ঢাকা ০১:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
ড. ইউনূসকে সভাপতি করে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ গঠন আপা আপা বলা তানভীর নিজেই আ.লীগের হাতে নির্যাতিত, আছেন রাজনৈতিক আশ্রয়ে ভল্টের টাকায় অবৈধ বাণিজ্য বিডিআর বিদ্রোহের বিচার পুনরায় করা সম্ভব? সংলাপ, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে যে প্রক্রিয়ায় এগোতে চায় সরকার এবার সরকারের কাছে ৬৩ কোটি ডলার সুদ চাইল রাশিয়া এফবিসিসিআই সভাপতির পদত‍্যাগ, প্রশাসক নিয়োগ তারল্য বাড়াতে ‘বিশেষ ধার’ আগামী সপ্তাহে ৭ হাজার কোটিতে নির্মিত তিন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন বন্ধ গার্মেন্টসে থামছে না অস্থিরতা চাকরি গেল আরো দুই লেফটেন্যান্ট জেনারেলের ওষুধের বাজারে উত্তাপ ব্যাংকিং খাত সংস্কারে ৬ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন সড়ক পরিবহনে আসছে ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ গরুর দিয়ে পাট নিতে চায় পাকিস্তানি সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠন, নেতৃত্বে যারা সংবিধান সংস্কারের উদ্যোগ, কমিশনের দায়িত্বে শাহদীন মালিক ছয় বিশিষ্ট নাগরিককের নেতৃত্বে সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টার শিগগিরই মেট্রোরেলের বন্ধ থাকা স্টেশন চালু হচ্ছে বিদ্যুতের পাওনা চেয়ে ড. ইউনূসকে চিঠি দিয়েছেন গৌতম আদানি

বদলে গেল কেজির সংজ্ঞা, পাল্টায়নি মাপ

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৮:৪৯:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৫০৩৪ বার পড়া হয়েছে
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
এতদিন ফ্রান্সের প্যারিসে দুর্ভেদ্য কাচের পাত্রে সংরক্ষিত প্লাটিনামের সংকর একটি ধাতবখণ্ডের ওজনকে ‘এক কেজি’ ধরে নিয়ে সেইমতো পৃথিবীব্যাপী মাপজোক চলত। দশকের পর দশক ধরে ওই হিসাবে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম তারতম্য পাওয়ায় বেশ চিন্তিত ছিলেন বিজ্ঞানীরা। অবশেষে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক আর ব্রায়ান কিবলের স্কেলে মিলল স্বস্তি।

গাণিতিকভাবে ভরের একক নির্ণয়ের পদ্ধতি ঠিক হওয়ায় এখন যেকোনো জায়গা থেকে, যেকোনো সময়ে কিলোগ্রামের ওজন পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

শুক্রবার ফ্রান্সের ভার্সাইয়ে ওজন ও মাপ নির্ধারণ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিজ্ঞানীরা কিলোগ্রামের নতুন এ সংজ্ঞার সমর্থনে রায় দেন। এর ফলে ‘ল্য গ্রঁদ কে’-র ওজন থেকে নয়; কিলোগ্রামকে সংজ্ঞায়িত করা হবে বৈদ্যুতিক তরঙ্গের আলোকে। 

এতে সাধারণের দৈনন্দিন ওজন মাপামাপিতে পরিবর্তন আসবে না। তবে এর ফলে ওষুধশিল্প, ন্যানো টেকনোলজি ও ধাতব সংমিশ্রণে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে।

১৯৮৯ সাল থেকে প্যারিসে সংরক্ষিত ‘ল্য গ্রঁদ কে’-র প্রমাণ ভরের সমান বাটখারায় কিলোগ্রাম মাপার প্রচলন শুরু হয়েছিল। পৃথিবীর সর্বত্র একই ওজন ব্যবস্থা প্রচলনের জন্য ওই ধাতবখণ্ডের রেপ্লিকা বানিয়ে তা দেশে দেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়। 

এরপর থেকে প্রতি দশকে অন্তত একবার ওই ‘লা গ্রঁদ কে’ ও তার রেপ্লিকাগুলোর ভর মাপা হতো। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মূল ধাতবখণ্ডটি ওজন হারাচ্ছে বলে প্রমাণ পান বিজ্ঞানীরা।

ওজন কমছে রেপ্লিকাগুলোরও। যদিও তা নিয়ে ভাবনা ছিল না, গোল বাধাল ‘লা গ্রঁদ কে’। 

বিশ্লেষকদের ধারণা, ওজন মাপার সময় সংরক্ষিত স্থান থেকে একে বের করে আনা ও ফের ঢোকানো এবং যে কাচের গোলকে এটি ছিল তার কোনো পারিপার্শ্বিকতা বদলের কারণেই মূল পরিমাপকটি ওজন হারাচ্ছে। এ কারণেই এমন একটি পদ্ধতি খোঁজা হচ্ছিল যাতে এ ধরনের আশঙ্কা আর থাকবে না। এবার সাহায্য নেয়া হয়েছে নোবেলজয়ী জার্মান বিজ্ঞানী ম্যাক্স প্ল্যাঙ্কের বৈদ্যুতিক তরঙ্গ মাপার তত্ত্বের।

সেখানেই একটি ধ্রুবক ‘এইচ’ এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়, যা পরে পরিচিত হয়েছিল ‘প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক’ হিসেবে। 

এই এইচের একক হচ্ছে– কিলোগ্রাম বর্গমিটার প্রতি সেকেন্ড। হিসাবটির ভেতরেই কিলোগ্রাম থাকায়, কেবল আয়তন আর সময়ের হিসাব পেলেই কাজ হয়ে যাবে। কিন্তু প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক ‘এইচ’ এর মান এতই ক্ষুদ্র যে তা বের করা এবং এর সঠিকতা ঠিক রাখা বেশ ঝামেলার। তবে এ ঝামেলা থেকে সমাধান দিতে এগিয়ে এসেছেন বিজ্ঞানী ড. ব্রায়ান কিবল। তার সুপার-অ্যাকুরেট সেট অব স্কেল ব্যবহারে ০.০০০০০১ শতাংশ ক্ষেত্রেও ‘এইচ’ পাওয়া যাবে নির্ভুলভাবে।

তবে কিলোগ্রামের নতুন সংজ্ঞা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ফিজিক্স ল্যাবরেটরির (এনপিএল) পেরডি উইলিয়ামস বলেছেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে এই বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, তারপরও কিলোগ্রাম নিয়ে একটি রহস্য ছিল। তবে বিজ্ঞানীরা ওজনে নতুন মানদণ্ড নিয়ে আসায় আমার দারুণ লাগছে। আসলেই এটা একটা যুগান্তকারী ঘটনা ও চমৎকার একটি মুহূর্ত। আমার ব্যক্তিগত অভিমত, নতুন পদ্ধতি আগের তুলনায় ভালো কাজ করবে।

এনপিএলের আরেক বিজ্ঞানী ইয়ান রবিনসন বলেন, ‘আমার কাছে এটা চমৎকার অনুভূতি হচ্ছে। মনে হচ্ছে এটিই সঠিক সিদ্ধান্ত। যখন আমরা এটি বাস্তবায়ন করতে পারব, তা স্থিতিশীল থাকবে সুদূর ভবিষ্যত পর্যন্ত।’

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বদলে গেল কেজির সংজ্ঞা, পাল্টায়নি মাপ

আপডেট সময় : ০৮:৪৯:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
এতদিন ফ্রান্সের প্যারিসে দুর্ভেদ্য কাচের পাত্রে সংরক্ষিত প্লাটিনামের সংকর একটি ধাতবখণ্ডের ওজনকে ‘এক কেজি’ ধরে নিয়ে সেইমতো পৃথিবীব্যাপী মাপজোক চলত। দশকের পর দশক ধরে ওই হিসাবে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম তারতম্য পাওয়ায় বেশ চিন্তিত ছিলেন বিজ্ঞানীরা। অবশেষে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক আর ব্রায়ান কিবলের স্কেলে মিলল স্বস্তি।

গাণিতিকভাবে ভরের একক নির্ণয়ের পদ্ধতি ঠিক হওয়ায় এখন যেকোনো জায়গা থেকে, যেকোনো সময়ে কিলোগ্রামের ওজন পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

শুক্রবার ফ্রান্সের ভার্সাইয়ে ওজন ও মাপ নির্ধারণ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিজ্ঞানীরা কিলোগ্রামের নতুন এ সংজ্ঞার সমর্থনে রায় দেন। এর ফলে ‘ল্য গ্রঁদ কে’-র ওজন থেকে নয়; কিলোগ্রামকে সংজ্ঞায়িত করা হবে বৈদ্যুতিক তরঙ্গের আলোকে। 

এতে সাধারণের দৈনন্দিন ওজন মাপামাপিতে পরিবর্তন আসবে না। তবে এর ফলে ওষুধশিল্প, ন্যানো টেকনোলজি ও ধাতব সংমিশ্রণে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে।

১৯৮৯ সাল থেকে প্যারিসে সংরক্ষিত ‘ল্য গ্রঁদ কে’-র প্রমাণ ভরের সমান বাটখারায় কিলোগ্রাম মাপার প্রচলন শুরু হয়েছিল। পৃথিবীর সর্বত্র একই ওজন ব্যবস্থা প্রচলনের জন্য ওই ধাতবখণ্ডের রেপ্লিকা বানিয়ে তা দেশে দেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়। 

এরপর থেকে প্রতি দশকে অন্তত একবার ওই ‘লা গ্রঁদ কে’ ও তার রেপ্লিকাগুলোর ভর মাপা হতো। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মূল ধাতবখণ্ডটি ওজন হারাচ্ছে বলে প্রমাণ পান বিজ্ঞানীরা।

ওজন কমছে রেপ্লিকাগুলোরও। যদিও তা নিয়ে ভাবনা ছিল না, গোল বাধাল ‘লা গ্রঁদ কে’। 

বিশ্লেষকদের ধারণা, ওজন মাপার সময় সংরক্ষিত স্থান থেকে একে বের করে আনা ও ফের ঢোকানো এবং যে কাচের গোলকে এটি ছিল তার কোনো পারিপার্শ্বিকতা বদলের কারণেই মূল পরিমাপকটি ওজন হারাচ্ছে। এ কারণেই এমন একটি পদ্ধতি খোঁজা হচ্ছিল যাতে এ ধরনের আশঙ্কা আর থাকবে না। এবার সাহায্য নেয়া হয়েছে নোবেলজয়ী জার্মান বিজ্ঞানী ম্যাক্স প্ল্যাঙ্কের বৈদ্যুতিক তরঙ্গ মাপার তত্ত্বের।

সেখানেই একটি ধ্রুবক ‘এইচ’ এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়, যা পরে পরিচিত হয়েছিল ‘প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক’ হিসেবে। 

এই এইচের একক হচ্ছে– কিলোগ্রাম বর্গমিটার প্রতি সেকেন্ড। হিসাবটির ভেতরেই কিলোগ্রাম থাকায়, কেবল আয়তন আর সময়ের হিসাব পেলেই কাজ হয়ে যাবে। কিন্তু প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক ‘এইচ’ এর মান এতই ক্ষুদ্র যে তা বের করা এবং এর সঠিকতা ঠিক রাখা বেশ ঝামেলার। তবে এ ঝামেলা থেকে সমাধান দিতে এগিয়ে এসেছেন বিজ্ঞানী ড. ব্রায়ান কিবল। তার সুপার-অ্যাকুরেট সেট অব স্কেল ব্যবহারে ০.০০০০০১ শতাংশ ক্ষেত্রেও ‘এইচ’ পাওয়া যাবে নির্ভুলভাবে।

তবে কিলোগ্রামের নতুন সংজ্ঞা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ফিজিক্স ল্যাবরেটরির (এনপিএল) পেরডি উইলিয়ামস বলেছেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে এই বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, তারপরও কিলোগ্রাম নিয়ে একটি রহস্য ছিল। তবে বিজ্ঞানীরা ওজনে নতুন মানদণ্ড নিয়ে আসায় আমার দারুণ লাগছে। আসলেই এটা একটা যুগান্তকারী ঘটনা ও চমৎকার একটি মুহূর্ত। আমার ব্যক্তিগত অভিমত, নতুন পদ্ধতি আগের তুলনায় ভালো কাজ করবে।

এনপিএলের আরেক বিজ্ঞানী ইয়ান রবিনসন বলেন, ‘আমার কাছে এটা চমৎকার অনুভূতি হচ্ছে। মনে হচ্ছে এটিই সঠিক সিদ্ধান্ত। যখন আমরা এটি বাস্তবায়ন করতে পারব, তা স্থিতিশীল থাকবে সুদূর ভবিষ্যত পর্যন্ত।’