ঢাকা ০৭:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
তিন দলই প্রধান উপদেষ্টার অধীনে নির্বাচন চায়: প্রেস সচিব টিউলিপ বাংলাদেশি এনআইডি ও পাসপোর্টধারী, রয়েছে টিআইএনও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক নববর্ষের অঙ্গীকার: প্রধান উপদেষ্টা নরেন্দ্র মোদিকে উপহার দেওয়া ছবিটি সম্পর্কে যা জানা গেল বিমসটেকের পরবর্তী চেয়ারম্যান ড. ইউনূস বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে মোদির ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন: প্রেসসচিব চীন সফরে সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের বক্তব্যে ভারতে তোলপাড় ড. ইউনূসকে ঈদগাহের মুসল্লিরাঃ আপনি ৫ বছর দায়িত্বে থাকুন, এটাই দেশের মানুষের চাওয়া বাংলাদেশে বিশ্বমানের হাসপাতালের মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতে বিপ্লবের সূচনা! খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে ঈদের দাওয়াত দিলেন প্রধান উপদেষ্টা যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন সেনাপ্রধান পররাষ্ট্র নীতিতে ড. ইউনূসের কাছে হেরে গেছেন নরেন্দ্র মোদী! ৩ এপ্রিলও ছুটির প্রস্তাব, মিলতে পারে ৯ দিনের ছুটি বউয়ের টিকটকেই ধরা সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ, ‘ক্লু’ ছিল গাড়িতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মঈনুদ্দিনের পরিচয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যবের পরিচয় শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে সব প্রমাণ সরকারের কাছে আছে জেলায় জেলায় সরকারি অর্থে ‘আওয়ামী পল্লি’

বিসিএস বিতর্ক: রাজপথ তপ্ত রাখতেই সরকারের এমন অপকৌশল?

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৬:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪
  • / 141
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিসিএস পরীক্ষার নতুন নিয়ম নিয়ে বিতর্কের ঢেউ যেন থামছেই না। সাম্প্রতিক সময়ে, সরকারের একের পর এক সিদ্ধান্তে মনে হচ্ছে যেন তারা নিজেরা ইচ্ছা করে নিজেদের জন্য চাপ বাড়াচ্ছে। বিশেষ করে, বিসিএস পরীক্ষার ক্ষেত্রে নতুন বয়সসীমা এবং পরীক্ষার সুযোগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে অসন্তোষ দানা বেঁধেছে।

আগে সরকার বলেছিল যে, সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৩৫ বছর পর্যন্ত বাড়ানো হবে। এই ঘোষণার পর অনেকেই আশ্বস্ত হয়েছিল যে, বয়সসীমা বৃদ্ধির ফলে চাকরির জন্য আরও বেশি সময় পাওয়া যাবে। কিন্তু হঠাৎ করে বিসিএস পরীক্ষার ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩২ বছর করা হলো এবং অংশগ্রহণের সুযোগ মাত্র তিনবার নির্ধারণ করা হলো। কেন এই সিদ্ধান্ত, তা অনেকের কাছেই পরিষ্কার নয়। এমনকি যারা আশা করছিল যে বয়সসীমা অন্তত ৩৩/৩৪ থাকবে, তারাও বিস্মিত।

বিসিএস পরীক্ষার বয়সসীমা নিয়ে সরকারের এই সিদ্ধান্তে আসলে কী বোঝা গেল? অনেকেই মনে করছেন, এটি ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক একটি সিদ্ধান্ত, যার মাধ্যমে সরকার কিছু নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য পূরণের চেষ্টা করছে। আগে একজন ছাত্র-ছাত্রী সাধারণত ২২-২৪ বছর বয়সে তাদের গ্র্যাজুয়েশন শেষ করত। এরপর, ৩০ বছর পর্যন্ত তারা বিসিএসে অংশগ্রহণের সুযোগ পেত, এবং এই সুযোগগুলো ব্যবহার করে ৭-৮ বার পর্যন্ত চেষ্টা করা যেত। কিন্তু, নতুন নিয়ম অনুযায়ী, মাত্র তিনবার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যাবে। ফলে বিসিএস পরীক্ষার নতুন নিয়ম তরুণ প্রজন্মের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করছে।

সরকার কি সত্যিই জানত না যে, এই সিদ্ধান্ত টিকবে না। এর উত্তর হ্যাঁ হতে পারে। তারা হয়তো ধারণা করেছিল, এই সীমাবদ্ধতা খুব বেশি দিন টিকবে না। কেননা, এটি নতুন পরীক্ষার্থীদের জন্য আসলে কোনো সুবিধা করবে না বরং তাদের জন্য আরও চাপ সৃষ্টি করবে। কিন্তু, এই সিদ্ধান্তের পিছনে আরও কিছু রাজনৈতিক চিন্তা-ভাবনা কাজ করছে বলে মনে হচ্ছে। যেমন, যদি এই সিদ্ধান্তের কারণে যদি কোনো আন্দোলন শুরু হয়, তবে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সেই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে পারবে না। এবং এ কারণেই ছাত্রলীগকে আগেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এমন একটি সময়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, যখন সরকারের ওপর রাজনৈতিক চাপ ছিল অনেক বেশি। প্রশ্ন হলো, কেন এত তাড়াতাড়ি এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো? আসলে, সরকারের জন্য এই সিদ্ধান্ত ছিল দুই পাখি এক ঢিলে মারার একটি কৌশল।

সমন্বয়করা যখন গণভবন ঘেরাও করতে চেয়েছিল, তখনই বোঝা গিয়েছিল যে তাদের পেছনে সমর্থনের অভাব রয়েছে। কিন্তু এখন যদি তারা এই ইস্যুকে সামনে রেখে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করতে পারে এবং তাহলে তারা মানুষকে বোঝাতে সক্ষম হবে যে তারা সরকারের সাথে থেকেও সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে পারে। এবং যেহেতু ব্যাক্তিগত কারণেই নতুন পরীক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে যোগ দিবে। সমন্বয়করা এর ফায়দা উঠাবে। তারা বুঝাতে চাইবে তাদের নেতৃত্বে এখনো লাখ লাখ মানুষ মাঠে নামে।

সরকারের এই সিদ্ধান্ত তরুণদের মধ্যে একপ্রকার হতাশা তৈরি করেছে। কেননা, একজন শিক্ষিত তরুণ-তরুণী যখন বছরের পর বছর ধরে পড়াশোনা করে বিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়, তখন হঠাৎ করে এমন কঠোর নিয়ম তাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ৩২ বছর বয়সের মধ্যেই তাদের সর্বোচ্চ তিনবার চেষ্টা করার সুযোগ দেওয়া হবে। আগে যেখানে তারা ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত ৭-৮ বার অংশগ্রহণ করতে পারত, সেখানে এখন মাত্র তিনবারের মধ্যেই তাদের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যাবে। ফলে অনেকেই মনে করছেন, তাদের দীর্ঘদিনের কঠোর পরিশ্রম বৃথা যেতে বসেছে। এই সিদ্ধান্তেই সরকারের বিপক্ষে ছাত্রদের এবং নতুন প্রজন্মের ক্ষোভ বাড়ছে। তরুণ প্রজন্ম মনে করছে, সরকার তাদের ভবিষ্যতের সঙ্গে ছিনিমিনি খেলছে।

এদিকে, অনেকের মতে, এই সিদ্ধান্তের পিছনে আরও কিছু গোপন উদ্দেশ্য থাকতে পারে। যেমন, সরকার হয়তো বুঝতে পেরেছে যে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ছাত্রলীগের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। আর তাই তারা আগে থেকেই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে, যাতে তারা আন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহণ করতে না পারে। এর ফলে, আন্দোলনকারীরা তাদের শক্তি হারাবে এবং সরকারের উপর চাপ কমে যাবে।

এই পরিস্থিতিতে, নতুন বিসিএস পরীক্ষার্থীরা কী করবে? তাদের জন্য এই সিদ্ধান্ত কতটা প্রভাব ফেলেছে? তাদের সামনে কী বিকল্প আছে? তারা কি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে নাকি পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে? এসব প্রশ্নের উত্তর সময়ই বলে দেবে। তবে, এটা স্পষ্ট যে, সরকার এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এই বিবাদ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এবং এর প্রভাব দেশের ভবিষ্যতের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

সরকার যদি নিজেদের অবস্থান থেকে পিছু না হটে, তাহলে তরুণদের আন্দোলন আরও তীব্র হতে পারে। আর এই তীব্রতা সরকারকে বিপদে ফেলতে পারে। কিন্তু, যদি সরকার তরুণদের দাবির প্রতি সংবেদনশীল হয় এবং তাদের দাবি মেনে নিয়ে একটি সমঝোতার পথে যায়, তাহলে হয়তো তারা রাজনৈতিকভাবে কিছুটা শক্তিশালী অবস্থানে থাকতে পারবে।

সর্বশেষে, দেশের জনগণ এবং তরুণ প্রজন্মকে যেভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা আসলে পরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকার যেভাবে জনগণের সঙ্গে খেলা করছে, তা কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে বা সরকারের জন্য কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা এখনই বলা কঠিন। তরুণ প্রজন্ম এই সময়ে তাদের জন্য কী গুরুত্বপূর্ণ, তা ভালো করেই জানে। তারা জানে, বিসিএস কেবল একটি চাকরি নয়, বরং এটি একটি স্বপ্ন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বিসিএস বিতর্ক: রাজপথ তপ্ত রাখতেই সরকারের এমন অপকৌশল?

আপডেট সময় : ০৯:৪৬:১৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বিসিএস পরীক্ষার নতুন নিয়ম নিয়ে বিতর্কের ঢেউ যেন থামছেই না। সাম্প্রতিক সময়ে, সরকারের একের পর এক সিদ্ধান্তে মনে হচ্ছে যেন তারা নিজেরা ইচ্ছা করে নিজেদের জন্য চাপ বাড়াচ্ছে। বিশেষ করে, বিসিএস পরীক্ষার ক্ষেত্রে নতুন বয়সসীমা এবং পরীক্ষার সুযোগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে অসন্তোষ দানা বেঁধেছে।

আগে সরকার বলেছিল যে, সরকারি চাকরির বয়সসীমা ৩৫ বছর পর্যন্ত বাড়ানো হবে। এই ঘোষণার পর অনেকেই আশ্বস্ত হয়েছিল যে, বয়সসীমা বৃদ্ধির ফলে চাকরির জন্য আরও বেশি সময় পাওয়া যাবে। কিন্তু হঠাৎ করে বিসিএস পরীক্ষার ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩২ বছর করা হলো এবং অংশগ্রহণের সুযোগ মাত্র তিনবার নির্ধারণ করা হলো। কেন এই সিদ্ধান্ত, তা অনেকের কাছেই পরিষ্কার নয়। এমনকি যারা আশা করছিল যে বয়সসীমা অন্তত ৩৩/৩৪ থাকবে, তারাও বিস্মিত।

বিসিএস পরীক্ষার বয়সসীমা নিয়ে সরকারের এই সিদ্ধান্তে আসলে কী বোঝা গেল? অনেকেই মনে করছেন, এটি ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক একটি সিদ্ধান্ত, যার মাধ্যমে সরকার কিছু নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য পূরণের চেষ্টা করছে। আগে একজন ছাত্র-ছাত্রী সাধারণত ২২-২৪ বছর বয়সে তাদের গ্র্যাজুয়েশন শেষ করত। এরপর, ৩০ বছর পর্যন্ত তারা বিসিএসে অংশগ্রহণের সুযোগ পেত, এবং এই সুযোগগুলো ব্যবহার করে ৭-৮ বার পর্যন্ত চেষ্টা করা যেত। কিন্তু, নতুন নিয়ম অনুযায়ী, মাত্র তিনবার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা যাবে। ফলে বিসিএস পরীক্ষার নতুন নিয়ম তরুণ প্রজন্মের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করছে।

সরকার কি সত্যিই জানত না যে, এই সিদ্ধান্ত টিকবে না। এর উত্তর হ্যাঁ হতে পারে। তারা হয়তো ধারণা করেছিল, এই সীমাবদ্ধতা খুব বেশি দিন টিকবে না। কেননা, এটি নতুন পরীক্ষার্থীদের জন্য আসলে কোনো সুবিধা করবে না বরং তাদের জন্য আরও চাপ সৃষ্টি করবে। কিন্তু, এই সিদ্ধান্তের পিছনে আরও কিছু রাজনৈতিক চিন্তা-ভাবনা কাজ করছে বলে মনে হচ্ছে। যেমন, যদি এই সিদ্ধান্তের কারণে যদি কোনো আন্দোলন শুরু হয়, তবে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সেই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে পারবে না। এবং এ কারণেই ছাত্রলীগকে আগেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এমন একটি সময়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, যখন সরকারের ওপর রাজনৈতিক চাপ ছিল অনেক বেশি। প্রশ্ন হলো, কেন এত তাড়াতাড়ি এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো? আসলে, সরকারের জন্য এই সিদ্ধান্ত ছিল দুই পাখি এক ঢিলে মারার একটি কৌশল।

সমন্বয়করা যখন গণভবন ঘেরাও করতে চেয়েছিল, তখনই বোঝা গিয়েছিল যে তাদের পেছনে সমর্থনের অভাব রয়েছে। কিন্তু এখন যদি তারা এই ইস্যুকে সামনে রেখে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করতে পারে এবং তাহলে তারা মানুষকে বোঝাতে সক্ষম হবে যে তারা সরকারের সাথে থেকেও সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে পারে। এবং যেহেতু ব্যাক্তিগত কারণেই নতুন পরীক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে যোগ দিবে। সমন্বয়করা এর ফায়দা উঠাবে। তারা বুঝাতে চাইবে তাদের নেতৃত্বে এখনো লাখ লাখ মানুষ মাঠে নামে।

সরকারের এই সিদ্ধান্ত তরুণদের মধ্যে একপ্রকার হতাশা তৈরি করেছে। কেননা, একজন শিক্ষিত তরুণ-তরুণী যখন বছরের পর বছর ধরে পড়াশোনা করে বিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়, তখন হঠাৎ করে এমন কঠোর নিয়ম তাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ৩২ বছর বয়সের মধ্যেই তাদের সর্বোচ্চ তিনবার চেষ্টা করার সুযোগ দেওয়া হবে। আগে যেখানে তারা ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত ৭-৮ বার অংশগ্রহণ করতে পারত, সেখানে এখন মাত্র তিনবারের মধ্যেই তাদের ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যাবে। ফলে অনেকেই মনে করছেন, তাদের দীর্ঘদিনের কঠোর পরিশ্রম বৃথা যেতে বসেছে। এই সিদ্ধান্তেই সরকারের বিপক্ষে ছাত্রদের এবং নতুন প্রজন্মের ক্ষোভ বাড়ছে। তরুণ প্রজন্ম মনে করছে, সরকার তাদের ভবিষ্যতের সঙ্গে ছিনিমিনি খেলছে।

এদিকে, অনেকের মতে, এই সিদ্ধান্তের পিছনে আরও কিছু গোপন উদ্দেশ্য থাকতে পারে। যেমন, সরকার হয়তো বুঝতে পেরেছে যে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ছাত্রলীগের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। আর তাই তারা আগে থেকেই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে, যাতে তারা আন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহণ করতে না পারে। এর ফলে, আন্দোলনকারীরা তাদের শক্তি হারাবে এবং সরকারের উপর চাপ কমে যাবে।

এই পরিস্থিতিতে, নতুন বিসিএস পরীক্ষার্থীরা কী করবে? তাদের জন্য এই সিদ্ধান্ত কতটা প্রভাব ফেলেছে? তাদের সামনে কী বিকল্প আছে? তারা কি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে নাকি পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে? এসব প্রশ্নের উত্তর সময়ই বলে দেবে। তবে, এটা স্পষ্ট যে, সরকার এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এই বিবাদ দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এবং এর প্রভাব দেশের ভবিষ্যতের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

সরকার যদি নিজেদের অবস্থান থেকে পিছু না হটে, তাহলে তরুণদের আন্দোলন আরও তীব্র হতে পারে। আর এই তীব্রতা সরকারকে বিপদে ফেলতে পারে। কিন্তু, যদি সরকার তরুণদের দাবির প্রতি সংবেদনশীল হয় এবং তাদের দাবি মেনে নিয়ে একটি সমঝোতার পথে যায়, তাহলে হয়তো তারা রাজনৈতিকভাবে কিছুটা শক্তিশালী অবস্থানে থাকতে পারবে।

সর্বশেষে, দেশের জনগণ এবং তরুণ প্রজন্মকে যেভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তা আসলে পরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকার যেভাবে জনগণের সঙ্গে খেলা করছে, তা কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে বা সরকারের জন্য কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা এখনই বলা কঠিন। তরুণ প্রজন্ম এই সময়ে তাদের জন্য কী গুরুত্বপূর্ণ, তা ভালো করেই জানে। তারা জানে, বিসিএস কেবল একটি চাকরি নয়, বরং এটি একটি স্বপ্ন।