ঢাকা ০১:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
২৫ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ পালনের ঘোষণা আনিসুল হকের মুক্তি চেয়ে পোস্টার দিল্লিতে গৃহবন্দী শেখ হাসিনা? গ্যাস-বিদ্যুতে ভয়াবহ ভোগান্তির আশঙ্কা ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ মোদি-হাসিনা মাইনাস: ট্রাম্পের আস্থায় এখন ড. ইউনূস! মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসি গ্যাবার্ডের বাংলাদেশ নিয়ে ভাইরাল ভিডিওর আসল ঘটনা আমি ফিরব, আমাদের শহিদদের প্রতিশোধ নেব’: শেখ হাসিনা অপরাধী হাসিনাকে নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপে ভারত ইন্টারপোলের জালে বেনজীর হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর দাবি জোরদার হচ্ছে ভারতে! এটুআই ছিল মিলেমিশে লুটপাটের প্রকল্প আওয়ামী লুটপাটে পঙ্গু ইডিসিএল বিদেশেও বিচার সম্ভব শেখ হাসিনার ‘দুঃখিত, আপা! এটাই শেষ!!’ : হাসিনার উদ্দেশ্য প্রেস সচিব জাতীয় সংসদ ভোটের পর পুলিশে পদকের মচ্ছব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে ঐকমত্য কমিশন প্রফেসর ইউনূস ও তার দাবার চাল। পদত্যাগ করছেন উপদেষ্টা নাহিদ, আসছে নতুন দল

‘শবে বরাত’ কী, এই রাতের কেন এত মর্যাদা?

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ১১:৪৯:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 10
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আরবি ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ আমাদের এ অঞ্চলে শবে বরাত নামে প্রসিদ্ধ। ‘শবে বরাত’ এই শব্দ-যুগল ফারসি ভাষা থেকে এসেছে। ‘শব’ মানে রাত, ‘বরাত’ মানে মুক্তি। আরবি শব্দ ‘বারাআত’র অর্থও মুক্তি। তাই শবে বরাত অর্থ হবে মুক্তির রাত। প্রতি বছর হিজরি বর্ষের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতটি ‘শবে বরাত’ হিসেবে পালিত হয়।

হাদিস শরিফে রাতটিকে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ বা ‘শাবান মাসের মধ্য দিবসের রজনী’ আখ্যায়িত করা হয়েছে। সঙ্গে এও বলা হয়েছে– এটি এমন একটি রাত, যে রাতে বান্দাকে তার প্রতিপালক গোনাহ থেকে মুক্তি দিয়ে ক্ষমা করে দেন। এখান থেকেই ফার্সিতে এটিকে ‘শবে বরাত’ আখ্যা দেওয়া হয়। মানে মুক্তির রাত।

হাদিসে এসেছে, মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহতাআলা অর্ধশাবানের রাতে (শবে বরাত) মাখলুকাতের দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’ (ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৫, ইবনে মাজাহ: ১৩৯০ ও মুসনাদে আহমদ: ৪/১৭৬)

অনেকে এই হাদিসটিসহ শাবানের রাতের সব হাদিসকে অস্বীকার করেন এবং ‘শবে বরাত’কে বিদআত বলেন। কিন্তু ইমাম মুনযিরী, ইবনে রজব, নূরুদ্দীন হাইসামী, কাসতাল্লানী, যুরকানী এবং অন্যান্য হাদিস বিশারদও এ হাদিসকে সহিহ বলেছেন। শুধু তাই নয়, বর্তমান সময়ের প্রসিদ্ধ শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানীও (রহ.) ‘সিলসিলাতুল আহাদিসিস সাহিহাহ’ গ্রন্থে এই হাদিসের সমর্থনে আরও আটটি হাদিস উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এসব রেওয়ায়াতের মাধ্যমে সমষ্টিগতভাবে এই হাদিসটি নিঃসন্দেহে সহিহ প্রমাণিত হয়। তারপর আলবানী (রহ.) ওইসব লোকের বক্তব্য খণ্ডন করেন, যারা কোনও ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই বলে দেন যে মধ্য শাবানের রজনী তথা শবে বরাতের ব্যাপারে কোনও সহিহ হাদিস নেই। (সিলসিলাতুল আহাদিসিস সাহিহাহ: ৩/১৩৫-১৩৯)

সুতরাং যারা বলেন, ‘শবে বরাত’ বলে কিছু নেই তাদের দাবি সঠিক নয়। কারণ ‘শবে বরাত’ শব্দটি হাদিস শরিফে নেই বটে, কিন্তু ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ হাদিসে উল্লেখ আছে, যা আমাদের কাছে শবে বরাত হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

পক্ষান্তরে অনেকে এটিকে ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রজনী মনে করেন। একইসঙ্গে বলেন, এ রাতেই বান্দার ভাগ্য নির্ধারিত হয়। তারা এর প্রমাণস্বরূপ কোরআনের এই আয়াতটি দেখান। আল্লাহ বলেন, ‘হা-মিম! শপথ! উজ্জ্বল কিতাবের, নিশ্চয়ই আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয়ই আমি ছিলাম সতর্ককারী। যাতে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয়ই আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি।’ (সুরা দুখান, আয়াত: ১-৫)। ইকরিমা (রহ.)-সহ কয়েকজন তাফসিরবিদ এই আয়াতকে ‘শবে বরাতে’র সম্পর্কিত দাবি করলেও কোরআনের অন্য আয়াতগুলো বলে ভিন্ন কথা।

কেননা, আমরা জানি পবিত্র কোরআন রমজান মাসে নাজিল হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতাআলা বলেন, ‘রমজান মাস! যে মাসে কোরআন নাজিল হয়েছে মানবের দিশারীরূপে ও হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শন হিসেবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)। অন্যত্র বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি এটি (কোরআন) নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। আপনি কি জানেন কদরের রাত কী? লাইলাতুল কদর হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম।’ (সুরা আল কদর, আয়াত: ১-৩)

উল্লেখিত দুটি সুরার প্রথমটিতে স্পষ্ট করা হয়েছে যে কোরআন রমজান মাসে অবতীর্ণ হয়েছে। আর দ্বিতীয় সুরায় বলা হয়েছে, কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে লাইলাতুল কদর বা কদরের রাতে। এখানে দুই আয়াতের মধ্যে কোনও বিভেদ নেই। কেননা, প্রথম আয়াতে যে মাসটির (রমজান) কথা উল্লেখ করেছে ওই মাসেরই একটি রাত হলো লাইলাতুল কদর তথা শবে কদর।

আর সুরা দুখানে ‘আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে’। এখানে ‘বরকতময় রাত’কে শবে বরাত হিসেবে মনে করার কোনও যৌক্তিকতা নেই। কারণ, সর্বসম্মতিক্রমে কোরআন রমজান মাসে ও রমজানের কদরের রাতে অবতীর্ণ হয়েছে। তাই সুরা দুখানের আয়াতে যে ‘বরকতময় রাত’ উল্লেখ করা হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে লাইলাতুল কদর। আর ওই রাতেই সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। কোরআনের বিশ্লেষণের মাধ্যমে আমরা এটাই দেখতে পাই।

সুতরাং যারা বলে, ‘শবে বরাত’ নেই তারা যেমন ভুল করেন, ঠিক তেমনি যারা শবে বরাতকে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ও ভাগ্যনির্ধারণী রাত মনে করেন তারাও ভুলের মধ্যেই আছেন। মধ্যমপন্থা হলো- ‘শবে বরাত’ তথা শাবানের মধ্যরজনী একটি বরকতপূর্ণ রজনী, যে রাতে আল্লাহ তার বান্দাদের গোনাহ মাফ করেন। সুতরাং গোনাহর বোঝা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আজকের এই রাতে মহান আল্লাহর দরবারে তাঁর ক্ষমালাভের প্রত্যাশী হওয়াই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

‘শবে বরাত’ কী, এই রাতের কেন এত মর্যাদা?

আপডেট সময় : ১১:৪৯:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আরবি ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ আমাদের এ অঞ্চলে শবে বরাত নামে প্রসিদ্ধ। ‘শবে বরাত’ এই শব্দ-যুগল ফারসি ভাষা থেকে এসেছে। ‘শব’ মানে রাত, ‘বরাত’ মানে মুক্তি। আরবি শব্দ ‘বারাআত’র অর্থও মুক্তি। তাই শবে বরাত অর্থ হবে মুক্তির রাত। প্রতি বছর হিজরি বর্ষের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতটি ‘শবে বরাত’ হিসেবে পালিত হয়।

হাদিস শরিফে রাতটিকে ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ বা ‘শাবান মাসের মধ্য দিবসের রজনী’ আখ্যায়িত করা হয়েছে। সঙ্গে এও বলা হয়েছে– এটি এমন একটি রাত, যে রাতে বান্দাকে তার প্রতিপালক গোনাহ থেকে মুক্তি দিয়ে ক্ষমা করে দেন। এখান থেকেই ফার্সিতে এটিকে ‘শবে বরাত’ আখ্যা দেওয়া হয়। মানে মুক্তির রাত।

হাদিসে এসেছে, মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহতাআলা অর্ধশাবানের রাতে (শবে বরাত) মাখলুকাতের দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’ (ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৫, ইবনে মাজাহ: ১৩৯০ ও মুসনাদে আহমদ: ৪/১৭৬)

অনেকে এই হাদিসটিসহ শাবানের রাতের সব হাদিসকে অস্বীকার করেন এবং ‘শবে বরাত’কে বিদআত বলেন। কিন্তু ইমাম মুনযিরী, ইবনে রজব, নূরুদ্দীন হাইসামী, কাসতাল্লানী, যুরকানী এবং অন্যান্য হাদিস বিশারদও এ হাদিসকে সহিহ বলেছেন। শুধু তাই নয়, বর্তমান সময়ের প্রসিদ্ধ শায়খ নাসিরুদ্দিন আলবানীও (রহ.) ‘সিলসিলাতুল আহাদিসিস সাহিহাহ’ গ্রন্থে এই হাদিসের সমর্থনে আরও আটটি হাদিস উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এসব রেওয়ায়াতের মাধ্যমে সমষ্টিগতভাবে এই হাদিসটি নিঃসন্দেহে সহিহ প্রমাণিত হয়। তারপর আলবানী (রহ.) ওইসব লোকের বক্তব্য খণ্ডন করেন, যারা কোনও ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই বলে দেন যে মধ্য শাবানের রজনী তথা শবে বরাতের ব্যাপারে কোনও সহিহ হাদিস নেই। (সিলসিলাতুল আহাদিসিস সাহিহাহ: ৩/১৩৫-১৩৯)

সুতরাং যারা বলেন, ‘শবে বরাত’ বলে কিছু নেই তাদের দাবি সঠিক নয়। কারণ ‘শবে বরাত’ শব্দটি হাদিস শরিফে নেই বটে, কিন্তু ‘লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান’ হাদিসে উল্লেখ আছে, যা আমাদের কাছে শবে বরাত হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

পক্ষান্তরে অনেকে এটিকে ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রজনী মনে করেন। একইসঙ্গে বলেন, এ রাতেই বান্দার ভাগ্য নির্ধারিত হয়। তারা এর প্রমাণস্বরূপ কোরআনের এই আয়াতটি দেখান। আল্লাহ বলেন, ‘হা-মিম! শপথ! উজ্জ্বল কিতাবের, নিশ্চয়ই আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয়ই আমি ছিলাম সতর্ককারী। যাতে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয়ই আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি।’ (সুরা দুখান, আয়াত: ১-৫)। ইকরিমা (রহ.)-সহ কয়েকজন তাফসিরবিদ এই আয়াতকে ‘শবে বরাতে’র সম্পর্কিত দাবি করলেও কোরআনের অন্য আয়াতগুলো বলে ভিন্ন কথা।

কেননা, আমরা জানি পবিত্র কোরআন রমজান মাসে নাজিল হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতাআলা বলেন, ‘রমজান মাস! যে মাসে কোরআন নাজিল হয়েছে মানবের দিশারীরূপে ও হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শন হিসেবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)। অন্যত্র বলেন, ‘নিশ্চয়ই আমি এটি (কোরআন) নাজিল করেছি লাইলাতুল কদরে। আপনি কি জানেন কদরের রাত কী? লাইলাতুল কদর হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম।’ (সুরা আল কদর, আয়াত: ১-৩)

উল্লেখিত দুটি সুরার প্রথমটিতে স্পষ্ট করা হয়েছে যে কোরআন রমজান মাসে অবতীর্ণ হয়েছে। আর দ্বিতীয় সুরায় বলা হয়েছে, কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে লাইলাতুল কদর বা কদরের রাতে। এখানে দুই আয়াতের মধ্যে কোনও বিভেদ নেই। কেননা, প্রথম আয়াতে যে মাসটির (রমজান) কথা উল্লেখ করেছে ওই মাসেরই একটি রাত হলো লাইলাতুল কদর তথা শবে কদর।

আর সুরা দুখানে ‘আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে’। এখানে ‘বরকতময় রাত’কে শবে বরাত হিসেবে মনে করার কোনও যৌক্তিকতা নেই। কারণ, সর্বসম্মতিক্রমে কোরআন রমজান মাসে ও রমজানের কদরের রাতে অবতীর্ণ হয়েছে। তাই সুরা দুখানের আয়াতে যে ‘বরকতময় রাত’ উল্লেখ করা হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে লাইলাতুল কদর। আর ওই রাতেই সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। কোরআনের বিশ্লেষণের মাধ্যমে আমরা এটাই দেখতে পাই।

সুতরাং যারা বলে, ‘শবে বরাত’ নেই তারা যেমন ভুল করেন, ঠিক তেমনি যারা শবে বরাতকে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ও ভাগ্যনির্ধারণী রাত মনে করেন তারাও ভুলের মধ্যেই আছেন। মধ্যমপন্থা হলো- ‘শবে বরাত’ তথা শাবানের মধ্যরজনী একটি বরকতপূর্ণ রজনী, যে রাতে আল্লাহ তার বান্দাদের গোনাহ মাফ করেন। সুতরাং গোনাহর বোঝা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আজকের এই রাতে মহান আল্লাহর দরবারে তাঁর ক্ষমালাভের প্রত্যাশী হওয়াই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।