ফ্রিল্যান্সিংকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চান উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম
- আপডেট সময় : ০৬:৫০:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৫৭ বার পড়া হয়েছে
টেক শহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ফ্রিল্যান্সিংয়ে বাংলাদেশের তরুণরা ভালো করছে উল্লেখ করে এ খাতকে প্রাতিষ্ঠানিক করার কথা বলেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
রোববার সচিবালয়ে মো. নাহিদ ইসলামের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নাদিরা সিম্পসন এবং যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক সাক্ষাত করেছেন। এই সাক্ষাতে কূটনীতিকরা উপদেষ্টা মোঃ নাহিদ ইসলামের সাথে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন। এসময় তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আইসিটি ডিভিশনে আমাদের কিছু প্রকল্প আছে যাতে তরুণদের নতুন নতুন উদ্যোগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হয়। সেই প্রকল্পগুলো আরও আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন। আমরা এই তরুণদের আধুনিক প্রশিক্ষণ দিতে চাই পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিংকেও বাংলাদেশের তরুণরা ভালো করছে সে বিষয়গুলোকে প্রাতিষ্ঠানিক করা প্রয়োজন। এর বাইরে এমন কিছু প্রকল্পের কথা ভাবছি যেখানে আমাদের তরুণদের ব্যবহার করা এবং বিদেশে আমাদের যে দক্ষ জনবল আছে তাদেরকে সম্পৃক্ত করা যায়।
তিনি বলেন, এটি ছাত্র জনতা সরকার এবং এই সরকারের মূল লক্ষ নতুন বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করা, এজন্য অস্ট্রেলিয়ার সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। বাংলাদেশের যুবসমাজ তথ্য প্রযুক্তিতে আগ্রহী এবং পারদর্শী। তিনি তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যুবসমাজকে অধিকতর দক্ষ করে গড়ে তুলতে অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। পাশাপাশি সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে ট্রেনিং প্রদানের জন্য অস্ট্রেলিয়া কে অনুরোধ করেন।
বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হেড অফ মিশন ক্লিংটন প্রবক তাদের দুটি প্রকল্প- এআই বেইজ্ড সলিউশন এবং সাবমেরিন ক্যাবলে অস্ট্রেলিয়া সরকারের নতুন সংস্করণ, যার নাম ক্যাবল কানেক্টিভিটি এন্ড রেজেলিয়ান্স সেন্টারের কথা উল্লেখ করে বলেন, এ দুটো প্রকল্প নিয়ে তারা বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে চান। এআই বেইজ্ড সলিউশন অনেকটা গুগল ট্রান্সলেট এর মত, বিশেষ করে পার্বত্য অঞ্চলে আদিবাসীরা বিশেষ করে চাকমা মারমা তাদের মাতৃভাষায় কথা বললে তা লিখিত ভাবে স্ক্রিনে ভেসে উঠবে। এ দুটি প্রকল্পে একসাথে কাজ করতে সম্মত হন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
ক্লিংটন প্রবক বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধন বিষয়ে জানতে চান, এটা কি নির্বাচনের আগে হবে না নির্বাচিত সরকারের কাছে একটা রূপরেখা প্রণয়ন করা হবে। উত্তরে উপদেষ্টা বলেন যেহেতু আমরা দেশকে পূর্ণগঠন করতে চাই তাই সংবিধান সংশোধন আবশ্যক। আমরা চাই জনগণের কথাই সংবিধানে উঠে আসুক। সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা শুরু হয়েছে । যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে, গণপরিষদ আহবান করে আমরা সংবিধান সংশোধন করব।
অস্ট্রেলিয়া হাইকমিশনার তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অগ্রাধিকার বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, তিনি এমন একটি তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টর গড়ে তুলতে চান যা দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে। নাহিদ ইসলাম যখন তোর আন্দোলনের সময় হত্যাকাণ্ডের আন্তর্জাতিক বিচার করার ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, বিশ্ববাসীর জানুক আন্দোলনের সময় বাংলাদেশের আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার সাথে কি নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে। ব্যবসা এবং বিনিয়োগে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া যৌথ ভাবে কাজ করবে উল্লেখ করে আলোচনা শেষ হয়।
ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বাংলাদেশ এবং যুক্তরাজ্য যৌথভাবে আইসিটি, সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি মিডিয়ার স্বাধীনতা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার বিষয়েও কথা বলেন । উভয় দেশ সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে যৌথভাবে কাজ করার ব্যাপারে সম্মত হয়। সাইবার সিকিউরিটি অ্যাকট এর যে ধারাগুলো নিয়ে বিতর্ক আছে সেগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে, প্রয়োজনে সেগুলো সংশোধন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরের বাংলাদেশে যে ফ্যাসিস্ট সরকার ছিলো তাদের অনিয়ম-দুর্নীতি এবং আন্দোলনের সময় যে গণহত্যা তারা চালিয়েছে এবং এর পরিণতি সম্পর্কের বিশ্ববাসীর কাছে প্রচার করতে চাই এ বিষয়ে আমরা যুক্তরাজ্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা জানি যুক্তরাজ্য প্রযুক্তিতে অনেক এগিয়ে এবং এ বিষয়ে তাদের জ্ঞানও অনেক। এই বিষয়গুলো যদি আমাদের সাথে শেয়ার করা যায় তাহলে আমাদের সরকার তথা দেশের মানুষ উপকৃত হবে।
হাইকমিশনার ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, বিগত সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি করেছে। আমাদের ডাটাবেজ এবং ইনফরমেশন আপ টু ডেট রাখার মাধ্যমে সেই বিষয়ে স্বচ্ছতা আনার চেষ্টা করছি।
সাক্ষাতকালে অস্ট্রেলিয়া এবং যুক্তরাজ্য হাইকমিশনের প্রতিনিধিরা, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ডা. মোঃ. মুশফিকুর রহমান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মোঃ. সামসুল আরেফিন উপস্থিত ছিলেন।