ঢাকা ০২:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
জাতীয় সরকারের গুঞ্জন ড: মুহাম্মদ ইউনুস ইন্ডিয়ার জায়গামত আঘাত করেছে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় রাজনৈতিক দলের ঐক্য ভারত আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরে বাধ্য: ড. ইউনূস মুন্নী সাহা সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টে বেতনের বাইরে জমা হয় ১৩৪ কোটি জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশকে আ. লীগের দৃষ্টিতে দেখা বন্ধ করতে হবে : ভারতকে নাহিদ ইসলাম “ছাত্রদের ভূমিকা ও রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বার্তা” অশান্তির জন্য মহম্মদ ইউনূসকেই দায়ী করলেন শেখ হাসিনা৷ ফেরত চাওয়া হবে শেখ হাসিনাকে, মানতে বাধ্য ভারত: ড. ইউনূস আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্নীতি ও অর্থ পাচার: শ্বেতপত্রে উন্মোচিত সাংবাদিক মুন্নী সাহা গ্রেপ্তার অচিরেই কুমিল্লাকে বিভাগ ঘোষণা: উপদেষ্টা আসিফ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারত কেন তথ্যযুদ্ধে নেমেছে? ভারতের দ্বিচারিতা নিন্দনীয় ও আপত্তিকর: আসিফ নজরুল কোটি টাকার বাস ৯০ লাখে বানাবে বিআরটিসি ভয়েস অব আমেরিকার জরিপ: সংখ্যালঘুরা ‘আগের তুলনায় বেশি নিরাপত্তা পাচ্ছে’ বাংলাদেশে ভারতীয় চ্যানেল বন্ধের খবর ভুয়া ধানমন্ডি লেকে হবে ‘বিদ্রোহী চত্বর’ সারজি এবং হাসনাতের গাড়ি চাপা দেয়া ট্রাক ও ট্রাকের ড্রাইভার আটক

বিয়ের আগে গায়ে হলুদ হয় কেন?

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৯:০৮:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ জুলাই ২০২২ ১০২ বার পড়া হয়েছে
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শীত চলে গিয়ে আস্তে আস্তে গরম যে পড়ছে সেটা বেশ বোঝা যাচ্ছে। আর একমাস বাদেই বৈশাখ মাস পড়ে যাবে আর বৈশাখ মানেই তো বিয়ের মরসুম চলে আসবে। আমাদের বাঙ্গালীদের বিয়েতে তো আবার অনেক রকমের নিয়ম-কানুন মানা হয়। দধি মঙ্গল, নান্দীমুখ, বৃদ্ধি, জল সইতে যাওয়া, গায়ে হলুদ, হোম, আরও কত কিছু। তার মধ্যে অবশ্য গায়ে হলুদের নিয়মটা বেশ মজার। কাকিমা-জেঠিমা, মাসি-পিসি, দিদি-বৌদি মোটামুটি সবাই মিলে বিয়ের কনেকে বেশ ভালো করে হলুদবাটা লাগিয়ে স্নান করানো হয়। সেসব করতে গিয়ে বেশ মজাও হয়।

মুসলিম সমাজের অনেকেই মনে করেন, মুসলিম সমাজে গায়ে হলুদ একটি হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি। হিন্দু পুরান অনুসারে হলুদকে শুভ ও পবিত্র ভেষজ হিসাবে দেখা হয়। কেন গায়ে হলুদ দেয়া হয় বা এর প্রচলন বিয়েতে কেন হলো এই ঘটনা জানতে গিয়ে বেশ কিছু চমকপ্রদ তথ্য জানতে পারলাম। যে বিষয়টিকে আমরা ধর্মীয় সংস্কৃতি বা সামাজিক সংস্কৃতি হিসাবে দেখছি, তার পেছনে আছে মুলত বিজ্ঞান।

প্রাচীন কালে হলুদকে বলা হতো প্রাকৃতিক হেক্সোসল বা ক্লিনজার। কাঁচা হলুদ প্রাকৃতিক ভাবে জীবাণুনাশক। বিবাহের অন্যতম কারন মানুষের জৈবিক চাহিদা মেটানো। ফলে একজনের শরীরের জীবানু খুব সহজেই আরেকজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে বা শরীরে কোন ক্ষত থাকলে সেটা অনেক সময় উভয়পক্ষের জন্য বিব্রতকরও হতে পারে। তাই বিবাহের পুর্বে শরীরকে জীবানুমুক্ত বা বিভিন্ন রোগের সংক্রমন মুক্ত করার জন্যই গায়ে হলুদ দেয়া হতো। এই হলুদ দেয়ার প্রক্রিয়াটি শুধুমাত্র একদিনের জন্য সীমাবদ্ধ ছিলো না। রূপচচ্চায় প্রাকৃতিক উপাদান হিসাবে চন্দন ও হলুদ প্রতিনিয়তই ব্যবহার করা হতো। কাঁচা হলুদের সাথে খাঁটি সরিষার তেল, কমলার খোসা সহ আরো বেশ কিছু প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে একটি ধরনের বিশেষ ক্রিম ব্যবহার করা হতো। এতে ত্বকের অবাঞ্চিত ক্ষত, অসুখ ইত্যাদি দুর হয়ে যেত, ত্বক হতো সুন্দর মসৃণ এবং ছড়িয়ে পড়ত এক অদ্ভুত সুন্দর আভা। ফলে গায়ে হলুদ দেয়াটা মানুষের একটি গুরুত্বপূর্ন দৈনন্দিন অভ্যাস যার সাথে ধর্মের কোন যোগসুত্র ছিলো না। বরং ধর্ম-ই পরবর্তীতে এই অভ্যাস তাদের রীতি রেওয়াজে ঢুকিয়েছে। বিশেষ করে হিন্দু ধর্মে হলুদ ও চন্দনের ব্যবহার মুলত তাদের পবিত্র দেবদেবীদেরকে সেবা করার উদ্দেশ্যেই প্রচলিত হয়েছে। এছাড়া যারা ভেষজ নিয়ে কাজ করেন, তাঁরা দাবি করেছেন হলুদ মানসিক স্ট্রেস কমায়, বিষন্নতা দুর করে এবং শরীরকে নানা ধরনের বিষাক্ত পদার্থ নিঃসরণে সাহায্য করে শরীরকে সজীব করে তোলে।

সনাতন ধর্মে নারীর পবিত্রতাকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়েছে। নারী হবেন সতী, পবিত্র এবং কোমল। বর্তমানে যেভাবে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান থেকে ‘হলুদই’ হারিয়ে যাচ্ছে, তাতে কয়েক বছর পর এই অনুষ্ঠানের নাম হবে, গায়ে মেকাপ কিংবা মেকাপ সন্ধ্যা। এমনটা হলে আমি খুব একটা বিস্মিত হবো না।

যাইহোক, গায়ে হলুদের আসল কাহিনী হচ্ছে – মাছ ভাজার আগে ভালো করে হলুদ মরিচ মেখে কিছুক্ষন রেখে দিতে হয়। তেমনি বিয়ের সময় পাত্রপাত্রীদের হলুদ মেখে প্রস্তুত করা হয় ভাজার জন্য। [ ভাজা ভাজির ব্যাপারটা না হয় আর আগালুম না]

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বিয়ের আগে গায়ে হলুদ হয় কেন?

আপডেট সময় : ০৯:০৮:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ জুলাই ২০২২

শীত চলে গিয়ে আস্তে আস্তে গরম যে পড়ছে সেটা বেশ বোঝা যাচ্ছে। আর একমাস বাদেই বৈশাখ মাস পড়ে যাবে আর বৈশাখ মানেই তো বিয়ের মরসুম চলে আসবে। আমাদের বাঙ্গালীদের বিয়েতে তো আবার অনেক রকমের নিয়ম-কানুন মানা হয়। দধি মঙ্গল, নান্দীমুখ, বৃদ্ধি, জল সইতে যাওয়া, গায়ে হলুদ, হোম, আরও কত কিছু। তার মধ্যে অবশ্য গায়ে হলুদের নিয়মটা বেশ মজার। কাকিমা-জেঠিমা, মাসি-পিসি, দিদি-বৌদি মোটামুটি সবাই মিলে বিয়ের কনেকে বেশ ভালো করে হলুদবাটা লাগিয়ে স্নান করানো হয়। সেসব করতে গিয়ে বেশ মজাও হয়।

মুসলিম সমাজের অনেকেই মনে করেন, মুসলিম সমাজে গায়ে হলুদ একটি হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি। হিন্দু পুরান অনুসারে হলুদকে শুভ ও পবিত্র ভেষজ হিসাবে দেখা হয়। কেন গায়ে হলুদ দেয়া হয় বা এর প্রচলন বিয়েতে কেন হলো এই ঘটনা জানতে গিয়ে বেশ কিছু চমকপ্রদ তথ্য জানতে পারলাম। যে বিষয়টিকে আমরা ধর্মীয় সংস্কৃতি বা সামাজিক সংস্কৃতি হিসাবে দেখছি, তার পেছনে আছে মুলত বিজ্ঞান।

প্রাচীন কালে হলুদকে বলা হতো প্রাকৃতিক হেক্সোসল বা ক্লিনজার। কাঁচা হলুদ প্রাকৃতিক ভাবে জীবাণুনাশক। বিবাহের অন্যতম কারন মানুষের জৈবিক চাহিদা মেটানো। ফলে একজনের শরীরের জীবানু খুব সহজেই আরেকজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে বা শরীরে কোন ক্ষত থাকলে সেটা অনেক সময় উভয়পক্ষের জন্য বিব্রতকরও হতে পারে। তাই বিবাহের পুর্বে শরীরকে জীবানুমুক্ত বা বিভিন্ন রোগের সংক্রমন মুক্ত করার জন্যই গায়ে হলুদ দেয়া হতো। এই হলুদ দেয়ার প্রক্রিয়াটি শুধুমাত্র একদিনের জন্য সীমাবদ্ধ ছিলো না। রূপচচ্চায় প্রাকৃতিক উপাদান হিসাবে চন্দন ও হলুদ প্রতিনিয়তই ব্যবহার করা হতো। কাঁচা হলুদের সাথে খাঁটি সরিষার তেল, কমলার খোসা সহ আরো বেশ কিছু প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে একটি ধরনের বিশেষ ক্রিম ব্যবহার করা হতো। এতে ত্বকের অবাঞ্চিত ক্ষত, অসুখ ইত্যাদি দুর হয়ে যেত, ত্বক হতো সুন্দর মসৃণ এবং ছড়িয়ে পড়ত এক অদ্ভুত সুন্দর আভা। ফলে গায়ে হলুদ দেয়াটা মানুষের একটি গুরুত্বপূর্ন দৈনন্দিন অভ্যাস যার সাথে ধর্মের কোন যোগসুত্র ছিলো না। বরং ধর্ম-ই পরবর্তীতে এই অভ্যাস তাদের রীতি রেওয়াজে ঢুকিয়েছে। বিশেষ করে হিন্দু ধর্মে হলুদ ও চন্দনের ব্যবহার মুলত তাদের পবিত্র দেবদেবীদেরকে সেবা করার উদ্দেশ্যেই প্রচলিত হয়েছে। এছাড়া যারা ভেষজ নিয়ে কাজ করেন, তাঁরা দাবি করেছেন হলুদ মানসিক স্ট্রেস কমায়, বিষন্নতা দুর করে এবং শরীরকে নানা ধরনের বিষাক্ত পদার্থ নিঃসরণে সাহায্য করে শরীরকে সজীব করে তোলে।

সনাতন ধর্মে নারীর পবিত্রতাকে খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়েছে। নারী হবেন সতী, পবিত্র এবং কোমল। বর্তমানে যেভাবে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান থেকে ‘হলুদই’ হারিয়ে যাচ্ছে, তাতে কয়েক বছর পর এই অনুষ্ঠানের নাম হবে, গায়ে মেকাপ কিংবা মেকাপ সন্ধ্যা। এমনটা হলে আমি খুব একটা বিস্মিত হবো না।

যাইহোক, গায়ে হলুদের আসল কাহিনী হচ্ছে – মাছ ভাজার আগে ভালো করে হলুদ মরিচ মেখে কিছুক্ষন রেখে দিতে হয়। তেমনি বিয়ের সময় পাত্রপাত্রীদের হলুদ মেখে প্রস্তুত করা হয় ভাজার জন্য। [ ভাজা ভাজির ব্যাপারটা না হয় আর আগালুম না]