পিটার বাটলার এবং বাংলাদেশ ফুটবলের সিন্ডিকেট
- আপডেট সময় : ১০:৩৬:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
- / 62
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ফুটবলে আলোচিত একটি নাম “পিটার বাটলার”। তবে তাকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার কারণ কিন্তু মেয়েদের সাফ জয় নয়। এর পিছনে আছে ভিন্ন এবং ভয়ঙ্কর এক কারণ। যা আমাদের আবার বাংলাদেশ ফুটবলের দূর্নীতি এবং সিন্ডিকেট চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।
বিতর্ক শুরু হয় মূলত সাফে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১-১ গোলে ড্র এর পর। উক্ত ম্যাচের সেরা খেলোয়ার মনিকা চাকমা বলেন প্রধান কোচ বাটলারের সাথে সিনিয়র প্লেয়ারদের সম্পর্ক ভালো নয়। বাটলার সিনিয়র প্লেয়ারদের পছন্দ করেন না। এতেই ফুটবল পাড়ায় শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। পরবর্তীতে দলনেত্রী সাবিনা খাতুন বলেন দলে সিনিয়র-জুনিয়র কোনো দ্বন্দ্ব নেই। সব কিছু মিডিয়ার তৈরি করা।
তবে মনিকার স্টেটমেন্ট ভালো ভাবে নেন নি বাটলার। এক প্রেস-কনফারেন্সে তিনি মেয়েদের নিয়ে বলেন ” সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো মেয়েদের মনোযোগ ধরে রাখা। এটা অনেক কঠিন।” মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন কেন সে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বাফুফে কর্মকর্তা এবং সাবেক কোচ’কে দোষারোপ করে বলেন “আমি বলব বাফুফের সঙ্গে জড়িত মানুষ, সাবেক জাতীয়দলের কোচ মেয়েদের মনোযোগ নষ্ট করার চেষ্টা করে। মেয়েদের ক্ষেপিয়ে তুলার চেষ্টা করে, এমন তথ্য প্রদান করে যা সত্য নয়, এটা জঘন্য ও অগ্রহনযোগ্য।
তারা এমনটা করার কারণ কি তা জানতে চাইলে বাটলার বলেন “এটা কি ইর্ষা থেকে নাকি নিরাপত্তাহীনতা থেকে করে সেটা আমি জানি না”।
বাটলার মেয়েদের নিয়ে সমালোচনা করতেও ছাড়েন নি। তিনি বলেন আমাদের মেয়েরা ফুটবল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মনো্যোগী বেশী। তিনি মেয়েদের টিকটক এবং ইনস্টাগ্রাম রিলস করাকে ইঙ্গিত করে এই কথা বলেন। তবে তার এই কথার বিরুদ্ধে সাবিনা খাতুন বলেন আমাদের মেয়েদের গড় বয়স ২১-২২ তারা নিজেদের বিনোদনের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যাবহার করতেই পারে এটা দোষের কিছু না।
এই সব কন্ট্রভার্সির জের ধরে সাফ শেষ হওয়ার আগেই বাটলার জানিয়ে দিয়েছিলেন সাফের পর তিনি দায়ীত্ব ছেড়ে দিবেন এবং করেছিলেনও তাই। তবে এখন গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে তাকে রেখে দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বাফুফে। বাফুফের নির্বাহী সদস্য এবং সাবেক নারী কমিটির প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরন বলেন “পিটার বাটলারকে নারী দলের সঙ্গে রাখার চেষ্টা থাকবে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে আসা ভালো কোচদের মধ্যে তিনি একজন”। কিরনের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন বাফুফে বস তাবিথ আউয়ালও, তিনিও বলেছেন বাটলার’কে কনভিন্স করার চেষ্টা করবেন তিনি। এ বিষয়ে বাটলারও সবুজ সংকেত দিয়েছেন। দায়িত্ব ছেড়ে দিলেও বাফুফে বসের সাথে আলোচনায় বসতে রাজি আছেন তিনি।
তবে প্লেয়ার এবং বাটলারের বক্তব্য আবারো আমাদের সামনে বাফুফের দূর্নীতি এবং সিন্ডিকেট সামনে নিয়ে এলো। বাংলাদেশ ফুটবলের অবনতির জন্য এই সিন্ডিকেট’ই দায়ী। যা বর্তমানে আরো ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। বিশেষ ক্লাব কিংবা কোচের পছন্দের বিশেষ প্লেয়ার পারফর্ম করতে না পারলেও বারবার জাতীয় দলে জায়গা পাওয়া কিংবা প্রবাসী ফুটবলারদের দলে নিয়ে অনীহা তা বারবার প্রমান করে। তবে সস্ত্বির খবর হলো নব-নির্বাচিত বাফুফে বস তাবিথ আউয়াল এই সিন্ডিকেট ভাঙ্গার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।