সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাঙ্গনে ফিরতে শিক্ষা উপদেষ্টার অনুরোধ
- আপডেট সময় : ০৫:৩৮:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪ ৪৬ বার পড়া হয়েছে
রাজধানীর ঢাকার সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের রাস্তায় জনদুর্ভোগ তৈরি না করে ধৈর্য ধরার ও নিজ নিজ শিক্ষাঙ্গনে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এই অনুরোধ জানান তিনি
বিবৃতিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র এবং বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন নানা দাবি নিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছে। একটি সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খল অবস্থা পাওয়া শিক্ষা খাতে শৃঙ্খলা ও স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। এসব দাবিদাওয়ার মধ্যে ন্যায্য-অন্যায্য এবং কিছু ক্ষেত্রে পরস্পরবিরোধী দাবিও আছে। একটি বৈষম্যবিরোধী দাবি মানলে অন্যান্য ক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি হতে পারে। শিক্ষা খাতের যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের দাবি পূরণের সুদূরপ্রসারী প্রভাব থাকে এবং এর জন্য তাৎক্ষণিক সমাধান দেয়া কঠিন। অথচ সব কটি দাবির পেছনের আন্দোলনকারীরা তাদের দাবিকেই সবচেয়ে অগ্রাধিকার হিসেবে দেখছেন এবং দাবিগুলোকে শুধু রাস্তায় আন্দোলন করে তাৎক্ষণিক সমাধানযোগ্য মনে করছেন। এতে একদিকে যেমন রাস্তা অবরোধের ফলে অপরিসীম জনদুর্ভোগ হচ্ছে, সরকারও দাবিগুলো যথাযথ বিবেচনার সুযোগ পাচ্ছে না।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি বিবেচনার জন্য সরকার ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে, যা সাত সপ্তাহের মধ্যে দ্রুত একটি প্রতিবেদন তৈরি করবে। সমস্যাটির শুরু হয়েছে কয়েক বছর আগে ঢাকার সাতটি কলেজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতা থেকে বের করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত করার একটি অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে। এর ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাত কলেজের- উভয় পক্ষেরই সমস্যা তৈরি হয়েছে। যে কারণে ওই সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নানা অসুবিধা ও বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, সমস্যাগুলো জটিল এবং এগুলোর সুষ্ঠু সমাধান কী হতে পারে, তা বিবেচনায় ন্যূনতম কিছু সময়ের প্রয়োজন। এরই মধ্যে একটি কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রতিষ্ঠানকে এককভাবে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি নিয়ে রাস্তায় আন্দোলন করেছেন। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনাও হয়েছে।
বিবৃতিতে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘দেশের সমস্যাসংকুল শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি একজন আজীবন শিক্ষক হিসেবে অবশ্যই ব্যক্তিগতভাবে আমার সব সহানুভূতি আছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, রাস্তায় শিক্ষার্থীদের অবরোধ, আন্দোলন ও আলটিমেটামের মাধ্যমে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দেওয়ার কোনো নজির কোথাও নেই। এই শিক্ষার্থীদের রাস্তায় জনদুর্ভোগ তৈরি না করে ধৈর্য ধরার ও নিজ নিজ শিক্ষাঙ্গনে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) থেকে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে অবস্থান নিয়েছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। দ্বিতীয় দিনের মতো বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। বেলা চাটার দিকেও অবরোধ-বিক্ষোভ চলছিল। বিক্ষোভ-অবরোধের কারণে মিরপুর সড়কসহ সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় ঘিরে আশপাশের সড়কগুলোয় দীর্ঘ যানজট দেখা দিয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন বহু মানুষ।