কেন্দুয়ায় কৃষি কর্মকর্তার বিল বিতর্ক:কমিশনের দাবি বনাম ডকুমেন্ট ঘাটতি
- আপডেট সময় : ০৫:৪৯:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 60
শাহ আলী তৌফিক রিপন
কেন্দুয়া, নেত্রকোনা:
সম্প্রতি কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের একটি বিল নিয়ে গুরুতর বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হুমায়ুন দিলদার অভিযোগ করেছেন যে, উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে বিল ছাড় করতে ৫% কমিশন দিতে হয়। এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় প্রশাসনসহ জনমনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।
হুমায়ুন দিলদার দাবি করেন, “আমার আগে যারা এই পদে ছিলেন, তারা হয়তো ৫% কমিশন দিয়ে বিল ছাড় করিয়েছেন। কিন্তু আমি সেই অর্থ দিতে অস্বীকার করায়, আমার বিল আটকে দেওয়া হয়।” তার আরও অভিযোগ, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হস্তক্ষেপের পর তার বিল আংশিক ছাড়া হয়। কর্মকর্তার এই বক্তব্যে সরকারি দপ্তরের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে এসেছে।
তবে, এই প্রসঙ্গে কেন্দুয়ায় পূর্ববর্তী কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা জানান, তিনি কখনো এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হননি। তার বক্তব্য, “আমার সময়ে কোনো ঘুষ বা কমিশনের দাবি কখনো করা হয়নি।” তার এই বক্তব্য বর্তমান কৃষি কর্মকর্তার অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ করে এবং পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে।
অন্যদিকে, উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “কৃষি কর্মকর্তার বিলে সাপোর্টিং ডকুমেন্টের ঘাটতি ছিল, সে কারণেই বিল ফেরত দেওয়া হয়। এখানে কোনো অনৈতিক কমিশনের প্রশ্নই আসে না।” তিনি দাবি করেন, নিয়ম মেনেই বিল যাচাই করা হয় এবং সেটি পাস করতে নির্দিষ্ট ডকুমেন্টের প্রয়োজন রয়েছে।
ঘটনার পরপরই বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মী কৃষি কর্মকর্তার কাছে তার সাবমিট করা বিলের পরিমাণ জানতে চাইলে, তিনি অফিসের এক অনুপস্থিত স্টাফের উল্লেখ করে বিষয়টি এড়িয়ে যান। এতে করে বিলগুলো নিয়ে দুর্নীতির সন্দেহ আরও বেড়ে যায়। বিভিন্ন মহল থেকে এ বিষয়ে স্বচ্ছ তদন্তের দাবি উঠে আসছে।
এই ঘটনার ফলে জনমনে সন্দেহের মাত্রা বেড়েছে। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, যদি সত্যিই কমিশন নেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটে থাকে, তবে সেটি খতিয়ে দেখা উচিত। অন্যদিকে, যদি কৃষি কর্মকর্তার অভিযোগ মিথ্যা হয়, তবে তার বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। কেন্দুয়া উপজেলায় এ ধরনের অভিযোগ সরকারী কর্মকর্তাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রশ্নে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। দুদকের হস্তক্ষেপে বিলের আংশিক ছাড় করা হলেও পুরো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এখন সময়ের দাবি। জনমনে সংশয়ের মেঘ সরিয়ে প্রশাসনের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া এবং সব পক্ষের বক্তব্যকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা।