ঢাকা ১১:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
ড. ইউনূসকে সভাপতি করে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ গঠন আপা আপা বলা তানভীর নিজেই আ.লীগের হাতে নির্যাতিত, আছেন রাজনৈতিক আশ্রয়ে ভল্টের টাকায় অবৈধ বাণিজ্য বিডিআর বিদ্রোহের বিচার পুনরায় করা সম্ভব? সংলাপ, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে যে প্রক্রিয়ায় এগোতে চায় সরকার এবার সরকারের কাছে ৬৩ কোটি ডলার সুদ চাইল রাশিয়া এফবিসিসিআই সভাপতির পদত‍্যাগ, প্রশাসক নিয়োগ তারল্য বাড়াতে ‘বিশেষ ধার’ আগামী সপ্তাহে ৭ হাজার কোটিতে নির্মিত তিন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ গার্মেন্টসে থামছে না অস্থিরতা চাকরি গেল আরো দুই লেফটেন্যান্ট জেনারেলের ওষুধের বাজারে উত্তাপ ব্যাংকিং খাত সংস্কারে ৬ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন সড়ক পরিবহনে আসছে ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ গরুর দিয়ে পাট নিতে চায় পাকিস্তানি সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠন, নেতৃত্বে যারা সংবিধান সংস্কারের উদ্যোগ, কমিশনের দায়িত্বে শাহদীন মালিক ছয় বিশিষ্ট নাগরিককের নেতৃত্বে সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টার শিগগিরই মেট্রোরেলের বন্ধ থাকা স্টেশন চালু হচ্ছে বিদ্যুতের পাওনা চেয়ে ড. ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন গৌতম আদানি

‘হাসিনার ইচ্ছায়’ ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আরও চার মামলার প্রস্তুতি ছিল দুদকে

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৪:৫৪:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৫০৫৫ বার পড়া হয়েছে
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের লভ্যাংশের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগ সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতায় দুদকে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আরও চারটি মামলা করার প্রস্তুতি চলছিল।

এসব মামলায় প্রফেসর ইউনূসের পরিবারের সদস্যদের জড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রেক্ষাপট বদলে যাওয়ায় ওইসব মামলার ভবিষ্যৎ শেষ হয়ে যায়। মানবজমিনের বরাতে এসব তথ্য জানা যায়।

দুদক সূত্র জানায়, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে করা আগের মামলাটিও আওয়ামী লীগ সরকারের প্রেসক্রিপশনে করেছিল দুদক। মূলত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত ইচ্ছা থেকেই মামলা করা হয় তার বিরুদ্ধে। এমনকি অতিদ্রুত অভিযোগপত্র দাখিলের নির্দেশও দেওয়া হতো বলে জানা গেছে।

সূত্র আরও দাবি করেছে, একটি মামলা দিয়ে ইউনূসকে আটকানো যাচ্ছিল না বলে আরও চারটি মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। যেখানে ড. ইউনূসের পরিবারের সদস্যদের আসামি করার পরিকল্পনা করা হয়। আর এই কাজে সক্রিয় ছিলেন দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ও তার দুই কমিশনার।

দুদকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, চলতি বছরের জুন মাসে গ্রামীণ ব্যাংকের অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে একটি অভিযোগ জমা পড়ে দুদকে। সেই অভিযোগটি যাচাই-বাছাই শেষে খুব দ্রুত অনুসন্ধানের জন্য আমলে নেয় কমিশন। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে যে অনুসন্ধান দলটি আগের মামলার কাজ করেছিল সেই দলকেই অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, একটি অভিযোগের আদলে একাধিক মামলার ছক করা হয়েছিল যেখানে ড. ইউনূসের পুরো পরিবারের সদস্যদের আসামি করার পরিকল্পনা করা হয়। গত ২৬শে জুন গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর মোহাম্মদ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগটি দায়েরের প্রথম সপ্তাহেই অনুসন্ধানের জন্য অনুমোদন দেয় দুদক। সংস্থাটির এক কর্মকর্তা বলেন, আসলে অভিযোগটি গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে করা হলেও মূলত তার নেপথ্যে কাজ করে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। শেখ হাসিনার নির্দেশেই এ অভিযোগ তৃতীয়পক্ষকে দিয়ে করানো হয়।

দুদকের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার ৭ থেকে ৮ জন কর্মকর্তা প্রতিদিন দুদকে আসতেন। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার তারাই সব সাজিয়ে দেন। এমনকি একজন আইনজীবীও সঙ্গে নিয়ে আসতেন যিনি আইন সংক্রান্ত নানা পরামর্শ দিতেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের নির্দেশনায় দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ও দুই কমিশনার মো. জহুরুল হক (তদন্ত) এবং মোসা. আছিয়া খাতুন (অনুসন্ধান) ব্যতিব্যস্ত ছিলেন। যখন যে বিষয়ে ওহী আসতো তা নিয়ে কাজ করার নির্দেশনা দিতেন কমিশনের কর্মকর্তাদের। ড. ইউনূসের মামলার বেলাতেও একই অবস্থা হয়েছিল বলে দুদকের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

দুদকের মহাপরিচালক পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, পুরোটা ঠিক নয়। অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন ঘোলা পানিতে অনেকেই মাছ শিকার করতে চাইবে। এরকম কিছু ঘটেনি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করতে চাইলে মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অন্যদিকে কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হককে দুই বার কল করা হয়। কিন্তু তিনি তা রিসিভ করেননি। দুদকের সচিব খোরশেদা ইয়াসমীনকে কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

‘হাসিনার ইচ্ছায়’ ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আরও চার মামলার প্রস্তুতি ছিল দুদকে

আপডেট সময় : ০৪:৫৪:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের লভ্যাংশের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগ সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতায় দুদকে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আরও চারটি মামলা করার প্রস্তুতি চলছিল।

এসব মামলায় প্রফেসর ইউনূসের পরিবারের সদস্যদের জড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রেক্ষাপট বদলে যাওয়ায় ওইসব মামলার ভবিষ্যৎ শেষ হয়ে যায়। মানবজমিনের বরাতে এসব তথ্য জানা যায়।

দুদক সূত্র জানায়, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে করা আগের মামলাটিও আওয়ামী লীগ সরকারের প্রেসক্রিপশনে করেছিল দুদক। মূলত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত ইচ্ছা থেকেই মামলা করা হয় তার বিরুদ্ধে। এমনকি অতিদ্রুত অভিযোগপত্র দাখিলের নির্দেশও দেওয়া হতো বলে জানা গেছে।

সূত্র আরও দাবি করেছে, একটি মামলা দিয়ে ইউনূসকে আটকানো যাচ্ছিল না বলে আরও চারটি মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। যেখানে ড. ইউনূসের পরিবারের সদস্যদের আসামি করার পরিকল্পনা করা হয়। আর এই কাজে সক্রিয় ছিলেন দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ও তার দুই কমিশনার।

দুদকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, চলতি বছরের জুন মাসে গ্রামীণ ব্যাংকের অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে একটি অভিযোগ জমা পড়ে দুদকে। সেই অভিযোগটি যাচাই-বাছাই শেষে খুব দ্রুত অনুসন্ধানের জন্য আমলে নেয় কমিশন। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে যে অনুসন্ধান দলটি আগের মামলার কাজ করেছিল সেই দলকেই অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, একটি অভিযোগের আদলে একাধিক মামলার ছক করা হয়েছিল যেখানে ড. ইউনূসের পুরো পরিবারের সদস্যদের আসামি করার পরিকল্পনা করা হয়। গত ২৬শে জুন গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নূর মোহাম্মদ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগটি দায়েরের প্রথম সপ্তাহেই অনুসন্ধানের জন্য অনুমোদন দেয় দুদক। সংস্থাটির এক কর্মকর্তা বলেন, আসলে অভিযোগটি গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে করা হলেও মূলত তার নেপথ্যে কাজ করে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। শেখ হাসিনার নির্দেশেই এ অভিযোগ তৃতীয়পক্ষকে দিয়ে করানো হয়।

দুদকের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার ৭ থেকে ৮ জন কর্মকর্তা প্রতিদিন দুদকে আসতেন। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার তারাই সব সাজিয়ে দেন। এমনকি একজন আইনজীবীও সঙ্গে নিয়ে আসতেন যিনি আইন সংক্রান্ত নানা পরামর্শ দিতেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের নির্দেশনায় দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ও দুই কমিশনার মো. জহুরুল হক (তদন্ত) এবং মোসা. আছিয়া খাতুন (অনুসন্ধান) ব্যতিব্যস্ত ছিলেন। যখন যে বিষয়ে ওহী আসতো তা নিয়ে কাজ করার নির্দেশনা দিতেন কমিশনের কর্মকর্তাদের। ড. ইউনূসের মামলার বেলাতেও একই অবস্থা হয়েছিল বলে দুদকের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

দুদকের মহাপরিচালক পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, পুরোটা ঠিক নয়। অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন ঘোলা পানিতে অনেকেই মাছ শিকার করতে চাইবে। এরকম কিছু ঘটেনি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করতে চাইলে মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অন্যদিকে কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হককে দুই বার কল করা হয়। কিন্তু তিনি তা রিসিভ করেননি। দুদকের সচিব খোরশেদা ইয়াসমীনকে কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।