সহজ পদ্ধতিতে পেনশন ও গ্র্যাচুইটির হিসাব
- আপডেট সময় : ০৮:৩১:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / ৫০৫৯ বার পড়া হয়েছে
যেভাবে বের করবেন ল্যাম্পগ্রান্ট, গ্র্যাচুইটি ও পেনশনের হিসাব
বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ২৩/১২/২০১৩ তারিখে নং-০৭. ০০. ০০০০. ১৭১. ১০. ০০৬. ১৫-১৮১, স্মারকমূলে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে সরকারি চাকুরিজীবীদের অবসরকালীন সুবিধাদি/প্রাপ্যতা তথা পেনশনযোগ্য চাকুরিকাল ও পেনশনের পরিমান পূণঃনির্ধারণ করা হয়েছে।
পূর্বেকার পেনশনযোগ্য চাকরিকাল ১০-২৫ বছরের পরিবর্তে ৫-২৫ বছর এবং পেনশনের হার সর্বশেষ আহরিত মুল বেতনের ৮০% এর স্থলে ৯০% -এ উন্নীত করা হয়েছে। ফলে বর্তমানে চাকুরীকাল ৫ বছর হলেই আপনি পেনশনের আওতায় আসবেন (এটি শুধুমাত্র অক্ষম, অযোগ্য এবং মৃত চাকরিজীবীর পারিবারিক পেনশনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)। পূর্বে চাকুরীকাল ১০ বছর না হলে পেনশনের আওতায় আসতো না। তবে ৫ বছর চাকরি পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই যদি মারা যান তবে পরিবার মাত্র ৩টি বেসিক ও জিপিএফ এ জমাকৃত অর্থ মুনাফা সহ প্রাপ্য হইবেন।
চাকরিকাল অনুযায়ী পেনশনের হার ও শতাংশ চাকুরীকাল ৫ বছর হলে ২১%, প্রাপ্ত হবেন।
চাকুরীকাল ৫ বছর হলে ২১%, প্রাপ্ত হবেন। চাকুরীকাল ৬ বছর হলে ২৪%, প্রাপ্ত হবেন। চাকুরীকাল ৭ বছর হলে ২৭%, প্রাপ্ত হবেন। চাকুরীকাল ৮ বছর হলে ৩০%, প্রাপ্ত হবেন। চাকুরীকাল ৯ বছর হলে ৩৩% শতাংশ প্রাপ্ত হবেন। চাকুরীকাল ১০ বছর হলে ৩৬%, অগের হার ছিল ৩২%। চাকুরীকাল ১১ বছর হলে ৩৯%, আগের হার ছিল ৩৫%। চাকুরীকাল ১২ বছর হলে ৪৩%, আগের হার ছিল ৩৮%। চাকুরীকাল ১৩ বছর হলে ৪৭%, আগের হার ছিল ৪২%। চাকুরীকাল ১৪ বছর হলে ৫১%, আগের হার ছিল ৪৫%। চাকুরীকাল ১৫ বছর হলে ৫৪%, আগের হার ছিল ৫৮%।
| চাকুরীকাল ১৬ বছর হলে ৫৭%, আগের হার ছিল ৫১%। চাকুরীকাল ১৭ বছর হলে ৬৩%, আগের হার ছিল ৫৪%। চাকুরীকাল ১৮ বছর হলে ৬৫%, আগের হার ছিল ৫৮%। চাকুরীকাল ১৯ বছর হলে ৬৯%, আগের হার ছিল ৬১%। চাকুরীকাল ২০ বছর হলে ৭২%, আগের হার ছিল ৬৪%। চাকুরীকাল ২১ বছর হলে ৭৫%, আগের হার ছিল ৬৭%। চাকুরীকাল ২২ বছর হলে ৭৯%, আগের হার ছিল ৭০%। চাকুরীকাল ২৩ বছর হলে ৮৩%, আগের হার ছিল ৭৪%। চাকুরীকাল ২৪ বছর হলে ৮৭%, আগের হার ছিল ৭৭%। চাকুরীকাল ২৫ বছর হলে ৯০%, আগের হার ছিল ৮০%। |
বাধতামূলক ভাবে সমর্পিত আনুতোষিকের হার (টাকায়)
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ২৩/১২/২০১৩ তারিখের ০৭. ০০. ০০০০. ১৭১. ১৩. ০২৭. ১৩- ১৬০ সংখ্যক স্মারকের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক পেনশন সুবিধার আওতাভুক্ত অবসর গ্রহনকারী চাকুরে কিংবা মৃত্যবরণকারী চাকুরের পরিবারের জন্য বাধ্যতামুলক সমর্পিত অর্ধেক (৫০%) গ্রস পেনশনের প্রতি ১(এক) টাকার বিপরীতে আনুতোষিকের হার নিম্নরুপভাবে পূণঃ নির্ধারণ করা হয়েছেঃ
১. পেনশনযোগ্য চাকুরীকাল ৫ বছর বা ততোধিক কিন্তু ১০ বছরের কম ২৬৫ টাকা (পূর্বে ছিল না।১/৭/২০১৫ হতে পেনশন যোগ্য চাকরিকাল নতুন সংযোজন করা হয়েছে)
২. পেনশনযোগ্য চাকুরীকাল ১০ বছর বা ততোধিক কিন্তু ১৫ বছরের কম ২৬০ টাকা (পূর্বের হার ২৩০ টাকা)
৩. পেনশনযোগ্য চাকুরীকাল ১৫ বছর বা ততোধিক কিন্তু ২০ বছরের কম ২৪৫ টাকা (পূর্বের হার ২১৫ টাকা)
৪. পেনশনযোগ্য চাকুরীকাল ২০ বছর বা ততোধিক ২৩০টাকা (পূর্বের হার ২০০ টাকা)
স্বেচ্ছায় সমর্পিত অবশিষ্ট আনতোষিক
গ্রস পেনশনের অবশিষ্ট অর্ধেক (৫০%) একসাথে সমর্পণকারী অবসরভোগীগণ উপরে বর্নিত হারের অর্ধেক হারে আনুতোষিক প্রাপ্য হতেন।যা ১ জুলাই, ২০১৭ হতে বন্ধ করা হয়েছে।
১) ল্যামগ্রান্ট হিসাব নির্ধারণের পদ্ধতিঃ চাকুরিতে সর্বশেষ মূলবেতন x চাকুরিতে অর্জিত ছুটি (সর্বোচ্চ ১৮ মাস) = মোট টাকা।
২) আনুতোষিক নির্ধারণের পদ্ধতিঃ সর্বশেষ মূলবেতন x সর্বমোট চাকুরির জন্য পেনশনের নির্ধারিত হার (%) ÷ ২ x আনুতোষিকের নির্ধারিত হার = মোট টাকা।
৩) পেনশন নির্ধারণের পদ্ধতিঃ সর্বশেষ মূলবেতন x সর্বমোট চাকুরির জন্য পেনশনের নির্ধারিত হার (%) ÷ ২ = মোট টাকা।
পেনশন ও গ্রাচুইটি হিসাবের পালা
উদাহরণ-১ জাহিদ সাহেবের জন্ম তারিখ ০১/০৬/১৯৫৮, তিনি ১৪/১২/১৯৯০ খ্রিঃ তারিখে চাকরিতে যোগদান করেছেন। তিনি ০১/০৬/২০১৮ তারিখে অবসর গমন করবেন। তার মূলবেতন ৩৪,০১০/- তিনি মোট চাকরি করেছেন ২৭ বছর ৫ মাস ১৭ দিন।তিনি বিনাবেতনে কোন ছুটি ভোগ করেননি। তাহলে তার প্রাপ্য আনুতোষিক ও মাসিক পেনশন কত হবে?
১. জাহিদ সাহেব মোট পেনশনের কত শতাংশ পাবেন?
তিনি পূর্ণ পেনশন পাবেন। সুত্রটিঃ সর্বশেষ মূলবেতন x সর্বমোট চাকুরির জন্য পেনশনের নির্ধারিত হার (%) ÷ ২ = মোট টাকা। সুতরাং তার প্রাপ্য পেনশন = (৩৪০১০ x ৯০%) ÷ ২ টাকা
= ৩০৬০৯ ÷ ২ টাকা
= ১৫৩০৪.৫ টাকা
২. জাহিদ সাহেবে কত টাকা এককালিন ল্যাম্পগ্রান্ট পাবেন?
সূত্রঃ চাকুরিতে সর্বশেষ মূলবেতন x অর্জিত ছুটি (১৮ মাস) টাকা সুতরাং ল্যাম্পগ্রান্ট পাবেন = ৩৪০১০ x ১৮ টাকা = ৬,১২,১৮০ টাকা।
৩. জাহিদ সাহেবে কত টাকা এককালিন আনুতোষিক পাবেন?
গ্র্যাচুইটি বা আনুতোষিক প্রাপ্যতার সুত্রটি হলঃ (বেসিক বেতন x শতকরা হার) ÷ ২ x বাধ্যতামুলক সমর্পিত অনুতোষিক সুতরাং-আনুতোষিক [(৩৪০১০ x ৯০%) ÷ ২] x ২৩০
= [৩০৬০৯ ÷ ২] x ২৩০
= ১৫৩০৪.৫ x ২৩০
= ৩৫,২০,০৩৫ টাকা
৪. তিনি প্রতি মাসে কত টাকা পেনশন পাবেন?
প্রতিমাসে বা আজীবন মাসিক পেনশন বের করার সূত্রটি হলঃ (বেসিক বেতন x শতকরা হার) ÷ ২ + চিকিৎসা ভাতা সুতরাং মাসিক পেনশন প্রাপ্য = [(৩৪০১০ x ৯০%) ÷ ২] + ১৫০০ টাকা
= [৩০৬০৯ ÷ ২] + ১৫০০ টাকা
= ১৫৩০৪.৫ + ১৫০০ টাকা
= ১৬৮০৪.৫ টাকা
ব্যাখ্যাঃ ৬৫ বছরের উর্ধ্বে পেনশনারদের মাসিক চিকিৎসা ভাতা ২৫০০ টাকা (০১/০৭/২০১৬ তারিখ হতে কার্যকর হয়েছে)।
বিঃদ্রঃ পরবর্তীতে চাকরিরত অবস্থায় একজন মৃত্যুবরণকারী ও চাকরিতে স্থায়ীভাবে অক্ষম চাকরিজীবীর পেনশন হিসাব সংযোজন করা হবে।