ঢাকা ১১:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বে নির্বাচন সংস্কার কমিশন গঠন আমি স্যামসাং ব্যবহার করি, স্ক্রিনশট গেছে আইফোনের : জনপ্রশাসন সচিব উন্নয়নের ভ্রান্ত ধারণা: ঋণে ডুবে থাকা দেশ টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় নাহিদ ইসলাম আমার টাকা-পয়সার প্রতি লোভ নেই, ৫ কোটি হলেই চলবে এক দিনেই হাওয়া ৮ হাজার কোটি টাকার বাজার মূলধন অবশেষে দেখা মিলল আসাদুজ্জামান কামালের ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ কারাগারে কেমন আছেন ‘ভিআইপি’ বন্দীরা একটি ফোনকল যেভাবে বদলে দিয়েছে ড. ইউনূসের জীবনের গতিপথ ড. ইউনুসের Three Zeros থিয়োরি বর্তমান উপদেষ্টাদের সঙ্গে নতুন চার-পাঁচজন মুখ যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা কয়েকটি জাতীয় দিবস বাতিল করতে পারে সরকার সমবায় ব্যাংকের ১২ হাজার ভরি স্বর্ণ গায়েব: উপদেষ্টা “প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস: বাংলার গর্ব, বৈশ্বিক সম্প্রীতির প্রতীক” খেলোয়াড় সাকিবের নিরাপত্তা আছে, ফ্যাসিস্ট সাকিবের ক্ষেত্রে অবান্তর: ক্রীড়া উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সম্মেলন থেকে কী অর্জন করলেন? জাতিসংঘে তিন-শুন্যের ধারণা দিলেন ড. ইউনুস যন্ত্রণার নাম ব্যাটারি রিকশা তরুণ সমাজের অফুরান শক্তি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে— ড. ইউনূস

বাঙালি মুসলমানের হজের স্বপ্ন এবং আমার কিছু কথা

শামীমা নাসরিন, সাংবাদিক
  • আপডেট সময় : ০৮:০৩:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জুন ২০২২ ২০ বার পড়া হয়েছে
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
সরকারি চাকুরে বাবার স্বপ্ন ছিল অবসরের পর অবসরভাতার ‍টাকায় মা-সহ হজে যাবেন৷ বাবার সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি৷ অবসরে যাওয়ার সুযোগ তিনি পাননি, তার আগেই মারা যান৷

বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ সৌদি আরবে হজ পালন করতে যান, তাদের একটি বিরাট অংশই অবসরভাতার টাকায় বা সারাজীবনের উপার্জন থেকে অল্প অল্প করে সঞ্চয় করা অর্থে হজ পালন করেন৷

বেশিরভাগেরই থাকে না বিদেশে ভ্রমণের পূর্ব অভিজ্ঞতা৷ জীবনের শেষ বেলায় শারীরিক সামর্থ্যও অনেক কমে আসে৷ ফলে হজের শ্রমসাধ্য সব নিয়ম পালন তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে ওঠে

মুসলমান বাঙালি মাত্রই মনের কোণে হজের স্বপ্ন লালন করেন৷ ইসলাম ধর্মের যে পাঁচটি স্তম্ভ, যা অবশ্যই পালন করতে হবে, তার একটি হজ৷ তবে হজ সবার জন্য নয়, বরং সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্যই হজ পালন ফরজ৷

অনেক বাঙালির এই সামর্থ্যবান হয়ে উঠতে জীবনের অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়৷ নানা উপায়ে তারা হজে যাওয়ার অর্থ জোগাড় করেন৷ বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নে মসজিদভিত্তিক মক্তবের শিক্ষক আয়ুব আলী৷ পাথরঘাটা আমার নানা শ্বশুরবাড়ি৷ সেখানে কথা হয় আইয়ুব আলীর সঙ্গে৷ নিম্নমধ্যবিত্ত এই শিক্ষক মক্তবে পড়িয়ে মাত্র চার হাজার টাকা পান৷ সামান্য ওই বেতন থেকেই তিনি হজের জন্য টাকা জমাতে শুরু করেন৷ সঙ্গে বাড়ির পাশে জমিতে আগেই কিছু গাছ লাগিয়েছিলেন৷

হজ ফরজ

ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি হজ৷ আর্থিক ও শারীরিকভাবে সমর্থ পুরুষ ও নারীর ওপর হজ ফরজ৷ সুরা আল ইমরানের ৯৭ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘‘আল্লাহর তরফ থেকে সেই সব মানুষের জন্য হজ ফরজ করে দেওয়া হয়েছে, যারা তা আদায়ের সামর্থ্য রাখে৷’’

বদলি হজ

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, বিদায় হজে খাশ’আম গোত্রের এক নারী রাসুলুল্লাহ (সা.)কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘‘হে আল্লাহর রাসুল, আমার বাবার ওপর হজ ফরজ৷ কিন্তু তিনি এত বৃদ্ধ যে, গাড়িতে স্থির হয়ে বসে থাকতে পারেন না৷ আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করতে পারব?’’ নবী (সা.) বলেছিলেন, ‘‘হ্যাঁ, তুমি পারবে৷’’ (সহীহ বুখারী)৷

তবে…

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তিকে হজের ইহরামের সময় ‘‘শুবরুমার পক্ষ থেকে লাব্বাইক’’ বলতে শুনে রাসুলুল্লাহ (সা.) জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘‘শুবরুমা কে?’’ লোকটি বলল, ‘‘আমার ভাই৷’’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘‘তুমি কি নিজের হজ করেছ?’’ সে বলল, ‘‘না৷’’ নবী (সা.) বলেছিলেন, ‘‘আগে তোমার নিজের হজ করো, তারপর শুবরুমার পক্ষ থেকে করো৷’’ (সহীহ আবু দাউদ শরীফ)

বদলি হজের খরচ

অন্যের পক্ষ থেকে বদলি হজে গমনকারী ব্যক্তি হজে প্রেরণকারী ব্যক্তির কাছ থেকে কেবল হজের খরচই গ্রহণ করবেন এবং প্রেরণকারীও কেবল হজের খরচই বহন করবেন৷ কোনো রকমের বিনিময় বা পারিশ্রমিক লেনদেন হারাম৷ বদলি হজের জন্য পারিশ্রমিক দেওয়া হলে গ্রহণকারী ও প্রদানকারী উভয়েই গুনাহগার হবেন এবং প্রেরিত ব্যক্তির জন্য হজের খরচের অতিরিক্ত সব টাকা প্রেরণকারীকে ফেরত দেওয়া ওয়াজিব হবে৷ (দুররুল মুখতার)৷

মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে হজ

হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, জুহায়না গোত্রের এক নারী হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে বলেছিলেন, ‘‘আমার মা হজের মানত করেছিলেন, কিন্তু তা আদায় করার আগেই তিনি মারা গেছেন৷ আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করবো?’ নবী (সা.) বলেছিলেন, ‘‘হ্যাঁ, তার পক্ষ থেকে তুমি হজ করবে৷ যদি তার কোনো ঋণ থাকে তবে কি তুমি তার ঋণ পরিশোধ করতে না? সুতরাং আল্লাহর ঋণ পরিশোধ কর৷’’ (সহীহ বুখারী)

হারাম সম্পদ দিয়ে হজ সংক্রান্ত হাদিস

হযরত উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘‘যখন কোনো লোক হারাম সম্পদ দিয়ে অথবা হারাম উপায়ে হজ করতে গিয়ে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ বলেন তখন আল্লাহ তায়ালা তাকে লক্ষ্য করে বলেন, তোমার সম্পদ হালাল নয়৷ তোমার ‘লাব্বাইক’ এ দরবারে গ্রহণযোগ্য নয়৷ তোমার হজ তোমার দিকেই ছুড়ে দেওয়া হলো৷’’ (হাইসামি)৷

সরকারের টাকায় হজ বৈধ

বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী বলেন, ‘‘কোনো রাষ্ট্র বা সরকার চাইলে কোনো ব্যক্তিকে হজে পাঠাতে পারে৷ সেক্ষেত্রে তারা বিশেষ তহবিল ব্যবহার করে থাকে৷ রাষ্ট্রের স্বার্থে, জণগণের কল্যাণে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে থাকে৷ বিভিন্ন গুণীজনকে বিভিন্নভাবে সম্মানিত করে থাকে৷ এক্ষেত্রে অর্থায়ন করা হলে, তাতে দোষের কিছু নেই৷ এটি বৈধ, এটি জায়েজ৷’’

‘‘আমি ২০১১ সাল থেকে হজের জন্য ‍টাকা জমাতে শুরু করি৷ যে টাকা জমাতাম, তা নিজের কাছে না রেখে ব্যাংকে রাখতাম যাতে ঠেকে (বিপদে পড়লে) গেলেও ওই টাকা খরচ করতে না পারি৷ ব্যাংক থেকে আমি কোনো সুদ নেই নাই৷ যা টাকা রাখছি, সেটাই তুলছি৷ আর গাছ লাগানোর সময় আল্লাহকে বলেছিলাম গাছগুলো যেন তাড়াতাড়ি বড় হয়৷ মরার আগে সেগুলো বিক্রি করে হজে যেতে চাই৷’’

‘‘আল্লাহ আমার ইচ্ছা পূরণ করেছেন৷ জমানো টাকা আর গাছ বিক্রির টাকা মিলিয়ে ২০১৯ সালে আমি হজ করে এসেছি৷’’

আইয়ুব মামার হজের স্বপ্ন পূরণ হলেও সবার ভাগ্যে তা হয় না৷ আমার দাদার বাবা (বড়আব্বা বলি আমরা) মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদারদের গুলিতে নিহত হন৷ ছোট বেলায় দাদার কাছে শুনেছি ওনার বাবার খুব হজে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল, এজন্য কোরআন শরীফের ভেতর টাকা জমাতেন, গ্রামের মানুষ তার সেই ইচ্ছার কথা জানতেন৷ নিজের বাড়ির উঠানে যেদিন ওনাকে গুলি করা হয়, তখন তিনি কোরআন পড়ছিলেন৷ দাদারা বাড়িতে ফিরে ওনার রক্তাক্ত মৃতদেহ পান, কোরআন শরীফের ভেতর টাকা ছিল না!

নিজের বাবার অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণ করতে দাদা হজে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু নানা কারণে তিনিও যেতে পারেননি৷

বাংলাদেশে অনেকেই এভাবে বাবা-মা’র অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণ করতে হজে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন৷

যেমনটা করেছেন ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা শাহনাজ চৌধুরী৷ তিনি ২০১৬ সালে মা-কে নিয়ে হজে যান৷ তিনি বলেন, ‘‘আব্বা মারা যাওয়ার পর প্রায়ই আম্মা বলতেন, তোমার আব্বার খুব হজ করার ইচ্ছা ছিল৷ আমি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি৷ সেখানেও দেখতাম কেউ কেউ হজে যাচ্ছেন৷ সেই দেখে আমারও ইচ্ছা হলো৷ আমার স্বামীর সঙ্গে এটা নিয়ে কথা বললাম৷ ও ওর মা-সহ যেতে চায়৷ আমি বললাম, তাহলে আমিও আম্মাকে নিয়ে যাই৷’’

‘‘মা ও শাশুড়ীকে নিয়ে আমরা হজে যাই৷ ওনারা দুইজনই বেশ বয়স্ক মানুষ৷ ফলে ওনাদের নিয়ে চলাফেরায় বেশ অসুবিধায় পড়তে হয়েছিল, হুইলচেয়ার ব্যবহার করতে হয়েছে৷ ওখানে গিয়ে মনে হয়েছে, আরেকটু আগে এলেই পারতাম৷’’

বেশির ভাগের বেলায় এই ‘আরেকটু আগে’ আর হয়ে ওঠে না৷ বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলা আমতলী সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক রেহানা বেগম৷ অবসরের পর অবসরভাতার টাকায় ২০১৯ সালে স্বামীসহ হজে যান৷ তিনি জানান, হজে যাওয়ার পর তার স্বামী মাহাবুবুর রহমান বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন৷

অনেকদিন ধরে অধ্যাপক রেহানা হজের পরিকল্পনা করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘মধ্যবিত্ত বাঙালি মুসলমানদের তো আর হঠাৎ করে হজে যাওয়ার সুযোগ নেই, তাদের সেই সামর্থ্য থাকে না৷”

‘‘কিন্তু একটা বয়সের পর তাদের মনে নবীর দেশে যাওয়ার, কাবা দর্শণের ইচ্ছা জাগে৷ আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় অনেকে সেটা পারেন না৷ কেউ কেউ সারা জীবন ধরে সঞ্চয় করে হজে যান, কেউ অবসরভাতা পাওয়ার পর৷ যেমনটা আমরা গিয়েছি৷’’

হজে যাওয়ার পর সেখানকার সেবার মান নিয়ে খানিকটা অভিযোগ করলেন রেহানা বেগম৷ এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে আরো উদ্যোগী হওয়ার অনুরোধ করেছেন তিনি৷

করোনা মহামারির আগে সারাবিশ্ব থেকে প্রতিবছর গড়ে ২৫ লক্ষ মানুষ হজ করতে সৌদি আরব যেতেন৷ ২০১৯ সালে করোনার আগের সর্বশেষ হজটি হয়েছে৷ মহামারির কারণে দুই বছর সীমিত পরিসরে হবার পর এবছর সৌদি আরব সরকার ১০ লাখ মানুষকে হজ করার সুযোগ দিয়েছে৷ কোন দেশের কতজন হজ করার সুযোগ পাবেন সেই কোটাও নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে৷

এবার যেহেতু মানুষের সংখ্যা অনেক কম (যদিও হজের খরচ ৫৯ হাজার টাকা বেড়ে গেছে) তাই যারা যাচ্ছেন তারা হয়ত খানিকটা স্বস্তিতে হজ পালন করতে পারবেন৷ না হলে এক সময়ে এত মানুষের উপস্থিতি স্বাভাবিকভাবেই বিশৃঙ্খলার জন্ম দেয়৷ যার বড় প্রমাণ আমরা দেখেছি ২০১৫ সালে৷ সেবার মারাত্মক ভিড়ে হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে সাতশ’র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়৷

সৌদি আরবের প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ভিড় ঠেলে হাঁটা, ছাফা-মারওয়া পাহাড় দৌড়ানোসহ হজের সময় যেসব নিয়ম পালন করতে হয়, তার জন্য শারীরিকভাব শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন৷ ইসলামেও সামর্থ্য থাকলে তরুণ বয়সে হজ করতে বলা হয়েছে৷ কিন্তু আমাদের তো হজের অর্থ জোগাড় করতেই ‍অনেক বছর পেরিয়ে যায়৷ শেষ বয়সে এসে ধর্ম পালনের প্রতি আগ্রহও বাড়ে৷ বাংলাদেশের হজযাত্রীদের লাইনে তাই বয়স্ক মানুষের প্রাধান্য৷ হজ করে এসেছেন কিন্তু শরীর দুর্বল হয়ে পড়ায় সব নিয়ম ঠিকমতো পালন করতে না পারার আফসোস আমি আমার চেনা-জানা অনেককেই করতে দেখেছি৷

মানুষ তার তিল তিল করে জমানো টাকায় হজে যান৷ বৃদ্ধ বয়সে সব নিয়ম পালন করতে না পারায় আফসোসও করেন৷ আবার এই বাংলাদেশেরই কিছু মানুষ আছেন যারা বার বার হজে যান, বছরে একাধিকবার ওমরাহ পালন করেন এবং বেশ গর্বের সঙ্গে সেগুলো অন্যদের বলে বেড়ান৷ তাদের অনেকেই দুর্নীতির টাকায়, মানুষ ঠকিয়ে, ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম উপার্জনে হজে যান৷ এভাবে তারা হয়ত পাপমোচনের চেষ্টা করেন৷ জানি না তাদের পাপ এতে কতটা কমে বা আদৌ কমে কিনা৷

ইসলাম আমাদের যেমন নামাজ, রোজা ও হজ করতে বলেছে, তেমনি যাকাতও দিতে বলেছে৷ যাকাত গরিবের হক৷ আপনার সম্পদের ঠিক কী পরিমাণ অংশ যাকাত দিতে হবে, সেটা কোরআনে স্পষ্ট করে বলা আছে৷ বারবার হজ করতে যাচ্ছেন, কিন্তু যাকাত ঠিকমতো আদায় করছেন তো? আপনার প্রতিবেশী না খেয়ে আছে কিনা তার খোঁজ কি নিয়েছেন? গরিব আত্মীয়-প্রতিবেশীর খোঁজ রাখা, তাদের সাহায্য করাও ফরজ ও ওয়াজিব ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত৷

হজ শব্দের অর্থ ইচ্ছা করা, সংকল্প করা৷ হজ পালনের সংকল্প করার সঙ্গে সঙ্গে যদি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সংকল্প আমরা করতে পারি, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহর রহমত আরো অধিক পরিমাণে লাভ করতে পারবো৷

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বাঙালি মুসলমানের হজের স্বপ্ন এবং আমার কিছু কথা

আপডেট সময় : ০৮:০৩:২৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জুন ২০২২
সরকারি চাকুরে বাবার স্বপ্ন ছিল অবসরের পর অবসরভাতার ‍টাকায় মা-সহ হজে যাবেন৷ বাবার সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি৷ অবসরে যাওয়ার সুযোগ তিনি পাননি, তার আগেই মারা যান৷

বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ সৌদি আরবে হজ পালন করতে যান, তাদের একটি বিরাট অংশই অবসরভাতার টাকায় বা সারাজীবনের উপার্জন থেকে অল্প অল্প করে সঞ্চয় করা অর্থে হজ পালন করেন৷

বেশিরভাগেরই থাকে না বিদেশে ভ্রমণের পূর্ব অভিজ্ঞতা৷ জীবনের শেষ বেলায় শারীরিক সামর্থ্যও অনেক কমে আসে৷ ফলে হজের শ্রমসাধ্য সব নিয়ম পালন তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে ওঠে

মুসলমান বাঙালি মাত্রই মনের কোণে হজের স্বপ্ন লালন করেন৷ ইসলাম ধর্মের যে পাঁচটি স্তম্ভ, যা অবশ্যই পালন করতে হবে, তার একটি হজ৷ তবে হজ সবার জন্য নয়, বরং সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্যই হজ পালন ফরজ৷

অনেক বাঙালির এই সামর্থ্যবান হয়ে উঠতে জীবনের অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়৷ নানা উপায়ে তারা হজে যাওয়ার অর্থ জোগাড় করেন৷ বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নে মসজিদভিত্তিক মক্তবের শিক্ষক আয়ুব আলী৷ পাথরঘাটা আমার নানা শ্বশুরবাড়ি৷ সেখানে কথা হয় আইয়ুব আলীর সঙ্গে৷ নিম্নমধ্যবিত্ত এই শিক্ষক মক্তবে পড়িয়ে মাত্র চার হাজার টাকা পান৷ সামান্য ওই বেতন থেকেই তিনি হজের জন্য টাকা জমাতে শুরু করেন৷ সঙ্গে বাড়ির পাশে জমিতে আগেই কিছু গাছ লাগিয়েছিলেন৷

হজ ফরজ

ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি হজ৷ আর্থিক ও শারীরিকভাবে সমর্থ পুরুষ ও নারীর ওপর হজ ফরজ৷ সুরা আল ইমরানের ৯৭ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘‘আল্লাহর তরফ থেকে সেই সব মানুষের জন্য হজ ফরজ করে দেওয়া হয়েছে, যারা তা আদায়ের সামর্থ্য রাখে৷’’

বদলি হজ

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, বিদায় হজে খাশ’আম গোত্রের এক নারী রাসুলুল্লাহ (সা.)কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘‘হে আল্লাহর রাসুল, আমার বাবার ওপর হজ ফরজ৷ কিন্তু তিনি এত বৃদ্ধ যে, গাড়িতে স্থির হয়ে বসে থাকতে পারেন না৷ আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করতে পারব?’’ নবী (সা.) বলেছিলেন, ‘‘হ্যাঁ, তুমি পারবে৷’’ (সহীহ বুখারী)৷

তবে…

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তিকে হজের ইহরামের সময় ‘‘শুবরুমার পক্ষ থেকে লাব্বাইক’’ বলতে শুনে রাসুলুল্লাহ (সা.) জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘‘শুবরুমা কে?’’ লোকটি বলল, ‘‘আমার ভাই৷’’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘‘তুমি কি নিজের হজ করেছ?’’ সে বলল, ‘‘না৷’’ নবী (সা.) বলেছিলেন, ‘‘আগে তোমার নিজের হজ করো, তারপর শুবরুমার পক্ষ থেকে করো৷’’ (সহীহ আবু দাউদ শরীফ)

বদলি হজের খরচ

অন্যের পক্ষ থেকে বদলি হজে গমনকারী ব্যক্তি হজে প্রেরণকারী ব্যক্তির কাছ থেকে কেবল হজের খরচই গ্রহণ করবেন এবং প্রেরণকারীও কেবল হজের খরচই বহন করবেন৷ কোনো রকমের বিনিময় বা পারিশ্রমিক লেনদেন হারাম৷ বদলি হজের জন্য পারিশ্রমিক দেওয়া হলে গ্রহণকারী ও প্রদানকারী উভয়েই গুনাহগার হবেন এবং প্রেরিত ব্যক্তির জন্য হজের খরচের অতিরিক্ত সব টাকা প্রেরণকারীকে ফেরত দেওয়া ওয়াজিব হবে৷ (দুররুল মুখতার)৷

মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে হজ

হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, জুহায়না গোত্রের এক নারী হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে বলেছিলেন, ‘‘আমার মা হজের মানত করেছিলেন, কিন্তু তা আদায় করার আগেই তিনি মারা গেছেন৷ আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করবো?’ নবী (সা.) বলেছিলেন, ‘‘হ্যাঁ, তার পক্ষ থেকে তুমি হজ করবে৷ যদি তার কোনো ঋণ থাকে তবে কি তুমি তার ঋণ পরিশোধ করতে না? সুতরাং আল্লাহর ঋণ পরিশোধ কর৷’’ (সহীহ বুখারী)

হারাম সম্পদ দিয়ে হজ সংক্রান্ত হাদিস

হযরত উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘‘যখন কোনো লোক হারাম সম্পদ দিয়ে অথবা হারাম উপায়ে হজ করতে গিয়ে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ বলেন তখন আল্লাহ তায়ালা তাকে লক্ষ্য করে বলেন, তোমার সম্পদ হালাল নয়৷ তোমার ‘লাব্বাইক’ এ দরবারে গ্রহণযোগ্য নয়৷ তোমার হজ তোমার দিকেই ছুড়ে দেওয়া হলো৷’’ (হাইসামি)৷

সরকারের টাকায় হজ বৈধ

বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির যুগ্ম মহাসচিব মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী বলেন, ‘‘কোনো রাষ্ট্র বা সরকার চাইলে কোনো ব্যক্তিকে হজে পাঠাতে পারে৷ সেক্ষেত্রে তারা বিশেষ তহবিল ব্যবহার করে থাকে৷ রাষ্ট্রের স্বার্থে, জণগণের কল্যাণে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে থাকে৷ বিভিন্ন গুণীজনকে বিভিন্নভাবে সম্মানিত করে থাকে৷ এক্ষেত্রে অর্থায়ন করা হলে, তাতে দোষের কিছু নেই৷ এটি বৈধ, এটি জায়েজ৷’’

‘‘আমি ২০১১ সাল থেকে হজের জন্য ‍টাকা জমাতে শুরু করি৷ যে টাকা জমাতাম, তা নিজের কাছে না রেখে ব্যাংকে রাখতাম যাতে ঠেকে (বিপদে পড়লে) গেলেও ওই টাকা খরচ করতে না পারি৷ ব্যাংক থেকে আমি কোনো সুদ নেই নাই৷ যা টাকা রাখছি, সেটাই তুলছি৷ আর গাছ লাগানোর সময় আল্লাহকে বলেছিলাম গাছগুলো যেন তাড়াতাড়ি বড় হয়৷ মরার আগে সেগুলো বিক্রি করে হজে যেতে চাই৷’’

‘‘আল্লাহ আমার ইচ্ছা পূরণ করেছেন৷ জমানো টাকা আর গাছ বিক্রির টাকা মিলিয়ে ২০১৯ সালে আমি হজ করে এসেছি৷’’

আইয়ুব মামার হজের স্বপ্ন পূরণ হলেও সবার ভাগ্যে তা হয় না৷ আমার দাদার বাবা (বড়আব্বা বলি আমরা) মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদারদের গুলিতে নিহত হন৷ ছোট বেলায় দাদার কাছে শুনেছি ওনার বাবার খুব হজে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল, এজন্য কোরআন শরীফের ভেতর টাকা জমাতেন, গ্রামের মানুষ তার সেই ইচ্ছার কথা জানতেন৷ নিজের বাড়ির উঠানে যেদিন ওনাকে গুলি করা হয়, তখন তিনি কোরআন পড়ছিলেন৷ দাদারা বাড়িতে ফিরে ওনার রক্তাক্ত মৃতদেহ পান, কোরআন শরীফের ভেতর টাকা ছিল না!

নিজের বাবার অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণ করতে দাদা হজে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু নানা কারণে তিনিও যেতে পারেননি৷

বাংলাদেশে অনেকেই এভাবে বাবা-মা’র অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণ করতে হজে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন৷

যেমনটা করেছেন ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা শাহনাজ চৌধুরী৷ তিনি ২০১৬ সালে মা-কে নিয়ে হজে যান৷ তিনি বলেন, ‘‘আব্বা মারা যাওয়ার পর প্রায়ই আম্মা বলতেন, তোমার আব্বার খুব হজ করার ইচ্ছা ছিল৷ আমি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি৷ সেখানেও দেখতাম কেউ কেউ হজে যাচ্ছেন৷ সেই দেখে আমারও ইচ্ছা হলো৷ আমার স্বামীর সঙ্গে এটা নিয়ে কথা বললাম৷ ও ওর মা-সহ যেতে চায়৷ আমি বললাম, তাহলে আমিও আম্মাকে নিয়ে যাই৷’’

‘‘মা ও শাশুড়ীকে নিয়ে আমরা হজে যাই৷ ওনারা দুইজনই বেশ বয়স্ক মানুষ৷ ফলে ওনাদের নিয়ে চলাফেরায় বেশ অসুবিধায় পড়তে হয়েছিল, হুইলচেয়ার ব্যবহার করতে হয়েছে৷ ওখানে গিয়ে মনে হয়েছে, আরেকটু আগে এলেই পারতাম৷’’

বেশির ভাগের বেলায় এই ‘আরেকটু আগে’ আর হয়ে ওঠে না৷ বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলা আমতলী সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক রেহানা বেগম৷ অবসরের পর অবসরভাতার টাকায় ২০১৯ সালে স্বামীসহ হজে যান৷ তিনি জানান, হজে যাওয়ার পর তার স্বামী মাহাবুবুর রহমান বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন৷

অনেকদিন ধরে অধ্যাপক রেহানা হজের পরিকল্পনা করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘মধ্যবিত্ত বাঙালি মুসলমানদের তো আর হঠাৎ করে হজে যাওয়ার সুযোগ নেই, তাদের সেই সামর্থ্য থাকে না৷”

‘‘কিন্তু একটা বয়সের পর তাদের মনে নবীর দেশে যাওয়ার, কাবা দর্শণের ইচ্ছা জাগে৷ আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় অনেকে সেটা পারেন না৷ কেউ কেউ সারা জীবন ধরে সঞ্চয় করে হজে যান, কেউ অবসরভাতা পাওয়ার পর৷ যেমনটা আমরা গিয়েছি৷’’

হজে যাওয়ার পর সেখানকার সেবার মান নিয়ে খানিকটা অভিযোগ করলেন রেহানা বেগম৷ এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে আরো উদ্যোগী হওয়ার অনুরোধ করেছেন তিনি৷

করোনা মহামারির আগে সারাবিশ্ব থেকে প্রতিবছর গড়ে ২৫ লক্ষ মানুষ হজ করতে সৌদি আরব যেতেন৷ ২০১৯ সালে করোনার আগের সর্বশেষ হজটি হয়েছে৷ মহামারির কারণে দুই বছর সীমিত পরিসরে হবার পর এবছর সৌদি আরব সরকার ১০ লাখ মানুষকে হজ করার সুযোগ দিয়েছে৷ কোন দেশের কতজন হজ করার সুযোগ পাবেন সেই কোটাও নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে৷

এবার যেহেতু মানুষের সংখ্যা অনেক কম (যদিও হজের খরচ ৫৯ হাজার টাকা বেড়ে গেছে) তাই যারা যাচ্ছেন তারা হয়ত খানিকটা স্বস্তিতে হজ পালন করতে পারবেন৷ না হলে এক সময়ে এত মানুষের উপস্থিতি স্বাভাবিকভাবেই বিশৃঙ্খলার জন্ম দেয়৷ যার বড় প্রমাণ আমরা দেখেছি ২০১৫ সালে৷ সেবার মারাত্মক ভিড়ে হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে সাতশ’র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়৷

সৌদি আরবের প্রচণ্ড গরমের মধ্যে ভিড় ঠেলে হাঁটা, ছাফা-মারওয়া পাহাড় দৌড়ানোসহ হজের সময় যেসব নিয়ম পালন করতে হয়, তার জন্য শারীরিকভাব শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন৷ ইসলামেও সামর্থ্য থাকলে তরুণ বয়সে হজ করতে বলা হয়েছে৷ কিন্তু আমাদের তো হজের অর্থ জোগাড় করতেই ‍অনেক বছর পেরিয়ে যায়৷ শেষ বয়সে এসে ধর্ম পালনের প্রতি আগ্রহও বাড়ে৷ বাংলাদেশের হজযাত্রীদের লাইনে তাই বয়স্ক মানুষের প্রাধান্য৷ হজ করে এসেছেন কিন্তু শরীর দুর্বল হয়ে পড়ায় সব নিয়ম ঠিকমতো পালন করতে না পারার আফসোস আমি আমার চেনা-জানা অনেককেই করতে দেখেছি৷

মানুষ তার তিল তিল করে জমানো টাকায় হজে যান৷ বৃদ্ধ বয়সে সব নিয়ম পালন করতে না পারায় আফসোসও করেন৷ আবার এই বাংলাদেশেরই কিছু মানুষ আছেন যারা বার বার হজে যান, বছরে একাধিকবার ওমরাহ পালন করেন এবং বেশ গর্বের সঙ্গে সেগুলো অন্যদের বলে বেড়ান৷ তাদের অনেকেই দুর্নীতির টাকায়, মানুষ ঠকিয়ে, ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম উপার্জনে হজে যান৷ এভাবে তারা হয়ত পাপমোচনের চেষ্টা করেন৷ জানি না তাদের পাপ এতে কতটা কমে বা আদৌ কমে কিনা৷

ইসলাম আমাদের যেমন নামাজ, রোজা ও হজ করতে বলেছে, তেমনি যাকাতও দিতে বলেছে৷ যাকাত গরিবের হক৷ আপনার সম্পদের ঠিক কী পরিমাণ অংশ যাকাত দিতে হবে, সেটা কোরআনে স্পষ্ট করে বলা আছে৷ বারবার হজ করতে যাচ্ছেন, কিন্তু যাকাত ঠিকমতো আদায় করছেন তো? আপনার প্রতিবেশী না খেয়ে আছে কিনা তার খোঁজ কি নিয়েছেন? গরিব আত্মীয়-প্রতিবেশীর খোঁজ রাখা, তাদের সাহায্য করাও ফরজ ও ওয়াজিব ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত৷

হজ শব্দের অর্থ ইচ্ছা করা, সংকল্প করা৷ হজ পালনের সংকল্প করার সঙ্গে সঙ্গে যদি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সংকল্প আমরা করতে পারি, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহর রহমত আরো অধিক পরিমাণে লাভ করতে পারবো৷