ঢাকা ০৫:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫, ২১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মঈনুদ্দিনের পরিচয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যবের পরিচয় শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে সব প্রমাণ সরকারের কাছে আছে জেলায় জেলায় সরকারি অর্থে ‘আওয়ামী পল্লি’ উপদেষ্টা পরিষদে যুক্ত হচ্ছেন সি আর আবরার উপদেষ্টা হচ্ছেন ড. আমিনুল ইসলাম পদত্যাগ করলেন নাহিদ ইসলাম বাবরের জীবন থেকে ১৭ বছর কেড়ে নেয় ‘প্রথম আলো’ সোমবার থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চাপমুক্ত প্রশাসন এবং ড. ইউনূসের দর্শন ২৫ ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ পালনের ঘোষণা আনিসুল হকের মুক্তি চেয়ে পোস্টার দিল্লিতে গৃহবন্দী শেখ হাসিনা? গ্যাস-বিদ্যুতে ভয়াবহ ভোগান্তির আশঙ্কা ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ মোদি-হাসিনা মাইনাস: ট্রাম্পের আস্থায় এখন ড. ইউনূস! মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসি গ্যাবার্ডের বাংলাদেশ নিয়ে ভাইরাল ভিডিওর আসল ঘটনা আমি ফিরব, আমাদের শহিদদের প্রতিশোধ নেব’: শেখ হাসিনা অপরাধী হাসিনাকে নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপে ভারত

বঙ্গবন্ধুর নাম বদলে স্বাধীনতাবিরোধী শাহ আজিজের নামে হলের নাম

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৯:৩০:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫
  • / 35
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা চারটি হল ও একটি একাডেমিক ভবনের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

বুধবার (৫ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা গেছে।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ২৬৭তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে “জুলাই-৩৬ হল”, শেখ রাসেল হলের নাম “শহীদ আনাছ হল’, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম “শাহ আজিজুর রহমান হল”, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম “উম্মুল মুমিনীন আয়েশা সিদ্দিকা হল” এবং ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনের নাম “ইবনে সিনা বিজ্ঞান ভবন” করা হয়েছে।

তবে প্রজ্ঞাপনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে শাহ আজিজুর রহমানের নামে নামকরণের সিদ্ধান্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

শাহ আজিজুর রহমান ছিলেন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী। যুদ্ধের সময় তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের আবদুল মোতালেব মালিকের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার সদস্য হন এবং রাজস্বমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি পাকিস্তান কর্তৃক জাতিসংঘে প্রেরিত প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনি জাতিসংঘে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেন যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছে।

১৯২৫ সালে কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করা শাহ আজিজুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীও। ছাত্রনেতা হিসেবে তিনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে মুসলিম লীগের আন্দোলনে অংশ নেন। পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) স্বায়ত্বশাসনের ব্যাপারে তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের বিরোধিতা করেন।

১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে তিনি জাতিসংঘে পাকিস্তান কুটনৈতিক দলের নেতৃত্ব দেন এবং বাংলাদেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যার কথা অস্বীকার করেন। তিনি অন্যান্য মুসলিম দেশকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দিতে আহবান জানান।

পরে স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরোধীতা করার দায়ে পাকিস্তানের সহযোগী হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং দালাল আইনে তার বিচার হয়।

বিএনপি গঠনের পূর্বে ১৯৭৮ সালে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট নামক একটি দল গঠিত হয়। এই দলে তৎকালীন মুসলিম লীগের একটি অংশ নিয়ে শাহ আজিজুর রহমান যোগদান করেন। এই জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট এবং আরও কয়েকটি রাজনৈতিক সংগঠন মিলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গঠিত হলে তিনি এই দলে বেশ প্রভাবশালী নেতায় পরিণত হন। ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমান প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তাকে দেশের প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হয়।

জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিচারপতি আবদুস সাত্তার প্রেসিডেন্ট হলে শাহ আজিজুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর পদে অসীন থাকেন। ১৯৮২ সালে হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ ক্ষমতা গ্রহণ করে শাহ আজিজুর রহমানকে পদচ্যুত করেন। শাহ আজিজুর রহমান ১৯৮৮ সালে মারা যান।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বঙ্গবন্ধুর নাম বদলে স্বাধীনতাবিরোধী শাহ আজিজের নামে হলের নাম

আপডেট সময় : ০৯:৩০:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫

 

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা চারটি হল ও একটি একাডেমিক ভবনের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

বুধবার (৫ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা গেছে।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ২৬৭তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন করে “জুলাই-৩৬ হল”, শেখ রাসেল হলের নাম “শহীদ আনাছ হল’, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম “শাহ আজিজুর রহমান হল”, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম “উম্মুল মুমিনীন আয়েশা সিদ্দিকা হল” এবং ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনের নাম “ইবনে সিনা বিজ্ঞান ভবন” করা হয়েছে।

তবে প্রজ্ঞাপনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে শাহ আজিজুর রহমানের নামে নামকরণের সিদ্ধান্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

শাহ আজিজুর রহমান ছিলেন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী। যুদ্ধের সময় তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের আবদুল মোতালেব মালিকের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার সদস্য হন এবং রাজস্বমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি পাকিস্তান কর্তৃক জাতিসংঘে প্রেরিত প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনি জাতিসংঘে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেন যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছে।

১৯২৫ সালে কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করা শাহ আজিজুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীও। ছাত্রনেতা হিসেবে তিনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে মুসলিম লীগের আন্দোলনে অংশ নেন। পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) স্বায়ত্বশাসনের ব্যাপারে তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের বিরোধিতা করেন।

১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে তিনি জাতিসংঘে পাকিস্তান কুটনৈতিক দলের নেতৃত্ব দেন এবং বাংলাদেশে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যার কথা অস্বীকার করেন। তিনি অন্যান্য মুসলিম দেশকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দিতে আহবান জানান।

পরে স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরোধীতা করার দায়ে পাকিস্তানের সহযোগী হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং দালাল আইনে তার বিচার হয়।

বিএনপি গঠনের পূর্বে ১৯৭৮ সালে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট নামক একটি দল গঠিত হয়। এই দলে তৎকালীন মুসলিম লীগের একটি অংশ নিয়ে শাহ আজিজুর রহমান যোগদান করেন। এই জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করেন। পরে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট এবং আরও কয়েকটি রাজনৈতিক সংগঠন মিলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গঠিত হলে তিনি এই দলে বেশ প্রভাবশালী নেতায় পরিণত হন। ১৯৭৯ সালে জিয়াউর রহমান প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তাকে দেশের প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হয়।

জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বিচারপতি আবদুস সাত্তার প্রেসিডেন্ট হলে শাহ আজিজুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর পদে অসীন থাকেন। ১৯৮২ সালে হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ ক্ষমতা গ্রহণ করে শাহ আজিজুর রহমানকে পদচ্যুত করেন। শাহ আজিজুর রহমান ১৯৮৮ সালে মারা যান।