রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ কিংবা অভিশংসন, সংবিধান কি বলে?
- আপডেট সময় : ০৫:৪১:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪ ১২৪ বার পড়া হয়েছে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে গেছেন। কিন্তু শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার কোনো দালিলিক প্রমাণ নাই বলে সম্প্রতি গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মন্তব্য করেছেন। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সারা দেশে রাষ্ট্রপতিকে নানা ধরনের প্রশ্ন ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। এমনকি রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে আজ ছাত্র-জনতার গণজমায়েতের ডাক দিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ।
আর এসব বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার খায়রুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘বিপ্লবের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকারকে সবাই মেনে নিয়েছে। অতএব এই সরকারের আচরণ হবে বিপ্লবী সরকারের মতো। এই সরকার যদি সংবিধান মেনে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে যায়, তাহলে নানা জটিলতার সৃষ্টি হবে। কারণ, এখনো নানা স্বার্থান্বেষী মহল সক্রিয় আছে। অতএব এদিকে সরকারকে লক্ষ রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতা বিপ্লব করে এত বড় স্বৈরাশাসককে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দিয়েছে, সেহেতু এই বিপ্লবী সরকারের উচিত, সংবিধানে কী আছে বা না আছে সেদিকে না তাকানো। জনগণের পক্ষে দায়িত্ব নেওয়া এই সরকারকে সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার খায়রুল বলেন, ‘বিপ্লবোত্তর সরকারে রাষ্ট্রপতি থাকল কি থাকল না, সেটা বিশেষ কিছু বহন করে না। রাষ্ট্রপতি নাই বলে দেশ চলবে না-এটা সঠিক নয়। বিপ্লবী সরকারের যিনি প্রধান তিনিই রাষ্ট্র চালাবেন। তখন রাষ্ট্রপতির কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ, রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষার সবকিছুই প্রধান উপদেষ্টার হাতে।’
তিনি আরো বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি তার দায়িত্বশীল অফিস থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন বলে বক্তব্য রেখেছেন। রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের নথি থাকুক বা না থাকুক, সেটার আর খোঁজ করার দরকার হয় না। রাষ্ট্রপতি যে মুহূর্তে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন, সেটাই শাশ্বত ও প্রতিষ্ঠিত সত্য। কোর্ট এটাই জুডিশিয়াল নোটিশে নেবে। পরে কী বললেন বা না বলেলেন সেটা বিবেচ্য নয়।’
এদিকে, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হলে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত স্পিকার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করবেন বলে সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সংসদ নেই। স্পিকারও পদত্যাগ করেছেন। আর ডেপুটি স্পিকার কারাবন্দি। ফলে রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করলে কিংবা দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হলে একটা সাংবিধানিক শূন্যতার সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করেন আইনজ্ঞরা।