ঢাকা ০১:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
এটুআই ছিল মিলেমিশে লুটপাটের প্রকল্প আওয়ামী লুটপাটে পঙ্গু ইডিসিএল বিদেশেও বিচার সম্ভব শেখ হাসিনার ‘দুঃখিত, আপা! এটাই শেষ!!’ : হাসিনার উদ্দেশ্য প্রেস সচিব জাতীয় সংসদ ভোটের পর পুলিশে পদকের মচ্ছব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে ঐকমত্য কমিশন প্রফেসর ইউনূস ও তার দাবার চাল। পদত্যাগ করছেন উপদেষ্টা নাহিদ, আসছে নতুন দল ট্রাম্প প্রশাসনের ক্ষমতাবান ইলন মাস্কের সঙ্গে যে আলোচনা হলো ড. ইউনূসের শ্যামল দত্তের অ্যাকাউন্টে ১০৪২ কোটি টাকার লেনদেন কিভাবে পারে এত পাষণ্ড হতে, হাসিনাকে বললেন আসিফ নজরুল জাতিসংঘের রিপোর্ট ‘শেখ হাসিনার নির্দেশেই গুলি’! তসলিমার ‘চুম্বন’ প্রকাশকের জয় বাংলা স্লোগান, মব জাস্টিস উস্কে দেয়ার ভারতীয় প্ল্যান? জরুরি ওষুধেও ব্যবসার ফাঁদ:ওষুধের বাজারে অরাজকতা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ড. ইউনূস-মোদি বৈঠকের সম্ভাবনা ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ৬ ডিসেম্বর ধানমন্ডি ৩২: প্রতিশোধের ক্রোধে উন্মাদ প্রায় শেখ হাসিনা বেনজীরকে গ্রেফতারে ইন্টারপোলে রেড অ্যালার্ট জারিতে নির্দেশনা শেখ হাসিনার সরকার হটাতে মার্কিন নীলনকশার গোপন নথি ফাঁস শেখ হাসিনার সঙ্গে কী পরিকল্পনা করছিলেন শাওন ?

প্রমিলা দেবীর সাথে কবির বিবাহ ও দাম্পত্য জীবন

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৯:২৬:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জুন ২০২২
  • / 152
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

প্রমীলার প্রতি নজরুলের প্রেম জেগে ওঠে নার্গিসের সাথে বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর। নার্গিসের সাথে নজরুলের বিয়ে ছিল একটা ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্রের অবসানের পর নজরুল ভীষণ মানসিক কষ্ট পান। এই কষ্টের অবসান ঘটে প্রমীলার সাথে প্রেমের পর। প্রমীলার বয়স যখন ১৩ বছর তখন নজরুলের সাথে পরিচয়। নজরুলের বয়স সেসময় ২১/২২ বছর। সদ্য সেনাবাহিনী থেকে ফিরে আসা তরুণ। নজরুলকে প্রমীলা দেখেছিলেন কলকাতা থেকে বিয়ে করতে আসা বর হিসেবে। বিয়ের জন্য নজরুল এসে ওঠেন তাঁদের বাড়িতেই। তাঁদের বাড়িতে ওঠার কারণ বীরেন্দ্রকুমার সেনগুপ্ত। বীরেন্দ্রকুমারের পিতা ও প্রমীলার পিতা ছিলেন আপন দুই ভাই। বীরেন্দ্রকুমার ছিলেন কুমিল্লার দৌলতপুরের আলী আকবর খানের স্কুলের বন্ধু। আলী আকবর খান তখন কলকাতায় থাকতেন। বাচ্চাদের বইয়ের একটা প্রকাশনা ছিল তাঁর। তিনি নজরুলের কাছে থেকে ‘লিচুচোর’ নামে একটি কবিতা লিখিয়ে নেন। এই কবিতায় নজরুলের প্রতিভার পরিচয় জেনেই তাঁকে নিজের কব্জায় রাখার ফন্দি আঁটেন। তাই তিনি নজরুলকে ফুসলিয়ে কলকাতা থেকে কুমিল্লায় সাথে করে নিয়ে আসেন । উদ্দেশ্য নিজের বিধবা বড় বোন আসমাতউন্নেসার মেয়ে সৈয়দা খাতুন ওরফে নার্গিসের সাথে বিয়ে দেওয়া। নিজের বোনের মেয়ের সাথে নজরুলকে বিয়ে দেয়ার জন্য কলকাতা থেকে এনে নিজের বাড়িতে সরাসরি না উঠে কুমিল্লারই কান্দিরপাড়ে বাল্যবন্ধু বীরেন্দ্রকুমার সেনগুপ্তের বাড়িতে ওঠেন।

বীরেন্দ্রকুমারের মায়ের নাম বীরজাসুন্দরী দেবী। তাঁকে আলী আকবর খান মা বলে ডাকতেন। নজরুল তাঁকে প্রথম দেখে এবং আশ্রয়ে থেকে তিনিও তাঁকে মা বলে ডাকেন। কদিন বীরেন্দ্রকুমার সেনগুপ্তের বাড়িতে থেকে নজরুলকে বিয়ে করাতে নিয়ে যান দৌলতপুরে আলী আকবর খান তার নিজ গ্রামে। সেখানে মাস দেড়েক থাকার পর ১৯২১ সালে (৩ আষাঢ় ১৩২৮) বিয়ের আয়োজন করার খবর পেয়ে অন্যদের সঙ্গে প্রমীলাও দৌলতপুরে বিয়েবাড়িতে যান।যে রাতে বিয়ে হওয়ার কথা সে রাতেই বিয়েটা ভেঙে যায়। বিয়ে ভেঙে যাওয়ার কারণ হিসেবে অধিকাংশ গবেষকের মত কাবিননামায় নজরুলকে ঘরজামাই থাকার উল্লেখ । তারপরই ক্রুদ্ধ, ক্ষিপ্ত নজরুল বিরজাসুন্দরী দেবীর ছেলে বীরেন্দ্রকুমার সেনগুপ্তকে সাথে নিয়ে তিনি বিয়ে-বাড়ি ত্যাগ করে আষাঢ়ের কাদামাখা পথ ধরে বৃষ্টিতে ভিজে কান্দিরপাড়ে চলে যান। পরের দিন পরিবারের আর সবার সঙ্গে ফিরে আসেন প্রমীলাও।এই দুর্ঘটনার প্রচণ্ড আঘাতে নজরুল কয়েকদিন জ্বরে ভোগেন এই বাড়িতেই। স্বাভাবিকভাইে মুষড়ে পড়েছিলেন নজরুল । প্রমীলা এবং বীরজাসুন্দরী দেবীর দুই মেয়ে মিলে এবং বাড়ির বড়ােরা অকৃপণ স্নেহ দিয়ে নজরুলকে সুস্থ করে তুলতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। তিনি সামলে ওঠেন। তারপর নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়ে কলকাতায় মুজফফর আহমদকে টেলিগ্রাম করেন। মুজফফর আহমদ সেই টেলিগ্রাম পাওয়ার পর কলকাতা থেকে এসে নজরুলকে নিয়ে যান।বিয়ে ভাঙার মাস তিনেক পরে, ১৯২১ সালের অক্টোবর মাসে, নজরুল আবার কান্দিরপাড়ে বিরজাসুন্দরী দেবীর বা প্রমীলার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। সেবার সেখানে ছিলেন পাঁচ-ছয় সপ্তাহ। তারপর তিনি আবারও প্রমীলাদের বাড়িতে আসেন পরের বছর ১৯২২ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে। প্রমীলার বয়স তখন ১৪ বছরের কাছাকাছি। এই কয়েকবার নজরুল প্রমীলার প্রতি প্রেমের টানে এসেছিলেন তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। তিনি প্রমীলার প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। একদিন তিনি প্রমীলাকে একটি কবিতা উপহার দেন যার প্রথম পংক্তি-‘হে মাের রানী তােমার কাছে হার মানি আজ শেষে।’এ কথার মানে প্রমীলা বুঝেছিলেন কিনা তা প্রশ্নসাপেক্ষ। কিন্তু নজরুলের প্রেমের প্রতি প্রমীলার সমর্থন শুরু থেকেই ছিল। নার্গিসের সাথে বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পরে আবার ফিরে আসাটাই তার কারণ হিসেবে যথেষ্ট।
তৃতীয়বার এসে নজরুল কান্দিরপাড়ে ছিলেন প্রায় চার মাস। শেষ দিকে তাই নিয়ে রক্ষণশীল হিন্দুরা কুৎসা রটাতে আরম্ভ করে, তাঁকে অপমান করতেও উদ্যত হয় । কুমিল্লার মতো জায়গায় কলকাতা থেকে আসা নজরুলের মতো একজন মানুষের চারমাস থাকাটা প্রতিবেশীরা স্বাভাবিকভাবে নেয়নি। আজকের দিনেও কি এটা কেউ স্বাভাবিকভাবে নিতে পারতো?এর মধ্যে কলকাতা থেকে মওলানা আকরম খান সম্পাদিত পত্রিকা ‘সেবক’-এ নজরুলের একটা চাকরির খবর আসে মাসিক দেড়শো টাকা বেতনে। তাই মে মাসের শেষে তিনি কলকাতায় ফিরে যান। আর সাথে নিয়ে যান প্রমীলার সমগ্র হৃদয়ের ভালোবাসা।তারপর ১৯২২ সালের নভেম্বর মাসে তাঁদের আবার দেখা—বিহারের সমস্তিপুরে, প্রমীলার মামার বাড়িতে। নজরুল তখন পুলিশের নজরদারিতে ছিলেন। নজরুলের সম্পাদিত ‘ ধূমকেতু ‘ প্রত্রিকায় তাঁর ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতাটি ছাপা হওয়ার অপরাধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। যে কোনও সময় নজরুল গ্রেফতার হয়ে যেতে পারেন। প্রমীলার হৃদয় আশঙ্কায় দুলে ওঠে। নজরুল সমস্তিপুর থেকে তাঁদের কান্দিরপাড়ে পৌঁছে দেন। কিন্তু সেখানে যাবার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে কুমিল্লার ঝাউতলা মোড় থেকে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন নজরুল। এরপর মামলায় নজরুলের সাজা হয় এক বছরের। প্রমীলার হৃদয় কি তখন দুমড়েমুচড়ে যায়নি? নিশ্চয় তাঁর ভালোবাসার মানুষটির জন্য তিনি চোখের জলে ভেসেছিলেন।
চলবে,,,,,

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

প্রমিলা দেবীর সাথে কবির বিবাহ ও দাম্পত্য জীবন

আপডেট সময় : ০৯:২৬:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ জুন ২০২২

 

প্রমীলার প্রতি নজরুলের প্রেম জেগে ওঠে নার্গিসের সাথে বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর। নার্গিসের সাথে নজরুলের বিয়ে ছিল একটা ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্রের অবসানের পর নজরুল ভীষণ মানসিক কষ্ট পান। এই কষ্টের অবসান ঘটে প্রমীলার সাথে প্রেমের পর। প্রমীলার বয়স যখন ১৩ বছর তখন নজরুলের সাথে পরিচয়। নজরুলের বয়স সেসময় ২১/২২ বছর। সদ্য সেনাবাহিনী থেকে ফিরে আসা তরুণ। নজরুলকে প্রমীলা দেখেছিলেন কলকাতা থেকে বিয়ে করতে আসা বর হিসেবে। বিয়ের জন্য নজরুল এসে ওঠেন তাঁদের বাড়িতেই। তাঁদের বাড়িতে ওঠার কারণ বীরেন্দ্রকুমার সেনগুপ্ত। বীরেন্দ্রকুমারের পিতা ও প্রমীলার পিতা ছিলেন আপন দুই ভাই। বীরেন্দ্রকুমার ছিলেন কুমিল্লার দৌলতপুরের আলী আকবর খানের স্কুলের বন্ধু। আলী আকবর খান তখন কলকাতায় থাকতেন। বাচ্চাদের বইয়ের একটা প্রকাশনা ছিল তাঁর। তিনি নজরুলের কাছে থেকে ‘লিচুচোর’ নামে একটি কবিতা লিখিয়ে নেন। এই কবিতায় নজরুলের প্রতিভার পরিচয় জেনেই তাঁকে নিজের কব্জায় রাখার ফন্দি আঁটেন। তাই তিনি নজরুলকে ফুসলিয়ে কলকাতা থেকে কুমিল্লায় সাথে করে নিয়ে আসেন । উদ্দেশ্য নিজের বিধবা বড় বোন আসমাতউন্নেসার মেয়ে সৈয়দা খাতুন ওরফে নার্গিসের সাথে বিয়ে দেওয়া। নিজের বোনের মেয়ের সাথে নজরুলকে বিয়ে দেয়ার জন্য কলকাতা থেকে এনে নিজের বাড়িতে সরাসরি না উঠে কুমিল্লারই কান্দিরপাড়ে বাল্যবন্ধু বীরেন্দ্রকুমার সেনগুপ্তের বাড়িতে ওঠেন।

বীরেন্দ্রকুমারের মায়ের নাম বীরজাসুন্দরী দেবী। তাঁকে আলী আকবর খান মা বলে ডাকতেন। নজরুল তাঁকে প্রথম দেখে এবং আশ্রয়ে থেকে তিনিও তাঁকে মা বলে ডাকেন। কদিন বীরেন্দ্রকুমার সেনগুপ্তের বাড়িতে থেকে নজরুলকে বিয়ে করাতে নিয়ে যান দৌলতপুরে আলী আকবর খান তার নিজ গ্রামে। সেখানে মাস দেড়েক থাকার পর ১৯২১ সালে (৩ আষাঢ় ১৩২৮) বিয়ের আয়োজন করার খবর পেয়ে অন্যদের সঙ্গে প্রমীলাও দৌলতপুরে বিয়েবাড়িতে যান।যে রাতে বিয়ে হওয়ার কথা সে রাতেই বিয়েটা ভেঙে যায়। বিয়ে ভেঙে যাওয়ার কারণ হিসেবে অধিকাংশ গবেষকের মত কাবিননামায় নজরুলকে ঘরজামাই থাকার উল্লেখ । তারপরই ক্রুদ্ধ, ক্ষিপ্ত নজরুল বিরজাসুন্দরী দেবীর ছেলে বীরেন্দ্রকুমার সেনগুপ্তকে সাথে নিয়ে তিনি বিয়ে-বাড়ি ত্যাগ করে আষাঢ়ের কাদামাখা পথ ধরে বৃষ্টিতে ভিজে কান্দিরপাড়ে চলে যান। পরের দিন পরিবারের আর সবার সঙ্গে ফিরে আসেন প্রমীলাও।এই দুর্ঘটনার প্রচণ্ড আঘাতে নজরুল কয়েকদিন জ্বরে ভোগেন এই বাড়িতেই। স্বাভাবিকভাইে মুষড়ে পড়েছিলেন নজরুল । প্রমীলা এবং বীরজাসুন্দরী দেবীর দুই মেয়ে মিলে এবং বাড়ির বড়ােরা অকৃপণ স্নেহ দিয়ে নজরুলকে সুস্থ করে তুলতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। তিনি সামলে ওঠেন। তারপর নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়ে কলকাতায় মুজফফর আহমদকে টেলিগ্রাম করেন। মুজফফর আহমদ সেই টেলিগ্রাম পাওয়ার পর কলকাতা থেকে এসে নজরুলকে নিয়ে যান।বিয়ে ভাঙার মাস তিনেক পরে, ১৯২১ সালের অক্টোবর মাসে, নজরুল আবার কান্দিরপাড়ে বিরজাসুন্দরী দেবীর বা প্রমীলার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। সেবার সেখানে ছিলেন পাঁচ-ছয় সপ্তাহ। তারপর তিনি আবারও প্রমীলাদের বাড়িতে আসেন পরের বছর ১৯২২ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে। প্রমীলার বয়স তখন ১৪ বছরের কাছাকাছি। এই কয়েকবার নজরুল প্রমীলার প্রতি প্রেমের টানে এসেছিলেন তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। তিনি প্রমীলার প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। একদিন তিনি প্রমীলাকে একটি কবিতা উপহার দেন যার প্রথম পংক্তি-‘হে মাের রানী তােমার কাছে হার মানি আজ শেষে।’এ কথার মানে প্রমীলা বুঝেছিলেন কিনা তা প্রশ্নসাপেক্ষ। কিন্তু নজরুলের প্রেমের প্রতি প্রমীলার সমর্থন শুরু থেকেই ছিল। নার্গিসের সাথে বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পরে আবার ফিরে আসাটাই তার কারণ হিসেবে যথেষ্ট।
তৃতীয়বার এসে নজরুল কান্দিরপাড়ে ছিলেন প্রায় চার মাস। শেষ দিকে তাই নিয়ে রক্ষণশীল হিন্দুরা কুৎসা রটাতে আরম্ভ করে, তাঁকে অপমান করতেও উদ্যত হয় । কুমিল্লার মতো জায়গায় কলকাতা থেকে আসা নজরুলের মতো একজন মানুষের চারমাস থাকাটা প্রতিবেশীরা স্বাভাবিকভাবে নেয়নি। আজকের দিনেও কি এটা কেউ স্বাভাবিকভাবে নিতে পারতো?এর মধ্যে কলকাতা থেকে মওলানা আকরম খান সম্পাদিত পত্রিকা ‘সেবক’-এ নজরুলের একটা চাকরির খবর আসে মাসিক দেড়শো টাকা বেতনে। তাই মে মাসের শেষে তিনি কলকাতায় ফিরে যান। আর সাথে নিয়ে যান প্রমীলার সমগ্র হৃদয়ের ভালোবাসা।তারপর ১৯২২ সালের নভেম্বর মাসে তাঁদের আবার দেখা—বিহারের সমস্তিপুরে, প্রমীলার মামার বাড়িতে। নজরুল তখন পুলিশের নজরদারিতে ছিলেন। নজরুলের সম্পাদিত ‘ ধূমকেতু ‘ প্রত্রিকায় তাঁর ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতাটি ছাপা হওয়ার অপরাধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। যে কোনও সময় নজরুল গ্রেফতার হয়ে যেতে পারেন। প্রমীলার হৃদয় আশঙ্কায় দুলে ওঠে। নজরুল সমস্তিপুর থেকে তাঁদের কান্দিরপাড়ে পৌঁছে দেন। কিন্তু সেখানে যাবার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে কুমিল্লার ঝাউতলা মোড় থেকে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন নজরুল। এরপর মামলায় নজরুলের সাজা হয় এক বছরের। প্রমীলার হৃদয় কি তখন দুমড়েমুচড়ে যায়নি? নিশ্চয় তাঁর ভালোবাসার মানুষটির জন্য তিনি চোখের জলে ভেসেছিলেন।
চলবে,,,,,