যুক্তরাষ্ট্রে কেমন কাটছে দেশের তারকাদের জীবন
- আপডেট সময় : ০২:২০:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ অক্টোবর ২০২২ ৩২ বার পড়া হয়েছে
উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে, সম্মানজনকচাকরিকে অগ্রাহ্য করে মিডিয়ায় এসেতারকাখ্যাতি পেয়ে যান অনেকেই। আবারঅনেকে ছোট বেলা থেকেই সাংস্কৃতিকচর্চার মধ্য দিয়ে তৈরি হয়ে বিনোদনজগতের রঙিন দুনিয়ার একসময় স্থায়ী হয়েযান। শুরুতে সাফল্যের সম্ভাবনা কিংবাসফলতা নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেনসামনের দিকে। কিন্তু বিনোদন জগতেরনানা গ্যাঁড়াকলে পড়ে খেই হারিয়ে ফেলেনঅনেকে। যার কারণে মিডিয়ায় কদর কমেযায় অনেকের। এছাড়া ক্যারিয়ারেরসফলতা থাকলেও ব্যক্তিগত জীবনেরটানাপড়েনের কারণে দেশান্তরী হচ্ছেনদেশের অনেক তারকা। আবার উন্নততরজীবনের সন্ধানেও সপরিবারে কেউ কেউপ্রবাসী হচ্ছেন। যার বড় একটি অংশআমেরিকায় বসত গেড়েছেন। আর স্থায়ীহওয়ার প্রক্রিয়ায় আছেন অনেকেই। একটুখোঁজ নিলেই দেখা যাবে, বিয়ে করে স্বামীরসঙ্গে আমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছেন লাক্সসুপারস্টার মিলা হোসেন। সন্তান সংসারনিয়ে তিনি আমেরিকার নাগরিক হিসেবেসেখানে জীবনযাপন করছেন। জানা যায়, চাকরি করেই দিনাতিপাত করছেন। তারকিছুকাল পরে সেখানে স্থায়ী হয়েছেনঅভিনেতা টনি ডায়েস। অভিনয় না করলেওবাঙালি কমিউনিটিতে রয়েছে তার উজ্জ্বলউপস্থিতি। চিত্রনায়িকা রোমানা দ্বিতীয় বিয়েকরে আমেরিকায় গিয়েছেন প্রায় অর্ধযুগআগে। সেখানে গিয়ে তিনি দুই সন্তানের মাহয়েছেন। স্বামীকে নিয়ে সুখেই আছেনএকসময়ের ঢালিউডের এই চিত্রনায়িকা।
প্রবাসী বাংলাদেশী এক ব্যবসায়ীকে বেশঘটা করে বিয়ে করেছিলেন জনপ্রিয় মডেলও অভিনেত্রী মোনালিসা। তবে বিয়ের অল্পসময় পরেই তার সংসার ভেঙে যায়। তবেসংসার ভাঙলেও আমেরিকায় ছোটখাটোচাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি।তবে মাঝেমধ্যে দেশে ঘুরতে এসে অভিনয়করছেন তিনি। মঞ্চ, টিভি নাটক ওসিনেমার গুণী অভিনেত্রী তমালিকা কর্মকারঅনেকটা চুপিসারেই ঢাকায় গাড়িসহঅন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিক্রি করেআমেরিকায় পাড়ি জমিয়েছেন। মাঝেমধ্যেদেশে এলেও এখন আর মিডিয়ায় কাজকরেন না তিনি। আমেরিকায় একটিবেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেই দিনকাটাচ্ছেন তিনি।
অভিনয় ক্যারিয়ারে জনপ্রিয়তার তুঙ্গেথাকা অবস্থায় বাংলাদেশী বংশোদ্ভূতআমেরিকান পুলিশ অফিসারকে বিয়ে করেআমেরিকায় সংসার জীবন শুরু করেন রিচিসোলায়মান। বাংলাদেশে যাওয়া-আসাথাকলেও আমেরিকায়ই চাকরি করছেনতিনি। তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমার স্বামীআমেরিকায় সরকারি চাকরি করেন তাইসেখানে আমাকেও স্থায়ীভাবে থাকতে হচ্ছে।তাছাড়া আমার দুই সন্তান সেখানেপড়ালেখা করছে। ওদের জন্য হলেওআমাদের আমেরিকায় থাকতে হবে। তবেদেশকে সবসময়ই অনুভব করি। মিডিয়ারকাজকেও মিস করি। তাই বেড়াতে গেলেনাটকে অভিনয় করি।’
মডেল, অভিনেত্রী ও উপস্থাপিকা হিসেবেতুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন নওশীননাহরিন। প্রায় দশ বছরের মতো মিডিয়াক্যারিয়ার ছিল তার। তবে নানা কারণে তারমিডিয়া ক্যারিয়ার বিবর্ণ হতে থাকে। কিছুটাহতাশাও পেয়ে বসে তাকে। সেই অবস্থাকাটানো এবং উন্নত জীবনের খোঁজেআমেরিকায় পাড়ি জমান নওশীন। সঙ্গেপরিবারের সদস্যরাও যান। সেখানে গিয়েএকটি বেসরকারি ক্লিনিকের অ্যাটেনডেন্টহিসেবে চাকরি করছেন। নতুন পরিবেশ ওজীবনযাপন প্রসঙ্গে নওশীন বলেন, ‘শুরুতেকিছুটা কঠিন ছিল আমেরিকার জীবন। তবেএখন অনেকটাই গুছিয়ে এনেছি। চাকরিকরছি। সন্তানের মা হলাম আবার। যদিওএখন ছুটিতে আছি, তার পরও ভালো আছি।দেশে স্থায়ীভাবে ফেরার কোনো ইচ্ছাইনেই। সবার কাছে দোয়া চাই যেন জীবনেরবাকি সময়গুলো এখানেই থাকতে পারি।’
ছোট পর্দার মডেল এবং অভিনেত্রীনাফিজাও অভিনয় ক্যারিয়ারের সুসময়েআমেরিকায় পাড়ি জমান। এখন বেশস্বাচ্ছন্দ্যেই তিনি সে দেশে বসবাস করছেন।তিনিও একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিকরছেন।
২০২০ সালের প্রথম ভাগে সপরিবারআমেরিকায় গেছেন নাট্যকার, চিত্রশিল্পী ওঅভিনেত্রী বিপাশা হায়াত। তিনি সেখানেচাকরি না করলেও দুই সন্তানকে স্কুলে ভর্তিকরিয়েছেন। তার স্বামী নির্মাতা ও অভিনেতাতৌকীর আহমেদ তাদের সঙ্গ দেয়ার জন্যবছরের বেশির ভাগ সময়ই সেখানেঅবস্থান করছেন। এ প্রসঙ্গে বিপাশা হায়াতবলেন, ‘আমার ছেলেমেয়ের উন্নততরশিক্ষার জন্যই আমেরিকায় আছি। তাছাড়াআর কোনো উদ্দেশ্য নেই। তবে ওরাপড়ালেখা শেষে যদি অন্য কোথাও যেতেচায়, যাবে। তবে এখন আমেরিকায়ইথাকব।’ অবসর সময়টায় বিপাশা নতুনচিত্রকর্ম তৈরির কাজ করছেন।
স্বামী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়েচিত্রনায়িকা শাবানা আমেরিকায় বসবাসকরছেন। গত নির্বাচনের আগে দেশেফিরেছিলেন। তার স্বামী জাতীয় সংসদনির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।তবে বিফল হয়ে আবার ফিরেগেছেন মেরিকায়। শাবানা বলেন, ‘অভিনয়তো অনেক করেছি। নিজেদের জন্য তোঅনেক করেছি। সন্তানদের জন্য ভালো কিছুকরার প্রত্যাশায় আমেরিকায় স্থায়ী হয়েছি।আমরা ভালোই আছি। সবাই আমাদের জন্যদোয়া করবেন যেন সামনের সময়গুলোওভালোভাবে কাটাতে পারি।’
নাটক ও সিনেমায় অভিনয় করে তুমুলজনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন ঈপ্সিতা শবনমশ্রাবন্তী। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েরশিক্ষক খোরশেদ আলমকে বিয়ে করেদুজনই আমেরিকায় পাড়ি জমান। তাদেরঘরে দুই কন্যাসন্তান আসে। কিন্তুপারিবারিক টানাপড়েনের কারণে তার স্বামীখোরশেদ আলম দেশে ফিরে এলেওশ্রাবন্তী সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেআমেরিকায়ই রয়ে গেছেন। চাকরি করেসন্তানদের পড়ালেখা করাচ্ছেন। মাঝেমধ্যেদেশে আসেন। সম্প্রতি তিনি ঢাকায়এসেছিলেন। তখন আলাপকালে বলেন, ‘আমেরিকার জীবনটা একধরনের কঠিনই।কারণ সবকিছুই বৈরী। চেনা মানুষ নেই, আত্মীয় পরিজন অনেক দূরে, তাই কিছুটাকষ্ট নিয়েই জীবনযাপন করছি। এখানেকাজটাকেই মুখ্য রাখতে হয়। পরিশ্রমকরছি, ভালো আছি। দেশকে খুব মিস করি।তবে দেশে স্থায়ীভাবে ফেরার ইচ্ছা নেই।’
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত বর্ষীয়ানঅভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ দীর্ঘকালধরেই দুই দেশে বসবাস করছেন। বছরেরপুরো সময়টা দুই ভাগে বিভক্ত করেজীবনযাপন করেন তিনি। দেশে এলেওঅভিনয়ে নিয়মিত নন তিনি। তবেকরোনাকালের আগে বিক্ষিপ্তভাবে দেশেকয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন।জীবনের বাকিটা সময় এভাবেই কাটাবেনবলে জানিয়েছেন তিনি। চলতি বছরেসবচেয়ে বড় খবর হলো চিত্রনায়ক শাকিবখানের আমেরিকায় নাগরিকত্ব নেয়ারবিষয়টি। যদিও তিনি খোলাসা করে কিছুইবলেননি। তবে দীর্ঘ ছয় মাস তারআমেরিকায় অবস্থানের বিষয়টি অন্যভাবেব্যাখ্যা করেছেন গণমাধ্যমে। সেখানে নাকিতিনি অবকাশযাপন এবং সিনেমার শুটিংকরতে গিয়েছেন। কিন্তু গভীরভাবে তারআমেরিকায় অবস্থানের সময় কার্যকলাপবিশ্লেষণ করে অনেকে মনে করছেন তিনিযুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী হওয়ার জন্য অফিশিয়ালিআবেদন করেছেন এবং তার আবেদনটিগৃহীত হয়। প্রাথমিকভাবে তাকেআমেরিকায় বসবাসের অনুমতি দেয়াহয়েছে। যার কারণে টানা ছয় মাস তিনিসেখানে ছিলেন। এখন দেশে থাকলেওআগামী মাসে আবারো উড়াল দিচ্ছেনআমেরিকায়। তবে সেখানে গিয়ে কিছুদিনআগে ঘোষিত সিনেমার শুটিং শুরু করবেন।যেটি পরিচালনা করবেন বাংলাদেশীনির্মাতা হিমেল আশরাফ। তিনিওআমেরিকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।জনপ্রিয় ব্যান্ড দল প্রমিথিউসের ভোকালবিপ্লব সফল সংগীত ক্যারিয়ার থাকলেওনিরাপদ ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেআমেরিকায় স্থায়ীভাবে পাড়ি জমিয়েছেন।সেখানে গিয়ে তিনি সংগীতবিষয়ক কোনোকাজের সঙ্গে যুক্ত হননি। তিনি প্রথমদিকেট্যাক্সি ড্রাইভারের চাকরি করতেন। বিষয়টিগণমাধ্যমে বিপ্লবই জানিয়েছিলেন।