স্ট্রোকের যত কারণ : ১. উচ্চরক্তচাপ, ২. ডায়াবেটিস, ৩. উচ্চ কোলেস্টেরল, ৪. হৃদরোগ (করোনারি হৃদরোগ, ধমনি ফাইব্রিলেশন, হার্টের ভালভ রোগ, ক্যারোটিড ধমনি।), ৫. অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ, ৬. ধূমপান, ৭. বেশি ওজন, ৮. অপুষ্টি, ৯. কায়িক পরিশ্রম না করা, ১০. হেমোরেজিক স্ট্রোকে পূর্ববর্তী স্ট্রোক বা টিআইএ, ১১. কোয়াগুলোপ্যাথি, ১২. প্রদাহ (দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ মস্তিষ্কের কোষের ক্ষতির দিকে পরিচালিত করে), ১৩. ধমনি বিকৃতি, ১৪. অ্যানিউরিজম, ১৫. স্থূলতা, ১৬. প্রি-একলাম্পসিয়া, ১৭. ভাইরাল সংক্রমণ : রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, লুপাস, ১৮. উদ্বেগ, বিষণœতা এবং মানসিক চাপ।
লক্ষণ বা উপসর্গ : ১. শরীরের একদিক দুর্বল বা অবশ হয়ে যায়। ২. মুখের যে কোনো একপাশ বেঁকে যায়। ৩. কথা অস্পষ্ট হয়ে যায় বা জড়িয়ে যায়। ৪. চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়। ৫. তীব্র মাথাব্যথা অনুভূত হয়। ৬. অজ্ঞান হয়ে যায়।
স্ট্রোক-পরবর্তী জটিলতা: ১. পক্ষাঘাত বা চলাফেরা করতে অসুবিধা। ২. পেশির ও অস্থিসন্ধির কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলা বা পঙ্গুত্ব। ৩. কথা বলতে বা গিলতে অসুবিধা। ৪. অবশ অংশে ক্ষত বা বেড সোর হওয়া। ৫. শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা। ৬. আচার-আচরণে অসুবিধা।
জটিলতার চিকিৎসা : স্ট্রোক-পরবর্তী সময়ের চিকিৎসা কী হবে এটা নিয়েও রয়েছে নানা জটিলতা। আমাদের দেশের অনেক সাধারণ মানুষই জানেন না স্ট্রোকে যদি কেউ প্যারালাইজড হয়ে পড়ে তবে তাকে কী চিকিৎসা দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে বর্তমানে অন্যতম কার্যকর একটি পদ্ধতি ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন। রোগী যদি খুব দ্রুত ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন চিকিৎসার আওতাধীন হয়, তবে প্রায় ৯৫ ভাগই আগের জীবনে ফিরে আসতে পারে।
স্ট্রোকের পর রোগীর মাংসপেশি অবশ বা শক্ত হয়ে যায়। এসব রোগীর শারীরিক কার্যক্ষমতা বাড়াতে ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন চিকিৎসার গুরুত্ব অপরিসীম। স্ট্রোকের কারণে অধিকাংশ রোগীর শরীরের যে কোনো একপাশ অবশ বা প্যারালাইজড হয়ে যায়। এ সময় রোগী তার স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে না। তাই যত দ্রুত ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা শুরু করা যাবে, রোগী তত তাড়াতাড়ি সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে। তাই স্ট্রোক-পরবর্তী চিকিৎসা নিয়ে অবহেলা না করে আমাদের যথেষ্ট সচেতন ও যত্নবান হতে হবে। কথায় আছে প্রতিকার নয় প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক (আইআইএইচএস) ও কনসালটেন্ট, ডিপিআরসি, শ্যামলী, ঢাকা।