের মন্ত্রী সমমর্যাদার পদে থেকে অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য নীতি প্রণয়ন ও এর প্রয়োগ ঘটিয়ে নিজের ব্যবসা সম্প্রসারণের অভিযোগ রয়েছে। রয়েছে ব্যাংক চেয়ারম্যান হিসেবে এককভাবে ঋণ বিতরণের সিদ্ধান্ত নেয়া এবং নামে-বেনামে ঋণ গ্রহণের অভিযোগও। দেশের ব্যাংক খাতে এখন বেক্সিমকো গ্রুপের ঋণের পরিমাণ অন্তত ৫৬ হাজার কোটি টাকা। এর বড় অংশই খেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা। শেখ হাসিনার পতনের পর হত্যাসহ বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন সালমান এফ রহমান। বর্তমানে তিনি জেলে। তার বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোয় কর্মসংস্থান ৬০ হাজারের বেশি বলে দাবি করা হয়।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে দেশের অর্থনীতির এক পর্যবেক্ষক বণিক বার্তাকে বলেন, ‘স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময়ে সালমান এফ রহমানদের কর্মযজ্ঞ দেশে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র গড়ে তোলার মতো ইতিবাচক ভূমিকা অর্থনীতিতে রেখেছিল। আবার বিভিন্ন সময়ে সরকারি সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে নানা পন্থায় ব্যাংক লুটের ঘটনাও ঘটছে। এ পরিস্থিতির সুযোগ গ্রহণকারীদের অন্যতম সালমান এফ রহমান। পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারিতেও তার নাম উঠে এসেছে।’
সর্বশেষ রফতানি বাণিজ্যের আড়ালে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে সিআইডি মামলা করেছে বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমান ও তার ভাই সোহেল এফ রহমানের বিরুদ্ধে। সংস্থাটির দাবি, দুই ভাইয়ের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বেক্সিমকো গ্রুপের মালিকানাধীন মোট ১৭ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে জনতা ব্যাংক পিএলসি লোকাল অফিস থেকে ৯৩টি এলসি/সেলস কন্ট্রাক্ট (বিক্রয় চুক্তি) গ্রহণপূর্বক এর বিপরীতে পণ্য রফতানি করে নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও রফতানিমূল্য প্রায় ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা) বাংলাদেশে না এনে বিদেশে পাচারের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
দ্বিতীয় প্রজন্মের হাত ধরে বেক্সিমকো সাম্রাজ্য সামলানোর দায়িত্বে যুক্ত হয়েছিলেন সোহেল এফ রহমানের ছেলে শাহরিয়ার রহমান এবং সালমান এফ রহমানের ছেলে শায়ান এফ রহমান। যদিও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে শায়ান এফ রহমান দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।
পিতামহ থেকে শুরু করে চাচা ও বাবার গড়ে তোলা সাম্রাজ্য পরিচালনায় চড়াই-উতরাই নিয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে শায়ান এফ রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এত বছরের যাত্রায় অনেক প্রতিকূলতা আমাদের মোকাবেলা করতে হয়েছে। যদিও আমরা আমাদের ৬০-৭০ হাজার কর্মীকে ধরে রেখেছি। সেসব কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদেরও প্রতিকূলতা মোকাবেলা করতে হয়েছে। যতই প্রতিকূলতা আসুক আমরা সেটা থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছি। সব সময়ই আমরা আমাদের কর্মী ও আমাদের ব্যবসাকে অগ্রাধিকারে রেখেছি। এখন যা হচ্ছে রাজনৈতিক কারণে। এমনকি মিডিয়ায়ও যে যা ইচ্ছা লিখতে চায়, লিখছে। আইনের শাসন থাকলে ইনশাআল্লাহ আমরা এ পরিস্থিতি থেকে বের হব।’