ভারতের মণিপুরে বড়সড় হামলার শঙ্কা
- আপডেট সময় : ০৬:০৩:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৫২ বার পড়া হয়েছে
ফের বড়সড় হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে ভারতের মণিপুর রাজ্যে। প্রতিবেশী মিয়ানমার থেকে ৯০০ কুকি যোদ্ধা রাজ্যটিতে অনুপ্রবেশ করেছে বলে সম্প্রতি জানিয়েছে দেশটির গোয়েন্দারা। সেক্ষেত্রে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর মেইতেই অধ্যুষিত এলাকায় হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গোয়েন্দা খবর পাওয়ার পরপরই রাজ্যটিতে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে ১৬ মাসের বেশি সময় ধরে দফায় দফায় সহিংসতার ঘটনা চলছে। এতে অন্তত ২৫০ জন নিহত হয়েছে। ঘরবাড়ি হারিয়েছে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ।
এবার গোয়েন্দা সূত্রের খবর, মণিপুরে ফের উত্তেজনা বাড়াতে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশ করেছে ৯০০ কুকি বিচ্ছিন্নতাবাদী। চলতি মাসের শেষেই মেইতেই অধ্যুষিত গ্রামে বড়সড় হামলার ছক কষেছে তারা।
গত বৃহস্পতিবার ইম্ফলে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও মণিপুর পুলিশের যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস আইইডি উদ্ধার করার পর এই সতর্কবার্তা জানিয়েছে গোয়েন্দারা।
তাদের সূত্র বলছে, এরই মধ্যে অনুপ্রবেশকারীরা ৩০ জন করে দলে বিভক্ত হয়ে মণিপুরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। তারা প্রত্যেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, ড্রোন হামলায় পারদর্শী, জঙ্গলে যুদ্ধ চালানোর পদ্ধতিও তাদের জানা।
মণিপুরের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং জানিয়েছেন, সন্ত্রাসী হামলা মোকাবিলায় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে সেনাবাহিনী। বাড়ানো হয়েছে তল্লাশি অভিযান।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, মণিপুরে সক্রিয় রয়েছে বহু কুকি বিচ্ছিন্নতাবাদী। দক্ষিণ মণিপুরে বসবাসকারী কুকিদের মিয়ানমারের চিন উপজাতির সঙ্গে জাতিগত সম্পর্ক রয়েছে।
এরই মধ্যে ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া বসানোর কাজ চলছে। প্রায় ১ হাজার ৬৪৩ কিলোমিটার বিস্তৃত ওই সীমান্ত বেড়া বসাতে খরচ হবে ৩১ হাজার কোটি টাকা।
ভারতের মণিপুর রাজ্যে চলমান অস্থিরতার পেছনে বিদেশি শক্তির হাত রয়েছে বলে এর আগে মন্তব্য করেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী এন. বিরেন সিং। গত সোমবার সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। এর প্রমাণ হিসেবে সদ্য গ্রেপ্তার হওয়া একজন বিদেশির কথা উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, সহিংসতার ঘটনায় সম্প্রতি এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে আসাম রাইফেলস। ওই ব্যক্তি কুকি ন্যাশনাল আর্মির (বার্মা) ক্যাডার বলে জানা যায়। সশস্ত্র গোষ্ঠীটির আরেক নাম কেএনএ–বি। পরে জানা যায় ওই ব্যক্তি মিয়ানমানের নাগরিক। এ ঘটনার জেরেই এমন মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ভারতের মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জানাতে সোমবার ইমফালে সংবাদ সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী এন. বিরেন। তিনি বলেন, সহিংসতার শুরুতে মণিপুরের একটি বড় অংশ বিশ্বাস করতে পারেননি এটি বিদেশিদের কাজ। এবার তো বোঝা গেল। এ সময় বিদেশি চক্রান্তকারী ও অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে আসাম রাইফেলসের প্রশংসা করেন তিনি।
এন, বিরেন সিং বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আমি বারবার এ কথা বলে আসছি যে, এই চলমান সংকটে বিদেশিদের মদদ রয়েছে। তারা এখানে রসদ যোগাচ্ছে।’