বিশ্ব ইজতেমার ময়দান ঘিরে বাড়ছে উদ্বেগ
- আপডেট সময় : ১১:৪৩:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 66
২০২৫ সালের বিশ্ব ইজতেমার আগেই ২০২৪ সালে জোড় ইজতেমাকে ঘিরে ময়দানের চারিদিকে বাড়ছে উদ্বেগ ও উত্তেজনা। ২০১৮ সালের মতো শৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কা করছে অনেকে। এই আশঙ্কা শুরু হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দিনভর নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে।
গাজীপুরের টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার ময়দান এলাকায় হামলা চালিয়ে সাদপন্থীদের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে মাওলানা জুবায়ের অনুসারীর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় সাদপন্থীদের ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরব্বি মাওলানা বসির (৫২), মাওলানা আতাউর (৫৪) প্রকৌশলী মহিবুল্লাহ্সহ ৫/৬জন আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল দুপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মন্নুগেট এলাকায় মাওলানা জুবায়েরের পাঁচ শতাধিক অনুসারী অবস্থান নেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মহাসড়ক অবরোধ করে জুবায়ের অনুসারীরা বিক্ষোভ করলে মহাসড়কের উভয়পাশে তীব্র যানজট দেখা দেয়।
পরে পুলিশের অনুরোধে বিক্ষুব্ধরা মহাসড়ক ছেড়ে ইজতেমা ময়দানে চলে যায়।
জানা যায়, মাওলানা জুবায়ের অনুসারীদের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত গত ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত জোড় ইজতেমা পালন করেন কয়েক হাজার মুসল্লি। এরপর দ্বিতীয় ধাপে আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে ২৫ ডিসেম্বরে জোড় ইজতেমা আয়োজনের অনুমতি চায় ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভির আয়োজক কমিটির (বাংলাদেশের) শীর্ষ মুরব্বিরা। তবে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে দ্বিতীয় দফায় জোড় ইজতেমার অনুমতি দেওয়া হয়নি মাওলানা সাদ অনুসারীদের।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলবির ইজতেমা আয়োজক কমিটির কয়েকজন শীর্ষ মুরব্বি ইজতেমা ময়দানের পশ্চিম অংশে যান। এতে বাধা দেন জুবায়ের অনুসারীরা। ময়দানে প্রবেশ করতে না পেরে সাদ অনুসারীরা পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় আসেন। পরে পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় সাদপন্থীরা ময়দানের দিকে রওনা হলে আগে থেকেই লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান করা জুবায়ের অনুসারীরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মন্নুগেট এলাকায় সাদ অনুসারীদের মাইক্রোবাসে ভাঙচুর চালায়। এ সময় প্রাইভেটকারে থাকা সাদ অনুসারীদের পাঁচজন আহত হন।
পরে আহতদের উদ্ধার করে রাজধানীর উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
জুবায়েরপন্থী ইজতেমা আয়োজক কমিটির মুরব্বি মাহফুজ হান্নান জানান, গতকাল তারা ইজতেমা ময়দানের বিদেশি মেহমানখানায় প্রবেশের চেষ্টা করেন। তাদের ময়দানে জোড় ইজতেমা আয়োজন করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তারা অবৈধভাবে ময়দানে প্রবেশের চেষ্টা করলে আমাদের সাথীরা (জুবায়ের অনুসারী) তাদের প্রতিহত করে।
ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভির ইজতেমা আয়োজক কমিটির গণমাধ্যম সমন্বয়ক মুহাম্মদ সায়েম বলেন, ‘আগামী ২০ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ধাপে জোড় ইজতেমা আয়োজন করতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার অপরাধ (দক্ষিণ) কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। পরে পুলিশ সদস্যদের নিয়ে উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলাম। আমরা ময়দানে প্রবেশ করিনি। তারা আমাদের একটি প্রাইভেটকারে ভাঙচুর করে পাঁচজনকে আহত করেছে।’
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশন অপরাধ (দক্ষিণ) মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে ঘণ্টাব্যাপী ২০১৮ সালে সাদপন্থীদের হামলার বিচারের দাবি জানায়। এ সময় তারা সাদ অনুসারীদের একটি প্রাইভেটকারে ভাঙচুর করে।’