ঢাকা ১২:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
ড. ইউনূসকে সভাপতি করে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ গঠন আপা আপা বলা তানভীর নিজেই আ.লীগের হাতে নির্যাতিত, আছেন রাজনৈতিক আশ্রয়ে ভল্টের টাকায় অবৈধ বাণিজ্য বিডিআর বিদ্রোহের বিচার পুনরায় করা সম্ভব? সংলাপ, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে যে প্রক্রিয়ায় এগোতে চায় সরকার এবার সরকারের কাছে ৬৩ কোটি ডলার সুদ চাইল রাশিয়া এফবিসিসিআই সভাপতির পদত‍্যাগ, প্রশাসক নিয়োগ তারল্য বাড়াতে ‘বিশেষ ধার’ আগামী সপ্তাহে ৭ হাজার কোটিতে নির্মিত তিন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ গার্মেন্টসে থামছে না অস্থিরতা চাকরি গেল আরো দুই লেফটেন্যান্ট জেনারেলের ওষুধের বাজারে উত্তাপ ব্যাংকিং খাত সংস্কারে ৬ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন সড়ক পরিবহনে আসছে ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ গরুর দিয়ে পাট নিতে চায় পাকিস্তানি সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠন, নেতৃত্বে যারা সংবিধান সংস্কারের উদ্যোগ, কমিশনের দায়িত্বে শাহদীন মালিক ছয় বিশিষ্ট নাগরিককের নেতৃত্বে সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টার শিগগিরই মেট্রোরেলের বন্ধ থাকা স্টেশন চালু হচ্ছে বিদ্যুতের পাওনা চেয়ে ড. ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন গৌতম আদানি

শিশুদের রক্ত আমাশয় হলে করণীয়?

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৯:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৫০২৫ বার পড়া হয়েছে
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শিশুর রক্ত আমাশয় কেন হয়?

শিশু যখন সদ্য হাঁটা শেখে, হুটহাট করে মেঝেতে পড়া নানারকম জিনিসপত্র মুখে দিয়ে দেয় তখন অনেকরকম রোগব্যাধির সংক্রমণ হয়। এরমধ্যে অন্যতম হলো পেটের ওসুখ। অনেক সময় শিশু কোনো কারণ ছাড়াই ঘ্যানঘ্যান করে, পরে দেখা যায় মলের সঙ্গে হঠাৎ রক্ত বের হচ্ছে। রক্ত-আমাশয় বলা হয় এই উপসর্গকে। তবে এটি হলে ভয়ের কোনো কারণ নেই।

আমাশয় হলো অন্ত্রের ইনফেকশন বা সংক্রমণ। ছবি: সংগৃহীত

আমাশয় হলো অন্ত্রের ইনফেকশন বা সংক্রমণ। 

আমাশয় হলো অন্ত্রের ইনফেকশন বা সংক্রমণ। মূলত জীবাণুঘটিত রোগ। আমাশয়ের কারণে প্রাথমিকভাবে খুব কষ্ট হলেও এতে প্রাণহানীর কোনো আশঙ্কা থাকে না। তবে আমাশয় দীর্ঘদিন নিরাময় না হলে প্রাণহানীর শঙ্কাও থাকে।

কিছু লক্ষণ দেখে বোঝা যেতে পারে-
১. শিশুর মারাত্মক ডায়ারিয়া হতে পারে।
২. পেটে, বিশেষ করে নাভির চারপাশের এলাকায় প্রচণ্ড ব্যথা হবে।
৩. অনেকের ক্ষেত্রে সংক্রমণ বাড়াবাড়ি হলে জ্বরও হতে পারে।
৪. অনেক আমাশয় এমন সংক্রমণের সৃষ্টি করে, সেখান থেকে রক্তপাতও হয়। ফলে মলের সঙ্গে রক্ত বের হতে থাকে।
৫. তবে, আমাশয়ের অন্যতম লক্ষণ বারবার পেটে ব্যথা হয় এবং বাথরুম যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।
৬. কিন্তু পেট পুরোপুরি পরিষ্কার হয় না।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাশয় হওয়ার পেছনে কিছু কারণ থাকে-

১. সংক্রমিত খাবার থেকে হতে পারে।
২. সংক্রমিত পানি বা অন্যান্য পানীয় থেকে হয়।
৩. নোংরায় হাত দিয়ে সেই হাত ভালো করে না ধুলে আমাশয় হতে পারে।
৪. বাচ্চা সাঁতার কাটার সময় পুলের বা পুকুরের সংক্রমিত পানি পেটে গেলে।
৫. সংক্রমিত ব্যক্তির স্পর্শে গেলেও হতে পারে।
চিকিৎসকের মতে, আমাশয় সংক্রমণের পেছনে পানির ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি।
আমাশয় সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়। তবে আমাশয় হলে খাওয়ার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। পানিশূন্যতা পূরণ করতে প্রচুর পরিমাণ তরল খাবার, যেমন ঠান্ডা পানি, চিনির শরবত, ডাবের পানি, ফলের রস ইত্যাদি খেতে হবে।

উপসর্গ

ডায়রিয়ার সঙ্গে রক্তপাত, পেটব্যথা, ক্লান্তি, জ্বর, খাবারে অরুচি, পেট ফাঁপা, ওজন হ্রাস, ইত্যাদি এ সংক্রমণের উপসর্গ। অ্যামিবা অন্ত্রের দেয়ালে আলসার বা ক্ষত তৈরির পাশাপাশি রক্তনালীর মাধ্যমে রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করতে পারে এবং শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোকে সংক্রমণ করে। সাধারণত লিভার সংক্রমণ বেশি হয়। তবে মস্তিষ্ক, ফুসফুস, কিডনি, প্লীহাতেও যেতে পারে এবং আক্রান্ত অঙ্গে এমিবিক ফোঁড়া হতে পারে। যা দ্রুত চিকিৎসা করা না হলে মারাত্মক জটিলতার আশঙ্কা থাকে।

রোগ নির্ণয়

রোগের লক্ষণ এবং রোগের সঠিক ইতিহাস শুনেই মূলত এই রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। মল ও রক্ত ​​পরীক্ষা ছাড়াও আল্ট্রাসাউন্ড ও সিটি স্ক্যানের মতো পরীক্ষার মাধ্যমে এন্টামোইবা হিস্টোলাইটিকা সংক্রমণ নির্ণয় করা যেতে পারে।
মলে প্রধানত সিস্ট এবং কখনো কখনো ট্রফোজয়েট (ফ্রেশ মল) মাইক্রোস্কোপে দেখেও আমরা রোগ নির্ণয় করতে পারি। তাছাড়া অ্যান্টিজেন-অ্যান্টিবডি নির্ণয় এবং পিসিআর করেও এই জীবাণু চিহ্নিত করা সম্ভব।

প্রতিরোধ

এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকা প্রতিরোধের জন্য স্যানিটেশন ব্যাবস্থার উন্নতি করতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। খাবার খাওয়ার আগে এবং টয়লেট ব্যবহারের পরে অবশ্যই সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে। পানি ফুটিয়ে খেতে হবে। মছি বা তেলাপোকা যেন খাবার দূষিত করতে না পারে, সে খেয়াল রাখতে হবে। কাঁচা বা সবুজ সালাদ-ফলমূল ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে খেতে হবে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়মিত রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের শিক্ষা দিতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

শিশুদের রক্ত আমাশয় হলে করণীয়?

আপডেট সময় : ০৭:৫৯:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিশুর রক্ত আমাশয় কেন হয়?

শিশু যখন সদ্য হাঁটা শেখে, হুটহাট করে মেঝেতে পড়া নানারকম জিনিসপত্র মুখে দিয়ে দেয় তখন অনেকরকম রোগব্যাধির সংক্রমণ হয়। এরমধ্যে অন্যতম হলো পেটের ওসুখ। অনেক সময় শিশু কোনো কারণ ছাড়াই ঘ্যানঘ্যান করে, পরে দেখা যায় মলের সঙ্গে হঠাৎ রক্ত বের হচ্ছে। রক্ত-আমাশয় বলা হয় এই উপসর্গকে। তবে এটি হলে ভয়ের কোনো কারণ নেই।

আমাশয় হলো অন্ত্রের ইনফেকশন বা সংক্রমণ। ছবি: সংগৃহীত

আমাশয় হলো অন্ত্রের ইনফেকশন বা সংক্রমণ। 

আমাশয় হলো অন্ত্রের ইনফেকশন বা সংক্রমণ। মূলত জীবাণুঘটিত রোগ। আমাশয়ের কারণে প্রাথমিকভাবে খুব কষ্ট হলেও এতে প্রাণহানীর কোনো আশঙ্কা থাকে না। তবে আমাশয় দীর্ঘদিন নিরাময় না হলে প্রাণহানীর শঙ্কাও থাকে।

কিছু লক্ষণ দেখে বোঝা যেতে পারে-
১. শিশুর মারাত্মক ডায়ারিয়া হতে পারে।
২. পেটে, বিশেষ করে নাভির চারপাশের এলাকায় প্রচণ্ড ব্যথা হবে।
৩. অনেকের ক্ষেত্রে সংক্রমণ বাড়াবাড়ি হলে জ্বরও হতে পারে।
৪. অনেক আমাশয় এমন সংক্রমণের সৃষ্টি করে, সেখান থেকে রক্তপাতও হয়। ফলে মলের সঙ্গে রক্ত বের হতে থাকে।
৫. তবে, আমাশয়ের অন্যতম লক্ষণ বারবার পেটে ব্যথা হয় এবং বাথরুম যাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।
৬. কিন্তু পেট পুরোপুরি পরিষ্কার হয় না।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাশয় হওয়ার পেছনে কিছু কারণ থাকে-

১. সংক্রমিত খাবার থেকে হতে পারে।
২. সংক্রমিত পানি বা অন্যান্য পানীয় থেকে হয়।
৩. নোংরায় হাত দিয়ে সেই হাত ভালো করে না ধুলে আমাশয় হতে পারে।
৪. বাচ্চা সাঁতার কাটার সময় পুলের বা পুকুরের সংক্রমিত পানি পেটে গেলে।
৫. সংক্রমিত ব্যক্তির স্পর্শে গেলেও হতে পারে।
চিকিৎসকের মতে, আমাশয় সংক্রমণের পেছনে পানির ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি।
আমাশয় সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়। তবে আমাশয় হলে খাওয়ার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। পানিশূন্যতা পূরণ করতে প্রচুর পরিমাণ তরল খাবার, যেমন ঠান্ডা পানি, চিনির শরবত, ডাবের পানি, ফলের রস ইত্যাদি খেতে হবে।

উপসর্গ

ডায়রিয়ার সঙ্গে রক্তপাত, পেটব্যথা, ক্লান্তি, জ্বর, খাবারে অরুচি, পেট ফাঁপা, ওজন হ্রাস, ইত্যাদি এ সংক্রমণের উপসর্গ। অ্যামিবা অন্ত্রের দেয়ালে আলসার বা ক্ষত তৈরির পাশাপাশি রক্তনালীর মাধ্যমে রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করতে পারে এবং শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোকে সংক্রমণ করে। সাধারণত লিভার সংক্রমণ বেশি হয়। তবে মস্তিষ্ক, ফুসফুস, কিডনি, প্লীহাতেও যেতে পারে এবং আক্রান্ত অঙ্গে এমিবিক ফোঁড়া হতে পারে। যা দ্রুত চিকিৎসা করা না হলে মারাত্মক জটিলতার আশঙ্কা থাকে।

রোগ নির্ণয়

রোগের লক্ষণ এবং রোগের সঠিক ইতিহাস শুনেই মূলত এই রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। মল ও রক্ত ​​পরীক্ষা ছাড়াও আল্ট্রাসাউন্ড ও সিটি স্ক্যানের মতো পরীক্ষার মাধ্যমে এন্টামোইবা হিস্টোলাইটিকা সংক্রমণ নির্ণয় করা যেতে পারে।
মলে প্রধানত সিস্ট এবং কখনো কখনো ট্রফোজয়েট (ফ্রেশ মল) মাইক্রোস্কোপে দেখেও আমরা রোগ নির্ণয় করতে পারি। তাছাড়া অ্যান্টিজেন-অ্যান্টিবডি নির্ণয় এবং পিসিআর করেও এই জীবাণু চিহ্নিত করা সম্ভব।

প্রতিরোধ

এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকা প্রতিরোধের জন্য স্যানিটেশন ব্যাবস্থার উন্নতি করতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। খাবার খাওয়ার আগে এবং টয়লেট ব্যবহারের পরে অবশ্যই সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে। পানি ফুটিয়ে খেতে হবে। মছি বা তেলাপোকা যেন খাবার দূষিত করতে না পারে, সে খেয়াল রাখতে হবে। কাঁচা বা সবুজ সালাদ-ফলমূল ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে খেতে হবে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়মিত রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের শিক্ষা দিতে হবে।