বাজারের কারসাজি ঠেকাবে ডিজিটাল বোর্ড!

- আপডেট সময় : ০৬:৪৯:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৪
- / 125
একটি ডিজিটাল বোর্ড পাল্টে দিতে পারে পুরো বাজার ব্যবস্থাপনার চিত্র। যেখানে থাকবে মানভেদে পণ্যমূল্য ও গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা। উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠান বলছে, এটি স্থাপনে কোনো টাকা যাবে না কারও পকেট থেকে। কারণ যত টাকা ব্যয় হবে, তার চেয়ে অনেক বেশি আয় করা সম্ভব বিজ্ঞাপন প্রচার করে। কারসাজি বন্ধে কেন্দ্রীয় এমন ডিজিটাল মূল্য তালিকার চাহিদা আছে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় মহলেই। একে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের হাতিয়ার হিসেবে দেখছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
বাজার কারসাজি ঠেকাতে যখন মরিয়া সরকারি বিভিন্ন দফতর-সংস্থা; তখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে পণ্যমূল্য প্রদর্শনের মাধ্যমে এই কাজকে সহজ করার উপায়ও বের হলো ভোক্তাদের তরফ থেকেই। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান জেড এম জানাচ্ছে, সফটওয়্যার সম্বলিত ডিজিটাল বোর্ডে যেমন প্রদর্শন করা যাবে খুচরা ও যৌক্তিক মূল্য, তেমনি কত দামে পণ্যটি কোন অঞ্চল থেকে বাজারে এলো; সংরক্ষণ করা যাবে সেই তথ্যও। অ্যাপের মাধ্যমে দেশের সব বাজারের মূল্য তালিকা রাখা যাবে ভোক্তার পকেটেও।
জেড এম ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ডিজিটাল বোর্ডে প্রদর্শন করা যাবে পাইকারি, খুচরা ও যৌক্তিক মূল্য। এতে করে ব্যবসায়ীরা বাড়তি দাম রাখার সুযোগ পাবে না।
ডিজিটাল বাস্তবতায় বাজারে আস্থাহীনতা আর বিড়ম্বনা দূর করতে এমন পদ্ধতি চালু করাকে সমাধান মানছেন ক্রেতা-বিক্রেতা। তারা জানান, বাজারে এসে যদি পণ্যের দাম বোর্ডে দেখা যায়, তাহলে দাম সম্পর্কে আগে থেকেই ধারণা মিলবে। এতে কারসাজি করার সুযোগ পাবে না কেউ।
তবে এমন ডিজিটাল বোর্ড স্থাপন আর দেখভাল করতে বছরে আর্থিক ব্যয় কেমন হবে জানতে চাইলে জাকির আহমেদ বলেন, সবকিছু মিলিয়ে একটি বোর্ড স্থাপনে খরচ হবে ৩ লাখ টাকা। এর জন্য সরকারকে কোনো খরচ করতে হবে না। ব্যয় উঠে আসবে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে।
কারওয়ানবাজার বৃহত্তর পাইকারি কাঁচাবাজার আড়ত মালিক সমিতি বলছে, সরকার যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে দিলে বাজারে আসা ক্রেতাকে তা জানানোর সব উদ্যোগই নেবেন তারা। কারওয়ানবাজার বৃহত্তর পাইকারি কাঁচাবাজার আড়ত মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান চৌধুরী সুজন বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে এ ধরনের প্রযুক্তি প্রয়োজন। এতে ভোক্তা ও ব্যবসায়ী উভয়ই উপকৃত হবেন।
আরও পড়ুন: মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যেই নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির!
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার দৃষ্টান্ত বিবেচনায় প্রযুক্তির এমন প্রয়োগকে বাজার নিয়ন্ত্রণ কৌশলপত্রে যুক্ত করার পক্ষে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ কৌশলপত্রে প্রযুক্তিটি যুক্ত করা দরকার। এতে বাজারে স্বচ্ছতার পাশাপাশি তৈরি হবে জবাবদিহিতার প্রবণতা।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এমন প্রযুক্তির ব্যবহার মধ্যস্বত্বভোগীর হাত থেকে সহজেই মুক্তি দিতে পারে ভোক্তাদের।
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম আবু ইউসুফ বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে হ্রাস হতে পারে মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্ম্য। এতে পণ্যের দাম কমলে মূল্যস্ফীতিও কমবে।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার নতুন করে যে মডেল নিয়ে কাজ করার কথা ভাবছে; সেখানেও বলা হয়েছে প্রতিটি বাজারে দৃশ্যমান স্থানে মূল্য তালিকা থাকবে প্রদর্শিত।