ঢাকা ০৯:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
কিভাবে বাড়ছে বাংলাদেশের আয়তন? পাল্টে যাচ্ছে পুলিশ, র‌্যাব, আনসারের পোশাক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে পদত্যাগ করছেন পুতুল? চারটি প্রদেশ নিয়ে গঠিত হবে নতুন বাংলাদেশ! সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতার সিদ্ধান্ত যৌক্তিক : প্রেসসচিব অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন: সাংবাদিকদের নামে মামলা নতুন অডিও ফাঁস : কাঁদতে কাঁদতে যা বললেন শেখ হাসিনা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব শেখ হাসিনার বিচার করা: শফিকুল আলম পুতুলকে ডব্লিউএইচও থেকে অপসারণে অনলাইনে স্বাক্ষর জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে জনসাধারণের অভিমত চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা শাপলা চত্বরে হেফাজত দমন : অপারেশন ফ্ল্যাশ আউট বেগম জিয়াকে হিংসা করতেন হাসিনা ভারতের নাগরিকত্ব নিয়েছেন শেখ হাসিনা? পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছাত্রদের ঘোষণাপত্র দিতে বারণের কারণ জানালেন ড. ইউনূস  ঐক্যবদ্ধভাবে দিতে না পারলে জুলাই ঘোষণাপত্রের দরকারই নাই রেস্তোরাঁ, ওষুধ ও মোবাইল রিচার্জে বাড়ছে না ভ্যাট ধর্মনিরপেক্ষতাসহ রাষ্ট্র পরিচালনার ৩ মূলনীতি বাদ পদত্যাগপত্রে যা বললেন টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক আমার মেয়ের খুনি কে, আমি কি বিচার পাব না: প্রশ্ন তিন্নির বাবার

মানব সভ্যতার সূচনালগ্নের প্রথম শহর উরুক: সুমেরীয় সভ্যতার বিস্ময়

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৭:০৭:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 40
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

আমরা যদি মানব ইতিহাসের একেবারে শুরুর দিকে ফিরে যাই, তাহলে আমাদের সামনে উঠে আসে সুমেরীয় সভ্যতার প্রথম শহর উরুক। এই প্রাচীন শহরটি বর্তমানের ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত, এবং ধারণা করা হয় যে এটি ৬৫০০ থেকে ৪০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে গড়ে উঠেছিল। পৃথিবীর প্রথম শহর হিসেবে পরিচিত উরুক শুধু নগর জীবনের সূচনা নয়, মানব সভ্যতার উদ্ভব এবং উন্নতির এক অনন্য নিদর্শন।

উরুককে বিশ্বের প্রথম শহর হিসেবে অনেক গবেষক এবং ঐতিহাসিকরা বিবেচনা করেন। এখানে নগর জীবনের প্রথম উদাহরণ পাওয়া যায়, যেখানে কৃষি, বাণিজ্য, এবং সাংস্কৃতিক জীবনের বিস্তার ঘটেছিল। বিশাল প্রাচীরঘেরা এই শহরে ছিল সুশৃঙ্খল প্রশাসনিক ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে নগর পরিচালিত হতো। উরুকের মানুষেরা ছিল উদ্ভাবনী, এবং এখানেই প্রথম লেখার পদ্ধতি উদ্ভাবিত হয়েছিল, যা কিউনিফর্ম নামক লিপি দ্বারা চিহ্নিত।

১৮৪৯ সালে বিখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ উইলিয়াম লফ্টস উরুক শহরের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেন। তার এই আবিষ্কার মানব ইতিহাসের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। উরুকের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান আজও গবেষকদের জন্য এক চমকপ্রদ বিশ্লেষণমূলক ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। এখান থেকে সংগৃহীত নিদর্শনগুলোর মাধ্যমে প্রাচীন নগর জীবনের অনেক অজানা দিক সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

অনেক লেখক এবং গবেষক মনে করেন, উরুকের মধ্যে লুকিয়ে আছে মানবতার উত্পত্তির রহস্য। সুমেরীয়দের কাহিনীতে এমন কিছু আভাস পাওয়া যায়, যেখানে তারা উল্লেখ করেছেন, দেবতারা এই শহরে নেমে আসতেন। তাদের মতে, উরুকই সেই স্থান হতে পারে, যেখানে মানব সভ্যতার সঙ্গে দেবতাদের প্রথম মেলবন্ধন ঘটে। এটি এমন একটি ধারণা তৈরি করে, যা মানুষকে সৃষ্টির রহস্যের দিকে নিয়ে যায়।

উরুক শুধুমাত্র নগর জীবনের সূচনা করেছিল তা নয়, এখানে উদ্ভাবিত হয়েছিল প্রথম লিখন পদ্ধতি, যা মানব ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন। উরুকের বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য তারা **কিউনিফর্ম** নামক লিপির উদ্ভব ঘটায়, যা মানব ইতিহাসের প্রথম লিখিত ভাষা হিসেবে বিবেচিত হয়। এখানেই প্রথম দেখা যায় কৃষি, স্থাপত্য, এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সমন্বিত রূপ।

উরুক ছিল মানব সভ্যতার প্রথম কেন্দ্রস্থল, যেখানে প্রথম নগরজীবন গড়ে উঠেছিল এবং সভ্যতার সূচনা ঘটেছিল। অনেকের মতে, উরুকের ধ্বংসাবশেষে লুকিয়ে আছে মানবতার উত্পত্তির গোপন ইতিহাস। এটি শুধু নগর জীবনের প্রারম্ভ নয়, বরং মানুষের সঙ্গে দেবতাদের সম্পর্কের এক রহস্যময় কেন্দ্রবিন্দু। তাই উরুক আজও প্রত্নতত্ত্ববিদ এবং ঐতিহাসিকদের কাছে এক চিরকালের অনুপ্রেরণা।©

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মানব সভ্যতার সূচনালগ্নের প্রথম শহর উরুক: সুমেরীয় সভ্যতার বিস্ময়

আপডেট সময় : ০৭:০৭:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ জানুয়ারী ২০২৫

 

আমরা যদি মানব ইতিহাসের একেবারে শুরুর দিকে ফিরে যাই, তাহলে আমাদের সামনে উঠে আসে সুমেরীয় সভ্যতার প্রথম শহর উরুক। এই প্রাচীন শহরটি বর্তমানের ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত, এবং ধারণা করা হয় যে এটি ৬৫০০ থেকে ৪০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে গড়ে উঠেছিল। পৃথিবীর প্রথম শহর হিসেবে পরিচিত উরুক শুধু নগর জীবনের সূচনা নয়, মানব সভ্যতার উদ্ভব এবং উন্নতির এক অনন্য নিদর্শন।

উরুককে বিশ্বের প্রথম শহর হিসেবে অনেক গবেষক এবং ঐতিহাসিকরা বিবেচনা করেন। এখানে নগর জীবনের প্রথম উদাহরণ পাওয়া যায়, যেখানে কৃষি, বাণিজ্য, এবং সাংস্কৃতিক জীবনের বিস্তার ঘটেছিল। বিশাল প্রাচীরঘেরা এই শহরে ছিল সুশৃঙ্খল প্রশাসনিক ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে নগর পরিচালিত হতো। উরুকের মানুষেরা ছিল উদ্ভাবনী, এবং এখানেই প্রথম লেখার পদ্ধতি উদ্ভাবিত হয়েছিল, যা কিউনিফর্ম নামক লিপি দ্বারা চিহ্নিত।

১৮৪৯ সালে বিখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ উইলিয়াম লফ্টস উরুক শহরের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেন। তার এই আবিষ্কার মানব ইতিহাসের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। উরুকের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান আজও গবেষকদের জন্য এক চমকপ্রদ বিশ্লেষণমূলক ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। এখান থেকে সংগৃহীত নিদর্শনগুলোর মাধ্যমে প্রাচীন নগর জীবনের অনেক অজানা দিক সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

অনেক লেখক এবং গবেষক মনে করেন, উরুকের মধ্যে লুকিয়ে আছে মানবতার উত্পত্তির রহস্য। সুমেরীয়দের কাহিনীতে এমন কিছু আভাস পাওয়া যায়, যেখানে তারা উল্লেখ করেছেন, দেবতারা এই শহরে নেমে আসতেন। তাদের মতে, উরুকই সেই স্থান হতে পারে, যেখানে মানব সভ্যতার সঙ্গে দেবতাদের প্রথম মেলবন্ধন ঘটে। এটি এমন একটি ধারণা তৈরি করে, যা মানুষকে সৃষ্টির রহস্যের দিকে নিয়ে যায়।

উরুক শুধুমাত্র নগর জীবনের সূচনা করেছিল তা নয়, এখানে উদ্ভাবিত হয়েছিল প্রথম লিখন পদ্ধতি, যা মানব ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন। উরুকের বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের জন্য তারা **কিউনিফর্ম** নামক লিপির উদ্ভব ঘটায়, যা মানব ইতিহাসের প্রথম লিখিত ভাষা হিসেবে বিবেচিত হয়। এখানেই প্রথম দেখা যায় কৃষি, স্থাপত্য, এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সমন্বিত রূপ।

উরুক ছিল মানব সভ্যতার প্রথম কেন্দ্রস্থল, যেখানে প্রথম নগরজীবন গড়ে উঠেছিল এবং সভ্যতার সূচনা ঘটেছিল। অনেকের মতে, উরুকের ধ্বংসাবশেষে লুকিয়ে আছে মানবতার উত্পত্তির গোপন ইতিহাস। এটি শুধু নগর জীবনের প্রারম্ভ নয়, বরং মানুষের সঙ্গে দেবতাদের সম্পর্কের এক রহস্যময় কেন্দ্রবিন্দু। তাই উরুক আজও প্রত্নতত্ত্ববিদ এবং ঐতিহাসিকদের কাছে এক চিরকালের অনুপ্রেরণা।©