ঢাকা ০৪:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
তিন দলই প্রধান উপদেষ্টার অধীনে নির্বাচন চায়: প্রেস সচিব টিউলিপ বাংলাদেশি এনআইডি ও পাসপোর্টধারী, রয়েছে টিআইএনও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক নববর্ষের অঙ্গীকার: প্রধান উপদেষ্টা নরেন্দ্র মোদিকে উপহার দেওয়া ছবিটি সম্পর্কে যা জানা গেল বিমসটেকের পরবর্তী চেয়ারম্যান ড. ইউনূস বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে মোদির ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন: প্রেসসচিব চীন সফরে সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের বক্তব্যে ভারতে তোলপাড় ড. ইউনূসকে ঈদগাহের মুসল্লিরাঃ আপনি ৫ বছর দায়িত্বে থাকুন, এটাই দেশের মানুষের চাওয়া বাংলাদেশে বিশ্বমানের হাসপাতালের মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতে বিপ্লবের সূচনা! খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে ঈদের দাওয়াত দিলেন প্রধান উপদেষ্টা যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন সেনাপ্রধান পররাষ্ট্র নীতিতে ড. ইউনূসের কাছে হেরে গেছেন নরেন্দ্র মোদী! ৩ এপ্রিলও ছুটির প্রস্তাব, মিলতে পারে ৯ দিনের ছুটি বউয়ের টিকটকেই ধরা সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ, ‘ক্লু’ ছিল গাড়িতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মঈনুদ্দিনের পরিচয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যবের পরিচয় শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে সব প্রমাণ সরকারের কাছে আছে জেলায় জেলায় সরকারি অর্থে ‘আওয়ামী পল্লি’

বজ্রপাত রোধে বিল্ডিং এ বজ্র নিরোধক দণ্ড

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৯:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪
  • / 232
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বজ্রপাতের উচ্চ মাত্রার বিদ্যুৎ প্রবাহ অনেক সময় ৪০০ কিলো অ্যাম্পিয়ার ছাড়িয়ে যায়। এত উচ্চমাত্রার বিদ্যুৎ প্রবহের ফলে তাপমাত্রা ৫০,০০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ২৭,৭৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পারে। এই প্রচণ্ড উত্তাপে আগুন ধরে যেতে পারে, মানুষসহ জীবজন্তু মারা যেতে পারে। বাড়িঘরের বৈদ্যুতিক সরঞ্জামও বজ্রপাতের ফলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
বজ্রপাত থেকে বাড়ি-ঘর সুরক্ষিত রাখতে যে ব্যবস্থাগুলো নেয়া হয় তার মধ্যে বজ্র নিরোধক দণ্ড অন্যতম।

⚡কি এই বজ্র নিরোধকঃ
দালানের সর্বোচ্চ বিন্দু থেকে মাটি পর্যন্ত বৈদ্যুতিক পথ তৈরী করাই বজ্রনিরোধক ব্যবস্থার উদ্দেশ্য। একটি দালানের বজ্র প্রতিরোধ ব্যবস্থায় থাকে একটি এয়ারটার্মিনাল বা লাইটনিং রড যা দালানের সর্বোচ্চ বিন্দু যথা-সাইলো, ছাদ বা চিমনিতে স্থাপন করা হয়।
এছাড়া থাকে সংযোগ তার ও গ্রাউন্ডিং ইলেকট্রোড। বজ্র প্রতিরোধের জন্য দালানের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থায় অবশ্যই ভাল গ্রাউন্ডিং থাকতে হবে এবং তা আলাদা গ্রাউন্ড সিস্টেমের সাথে যুক্ত হতে হবে।
বজ্রপাতে কোন বিল্ডিংয়ের ক্ষতির সম্ভাব্যতা কমিয়ে আনা যায় যদি উপযুক্ত বজ্রনিরোধক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়।

⚡কি দিয়ে তৈরি হয়?
তামা, অ্যালুমিনিয়াম প্রভৃতি ধাতুর বৈদ্যুতিক রোধের মাত্রা অনেক কম। তাই সাধারণত এসব ধাতু দিয়েই বজ্র নিরোধক দণ্ড তৈরি করা হয়। মোটামুটিভাবে দুই সেন্টিমিটার ব্যাসের তামা বা অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি ধাতব দণ্ড ভবনের ওপর খাড়াভাবে বসিয়ে দেয়া হয়। আর সেটি এক ইঞ্চি বা কাছাকাছি ব্যাসের পরিবাহী তারের মাধ্যমে ভূমিতে সংযুক্ত রাখা হয়।

⚡বজ্র নিরোধক দণ্ড যেভাবে কাজ করেঃ
প্রচলিত একটি ধারণা হচ্ছে বজ্র নিরোধক দণ্ড বজ্রপাত আকর্ষণ করে। আসলে বিষয়টি সেরকম নয়। বজ্র নিরোধক দণ্ড দূর থেকে বজ্র বিদ্যুৎ টেনে আনে না। এটি থাকুক আর নাই থাকুক বজ্র বিদ্যুৎ যেখানে আঘাত করার যেখানেই আঘাত করবে। বজ্র নিরোধক দণ্ডের কাজ হচ্ছে উচ্চমাত্রার বিদ্যুতকে সহজে নিরাপদে মাটিতে পৌঁছানোর সুযোগ করে দেয়া।
প্রবাহের সময় বাধা না পেলে বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে পরিবাহী উত্তপ্ত হয় না, ফলে আগুন ধরার ঝুঁকিও থাকে না। বজ্র নিরোধক দণ্ড এ কাজটিই করে দেয়। বজ্র বিদ্যুৎ সরাসরি বজ্র নিরোধক দণ্ডে আঘাত করলে তো সমস্যাই নেই আর কাছাকাছি আঘাত করলেও কম রোধের পথ পাওয়ার কারণে (বজ্র নিরোধক দণ্ডের কারণে) সে বিদ্যুৎ লাফিয়ে বজ্র নিরোধক দণ্ড পর্যন্ত পৌঁছায় এবং সেখান থেকে মাটিতে চলে যায়।

⚡কিভাবে বিদ্যুৎ নিরোধক স্থাপন করতে হবে?
দালানের ছাদে দৈর্ঘ্য বরাবর ২৫ ফুট পর পর লাইটনিং রড স্থাপন করতে হবে। লাইটনিং রড এর ব্যাস সাধারণত ৫/৮” এবং উচ্চতা ১-২ ফুট পর্যন্ত হয়। দালানের প্রত্যেক কর্ণারে আর্থিং সিস্টেমের সংযোগ থাকা আবশ্যক। বড় দালানের ক্ষেত্রে (পরিধি ২৫০ ফুট এর বেশি) অতিরিক্ত গ্রাউন্ডিং সিস্টেম থাকলে ভাল হয়। মাটিতে ১০০ ফুট পর একটি গ্রাউন্ডিং সিস্টেম থাকা দরকার।
প্রধান তার একটি আর্থিং থেকে শুরু করে প্রত্যেক লাইটনিং রড এর সাথে সংযোগ শেষে অন্য কর্ণারের আর্থিংয়ে গিয়ে শেষ হবে। বৈদ্যুতিক গ্রাউন্ড সিস্টেম ও লাইটনিং গ্রাউন্ড সিস্টেম পরস্পরের সাথে সংযুক্ত থাকা প্রয়োজন। দালানের ভূ-গর্ভস্থ ধাতব পাইপ লাইন থাকলে গ্রাউন্ড সিস্টেমের সাথে সংযুক্ত করতে হবে। গ্রাউন্ড এর সাথে সংযোগ দেয়ার জন্য গ্রাউন্ড রড ব্যবহার করা হলে গ্রাউন্ড রডগুলো পুরোপুরি মাটির ভিতর ঢুকিয়ে উপযুক্ত ক্লাম্প দিয়ে তারের সংযোগ দিতে হবে।

প্রাকৃতিক সুরক্ষাঃ
গ্রামাঞ্চলের ছোট ছোট বাড়ি-ঘরকে সুরক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে তালগাছের মত উঁচু গাছ বেশ কাজে আসে। কাছাকাছি পরিবাহী পদার্থ পাওয়ার কারণে বজ্র বিদ্যুৎ বাড়ি-ঘরের বদলে গাছকে আঘাত করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বজ্রপাত রোধে বিল্ডিং এ বজ্র নিরোধক দণ্ড

আপডেট সময় : ০৮:৫৯:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪

বজ্রপাতের উচ্চ মাত্রার বিদ্যুৎ প্রবাহ অনেক সময় ৪০০ কিলো অ্যাম্পিয়ার ছাড়িয়ে যায়। এত উচ্চমাত্রার বিদ্যুৎ প্রবহের ফলে তাপমাত্রা ৫০,০০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ২৭,৭৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পারে। এই প্রচণ্ড উত্তাপে আগুন ধরে যেতে পারে, মানুষসহ জীবজন্তু মারা যেতে পারে। বাড়িঘরের বৈদ্যুতিক সরঞ্জামও বজ্রপাতের ফলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
বজ্রপাত থেকে বাড়ি-ঘর সুরক্ষিত রাখতে যে ব্যবস্থাগুলো নেয়া হয় তার মধ্যে বজ্র নিরোধক দণ্ড অন্যতম।

⚡কি এই বজ্র নিরোধকঃ
দালানের সর্বোচ্চ বিন্দু থেকে মাটি পর্যন্ত বৈদ্যুতিক পথ তৈরী করাই বজ্রনিরোধক ব্যবস্থার উদ্দেশ্য। একটি দালানের বজ্র প্রতিরোধ ব্যবস্থায় থাকে একটি এয়ারটার্মিনাল বা লাইটনিং রড যা দালানের সর্বোচ্চ বিন্দু যথা-সাইলো, ছাদ বা চিমনিতে স্থাপন করা হয়।
এছাড়া থাকে সংযোগ তার ও গ্রাউন্ডিং ইলেকট্রোড। বজ্র প্রতিরোধের জন্য দালানের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থায় অবশ্যই ভাল গ্রাউন্ডিং থাকতে হবে এবং তা আলাদা গ্রাউন্ড সিস্টেমের সাথে যুক্ত হতে হবে।
বজ্রপাতে কোন বিল্ডিংয়ের ক্ষতির সম্ভাব্যতা কমিয়ে আনা যায় যদি উপযুক্ত বজ্রনিরোধক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়।

⚡কি দিয়ে তৈরি হয়?
তামা, অ্যালুমিনিয়াম প্রভৃতি ধাতুর বৈদ্যুতিক রোধের মাত্রা অনেক কম। তাই সাধারণত এসব ধাতু দিয়েই বজ্র নিরোধক দণ্ড তৈরি করা হয়। মোটামুটিভাবে দুই সেন্টিমিটার ব্যাসের তামা বা অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি ধাতব দণ্ড ভবনের ওপর খাড়াভাবে বসিয়ে দেয়া হয়। আর সেটি এক ইঞ্চি বা কাছাকাছি ব্যাসের পরিবাহী তারের মাধ্যমে ভূমিতে সংযুক্ত রাখা হয়।

⚡বজ্র নিরোধক দণ্ড যেভাবে কাজ করেঃ
প্রচলিত একটি ধারণা হচ্ছে বজ্র নিরোধক দণ্ড বজ্রপাত আকর্ষণ করে। আসলে বিষয়টি সেরকম নয়। বজ্র নিরোধক দণ্ড দূর থেকে বজ্র বিদ্যুৎ টেনে আনে না। এটি থাকুক আর নাই থাকুক বজ্র বিদ্যুৎ যেখানে আঘাত করার যেখানেই আঘাত করবে। বজ্র নিরোধক দণ্ডের কাজ হচ্ছে উচ্চমাত্রার বিদ্যুতকে সহজে নিরাপদে মাটিতে পৌঁছানোর সুযোগ করে দেয়া।
প্রবাহের সময় বাধা না পেলে বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে পরিবাহী উত্তপ্ত হয় না, ফলে আগুন ধরার ঝুঁকিও থাকে না। বজ্র নিরোধক দণ্ড এ কাজটিই করে দেয়। বজ্র বিদ্যুৎ সরাসরি বজ্র নিরোধক দণ্ডে আঘাত করলে তো সমস্যাই নেই আর কাছাকাছি আঘাত করলেও কম রোধের পথ পাওয়ার কারণে (বজ্র নিরোধক দণ্ডের কারণে) সে বিদ্যুৎ লাফিয়ে বজ্র নিরোধক দণ্ড পর্যন্ত পৌঁছায় এবং সেখান থেকে মাটিতে চলে যায়।

⚡কিভাবে বিদ্যুৎ নিরোধক স্থাপন করতে হবে?
দালানের ছাদে দৈর্ঘ্য বরাবর ২৫ ফুট পর পর লাইটনিং রড স্থাপন করতে হবে। লাইটনিং রড এর ব্যাস সাধারণত ৫/৮” এবং উচ্চতা ১-২ ফুট পর্যন্ত হয়। দালানের প্রত্যেক কর্ণারে আর্থিং সিস্টেমের সংযোগ থাকা আবশ্যক। বড় দালানের ক্ষেত্রে (পরিধি ২৫০ ফুট এর বেশি) অতিরিক্ত গ্রাউন্ডিং সিস্টেম থাকলে ভাল হয়। মাটিতে ১০০ ফুট পর একটি গ্রাউন্ডিং সিস্টেম থাকা দরকার।
প্রধান তার একটি আর্থিং থেকে শুরু করে প্রত্যেক লাইটনিং রড এর সাথে সংযোগ শেষে অন্য কর্ণারের আর্থিংয়ে গিয়ে শেষ হবে। বৈদ্যুতিক গ্রাউন্ড সিস্টেম ও লাইটনিং গ্রাউন্ড সিস্টেম পরস্পরের সাথে সংযুক্ত থাকা প্রয়োজন। দালানের ভূ-গর্ভস্থ ধাতব পাইপ লাইন থাকলে গ্রাউন্ড সিস্টেমের সাথে সংযুক্ত করতে হবে। গ্রাউন্ড এর সাথে সংযোগ দেয়ার জন্য গ্রাউন্ড রড ব্যবহার করা হলে গ্রাউন্ড রডগুলো পুরোপুরি মাটির ভিতর ঢুকিয়ে উপযুক্ত ক্লাম্প দিয়ে তারের সংযোগ দিতে হবে।

প্রাকৃতিক সুরক্ষাঃ
গ্রামাঞ্চলের ছোট ছোট বাড়ি-ঘরকে সুরক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে তালগাছের মত উঁচু গাছ বেশ কাজে আসে। কাছাকাছি পরিবাহী পদার্থ পাওয়ার কারণে বজ্র বিদ্যুৎ বাড়ি-ঘরের বদলে গাছকে আঘাত করে।