ঢাকা ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
তিন দলই প্রধান উপদেষ্টার অধীনে নির্বাচন চায়: প্রেস সচিব টিউলিপ বাংলাদেশি এনআইডি ও পাসপোর্টধারী, রয়েছে টিআইএনও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক নববর্ষের অঙ্গীকার: প্রধান উপদেষ্টা নরেন্দ্র মোদিকে উপহার দেওয়া ছবিটি সম্পর্কে যা জানা গেল বিমসটেকের পরবর্তী চেয়ারম্যান ড. ইউনূস বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে মোদির ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন: প্রেসসচিব চীন সফরে সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের বক্তব্যে ভারতে তোলপাড় ড. ইউনূসকে ঈদগাহের মুসল্লিরাঃ আপনি ৫ বছর দায়িত্বে থাকুন, এটাই দেশের মানুষের চাওয়া বাংলাদেশে বিশ্বমানের হাসপাতালের মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতে বিপ্লবের সূচনা! খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে ঈদের দাওয়াত দিলেন প্রধান উপদেষ্টা যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন সেনাপ্রধান পররাষ্ট্র নীতিতে ড. ইউনূসের কাছে হেরে গেছেন নরেন্দ্র মোদী! ৩ এপ্রিলও ছুটির প্রস্তাব, মিলতে পারে ৯ দিনের ছুটি বউয়ের টিকটকেই ধরা সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ, ‘ক্লু’ ছিল গাড়িতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মঈনুদ্দিনের পরিচয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যবের পরিচয় শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে সব প্রমাণ সরকারের কাছে আছে জেলায় জেলায় সরকারি অর্থে ‘আওয়ামী পল্লি’

প্রকল্পটি রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল বলে মনে করছে অন্তর্বর্তী সরকার

বাতিল হতে পারে হাওরের উড়াল সড়ক প্রকল্প

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০১:০৪:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪
  • / 254
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
বছরের প্রায় অর্ধেক সময় পানির নিচেই থাকে হাওরবেষ্টিত কিশোরগঞ্জের ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলা। হাওর অঞ্চলকে কেন্দ্র করে প্রায় ৩০ কিলোমিটার উড়াল সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিল গত আওয়ামী লীগ সরকার। উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পাস হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এই সড়কের নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু প্রকল্পটি বাতিল হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার কথা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বিবিএ)। সম্ভাব্যতা যাচাই থেকে শুরু করে নকশা প্রণয়ন সব কিছু আগেই চূড়ান্ত ছিল। কিশোরগঞ্জ সদর থেকে ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম এই তিন উপজেলায় যাওয়ার ভালো কোনো সড়কব্যবস্থা নেই।

বিবিএ সূত্র কালের কণ্ঠকে বলেছে, হওরের উড়াল সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল বলে মনে করছে অন্তর্বর্তী সরকার। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের প্রভাবে হাতে নিয়েছিল সরকার এমন অভিযোগ পোক্ত হচ্ছে। চলমান প্রকল্পগুলোর পাশাপাশি পাইপলাইনে থাকা প্রকল্পগুলো পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে প্রকল্পটি বাদ পড়ার সম্ভাবনা বেশি।

সেতু বিভাগের নথির তথ্য বলছে, ২০১২ সালে হাওর নিয়ে মহাপরিকল্পনায় হাত দেয় সরকার।

যেখানে কিশোরগঞ্জের সঙ্গে দুটি জেলাকে সড়কপথে যুক্ত করার পরিকল্পনা করা হয়। কিশোরগঞ্জের ইটনা থেকে আজমিরীগঞ্জ হয়ে ১৪ কিলোমিটার উড়াল সড়ক যাবে সুনামগঞ্জে। অষ্টগ্রাম থেকে লাখাই ১৮ কিলোমিটার উড়াল সড়ক মিলবে হবিগঞ্জে। কিন্তু কিশোরগঞ্জ সদর থেকে মিঠামইন পর্যন্ত কোনো সংযোগ সড়ক নেই, যা এই হাওর মহাপরিকল্পনার একটা বড় দুর্বল অংশ বলে মনে করা হয়।

ফলে কিশোরগঞ্জের সঙ্গে মিঠামইনকে যুক্ত করতে ১৪ কিলোমিটার উড়াল সড়ক করা ভাবনা থেকেই এই প্রকল্পের জন্ম হয়। বর্তমানে সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলার লোকজন যদি কিশোরগঞ্জে আসতে চায়, তাদের এখন ভৈরব ঘুরে আসতে হয়। তাই এই উড়াল সড়ক হলে এবং ভবিষ্যতে মিঠামইনের সঙ্গে হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ যুক্ত হলে ৩৫ শতাংশ দূরত্ব কমে যাবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেতু বিভাগের পরিকল্পনা শাখার এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রাথমিক আলোচনায় প্রকল্পটি বাদ দেওয়ার আলোচনা করা হয়েছে। তবে এখনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। আবার কাজও শুরু করা হচ্ছে না। প্রক্রিয়া অনুযায়ী কাজ শুরু করার কথা ছিল। কাজ যেহেতু শুরু হচ্ছে না, ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার এই প্রকল্প বাতিল না করলেও কাজ থেমে থাকবে।

কিশোরগঞ্জের নাকভাঙা হয়ে মরিচখালী থেকে মিঠামইন পর্যন্ত সড়কটি চার লেনের নির্মিত হওয়ার কথা ছিল। এই উড়াল সড়ক নির্মিত হলে হাওরবাসীর যোগাযোগে আমূল পরিবর্তন ঘটত। আগের সড়কের সমালোচনা থেকে এবার সড়কের কোনো অংশ যেন বন্যার কারণ হয়ে না দাঁড়ায় সে জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগ এবং পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউট একত্রে এই প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে। সম্ভাব্যতা যাচাই ও প্রাথমিক নকশাও করেছে বুয়েট।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ বুয়েটের অধ্যাপক শামছুল হক বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে টিকিয়ে রাখা উচিত। তখন বুয়েট থেকে যাঁরা এটার সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁদের ভাবা উচিৎ ছিল। সব জায়গায় শিল্পায়ন করা ঠিক নয়। হাওরের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কাঠামোটা বিকল্পভাবেও ভাবা যেতে পারে।

গত বছরের ১৭ জানুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। তখন নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় পাঁচ হাজার ৬৫১ কোটি টাকা। ২০২৮ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার জন্য সময় বেঁধে দিয়েছিল সরকার।

প্রকল্পটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়, হাওর এলাকার সঙ্গে কিশোরগঞ্জ জেলা সদর এবং ঢাকা, সিলেট ও অন্যান্য জেলার সরাসরি ও নিরবচ্ছিন্ন সব আবহাওয়ায় চলাচলের জন্য উপযোগী সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করতেই উড়াল সড়ক নির্মাণ করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

প্রকল্পটি রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল বলে মনে করছে অন্তর্বর্তী সরকার

বাতিল হতে পারে হাওরের উড়াল সড়ক প্রকল্প

আপডেট সময় : ০১:০৪:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪
বছরের প্রায় অর্ধেক সময় পানির নিচেই থাকে হাওরবেষ্টিত কিশোরগঞ্জের ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলা। হাওর অঞ্চলকে কেন্দ্র করে প্রায় ৩০ কিলোমিটার উড়াল সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিল গত আওয়ামী লীগ সরকার। উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পাস হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এই সড়কের নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু প্রকল্পটি বাতিল হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার কথা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বিবিএ)। সম্ভাব্যতা যাচাই থেকে শুরু করে নকশা প্রণয়ন সব কিছু আগেই চূড়ান্ত ছিল। কিশোরগঞ্জ সদর থেকে ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম এই তিন উপজেলায় যাওয়ার ভালো কোনো সড়কব্যবস্থা নেই।

বিবিএ সূত্র কালের কণ্ঠকে বলেছে, হওরের উড়াল সড়ক নির্মাণ প্রকল্পটি রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল বলে মনে করছে অন্তর্বর্তী সরকার। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের প্রভাবে হাতে নিয়েছিল সরকার এমন অভিযোগ পোক্ত হচ্ছে। চলমান প্রকল্পগুলোর পাশাপাশি পাইপলাইনে থাকা প্রকল্পগুলো পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে প্রকল্পটি বাদ পড়ার সম্ভাবনা বেশি।

সেতু বিভাগের নথির তথ্য বলছে, ২০১২ সালে হাওর নিয়ে মহাপরিকল্পনায় হাত দেয় সরকার।

যেখানে কিশোরগঞ্জের সঙ্গে দুটি জেলাকে সড়কপথে যুক্ত করার পরিকল্পনা করা হয়। কিশোরগঞ্জের ইটনা থেকে আজমিরীগঞ্জ হয়ে ১৪ কিলোমিটার উড়াল সড়ক যাবে সুনামগঞ্জে। অষ্টগ্রাম থেকে লাখাই ১৮ কিলোমিটার উড়াল সড়ক মিলবে হবিগঞ্জে। কিন্তু কিশোরগঞ্জ সদর থেকে মিঠামইন পর্যন্ত কোনো সংযোগ সড়ক নেই, যা এই হাওর মহাপরিকল্পনার একটা বড় দুর্বল অংশ বলে মনে করা হয়।

ফলে কিশোরগঞ্জের সঙ্গে মিঠামইনকে যুক্ত করতে ১৪ কিলোমিটার উড়াল সড়ক করা ভাবনা থেকেই এই প্রকল্পের জন্ম হয়। বর্তমানে সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলার লোকজন যদি কিশোরগঞ্জে আসতে চায়, তাদের এখন ভৈরব ঘুরে আসতে হয়। তাই এই উড়াল সড়ক হলে এবং ভবিষ্যতে মিঠামইনের সঙ্গে হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ যুক্ত হলে ৩৫ শতাংশ দূরত্ব কমে যাবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেতু বিভাগের পরিকল্পনা শাখার এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রাথমিক আলোচনায় প্রকল্পটি বাদ দেওয়ার আলোচনা করা হয়েছে। তবে এখনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। আবার কাজও শুরু করা হচ্ছে না। প্রক্রিয়া অনুযায়ী কাজ শুরু করার কথা ছিল। কাজ যেহেতু শুরু হচ্ছে না, ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার এই প্রকল্প বাতিল না করলেও কাজ থেমে থাকবে।

কিশোরগঞ্জের নাকভাঙা হয়ে মরিচখালী থেকে মিঠামইন পর্যন্ত সড়কটি চার লেনের নির্মিত হওয়ার কথা ছিল। এই উড়াল সড়ক নির্মিত হলে হাওরবাসীর যোগাযোগে আমূল পরিবর্তন ঘটত। আগের সড়কের সমালোচনা থেকে এবার সড়কের কোনো অংশ যেন বন্যার কারণ হয়ে না দাঁড়ায় সে জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগ এবং পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউট একত্রে এই প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে। সম্ভাব্যতা যাচাই ও প্রাথমিক নকশাও করেছে বুয়েট।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ বুয়েটের অধ্যাপক শামছুল হক বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে টিকিয়ে রাখা উচিত। তখন বুয়েট থেকে যাঁরা এটার সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁদের ভাবা উচিৎ ছিল। সব জায়গায় শিল্পায়ন করা ঠিক নয়। হাওরের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কাঠামোটা বিকল্পভাবেও ভাবা যেতে পারে।

গত বছরের ১৭ জানুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। তখন নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় পাঁচ হাজার ৬৫১ কোটি টাকা। ২০২৮ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার জন্য সময় বেঁধে দিয়েছিল সরকার।

প্রকল্পটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়, হাওর এলাকার সঙ্গে কিশোরগঞ্জ জেলা সদর এবং ঢাকা, সিলেট ও অন্যান্য জেলার সরাসরি ও নিরবচ্ছিন্ন সব আবহাওয়ায় চলাচলের জন্য উপযোগী সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করতেই উড়াল সড়ক নির্মাণ করা হবে।