যে কারণে গ্যাস বেলুন বিপজ্জনক
- আপডেট সময় : ০৬:৩৮:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৫
- / 20
হিলিয়াম গ্যাস দিয়ে বেলুন তৈরির কথা থাকলেও কম খরচের কারণে হাইড্রোজেন গ্যাস ভরেই বেলুন বিক্রি হচ্ছে রাজধানীসহ সারাদেশে। আর এই গ্যাস তৈরি করছেন ব্যবসায়ীরা নিজেই। কোনোরকম নিরাপত্তা কিংবা নির্দেশনা ছাড়াই নিজ উদ্যোগে এই গ্যাস তৈরি করার খোঁজ মিলেছে বাংলা ট্রিবিউনের অনুসন্ধানে। তবে শিশুদের হাতে এই বেলুন তুলে দেওয়া কতটা ঝুঁকির তা অনুমান করা মুশকিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘গ্যাস বেলুন নয়, তাদের হাতে আসলে একপ্রকার চলমান বোমা তুলে দেওয়া হচ্ছে।’
যেভাবে তৈরি হচ্ছে গ্যাস
শুধু সনাতন ধরনের বেলুন নয় বিভিন্ন কার্টুনের অবয়বে বানানো প্লাস্টিকের বেলুনেও ব্যবহৃত হচ্ছে হাইড্রোজেন গ্যাস। এই গ্যাস তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে সালফিউরিক অথবা হাইড্রোক্লোরিক আ্যসিড। অ্যাসিডের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে জিংক। রাসায়নিক বিক্রিয়া শেষে উপজাত হিসেবে তৈরি হচ্ছে হাইড্রোজেন গ্যাস। অ্যাসিডের সহজলভ্যতার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিক্রেতারা সাধারণত গাড়ির ব্যাটারি থেকে এসব অ্যাসিড সংগ্রহ করে থাকে।
হিলিয়াম গ্যাস হাইড্রোজেন থেকে অপেক্ষাকৃত ভারী বলে বেলুন কম উচ্চতায় উড়ে। অন্যদিকে এই গ্যাস দাহ্য নয় বলে ব্যবহার করা হয় সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে। কিন্তু হাইড্রোজেন গ্যাস ব্যবহার জননিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এই গ্যাস বেলুন বিস্ফোরিত হতে সামান্য সিগারেটের আগুনই যথেষ্ট। হিলিয়াম গ্যাস ব্যবহারে এই ঝুঁকি থাকে না। এই গ্যাসের বেলুন ফেটে গেলেও আগুন ধরার কোনও সম্ভাবনা নেই। এজন্যই হিলিয়াম গ্যাস ব্যবহার নিরাপদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো আব্দুল কাদের বলেন, ‘কোনও প্রকার তাপের সংস্পর্শে এলেই হাইড্রোজেন বিক্রিয়া করে অনেক কিছুই করতে পারে। হিলিয়াম গ্যাস নন রি-অ্যাক্টিভ, যার বিক্রিয়া করার বা দাহ্য হওয়ার ক্ষমতা নেই। এটি বেলুনে ব্যবহার করা নিরাপদ। কিন্তু হাইড্রোজেন ব্যবহারে ঝুঁকি রয়েছে কারণ তাপের সংস্পর্শে হাইড্রোজেন রি-অ্যাক্ট করা শুরু করবে। এটা যেকোনও ধরনের তাপ হতে পারে। আগুনও হতে পারে, সূর্যের আলোও হতে পারে। মোট কথা গরম পেলেই হাইড্রোজেন বিক্রিয়া করা শুরু করে।’
হাইড্রোজেন গ্যাস বিপজ্জনক, তাই গ্যাস বেলুন নিজের নিরাপত্তা বিবেচনা করে ব্যবহার করা উচিত বলে মনে করেন রসায়নবিদ এবং বিস্ফোরক নিয়ে কাজ করা সংশ্লিষ্টরা। তারা বলেন, ‘এসব বেলুন ফেটে গেলে কাছের সামান্য সিগারেটের আগুনই ঝলসে যাওয়ার যথেষ্ট।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নীলুফার বলেন, ‘হাইড্রোজেন গ্যাস হিলিয়াম থেকে অপেক্ষাকৃত হালকা এবং আকাশে আরও বেশি উচ্চতায় যেতে পারে বলে এর ব্যবহার করা হয় বেলুনে। তবে আগুনের সংস্পর্শে এলে তা বিস্ফোরিত হবেই।’