কেন্দুয়ার জল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ
- আপডেট সময় : ১২:৩৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪
- / 51
নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার জল্লী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে চরম অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের গভার্নিং বডির সভাপতি পদে থেকে তার পুত্র, বোন এবং চাচাতো ভাইকে নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ঘাটতি রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগে নাটকীয়তার আশ্রয় নেয়া হয়। তৎকালীন প্রধান শিক্ষক বশির উদ্দিন পদত্যাগের নাটক সাজিয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর ২০০৩ তারিখে ম্যানেজিং কমিটির একটি সভায় পদটি শূন্য দেখানো হয়। এরপর ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ তারিখে মোহাম্মদ আব্দুল হককে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, উক্ত ম্যানেজিং কমিটির সভায় সভাপতির বাইরে অন্য সকলের স্বাক্ষর জাল করা হয়েছিল।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনিবুর রহমান বাচ্ছু, যিনি প্রধান শিক্ষকের আপন চাচাতো ভাই, তার ক্ষেত্রেও নিয়োগ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৫ তারিখের ম্যানেজিং কমিটির মিটিংয়ে তিনি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে স্বাক্ষর করেন, অথচ তিনি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ২০ ফেব্রুয়ারি ২০০৫ তারিখে। ২০০৭ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে অবস্থান করলেও তিনি ছয় বছর পর স্বপদে বহাল হন।
অন্যদিকে, প্রধান শিক্ষকের সহোদর ভাই আবুল খায়ের, যিনি বি.কম পাস, তাকে জনবল কাঠামোর পরিপন্থীভাবে ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন দাতা সদস্য নূর মোহাম্মদ স্বপন জানান, “নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করেছি।”
এমন অনিয়মের ঘটনায় বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। অভিভাবকরাও শিক্ষার পরিবেশ এবং বিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
জল্লী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের বিষয়টি তদন্তের দাবি রাখে। প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া। পাশাপাশি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কড়াকড়ি আরোপ করা জরুরি।