ঢাকা ০৩:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মঈনুদ্দিনের পরিচয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যবের পরিচয় শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে সব প্রমাণ সরকারের কাছে আছে জেলায় জেলায় সরকারি অর্থে ‘আওয়ামী পল্লি’ উপদেষ্টা পরিষদে যুক্ত হচ্ছেন সি আর আবরার উপদেষ্টা হচ্ছেন ড. আমিনুল ইসলাম পদত্যাগ করলেন নাহিদ ইসলাম বাবরের জীবন থেকে ১৭ বছর কেড়ে নেয় ‘প্রথম আলো’ সোমবার থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চাপমুক্ত প্রশাসন এবং ড. ইউনূসের দর্শন ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ পালনের ঘোষণা আনিসুল হকের মুক্তি চেয়ে পোস্টার দিল্লিতে গৃহবন্দী শেখ হাসিনা? গ্যাস-বিদ্যুতে ভয়াবহ ভোগান্তির আশঙ্কা ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ মোদি-হাসিনা মাইনাস: ট্রাম্পের আস্থায় এখন ড. ইউনূস! মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসি গ্যাবার্ডের বাংলাদেশ নিয়ে ভাইরাল ভিডিওর আসল ঘটনা আমি ফিরব, আমাদের শহিদদের প্রতিশোধ নেব’: শেখ হাসিনা

জুলাই বিপ্লবে নারীদের সাহসী ভূমিকা ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ১১:২৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫
  • / 5
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলনে নারীদের দৃঢ় ও প্রতিবাদী অংশগ্রহণ ছিল এক অবিস্মরণীয় অনুপ্রেরণা। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের ছত্রছায়ায় থাকা ‘অসীম শক্তিধর’ আওয়ামী সন্ত্রাসী ও বেপরোয়া র‍্যাব-পুলিশের গুলির সামনে তেজোদীপ্ত নারীরা সাহসী ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। তাদের এই প্রতিবাদ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের জন্য এক শক্তিশালী টনিকের মতো কাজ করে। এই গণ-আন্দোলনে আওয়ামী লীগের সমর্থক বা সহযোগী ব্যতীত সকল শ্রেণি-পেশার নারীরা অকুতোভয় সৈনিকের মতো সন্তানদের পাশে এসে দাঁড়ান। ৩৬ দিনের এই ঐতিহাসিক সংগ্রামে তাদের ভূমিকা অনবদ্য। এই সাহসী নারীরা ইতিহাসের পাতায় ‘ইতিহাস পরিবর্তনের নায়িকা’ হয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

উমামা ফাতেমা : শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং পরবর্তী সময়ে জুলাই গণ-আন্দোলনের বিপ্লবীদের অগ্রভাগে ছিলেন উমামা ফাতেমা। অন্য সহযোদ্ধাদের সঙ্গে রাজপথে ছিল তার সরব উপস্থিতি। বক্তব্য আর স্লোগানে সাহস জোগান এই বিপ্লবী। শুক্রবার এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা হয় উমামা ফাতেমার। জুলাই আন্দোলনের বারুদ দিনের কথা সামনে এনে তিনি বলেন, ‘নারী সৃষ্টি, নারী শক্তি। সৃষ্টি ও শক্তির এ নারীরা যখন প্রতিবাদী হয়, তখন যে কোনো জয় নিশ্চিত। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে রাজপথের প্রতিটি সভা-মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন নারীরা। মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে দেশ থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসন চিরতরে মুছে দিতে জীবনবাজি রেখে রাত-দিন রাজপথে ছিলেন আমাদের সংগ্রামী নারীরা। আন্দোলন-সংগ্রামে পাবলিক ও প্রাইভেট-সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নারীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। আমরা কেউ নারী বা পুরুষ পরিচয় নিয়ে তখন মাঠে নামিনি। আমরা দেখছিলাম একটা দেশের সরকার কীভাবে তার নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যা করছিল। তাই আমরা পথে নেমেছিলাম।’

উমামা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আমি সেই লড়াকু বোনদের স্মরণ করতে চাই, যারা জীবনবাজি রেখে রাস্তায় ছিলেন, জীবন উৎসর্গ করেছেন। অভ্যুত্থানের পরে নারী তাদের হিস্যা বুঝে পায়নি। আমি আশা করি, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্রগুলো নারীর প্রতি আরও সহনশীল হবে। সরকারের নীতিনির্ধারকরা প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর অধিকারকে গুরুত্ব দেবে। আর সর্বোপরি আমরা এই বাংলাদেশে শুধু নারী হিসাবে নয়, একজন মানুষ হিসাবে মর্যাদা পেতে চাই।’

সানজিদা চৌধুরী : ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলনে ‘পেছনে পুলিশ, সামনে স্বাধীনতা’। মনে পড়ে সেই অগ্নিঝরা বাক্যটি? সাহসী শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরীর এই বক্তব্যে শক্তি পান আন্দোলনকারীরা। একটা চরম বার্তা পায় ফ্যাসিস্ট হাসিনা। সানজিদা এখনো যে কোনো অন্যায়-অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার। তার ভাষ্য-আমরা যখন পুলিশ হেফাজতে ছিলাম, তখন তারা (হাসিনার পুলিশ) বলত, ‘ওদের মার কিন্তু মেরে ফেল না’। তখনই বুঝতে পেরেছিলাম, ওরা আমাদের ভয় পেয়েছে। আমরা নিজেদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে পেরেছিলাম। ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার বিচার দেখার অপেক্ষায় আছি। তাকে দেশে আসতে হবে। আবু সাঈদ, মুগ্ধর রক্তের হিসাব দিতে তাকে আসতে হবে। জুলাই আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানজিদার অংশগ্রহণ ও প্রতিবাদী বক্তব্যের প্রতি এখনো স্যালুট জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ, এমনকি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও। তার প্রতিবাদী বক্তব্য ‘পেছনে পুলিশ, সামনে স্বাধীনতা’ নামে একটি গ্রন্থ বাজারে এসেছে।

অধ্যাপক ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস : জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার সঙ্গে রাজপথে সাধারণ সংগ্রামী নারীরা সন্তানের পাশে ছিলেন মানবিক ও সাম্যের অবস্থান থেকে। পথে নেমেছিলেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকারাও। জুলাই আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস পুরো সময় রাজপথে ছিলেন। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনেও সোচ্চার ছিলেন তিনি। কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে নয়, পারিবারিক শিক্ষার কারণেই শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বলে সংবাদমাধ্যমকে জানান তিনি। ‘আমার ছাত্রের মুখ চেপে ধরেননি, বাংলাদেশের মুখ চেপে ধরেছেন’, পুলিশ তথা ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকারের উদ্দেশে আন্দোলনের সময় শব্দ করেই এমন সাহসী উচ্চারণ করেছিলেন তিনি; যা মুহূর্তে সবার কাছে পৌঁছে যায়। তার কথা শক্তি যুগিয়েছিল আন্দোলনকারীদের।

ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস বলেন, ১৫ বছরের স্বৈরশাসক নির্বিচারে মানুষকে হত্যা করেছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার সমাজে একদল লোককে পদ-পদবির লোভ দেখিয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে। আর বাকিদের আয়নাঘর, গুম, খুন-এসব নারকীয় কাজের মাধ্যমে ভয় সৃষ্টি করেছে। হাসিনার এমন বর্বর-হিংস্র কাণ্ডে প্রতিবাদী হয়ে উঠেছিলেন নারীরা। রাজপথ থেকে অলিগলি-আন্দোলনে সর্বত্র নারীর উপস্থিতি ছিল। বিশ্বের যে কোনো আন্দোলনে নারী অগ্রভাগে থাকে। ১৯৫২-১৯৭১ সালেও নারীদের সংগ্রাম, অবদান সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। নতুন প্রজন্মকে বলব, বিশ্বের ইতিহাসে সবসময়ই নারীরা আন্দোলনের সামনে ছিল। জুলাই অভ্যুত্থানে নারীরা সশস্ত্র পুলিশ, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের গুন্ডাবাহিনীর সামনে বারুদ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। ভবিষ্যৎতেও নারীরা যে কোনো ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে, তাদের মন্দকাজের বিরুদ্ধে অগ্নি হয়ে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ-প্রতিহত করবে। যে কোনো অন্যায়, অপরাধ এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে নারীদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু নারীই নয়, কোনো পুরুষের পোশাক নিয়ে কথা বলাও বর্বরতা, অসভ্যতা। এ যুগে এসে এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক। ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে; কিন্তু ফ্যাসিবাদ আমাদের মাথার মধ্যে গেড়ে গিয়েছে। আমাদের শিক্ষা, সভ্যতা যেভাবে ধ্বংস হয়েছে, এটি এর প্রতিফলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে আদর্শের ঢাল। শিক্ষা-সভ্যতার চর্চা, লালনপালন, ধারণের উচ্চতম বিদ্যাপীঠ হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

অধ্যাপক ড. শামীমা সুলতানা : আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হত্যা, নির্যাতন ও আটকের ঘটনায় দায়ী করে ১ আগস্ট নিজ কার্যালয় থেকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সরিয়ে ফেলে নজির সৃষ্টি করেছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. শামীমা সুলতানা। সেই ঘটনা তখন মুহূর্তের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে আরও বেগবান করে। এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা তখন বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনা কোটা আন্দোলন ঘিরে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণকে হত্যা করেছেন, হামলা চালিয়েছেন, আবার বারবার মিথ্যাচার করেছেন। তিনিই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নির্দেশ দিয়েছেন। তার হাতে শিক্ষার্থীদের রক্ত লেগে আছে। রাজপথ রক্তাক্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আমার সন্তানের মতো। যার হাত আমার সন্তানের রক্তে রঞ্জিত, তার ছবি আমার দেওয়ালে রাখতে চাই না। আমার মনে হয়, মানুষের হৃদয় থেকে তার (শেখ হাসিনা) ছবি মুছে গেছে। তাই তার ছবি দেওয়াল থেকে সরিয়ে ফেলেছি।’

এক সাক্ষাৎকারে সেই প্রতিবাদী শিক্ষক ড. শামীমা সুলতানা বলেন, সর্বক্ষেত্রে লিঙ্গ, জাতি, সামাজিক বৈষম্যের পাশাপাশি যেভাবে মেধাশূন্য করার ষড়যন্ত্র এবং বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছিল, যেভাবে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করা হচ্ছিল, এগুলো দেখার পর আমি মেনে নিতে পারছিলাম না। আমি তখন একজন মা হয়ে, একজন শিক্ষক হয়ে, একটা দলের প্রতিনিধি হয়ে স্বৈরাচারের ছবি আমার মাথার ওপর থেকে নামাতে গিয়েছিলাম। আমার মনে হয়েছিল, এ ছবি থাকা উচিত নয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমরা চেয়েছিলাম সব ধরনের বৈষম্য দূর হবে। সবাই হাসিমুখে থাকবে। কিন্তু সেটি দেখছি না। এদেশের অর্ধেক নারী। কিন্তু আজ তাদের নিরাপত্তা কোথায়? প্রতিনিয়ত দেখছি তারা নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস, এই দিনে আমার চাওয়া নারীদের নিরাপত্তা। নারীরা যেন সব জায়গায় সম্মান ও নিরাপত্তা পায়। আমাদের সবার আগে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করতে হবে। এদেশে পুরুষের পাশাপাশি নারীর ভূমিকাও কম নয়। আমরা নারীর প্রতি আর কোনো বৈষম্য চাই না।

একদিনের নোটিশে শিল্পীরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল : গণ-অভ্যুত্থানে পুরো সময়ই রাজপথে ছিলেন শিল্পীসমাজ-পরিচালকরাও। সাধারণ ছাত্রদের পক্ষে, আন্দোলনে সাহস জোগাতে কথা বলেছেন তারা। সেই উত্তাল দিনগুলোয় রাজপথে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনয়শিল্পী আজমেরী হক বাঁধনও। তার ভাষ্য, গণ-আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়, নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ ও ছাত্রদের প্রাণ কেড়ে নেওয়া হয়। অধিকার চাইতে গিয়ে জীবন দিতে হয় ছাত্রদের। আমরা বসে থাকতে পারিনি। বাসার ছাদে, বারান্দায়, রাস্তায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাণ গেল তাদের। শত শত ছাত্র-জনতা শহিদ হলো। ফ্যাসিস্টদের বর্বর হত্যাকাণ্ড দেখে অস্থির হয়ে উঠেছিলেন বাঁধন। যখন দেশে গণগ্রেপ্তার হচ্ছে, ছাত্রদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তখন তিনি রাজপথে থেকে প্রতিবাদ করেছেন। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে বর্বর ঘটনাগুলো মানতে পারছিলেন না। জীবনবাজি রেখেই রাস্তায় নেমেছিলেন। বাঁধনের ভাষ্য, একদিনের নোটিশে শিল্পীরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল। শিল্পী-পরিচালক থেকে শুরু করে লাইটম্যান, সহকারী পরিচালকরা রাস্তায় নেমে আসে। কেন এত মানুষের প্রাণ গেল, এই গণহত্যার বিচার করতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারী গুরুতর আহত হন, আর ১১ জন নারী শহীদের তালিকায় যুক্ত হন চিরস্মরণীয় নাম হিসেবে। উত্তরায় বাসার বারান্দায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন নাঈমা সুলতানার (১৫) মা আইনুন নাহার। প্রবীণ নারী মাসুরা বেগম, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক শামীমা সুলতানা, শ্রমজীবী নারী সামিনা ইয়াসমিন, নরসিংদী সরকারি কলেজের শিক্ষক নাদিরা ইয়াসমিন এবং ‘চব্বিশের উত্তরা’ সংগঠনের প্রতিনিধি সামিয়া রহমান আন্দোলনের সময় সহিংসতার শিকার হন।

মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ১৩২ শিশু-কিশোর ও ১১ জন নারী শহীদ হন। শহীদ এই ১১ নারীর মধ্যে রয়েছেন মায়া ইসলাম, মেহেরুন নেছা, লিজা, রিতা আক্তার, নাফিসা হোসেন মারওয়া, নাছিমা আক্তার, রিয়া গোপ, কোহিনূর বেগম, সুমাইয়া আক্তার, মোসা. আক্তার ও নাঈমা সুলতানা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

জুলাই বিপ্লবে নারীদের সাহসী ভূমিকা ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে

আপডেট সময় : ১১:২৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫

 

ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলনে নারীদের দৃঢ় ও প্রতিবাদী অংশগ্রহণ ছিল এক অবিস্মরণীয় অনুপ্রেরণা। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের ছত্রছায়ায় থাকা ‘অসীম শক্তিধর’ আওয়ামী সন্ত্রাসী ও বেপরোয়া র‍্যাব-পুলিশের গুলির সামনে তেজোদীপ্ত নারীরা সাহসী ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। তাদের এই প্রতিবাদ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের জন্য এক শক্তিশালী টনিকের মতো কাজ করে। এই গণ-আন্দোলনে আওয়ামী লীগের সমর্থক বা সহযোগী ব্যতীত সকল শ্রেণি-পেশার নারীরা অকুতোভয় সৈনিকের মতো সন্তানদের পাশে এসে দাঁড়ান। ৩৬ দিনের এই ঐতিহাসিক সংগ্রামে তাদের ভূমিকা অনবদ্য। এই সাহসী নারীরা ইতিহাসের পাতায় ‘ইতিহাস পরিবর্তনের নায়িকা’ হয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

উমামা ফাতেমা : শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং পরবর্তী সময়ে জুলাই গণ-আন্দোলনের বিপ্লবীদের অগ্রভাগে ছিলেন উমামা ফাতেমা। অন্য সহযোদ্ধাদের সঙ্গে রাজপথে ছিল তার সরব উপস্থিতি। বক্তব্য আর স্লোগানে সাহস জোগান এই বিপ্লবী। শুক্রবার এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা হয় উমামা ফাতেমার। জুলাই আন্দোলনের বারুদ দিনের কথা সামনে এনে তিনি বলেন, ‘নারী সৃষ্টি, নারী শক্তি। সৃষ্টি ও শক্তির এ নারীরা যখন প্রতিবাদী হয়, তখন যে কোনো জয় নিশ্চিত। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে রাজপথের প্রতিটি সভা-মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন নারীরা। মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে দেশ থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসন চিরতরে মুছে দিতে জীবনবাজি রেখে রাত-দিন রাজপথে ছিলেন আমাদের সংগ্রামী নারীরা। আন্দোলন-সংগ্রামে পাবলিক ও প্রাইভেট-সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নারীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। আমরা কেউ নারী বা পুরুষ পরিচয় নিয়ে তখন মাঠে নামিনি। আমরা দেখছিলাম একটা দেশের সরকার কীভাবে তার নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যা করছিল। তাই আমরা পথে নেমেছিলাম।’

উমামা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আমি সেই লড়াকু বোনদের স্মরণ করতে চাই, যারা জীবনবাজি রেখে রাস্তায় ছিলেন, জীবন উৎসর্গ করেছেন। অভ্যুত্থানের পরে নারী তাদের হিস্যা বুঝে পায়নি। আমি আশা করি, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্রগুলো নারীর প্রতি আরও সহনশীল হবে। সরকারের নীতিনির্ধারকরা প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীর অধিকারকে গুরুত্ব দেবে। আর সর্বোপরি আমরা এই বাংলাদেশে শুধু নারী হিসাবে নয়, একজন মানুষ হিসাবে মর্যাদা পেতে চাই।’

সানজিদা চৌধুরী : ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলনে ‘পেছনে পুলিশ, সামনে স্বাধীনতা’। মনে পড়ে সেই অগ্নিঝরা বাক্যটি? সাহসী শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরীর এই বক্তব্যে শক্তি পান আন্দোলনকারীরা। একটা চরম বার্তা পায় ফ্যাসিস্ট হাসিনা। সানজিদা এখনো যে কোনো অন্যায়-অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার। তার ভাষ্য-আমরা যখন পুলিশ হেফাজতে ছিলাম, তখন তারা (হাসিনার পুলিশ) বলত, ‘ওদের মার কিন্তু মেরে ফেল না’। তখনই বুঝতে পেরেছিলাম, ওরা আমাদের ভয় পেয়েছে। আমরা নিজেদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে পেরেছিলাম। ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার বিচার দেখার অপেক্ষায় আছি। তাকে দেশে আসতে হবে। আবু সাঈদ, মুগ্ধর রক্তের হিসাব দিতে তাকে আসতে হবে। জুলাই আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানজিদার অংশগ্রহণ ও প্রতিবাদী বক্তব্যের প্রতি এখনো স্যালুট জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ, এমনকি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও। তার প্রতিবাদী বক্তব্য ‘পেছনে পুলিশ, সামনে স্বাধীনতা’ নামে একটি গ্রন্থ বাজারে এসেছে।

অধ্যাপক ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস : জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার সঙ্গে রাজপথে সাধারণ সংগ্রামী নারীরা সন্তানের পাশে ছিলেন মানবিক ও সাম্যের অবস্থান থেকে। পথে নেমেছিলেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকারাও। জুলাই আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস পুরো সময় রাজপথে ছিলেন। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনেও সোচ্চার ছিলেন তিনি। কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে নয়, পারিবারিক শিক্ষার কারণেই শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বলে সংবাদমাধ্যমকে জানান তিনি। ‘আমার ছাত্রের মুখ চেপে ধরেননি, বাংলাদেশের মুখ চেপে ধরেছেন’, পুলিশ তথা ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকারের উদ্দেশে আন্দোলনের সময় শব্দ করেই এমন সাহসী উচ্চারণ করেছিলেন তিনি; যা মুহূর্তে সবার কাছে পৌঁছে যায়। তার কথা শক্তি যুগিয়েছিল আন্দোলনকারীদের।

ড. চৌধুরী সায়মা ফেরদৌস বলেন, ১৫ বছরের স্বৈরশাসক নির্বিচারে মানুষকে হত্যা করেছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার সমাজে একদল লোককে পদ-পদবির লোভ দেখিয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে। আর বাকিদের আয়নাঘর, গুম, খুন-এসব নারকীয় কাজের মাধ্যমে ভয় সৃষ্টি করেছে। হাসিনার এমন বর্বর-হিংস্র কাণ্ডে প্রতিবাদী হয়ে উঠেছিলেন নারীরা। রাজপথ থেকে অলিগলি-আন্দোলনে সর্বত্র নারীর উপস্থিতি ছিল। বিশ্বের যে কোনো আন্দোলনে নারী অগ্রভাগে থাকে। ১৯৫২-১৯৭১ সালেও নারীদের সংগ্রাম, অবদান সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। নতুন প্রজন্মকে বলব, বিশ্বের ইতিহাসে সবসময়ই নারীরা আন্দোলনের সামনে ছিল। জুলাই অভ্যুত্থানে নারীরা সশস্ত্র পুলিশ, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের গুন্ডাবাহিনীর সামনে বারুদ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। ভবিষ্যৎতেও নারীরা যে কোনো ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে, তাদের মন্দকাজের বিরুদ্ধে অগ্নি হয়ে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ-প্রতিহত করবে। যে কোনো অন্যায়, অপরাধ এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে নারীদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু নারীই নয়, কোনো পুরুষের পোশাক নিয়ে কথা বলাও বর্বরতা, অসভ্যতা। এ যুগে এসে এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক। ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে; কিন্তু ফ্যাসিবাদ আমাদের মাথার মধ্যে গেড়ে গিয়েছে। আমাদের শিক্ষা, সভ্যতা যেভাবে ধ্বংস হয়েছে, এটি এর প্রতিফলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে আদর্শের ঢাল। শিক্ষা-সভ্যতার চর্চা, লালনপালন, ধারণের উচ্চতম বিদ্যাপীঠ হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

অধ্যাপক ড. শামীমা সুলতানা : আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হত্যা, নির্যাতন ও আটকের ঘটনায় দায়ী করে ১ আগস্ট নিজ কার্যালয় থেকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সরিয়ে ফেলে নজির সৃষ্টি করেছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. শামীমা সুলতানা। সেই ঘটনা তখন মুহূর্তের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে আরও বেগবান করে। এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা তখন বলেছিলেন, ‘শেখ হাসিনা কোটা আন্দোলন ঘিরে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণকে হত্যা করেছেন, হামলা চালিয়েছেন, আবার বারবার মিথ্যাচার করেছেন। তিনিই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নির্দেশ দিয়েছেন। তার হাতে শিক্ষার্থীদের রক্ত লেগে আছে। রাজপথ রক্তাক্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আমার সন্তানের মতো। যার হাত আমার সন্তানের রক্তে রঞ্জিত, তার ছবি আমার দেওয়ালে রাখতে চাই না। আমার মনে হয়, মানুষের হৃদয় থেকে তার (শেখ হাসিনা) ছবি মুছে গেছে। তাই তার ছবি দেওয়াল থেকে সরিয়ে ফেলেছি।’

এক সাক্ষাৎকারে সেই প্রতিবাদী শিক্ষক ড. শামীমা সুলতানা বলেন, সর্বক্ষেত্রে লিঙ্গ, জাতি, সামাজিক বৈষম্যের পাশাপাশি যেভাবে মেধাশূন্য করার ষড়যন্ত্র এবং বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছিল, যেভাবে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করা হচ্ছিল, এগুলো দেখার পর আমি মেনে নিতে পারছিলাম না। আমি তখন একজন মা হয়ে, একজন শিক্ষক হয়ে, একটা দলের প্রতিনিধি হয়ে স্বৈরাচারের ছবি আমার মাথার ওপর থেকে নামাতে গিয়েছিলাম। আমার মনে হয়েছিল, এ ছবি থাকা উচিত নয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমরা চেয়েছিলাম সব ধরনের বৈষম্য দূর হবে। সবাই হাসিমুখে থাকবে। কিন্তু সেটি দেখছি না। এদেশের অর্ধেক নারী। কিন্তু আজ তাদের নিরাপত্তা কোথায়? প্রতিনিয়ত দেখছি তারা নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস, এই দিনে আমার চাওয়া নারীদের নিরাপত্তা। নারীরা যেন সব জায়গায় সম্মান ও নিরাপত্তা পায়। আমাদের সবার আগে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করতে হবে। এদেশে পুরুষের পাশাপাশি নারীর ভূমিকাও কম নয়। আমরা নারীর প্রতি আর কোনো বৈষম্য চাই না।

একদিনের নোটিশে শিল্পীরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল : গণ-অভ্যুত্থানে পুরো সময়ই রাজপথে ছিলেন শিল্পীসমাজ-পরিচালকরাও। সাধারণ ছাত্রদের পক্ষে, আন্দোলনে সাহস জোগাতে কথা বলেছেন তারা। সেই উত্তাল দিনগুলোয় রাজপথে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনয়শিল্পী আজমেরী হক বাঁধনও। তার ভাষ্য, গণ-আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়, নিরস্ত্র সাধারণ মানুষ ও ছাত্রদের প্রাণ কেড়ে নেওয়া হয়। অধিকার চাইতে গিয়ে জীবন দিতে হয় ছাত্রদের। আমরা বসে থাকতে পারিনি। বাসার ছাদে, বারান্দায়, রাস্তায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাণ গেল তাদের। শত শত ছাত্র-জনতা শহিদ হলো। ফ্যাসিস্টদের বর্বর হত্যাকাণ্ড দেখে অস্থির হয়ে উঠেছিলেন বাঁধন। যখন দেশে গণগ্রেপ্তার হচ্ছে, ছাত্রদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তখন তিনি রাজপথে থেকে প্রতিবাদ করেছেন। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে বর্বর ঘটনাগুলো মানতে পারছিলেন না। জীবনবাজি রেখেই রাস্তায় নেমেছিলেন। বাঁধনের ভাষ্য, একদিনের নোটিশে শিল্পীরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল। শিল্পী-পরিচালক থেকে শুরু করে লাইটম্যান, সহকারী পরিচালকরা রাস্তায় নেমে আসে। কেন এত মানুষের প্রাণ গেল, এই গণহত্যার বিচার করতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারী গুরুতর আহত হন, আর ১১ জন নারী শহীদের তালিকায় যুক্ত হন চিরস্মরণীয় নাম হিসেবে। উত্তরায় বাসার বারান্দায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন নাঈমা সুলতানার (১৫) মা আইনুন নাহার। প্রবীণ নারী মাসুরা বেগম, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক শামীমা সুলতানা, শ্রমজীবী নারী সামিনা ইয়াসমিন, নরসিংদী সরকারি কলেজের শিক্ষক নাদিরা ইয়াসমিন এবং ‘চব্বিশের উত্তরা’ সংগঠনের প্রতিনিধি সামিয়া রহমান আন্দোলনের সময় সহিংসতার শিকার হন।

মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ১৩২ শিশু-কিশোর ও ১১ জন নারী শহীদ হন। শহীদ এই ১১ নারীর মধ্যে রয়েছেন মায়া ইসলাম, মেহেরুন নেছা, লিজা, রিতা আক্তার, নাফিসা হোসেন মারওয়া, নাছিমা আক্তার, রিয়া গোপ, কোহিনূর বেগম, সুমাইয়া আক্তার, মোসা. আক্তার ও নাঈমা সুলতানা।