ঢাকা ০১:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
বাবরের জীবন থেকে ১৭ বছর কেড়ে নেয় ‘প্রথম আলো’ সোমবার থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চাপমুক্ত প্রশাসন এবং ড. ইউনূসের দর্শন ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ পালনের ঘোষণা আনিসুল হকের মুক্তি চেয়ে পোস্টার দিল্লিতে গৃহবন্দী শেখ হাসিনা? গ্যাস-বিদ্যুতে ভয়াবহ ভোগান্তির আশঙ্কা ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ মোদি-হাসিনা মাইনাস: ট্রাম্পের আস্থায় এখন ড. ইউনূস! মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসি গ্যাবার্ডের বাংলাদেশ নিয়ে ভাইরাল ভিডিওর আসল ঘটনা আমি ফিরব, আমাদের শহিদদের প্রতিশোধ নেব’: শেখ হাসিনা অপরাধী হাসিনাকে নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপে ভারত ইন্টারপোলের জালে বেনজীর হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর দাবি জোরদার হচ্ছে ভারতে! এটুআই ছিল মিলেমিশে লুটপাটের প্রকল্প আওয়ামী লুটপাটে পঙ্গু ইডিসিএল বিদেশেও বিচার সম্ভব শেখ হাসিনার ‘দুঃখিত, আপা! এটাই শেষ!!’ : হাসিনার উদ্দেশ্য প্রেস সচিব জাতীয় সংসদ ভোটের পর পুলিশে পদকের মচ্ছব

যে কারণে ‘ত্রাণ সামগ্রী’ পড়ে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৮:০৫:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 161
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

গত আগস্টে বন্যা শুরু হওয়ার পর বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ও বিভিন্ন বিভাগের উদ্যোগে ত্রাণ সংগ্রহ করে। বন্যার পর কিছু পুরোনো কাপড় ও পানি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ও টিএসসির মাঠে পড়ে থাকতে দেখা যায়। এগুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় নানান সমালোচনা। ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনাকারীদের নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকেই। পুরো বিষয়টি নিয়ে ‘মিস কনসেপশন’ তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ড. রাশেদা ইরশাদ।

 

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ১৫০ বস্তা পুরোনো জামা-কাপড়, প্রায় ২০০ লিটার মিনারেল ওয়াটার ও কিছু বড় বোতলভর্তি পানি পড়ে আছে। এ সময় একজনকে ভেতর থেকে কাপড় খুঁজে বের করতে দেখা যায়। এগুলো কেন নিচ্ছেন, জানতে চাইলে তিনি জানান, কিনে নিয়েছেন। তখন সেখানে দায়িত্ব পালনরত এক কর্মচারীও একই কথা বলেন।

এ বিষয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ড. রাশেদা ইরশাদ বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও দুই-একটি মিডিয়ায় বিষয়টি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এখানে কোনও খাদ্যসামগ্রী পড়ে ছিল না। ছিল কিছু পুরোনো কাপড় ও পানি। যেগুলো কেউ নিচ্ছিল না। পরে পুরোনো কাপড়ের ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে সেগুলো বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এসব টাকা পরে পুনর্বাসনের জন্য ব্যবহার করা হবে। আমাদের শিক্ষার্থীরাই সেগুলা করবেন। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ১৩টি ডিপার্টমেন্ট এই ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।

তিনি বলেন, আমি নিজে কোনও টাকা-পয়সায় হিসাব রাখিনি, দেখিওনি। শিক্ষার্থীরাই সব কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। সব হিসাব তাদের কাছেই আছে। উপাচার্য স্যার বিষয়টি নিয়ে জানতে চেয়েছেন। শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের ল্যাপটপে এক্সেল শিটে হিসাব রয়েছে, তারা সব হিসাব দিতে পারবে। আমি নিজে অনুষদের ফান্ড থেকে দেড় লাখ টাকার খাবার কিনে দিয়েছি। ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রমে নিজেও নোয়াখালী গিয়েছি। আসলে এই বিষয়গুলো নিয়ে অপপ্রচার হচ্ছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা এতো কষ্ট করার পরও এই ধরনের অপপ্রচার সত্যিই পীড়াদায়ক।

যেসব পুরোনো জামা-কাপড় রয়ে গিয়েছিল সেগুলো অনেকেই নিতে চাচ্ছিল না জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত ডিন বলেন, কিছু মোটামুটি অবস্থাসম্পন্ন পরিবার এসব পুরাতন জামা-কাপড় নিতে অপমান বোধ করছিল। যার ফলে এগুলো আর দেওয়া হয়নি। পরে শিক্ষার্থীরা সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলে দুই থেকে তিন ট্রাক তাদের দিয়ে এসেছিল। এমনকি সেনাবাহিনী ট্রাকও দেয়নি, শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে ট্রাক ভাড়া করে সেগুলো দিয়ে এসেছিল। ট্রাক আনলোডও করেছিল শিক্ষার্থীরা। ময়লা থাকায় এসব পুরাতন জামা-কাপড় বাছাই করতে গিয়ে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থও হয়ে পড়েছিল।

 

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের পার্কিং গেট দিয়ে ঢুকতেই হাতের বামে যেসব পুরোনো জামা-কাপড়ের বস্তা পড়ে থাকতে দেখা যায় সেগুলো টিএসসি থেকে যারা সংগ্রহ করেছিল তাদের বলেও জানান তিনি।

 

ড. রাশেদা ইরশাদ জানান, এসব জামা-কাপড় সমাজিক বিজ্ঞান অনুষদের না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যে ত্রাণ সংগ্রহ করেছিল এগুলো যে সেটার অংশ বিষয়টি ক্লিয়ার করে স্টিকার লাগিয়ে দিতে কর্মচারীদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরাও নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, পুরোনো জামা-কাপড় কেউ নিতে চায় না। তাই পড়ে আছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

যে কারণে ‘ত্রাণ সামগ্রী’ পড়ে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে

আপডেট সময় : ০৮:০৫:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

গত আগস্টে বন্যা শুরু হওয়ার পর বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ও বিভিন্ন বিভাগের উদ্যোগে ত্রাণ সংগ্রহ করে। বন্যার পর কিছু পুরোনো কাপড় ও পানি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ও টিএসসির মাঠে পড়ে থাকতে দেখা যায়। এগুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় নানান সমালোচনা। ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনাকারীদের নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অনেকেই। পুরো বিষয়টি নিয়ে ‘মিস কনসেপশন’ তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ড. রাশেদা ইরশাদ।

 

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ১৫০ বস্তা পুরোনো জামা-কাপড়, প্রায় ২০০ লিটার মিনারেল ওয়াটার ও কিছু বড় বোতলভর্তি পানি পড়ে আছে। এ সময় একজনকে ভেতর থেকে কাপড় খুঁজে বের করতে দেখা যায়। এগুলো কেন নিচ্ছেন, জানতে চাইলে তিনি জানান, কিনে নিয়েছেন। তখন সেখানে দায়িত্ব পালনরত এক কর্মচারীও একই কথা বলেন।

এ বিষয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ড. রাশেদা ইরশাদ বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও দুই-একটি মিডিয়ায় বিষয়টি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এখানে কোনও খাদ্যসামগ্রী পড়ে ছিল না। ছিল কিছু পুরোনো কাপড় ও পানি। যেগুলো কেউ নিচ্ছিল না। পরে পুরোনো কাপড়ের ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে সেগুলো বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এসব টাকা পরে পুনর্বাসনের জন্য ব্যবহার করা হবে। আমাদের শিক্ষার্থীরাই সেগুলা করবেন। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ১৩টি ডিপার্টমেন্ট এই ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।

তিনি বলেন, আমি নিজে কোনও টাকা-পয়সায় হিসাব রাখিনি, দেখিওনি। শিক্ষার্থীরাই সব কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। সব হিসাব তাদের কাছেই আছে। উপাচার্য স্যার বিষয়টি নিয়ে জানতে চেয়েছেন। শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের ল্যাপটপে এক্সেল শিটে হিসাব রয়েছে, তারা সব হিসাব দিতে পারবে। আমি নিজে অনুষদের ফান্ড থেকে দেড় লাখ টাকার খাবার কিনে দিয়েছি। ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রমে নিজেও নোয়াখালী গিয়েছি। আসলে এই বিষয়গুলো নিয়ে অপপ্রচার হচ্ছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা এতো কষ্ট করার পরও এই ধরনের অপপ্রচার সত্যিই পীড়াদায়ক।

যেসব পুরোনো জামা-কাপড় রয়ে গিয়েছিল সেগুলো অনেকেই নিতে চাচ্ছিল না জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত ডিন বলেন, কিছু মোটামুটি অবস্থাসম্পন্ন পরিবার এসব পুরাতন জামা-কাপড় নিতে অপমান বোধ করছিল। যার ফলে এগুলো আর দেওয়া হয়নি। পরে শিক্ষার্থীরা সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলে দুই থেকে তিন ট্রাক তাদের দিয়ে এসেছিল। এমনকি সেনাবাহিনী ট্রাকও দেয়নি, শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে ট্রাক ভাড়া করে সেগুলো দিয়ে এসেছিল। ট্রাক আনলোডও করেছিল শিক্ষার্থীরা। ময়লা থাকায় এসব পুরাতন জামা-কাপড় বাছাই করতে গিয়ে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থও হয়ে পড়েছিল।

 

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের পার্কিং গেট দিয়ে ঢুকতেই হাতের বামে যেসব পুরোনো জামা-কাপড়ের বস্তা পড়ে থাকতে দেখা যায় সেগুলো টিএসসি থেকে যারা সংগ্রহ করেছিল তাদের বলেও জানান তিনি।

 

ড. রাশেদা ইরশাদ জানান, এসব জামা-কাপড় সমাজিক বিজ্ঞান অনুষদের না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যে ত্রাণ সংগ্রহ করেছিল এগুলো যে সেটার অংশ বিষয়টি ক্লিয়ার করে স্টিকার লাগিয়ে দিতে কর্মচারীদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরাও নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, পুরোনো জামা-কাপড় কেউ নিতে চায় না। তাই পড়ে আছে।