ঢাকা ০৮:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
অপরাধী হাসিনাকে নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপে ভারত ইন্টারপোলের জালে বেনজীর হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর দাবি জোরদার হচ্ছে ভারতে! এটুআই ছিল মিলেমিশে লুটপাটের প্রকল্প আওয়ামী লুটপাটে পঙ্গু ইডিসিএল বিদেশেও বিচার সম্ভব শেখ হাসিনার ‘দুঃখিত, আপা! এটাই শেষ!!’ : হাসিনার উদ্দেশ্য প্রেস সচিব জাতীয় সংসদ ভোটের পর পুলিশে পদকের মচ্ছব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে ঐকমত্য কমিশন প্রফেসর ইউনূস ও তার দাবার চাল। পদত্যাগ করছেন উপদেষ্টা নাহিদ, আসছে নতুন দল ট্রাম্প প্রশাসনের ক্ষমতাবান ইলন মাস্কের সঙ্গে যে আলোচনা হলো ড. ইউনূসের শ্যামল দত্তের অ্যাকাউন্টে ১০৪২ কোটি টাকার লেনদেন কিভাবে পারে এত পাষণ্ড হতে, হাসিনাকে বললেন আসিফ নজরুল জাতিসংঘের রিপোর্ট ‘শেখ হাসিনার নির্দেশেই গুলি’! তসলিমার ‘চুম্বন’ প্রকাশকের জয় বাংলা স্লোগান, মব জাস্টিস উস্কে দেয়ার ভারতীয় প্ল্যান? জরুরি ওষুধেও ব্যবসার ফাঁদ:ওষুধের বাজারে অরাজকতা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ড. ইউনূস-মোদি বৈঠকের সম্ভাবনা ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ৬ ডিসেম্বর ধানমন্ডি ৩২: প্রতিশোধের ক্রোধে উন্মাদ প্রায় শেখ হাসিনা

বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ববান অভিভাবক: ভাইস চ্যান্সেলরের সরল অনুসন্ধান

তাহমিদা আকবর
  • আপডেট সময় : ০৬:৫৬:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 154
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সকাল ৮:৫০

আইএমএলে নিচ তলার টেবিলে বসে, বাকি থাকা হোমওয়ার্ক করছিলাম। হঠাৎ একজন বয়স্ক ধরনের মানুষ আসলেন। খুবই ইনফরমাল টি-শার্ট পরিহিত। মাথায় ক্যাপ ছিল। দ্রুত গতিতে হাঁটতে হাঁটতে নিচ তলায় এদিক সেদিক দেখে নিলেন। মনে হবে জগিং করতে বের হয়েছেন। ভাষা ইনস্টিটিউট হওয়ায় সব বয়সের মানুষকেই এখানে দেখা যায়। এই সিনারিও তেমন অস্বাভাবিক না।
একটু পরে, তিনি হঠাৎ করে আমাদের টেবিলের সামনে এসে বললেন, (কিছু একটা সম্বোধন করেছিলেন, ঠিক মনে নেই) ‘তোমরা কেমন আছো?’ (আমি ভেবেছিলাম উনি হয়তো ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স সম্পর্কে জানতে চাইবেন) এর মধ্যেই উনি বলে ফেললেন, ‘আমি নিয়াজ আহমেদ, ভাইস চ্যান্সেলর। (সবাই দাঁড়িয়ে সালাম দিলাম) তোমরা বসো, বসো। আমি আসলে জানতে এসেছি তোমরা কোন ব্যাচের। তোমাদের ক্লাস শুরু হয়েছে তো? ইনস্টিটিউটের ইন্টারনাল অনেক সমস্যা থাকতে পারে, সেগুলো সব আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তোমাদের তো ক্লাস শুরু করতে হবে। তোমরা সবাইকে ক্লাসে আসতে বলবা। ক্লাস শুরু না করলে তো হবে না। তোমাদের গতকাল ক্লাস হয়েছে? এর আগের দিন হয়েছে?’
শেষে বললেন, ‘তোমরা সবাই ভালো থেকো।’

উনি আরো কিছু কথা বললেন, কিন্তু ঘটনার আকস্মিকতায় আমি সব খেয়াল রাখতে পারিনি।

আমাদের টেবিল থেকে পাশের টেবিলে গিয়েও স্যার একই কথাই বললেন।

উনি পরিচয় না দেওয়া পর্যন্ত আমরা একজন স্টুডেন্ট ও বুঝতে পারিনি উনি কে। ভাইস চ্যান্সেলর হচ্ছেন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবকের পদ, গুরু দায়িত্বের পদ। সর্বোচ্চ সম্মানের পদও বটে। প্রচন্ড ব্যস্ততার মাঝেও স্যার এত সাধারণভাবে এসে আমাদের খোঁজ নিলেন, এই দৃশ্যটাকে আমি রিলেট করেছি একজন ন্যায়পরায়ণ, দায়িত্ববান শাসকের সাথে, যিনি ছদ্মবেশে তার জনগণের খোঁজ নেন। এটা যদিও স্বাভাবিক একটা দৃশ্য হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বিগত দিনগুলোতে এই পদের যে অপব্যবহার আমরা দেখেছি, সে হিসেব করলে, এটা অস্বাভাবিকই মনে হয়। আমি অনেক ইমপ্রেসড, আলহামদুলিল্লাহ।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবর্তনের এই ধারা অব্যাহত থাকুক দু’আ করি। শাসন, শ্রদ্ধা, স্নেহ ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষার্থী-শিক্ষক সম্পর্ক হয়ে উঠুক সবচেয়ে মূল্যবান।

তাহমিদা আকবর
জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ
সেশন : ২০২০-২১
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ববান অভিভাবক: ভাইস চ্যান্সেলরের সরল অনুসন্ধান

আপডেট সময় : ০৬:৫৬:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সকাল ৮:৫০

আইএমএলে নিচ তলার টেবিলে বসে, বাকি থাকা হোমওয়ার্ক করছিলাম। হঠাৎ একজন বয়স্ক ধরনের মানুষ আসলেন। খুবই ইনফরমাল টি-শার্ট পরিহিত। মাথায় ক্যাপ ছিল। দ্রুত গতিতে হাঁটতে হাঁটতে নিচ তলায় এদিক সেদিক দেখে নিলেন। মনে হবে জগিং করতে বের হয়েছেন। ভাষা ইনস্টিটিউট হওয়ায় সব বয়সের মানুষকেই এখানে দেখা যায়। এই সিনারিও তেমন অস্বাভাবিক না।
একটু পরে, তিনি হঠাৎ করে আমাদের টেবিলের সামনে এসে বললেন, (কিছু একটা সম্বোধন করেছিলেন, ঠিক মনে নেই) ‘তোমরা কেমন আছো?’ (আমি ভেবেছিলাম উনি হয়তো ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্স সম্পর্কে জানতে চাইবেন) এর মধ্যেই উনি বলে ফেললেন, ‘আমি নিয়াজ আহমেদ, ভাইস চ্যান্সেলর। (সবাই দাঁড়িয়ে সালাম দিলাম) তোমরা বসো, বসো। আমি আসলে জানতে এসেছি তোমরা কোন ব্যাচের। তোমাদের ক্লাস শুরু হয়েছে তো? ইনস্টিটিউটের ইন্টারনাল অনেক সমস্যা থাকতে পারে, সেগুলো সব আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তোমাদের তো ক্লাস শুরু করতে হবে। তোমরা সবাইকে ক্লাসে আসতে বলবা। ক্লাস শুরু না করলে তো হবে না। তোমাদের গতকাল ক্লাস হয়েছে? এর আগের দিন হয়েছে?’
শেষে বললেন, ‘তোমরা সবাই ভালো থেকো।’

উনি আরো কিছু কথা বললেন, কিন্তু ঘটনার আকস্মিকতায় আমি সব খেয়াল রাখতে পারিনি।

আমাদের টেবিল থেকে পাশের টেবিলে গিয়েও স্যার একই কথাই বললেন।

উনি পরিচয় না দেওয়া পর্যন্ত আমরা একজন স্টুডেন্ট ও বুঝতে পারিনি উনি কে। ভাইস চ্যান্সেলর হচ্ছেন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবকের পদ, গুরু দায়িত্বের পদ। সর্বোচ্চ সম্মানের পদও বটে। প্রচন্ড ব্যস্ততার মাঝেও স্যার এত সাধারণভাবে এসে আমাদের খোঁজ নিলেন, এই দৃশ্যটাকে আমি রিলেট করেছি একজন ন্যায়পরায়ণ, দায়িত্ববান শাসকের সাথে, যিনি ছদ্মবেশে তার জনগণের খোঁজ নেন। এটা যদিও স্বাভাবিক একটা দৃশ্য হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বিগত দিনগুলোতে এই পদের যে অপব্যবহার আমরা দেখেছি, সে হিসেব করলে, এটা অস্বাভাবিকই মনে হয়। আমি অনেক ইমপ্রেসড, আলহামদুলিল্লাহ।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবর্তনের এই ধারা অব্যাহত থাকুক দু’আ করি। শাসন, শ্রদ্ধা, স্নেহ ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষার্থী-শিক্ষক সম্পর্ক হয়ে উঠুক সবচেয়ে মূল্যবান।

তাহমিদা আকবর
জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ
সেশন : ২০২০-২১
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়