মেট্রোরেলের আয় নিয়ে এত গুজব কেন?
- আপডেট সময় : ০৪:৩৩:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৪০ বার পড়া হয়েছে
সম্প্রতি ফেসবুকে একটি দাবি খুব ভাইরাল যে, গণঅভ্যুত্থানের আগে মেট্রোরেলে গত ৬ মাসে আয় ছিল ১৮ কোটি টাকা। সরকার পরিবর্তনের পর বর্তমানে ১৮ দিনেই আয় ২০ কোটি। বলা হচ্ছে, শেখ হাসিনা পতনের পর লাভজনক অবস্থায় এসেছে মেট্রোরেল।
আসলেই কি তাই?
ফ্যাক্ট চেকিং বা তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার বলছে, ভাইরাল পোস্টে যে ছয় মাসের দাবি করা হচ্ছে তা ২০২৩ সালের। অর্থাৎ ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেল উদ্বোধনের পর ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত এই ছয় মাসে মেট্রোরেলের আয় হয়েছিল ১৮ কোটি টাকা।
তখন মেট্রোরেল চলাচল করত সীমিত সময়ের জন্য। প্রথমে যাত্রাপথে কোনো স্টপেজ ছাড়াই উত্তরা-আগারগাঁও রুটে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দৈনিক ৪ ঘণ্টা মেট্রোরেল চলাচল করত। শুরুরদিকে এই রুটের সবগুলো স্টেশনও চালু ছিল না। পরে ধীরে ধীরে স্টেশনগুলো চালু হয়।
২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেন। ফাইল ছবি
২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেন। ফাইল ছবি
২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে মেট্রোরেলের আয় কত?
মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রউফ রিউমার স্ক্যানারকে বলেছেন, গত ১ জানুয়ারি ২০২৪ থেকে ৩০ জুন ২০২৪ পর্যন্ত মেট্রোরেল থেকে ১৯৫ কোটি ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩৩৮ টাকা আয় হয়েছে।
অর্থাৎ ফেসবুকের পোস্টগুলোতে দাবি করা ছয় মাসের আয় মূলত ২০২৩ সালের। যা এখনকার সময়ের সঙ্গে কোনোভাবেই তুলনাযোগ্য না।
এ নিয়ে আব্দুর রউফ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্বোধনের পরের প্রথম ছয় মাসের আয়ের তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।
এই গুজব শুরু পর এমআরটি-৬ এর (মতিঝিল-উত্তরা) অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক মো. জাকারিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চালু হওয়ার পর থেকে মেট্রোরেলের প্রতিদিন গড় আয় ১ কোটি টাকার বেশি। গড় যাত্রী ৩ লাখ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ৬ মাসের আয় নিয়ে যা ছড়িয়েছে সেটি সঠিক নয়।
সুতরাং, গণ-অভ্যুত্থানের পূর্বের আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ৬ মাসের আয়ের সাথে গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ের মেট্রোরেলের আয়ের যে তুলনা করা হচ্ছে তা বিভ্রান্তিকর।
এদিকে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ১৮ জুলাই মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর এলাকায় মেট্রো লাইনের নিচের পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেওয়া। ভাঙচুর চালানো হয় কয়েকটি মেট্রো স্টেশনেও। এসব ঘটনার পর থেকেই মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
টানা ৩৭ দিন বন্ধ থাকার পর ক্ষতিগ্রস্ত দুই স্টেশন ছাড়াই গত ২৫ আগস্ট থেকে যাত্রী সেবা দেওয়া শুরু করে মেট্রোরেল। পরে গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে চালু করা হয় কাজীপাড়া স্টেশন।