বিদেশে শিক্ষার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় আর্থিক হিসাবে দেখাতে হয়
![](https://bdsaradin24.com/wp-content/uploads/2024/08/cropped-sssssssssssssssssss-removebg-preview-1.png)
- আপডেট সময় : ১১:৩০:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / 164
ব্যাংকে কী পরিমাণ টাকা আছে, কীভাবে সমন্বয় করতে হয় সেটা জানা থাকা প্রয়োজন।
বিদেশে শিক্ষার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় আর্থিক হিসাবে দেখাতে হয়
দেশের বাইরে পড়তে গেলে টিউশন ফি, পড়াকালীন মাসিক চলার খরচ, ভ্রমণ সম্পর্কিত খরচ ইত্যাদি কাজে বড় একটা অংকের দরকার হয়।
নিজে বা পরিবার এই খরচ বহন করতে পারবে কিনা সে সম্পর্কিত প্রমাণ ভিসার জন্য আবেদন করার সময় জমা দিতে হয়; যা ব্যাংক ব্যালেন্স হিসেবে পরিচিত।
ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংক ব্যালেন্স বা আর্থিক অবস্থা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
কেউ ২০ লাখ টাকা দেখিয়েই ভিসা পাচ্ছেন আবার কেউ ৩০ লাখ টাকা দেখিয়েও ভিসা পাননি। কেন এমনটা হয়?
ব্যাংক ব্যালেন্স আসলে কীসের ওপর নির্ভর করে? কীভাবে বোঝা যাবে ভিসা পাওয়ার জন্য কত টাকা ব্যাংক হিসাবে দেখাতে হবে?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তরই এখন নিচে দেওয়া থাকলো।
কোর্স ফি
আর্থিক অবস্থার বড় একটি অংশ নির্ভর করে কোর্স ফি’র ওপর। যদি স্নাতক করতে হয় তবে সময় লাগবে চার বছর। স্নাতকোত্তর করতে লাগে দুই বছর।
তবে পুরো কোর্সের মেয়াদ পর্যন্ত ব্যাংক ব্যালেন্স দেখাতে হবে না। এক বছর বা ১২ মাসের টিউশন ফি দেখাতে হবে।
সাধারনত বছরে দুটি আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে তিনটি সেমিস্টার হয়ে থাকে। যে কয়টি সেমিস্টারই হোক, এক বছরের জন্য কত ডলার টিউশন ফি দিতে হবে তা হিসাব করে বের করে নিন।
টিউশন ফি নির্ভর করবে, যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়া হবে সেখানকার ‘ওয়ার্ল্ড র্যাংকিং’য়ে কততম হিসেবে আছে সেটার ওপর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মান যত ওপরের দিকে থাকবে টিউশন ফি’র পরিমাণও বাড়তে থাকবে।
এক্ষেত্রে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করা। তারপর কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বছরে কত ডলার টিউশন ফি দিতে হবে সেটার একটা তালিকা করুন।
থাকার খরচ
টিউশন ফি’র বড় খরচ হবে এই ক্ষেত্রে। দেশের বাইরে পড়াকালীন থাকা-খাওয়া এবং আনুষঙ্গিক যে খরচ হবে সেটা ‘লিভিং কস্ট’ হিসেবে দেখাতে হবে।
এক বছরে কত খরচ হবে সেটা ভিসা আবেদনের সময় ঘোষণা বা ‘ডিকলেয়ার’ করতে হয়।
তবে এই খরচ যে শহরের ওপর নির্ভর করবে। যেমন- অস্ট্রেলিয়ার সিডনি এবং মেলবোর্নে থাকলে কিছু বেশি খরচ হবে। আর পার্থ, ডারউইন, ব্রিসবেন, তাসমানিয়া, অ্যাডিলেইডে থাকলে খরচ কিছুটা কমবে।
তবে পরিবারসহ গেলে ‘স্পাউস’ বা স্বামী/ স্ত্রী এবং ছেলেমেয়ের মাসিক খরচ হিসেব করতে হবে।
ভ্রমণ খরচ
ভিসা পাওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে যে দেশে পড়তে যাবেন সেদেশে যাওয়ার জন্য প্লেনের ভাড়া বাবদ কত খরচ পড়বে সেটাও ব্যাংক ব্যালেন্স’য়ের সাথে যোগ করতে হবে।
এক্ষেত্রে শুধু যাওয়ার সময়ের খরচ হিসাব করতে হবে। আসার সময়টা বিবেচনা করতে হবে না।
সন্তানের স্কুল ফি
যারা পরিবার নিয়ে যাবেন তাদের স্কুল পড়ুয়া সন্তান থাকলে, তার স্কুল খরচও ব্যাংক ব্যালেন্স’য়ের সাথে যোগ হবে।
ওপরে যে কয়টি খাত আলোচনা করা হয়েছে এর ওপর ব্যাংক হিসাব পরিমাণ দেখানো নির্ভর করবে।
থাকা ও ভ্রমণ খরচ কত ধরতে হবে সেটা বুঝতে, যে দেশে যাচ্ছেন সেদেশের ‘ইমিগ্রেইশন’ ওয়েবসাইট থেকে এর পরিমাণ পাওয়া যাবে।
ব্যাংক ব্যালেন্স বা আর্থিক অবস্থা সংগ্রহের পন্থা
সবার ব্যাংকের হিসাব দেখানো যায় না। বাবা-মায়ের ব্যাংকের অবস্থা, নিজের বা স্বামী/ স্ত্রী’র ব্যাংক হিসাব দেখানো যাবে।
জমি, প্লট, ফ্ল্যাট, ব্যাংক- এগুলো হিসাবে দেখানো যায় না। যত টাকারই স্থাবর সম্পত্তি থাকুক না কেনো সেটা ব্যাংক ব্যালেন্স হিসেবে দেখানো যায় না।
তাই দেশের বাইরে যেতে চাইলে বা সন্তানকে পড়াশোনা করার জন্য দেশের বাইরে পাঠাতে- ব্যাংকে চলতি হিসাব, সঞ্চয়ী হিসাব, মেয়াদি হিসাব, পোস্ট অফিস, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা উচিত।
এই বিনিয়োগকৃত টাকা ব্যাংক ব্যালেন্স হিসেবে দেখানো যাবে।
এখন দেখা গেল, বাবার ব্যাংক হিসাবে জমাকৃত টাকা দেখিয়েছেন ৩০ লাখ। তবে এই টাকার মধ্যে ১৫ লাখ টাকা ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার মাসে বা আগের মাসে জমা হয়েছে।
এর আগের কয়েক মাসে এই ধরনের বড় কোনো লেনদেন তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আর হয়নি।
এর ফলে একটা সন্দেহ তৈরি হতে পারে, যেটার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে ভিসার ক্ষেত্রে। এজন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি থাকতে হবে।
সাধারণত ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে বিগত ছয় মাসের ব্যাংক হিসাবের বিবরণী দেখাতে হয়। তাই এই ছয় মাসের লেনদেনগুলো একটু সতর্কতার সঙ্গে করা উচিত।
লেখক: জসীম উদ্দিন রাসেল, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী, ‘অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনাঃ কমপ্লিট গাইড’ বইয়ের লেখক।