ঢাকা ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বে নির্বাচন সংস্কার কমিশন গঠন আমি স্যামসাং ব্যবহার করি, স্ক্রিনশট গেছে আইফোনের : জনপ্রশাসন সচিব উন্নয়নের ভ্রান্ত ধারণা: ঋণে ডুবে থাকা দেশ টাইম ম্যাগাজিনের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় নাহিদ ইসলাম আমার টাকা-পয়সার প্রতি লোভ নেই, ৫ কোটি হলেই চলবে এক দিনেই হাওয়া ৮ হাজার কোটি টাকার বাজার মূলধন অবশেষে দেখা মিলল আসাদুজ্জামান কামালের ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ কারাগারে কেমন আছেন ‘ভিআইপি’ বন্দীরা একটি ফোনকল যেভাবে বদলে দিয়েছে ড. ইউনূসের জীবনের গতিপথ ড. ইউনুসের Three Zeros থিয়োরি বর্তমান উপদেষ্টাদের সঙ্গে নতুন চার-পাঁচজন মুখ যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা কয়েকটি জাতীয় দিবস বাতিল করতে পারে সরকার সমবায় ব্যাংকের ১২ হাজার ভরি স্বর্ণ গায়েব: উপদেষ্টা “প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস: বাংলার গর্ব, বৈশ্বিক সম্প্রীতির প্রতীক” খেলোয়াড় সাকিবের নিরাপত্তা আছে, ফ্যাসিস্ট সাকিবের ক্ষেত্রে অবান্তর: ক্রীড়া উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সম্মেলন থেকে কী অর্জন করলেন? জাতিসংঘে তিন-শুন্যের ধারণা দিলেন ড. ইউনুস যন্ত্রণার নাম ব্যাটারি রিকশা তরুণ সমাজের অফুরান শক্তি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে— ড. ইউনূস

ব্রোকেন ফ্যামিলির সন্তান ও আমাদের মানসিকতা

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ১০:৫৩:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ মে ২০২২ ৩৪ বার পড়া হয়েছে
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
কেস স্টাডি ১

প্রিয়াংকা (ছদ্মনাম)  অবশেষে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলো। মাদকাসক্ত স্বামীর একের পর এক এত মিথ্যাচার, সংসারের প্রতি উদাসীনতা, ভরণপোষণ না  দেয়া… আর পেরে উঠছিলো না প্রিয়াংকা। অবশেষে ডিভোর্সের পর নির্ভার জীবন। দায়িত্বহীন লোকটি যে কি না তার সন্তানের বাবা, একবারও সন্তানের খোঁজ নেয় না। প্রিয়াংকা একাই তার সন্তানকে নিয়ে বাস করছে এই নগরে। মোটামুটি এক রকম চলে যায় জীবন। সন্তানের জন্যই তো এত কষ্ট মাথা পেতে নেয়। সন্তানের দিকে তাকালে সব কষ্ট ভুলে যায় প্রিয়াংকা। সন্তানের বিন্দুমাত্র অযত্ন করে না সে। কিন্তু সে লক্ষ্য করে, ব্রোকেন ফ্যামিলির সন্তান বলে কেউ ওর সন্তানদের সাথে বিকেলে খেলতে চায় না। অন্যান্য অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের মানা করে দেয় যেন, প্রিয়াংকার ছেলের সাথে ওরা না মেশে।

কেস স্টাডি ২
বাদশাহ ফয়সালের (ছদ্মনাম) বয়স ৯ বছর। সে মনে মনে ভাবে তার এমন রাজা বাদশাহের নাম কে রেখেছে? বাবা নাকি মা? জানে না সে। সে এখন বড় হচ্ছে এক এতিমখানায়। সেখানকার মাদ্রাসায় পড়ে। পড়ায় একটু ভুল হলেই হুজুরেরা এমন মার দেয়! মুখ বুজে সব সহ্য করে বাদশাহ ফয়সাল। রাজা বাদশাহেরা কি এতিমখানায় বড় হয়? এভাবে মার খায় কারো? বাদশাহ ফয়সাল ভাবে। কিন্তু সে তো এতিম নয়। তার বাবা মা দুজনেই বেঁচে আছে। এক সময় সবাই তাকে কত আদর করতো! বাবা মায়ের কথা মনে করতে ইচ্ছে করে না ওর। কিন্তু মনে পড়েই যায়। এই যেমন সেদিন, এতিমখানা থেকে গিয়েছিলো নানীর বাড়িতে। সেদিন নানী বাড়িতে মেহমানেরাও বেড়াতে এসেছে। বাদশাহ ফয়সালকে দেখেই মেহমানদের মনে নানা প্রশ্ন। ওর সামনেই সবাই আলোচনা করলো, ওর মা কিভাবে পরকিয়া করে আরেক লোকের হাত ধরে, স্বামী সংসার সন্তান সব মায়া পেছনে ফেলে পালিয়ে গেছে। আর কিছুদিন পরে ওর বাবাও বিয়ে করেছে আরেকজনকে। তারপর আদরের বাদশাহ ফয়সাল হয়েছে সবার কাছে একটা আপদ। তাই তার ঠাঁই হলো এতিমখানায়। এসব কথা বলতে বলতেই একজন পুরোনো এলবাম খুলে ওর মায়ের ছবি বের করে দেখালো। কতদিন মাকে দেখে নি ফয়সাল! মায়ের ছবি দেখে হু হু করে কেঁদে ফেলে সে।

কেস স্টাডি ৩
রিতু ও কবিরের (ছদ্মনাম) সংসার ছয় বছরের। বেশ সুখী দম্পত্তি ওরা। ওদের ঘর আলো করে আছে দশ বছরের মেয়ে প্রিয়ন্তি (ছদ্মনাম)। ভাবছেন, ছয় বছরের সংসারে দশ বছরের সন্তান কী করে এলো? প্রিয়ন্তি রিতুর আগের ঘরে সন্তান। এটি ওর দ্বিতীয় বিয়ে। আর কবিরের প্রথম বিয়ে। বাবা হিসেবে কবির অসাধারণ। কবিরকে দেখলে কেউ বুঝতেই পারবে না, সে যে প্রিয়ন্তির সৎ বাবা! দুজনের মধ্যে খুব সুন্দর সম্পর্ক। এমন একজন ব্যক্তিকে নিজের সংগী হিসেবে পেয়ে রিতু ভীষণ আনন্দিত।

কেস স্টাডি ৪
উচ্চ মাধ্যমিকের পর ইমতিয়াজের (ছদ্মনাম) খুব ইচ্ছে ছিলো সেনাবাহিনীতে যোগদান করবে। সেভাবেই নিজেকে সে তৈরি করছিলো। কোনো দিক থেকেই তার যোগ্যতার ঘাটতি ছিলো না। সবকিছুতে উৎড়ে গেলেও বাদ পড়ে গেলো একটা কারণে। সে ব্রোকেন ফ্যামিলির সন্তান। শুধুমাত্র এই এক পারিবারিক কারণে নিজের স্বপ্নটাকে ছুঁতে পারলো না ইমতিয়াজ। অথচ বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পেছনে ওর কোনো হাত ছিলো না!

প্রতিটি মানুষের শৈশব বা কৈশোরের বর্ণালী দিনগুলো জীবনেমাত্র একবারই আসে। বারবার ফিরে পাওয়া যায় না এ সময়গুলো। তাইতো স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মানুষ সুন্দর এ দিনগুলোতে ফিরে ফিরে আসতে চায়। কিন্তু সবার শৈশব একই রকম থাকে না। শৈশবেই বাস্তবতার বিশ্রী দিকটি দেখে ফেলতে বাধ্য হয় কেউ কেউ। অথচ চাইলেই আমরা তা সহজেই সুন্দর রাখতে পারি।

বর্তমান সময়ে বিবাহ বিচ্ছেদের হার দিন দিন বাড়ছে। ২০২০ এর জুন থেকে অক্টোবরে দেশে ডিভোর্সের হার বেড়েছে ৩০% আর দৈনিক বিচ্ছেদ হচ্ছে ৩৯ টি (সূত্রঃ প্রথম আলো)। সঙ্গত কারণে নিশ্চয়ই এ বিচ্ছেদগুলো হচ্ছে। বিচ্ছেদ যেমন বাড়ছে, সেই সাথে বাড়ছে ব্রোকেন ফ্যামিলির সন্তানও।

বিচ্ছেদের ফলে ব্যক্তির নিজের উপর যেমন প্রভাব পড়ে, তেমনি পড়ে সন্তানদের উপর। বাবা মায়ের বিচ্ছেদের ফলে সন্তানদের মধ্যে সাধারণত কিছু প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। বাবা মায়ের বিচ্ছেদের ফলে তাদের মনে এমনিতেই এক ধরনের বিষাদতৈরি হয়। আর এর মধ্যে অতি উৎসাহী, কৌতুহলী আত্মীয়স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীরা তাদের সামনে বাবা মায়ের বিচ্ছেদ নিয়ে আলোচনা বা নানা রকম প্রশ্ন করে বিব্রত করে থাকে। এ শিশুদের শৈশব অন্যদের মতো নয়। তারা আর কখনোই বাবা মাকে আগের মতো কাছে পাবে না। স্কুলের অভিভাবকদের মিটিং বা নিজের জন্মদিন , কোন উৎসবে, কোথাও বেড়াতে গেলে বাবা মা দুজনকেই আর একত্রে পাবে না। স্কুলেও অন্যান্য জায়গায় অন্য বাবা-মা- সন্তানসহ পরিবার দেখলেও তাদের খারাপ লাগতে পারে। স্কুলের শিক্ষকেরাও এ শিশুদের অন্যদের চেয়ে ভিন্ন নজরে দেখে থাকেন। আমরা বলি বটে, সকল শিশু সমান। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমরা নিজেরাই শিশুদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করছি নানা ভাবে।

যে সময়টাতে প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়ানোর কথা, সে সময়টাতে এ শিশুরা নিজেদের আবেগ অনুভূতি শামুকের মতো গুটিয়ে রাখতেই বরং পছন্দ করে। ফলে তাদেরকে বাবা মা কিংবা শিক্ষকেরা ঠিকমতো বুঝতে পারেন না। বাবা /মার অভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে পারে শিশু। অনেক ক্ষেত্রে বাবা /মায়ের আবার বিয়েও তারা স্বাভাবিকভাবে নিতে পারে না। সৎ বাবা/মা মমতাময় না হলে তাদের জীবন হয়, আরো দূর্বিষহ। অনেক ক্ষেত্রে বাবা/মায়ের আবার বিয়ের কারণে নতুন পরিবারেও তাদের ঠাঁই হয় না। তারা যেন “না ঘর কা না ঘাট কা”। শিশুর ভরনপোষণের দায়িত্ব যথাযথভাবে নেয়া না হলে, আর্থিককারণেও শিশুটি অন্যের কাছে ছোট হয়ে থাকে। অনেকটা আশ্রিতের মতো বড় হয় আত্মীয়দের বাড়িতে। ফলে নিজের ব্যক্তিত্ব সুন্দরভাবে গড়ে ওঠে না। মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ হয়।

বাবা/মায়ের বিচ্ছেদের ফলে সন্তান কার কাছে থাকবে, সে সিদ্ধান্ত অনেক সময় শিশু নিজে নিতে পারে না। বাবা কিংবা মায়ের প্রভাবে, আইনি কোন সিদ্ধান্তের কারণে নিজের অনিচ্ছাতেও সে কারো কাছে থাকতে পারে। অনেক সময় বাবা/মা সন্তানকে কুক্ষিগত করে রাখতে চান। সন্তানের কাছে বাবা/মায়ের কুৎসা করেন। এসবেরও বিরূপ প্রভাব শিশুর মনে পড়ে।

আমাদের রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থায় ডিভোর্সকে অত্যন্ত নেতিবাচকভাবে দেখা হয়। ফলে এ ধরনের ভাঙ্গা পরিবারকে, ঐ পরিবারের শিশুদেরকে সমাজ স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে না।  নেতিবাচক চিন্তাভাবনার কারণে অন্য অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদেরকে মানা করে দেন, যেন ভাঙ্গা পরিবারের শিশুদের সাথে না মেশে। ফলে ওদের সামাজিক দক্ষতাও বাধাগ্রস্থ হয়। পড়ালেখার পাশাপাশি ক্যারিয়ারেও পরবর্তীতে এর বাজে প্রভাব পড়তে পারে।  অথচ বাবা মায়ের বিচ্ছেদের জন্য এ শিশু দায়ী নয়।

বাবা/মায়ের মধ্যকার সুন্দর সম্পর্ক বা পারিবারিক কোন সুন্দর মুহূর্তের স্মৃতি শিশুটির মধ্যে সেভাবে না থাকায়, সে নিজেও পরবর্তীতে কোনো সম্পর্ক তৈরিতে দক্ষ হয় না। রোমান্টিক কোন সম্পর্কে এগিয়ে যেতে তার মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব থাকে। এমন কি হতাশা বা বিষন্নতা থেকে মাদকাসক্তও হয়ে পড়তে পারে। এ শিশুরা যেমন অবহেলিত তেমনি আবার কখনো কখনো অতিরিক্ত প্রশ্রয়ও পেয়ে থাকে। শিশুর অভিভাবক বা শুভাকাঙ্খীরা ভাবেন, ‘’আহা, বাচ্চাটার মা/বাবা কাছে নেই।‘’ ফলে শিশুর আচরণ বা কাজের ত্রুটি থাকলে সংশোধন করেন না। কিংবা মা/বাবার অভাব অনেক বেশি দামী উপহার/চকলেট দিয়ে পূরণ করতে চান। না চাইতেই সব আবদার মিটিয়ে ফেলা হয়।অতিরিক্ত প্রশ্রয়ের ফল যে ভালো হয় না, সে কথা নতুন করে বলার কিছু নেই।

আবার অবহেলিত শিশুদের সংকট আরেক ধরনের। এই শিশুরা বাবা/মায়ের থেকে দূরে থাকতে পারে, যোগাযোগ না থাকতে পারে। ফলে তারা বাবা/মায়ের যথেষ্ঠ আদর বা মনোযোগ সেভাবে পায় না।তারা ঐ মনোযোগটা তখন অন্য কারো কাছ থেকে পেতে চাইবে। স্নেহ ভালোবাসার একরকম কাঙাল হয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে সুযোগসন্ধানী ব্যক্তিরা তাদেরকে খুব সহজেই আদর/স্নেহের মাধ্যমে বশ করে ফেলতে পারে। এতে সে শিশু অনেক ধরনের ঝুঁকিতে পড়ে যেতে পারে। যৌন নিগৃহ থেকে শুরু করে কোন নির্দিষ্ট মতবাদের উগ্রচরমপন্থী দলে ভীরে যেতে পারে খুব সহজেই। এটা যে শুধু ভাঙ্গা পরিবারগুলোতেই হবে এমন নয়। যেসব পরিবারে সন্তানদের সাথে বাবা/মায়ের সম্পর্ক সহজ সুন্দর নয়, সেখানেই এসবের ঝুঁকি বেশি। আর ভাঙ্গা পরিবারের সন্তানদের মধ্যে এ ঝুঁকি আরো বেশি কারণ, এমন শিশু কিশোরেরা সাধারণত দুর্বল ব্যক্তিত্বের হয়ে থাকে। আত্মবিশ্বাস কম থাকে তাদের। হীনমন্যতাতেও ভুগতে পারে।

ডিভোর্স পরবর্তী সন্তানের এতো সমস্যার কথা চিন্তা করে অনেকেই দূর্বিষহ পারিবারিক একটি জীবন যাপন করে যাচ্ছেন। নামে মাত্র পারিবারিক জীবন। যাতে কোন প্রাণ নেই। সঙ্গত কারণেই মানুষ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। কারণ, জীবনটা তার। আর যখন বিচ্ছেদ হয়ে গেছে, জীবনের বাস্তবতাকে মেনে নিয়েই সামনে পথ চলতে হবে।  আর সামনে এগিয়ে চলাটা শুধু নিজে জানলেই চলবে না, সন্তানকেও বোঝাতে হবে। সততার সাথে তাকে বুঝিয়ে বলতে হবে, কেন এ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে বা হয়েছে। কিন্তু তাই বলে অপরপক্ষের দূর্নাম করা উচিত হবে না। বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তে সন্তান যেন নিজেকে অবহেলিত না ভাবে। সন্তানের বিভিন্ন বিষয়ের সিদ্ধান্ত প্রয়োজনে দুজনে মিলেই নিতে হবে। প্রসঙ্গত বলা যায়, দেশের জনপ্রিয় গায়ক তাহসান ও অভিনেত্রী মিথিলার কথা। তাদের আলোচিত বিচ্ছেদের পরে, সন্তান নিয়ে পরস্পরেরপ্রতিসহযোগিতাপূর্ণ ও শ্রদ্ধাশীল মনোভাবথেকে আমাদের সবারই শেখার আছে।

সন্তানকে অবশ্যই কোয়ালিটি সময় দিতে হবে। জীবনে অনেক খারাপ সময় যায় মানুষের। কিন্তু সন্তানের শৈশব আর ফিরে আসবে না। আপনার খারাপ সময় এক দিন কেটে যাবে। সব দুঃখ জয় করে আবার উঠে দাঁড়াবেন। কিন্তু তাই বলে সন্তানের শৈশব যেন হারিয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। চারপাশে কৌতুহলী আত্মীয়দের নানা রকম প্রশ্ন ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। কিন্তু এদের মাঝেই কিভাবে নিজেকে ঠিক রেখে চলতে হয়, তা শিখে নিতে হয়।কখনো যদি আবার নতুন সম্পর্ক বা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেবার প্রয়োজন হয়, সন্তানের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেই এগোতে হবে।

আর উৎসাহী জনগণ হিসেবে আমাদেরকেও কৌতুহলের লাগাম টেনে ধরা শিখতে হবে। একটি পরিবার ভাঙার জন্য স্বামী স্ত্রী দায়ী হতে পারেন, কিন্তু তাদের সন্তান নয়। সুতরাং সে শিশুটিকে আপনার নিজের সন্তানের মতোই সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে দিন। তাকে শান্তিতে দম নিতে দিন। প্রতিটি শিশুর শৈশব হোক সুন্দর।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ব্রোকেন ফ্যামিলির সন্তান ও আমাদের মানসিকতা

আপডেট সময় : ১০:৫৩:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ মে ২০২২
কেস স্টাডি ১

প্রিয়াংকা (ছদ্মনাম)  অবশেষে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলো। মাদকাসক্ত স্বামীর একের পর এক এত মিথ্যাচার, সংসারের প্রতি উদাসীনতা, ভরণপোষণ না  দেয়া… আর পেরে উঠছিলো না প্রিয়াংকা। অবশেষে ডিভোর্সের পর নির্ভার জীবন। দায়িত্বহীন লোকটি যে কি না তার সন্তানের বাবা, একবারও সন্তানের খোঁজ নেয় না। প্রিয়াংকা একাই তার সন্তানকে নিয়ে বাস করছে এই নগরে। মোটামুটি এক রকম চলে যায় জীবন। সন্তানের জন্যই তো এত কষ্ট মাথা পেতে নেয়। সন্তানের দিকে তাকালে সব কষ্ট ভুলে যায় প্রিয়াংকা। সন্তানের বিন্দুমাত্র অযত্ন করে না সে। কিন্তু সে লক্ষ্য করে, ব্রোকেন ফ্যামিলির সন্তান বলে কেউ ওর সন্তানদের সাথে বিকেলে খেলতে চায় না। অন্যান্য অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের মানা করে দেয় যেন, প্রিয়াংকার ছেলের সাথে ওরা না মেশে।

কেস স্টাডি ২
বাদশাহ ফয়সালের (ছদ্মনাম) বয়স ৯ বছর। সে মনে মনে ভাবে তার এমন রাজা বাদশাহের নাম কে রেখেছে? বাবা নাকি মা? জানে না সে। সে এখন বড় হচ্ছে এক এতিমখানায়। সেখানকার মাদ্রাসায় পড়ে। পড়ায় একটু ভুল হলেই হুজুরেরা এমন মার দেয়! মুখ বুজে সব সহ্য করে বাদশাহ ফয়সাল। রাজা বাদশাহেরা কি এতিমখানায় বড় হয়? এভাবে মার খায় কারো? বাদশাহ ফয়সাল ভাবে। কিন্তু সে তো এতিম নয়। তার বাবা মা দুজনেই বেঁচে আছে। এক সময় সবাই তাকে কত আদর করতো! বাবা মায়ের কথা মনে করতে ইচ্ছে করে না ওর। কিন্তু মনে পড়েই যায়। এই যেমন সেদিন, এতিমখানা থেকে গিয়েছিলো নানীর বাড়িতে। সেদিন নানী বাড়িতে মেহমানেরাও বেড়াতে এসেছে। বাদশাহ ফয়সালকে দেখেই মেহমানদের মনে নানা প্রশ্ন। ওর সামনেই সবাই আলোচনা করলো, ওর মা কিভাবে পরকিয়া করে আরেক লোকের হাত ধরে, স্বামী সংসার সন্তান সব মায়া পেছনে ফেলে পালিয়ে গেছে। আর কিছুদিন পরে ওর বাবাও বিয়ে করেছে আরেকজনকে। তারপর আদরের বাদশাহ ফয়সাল হয়েছে সবার কাছে একটা আপদ। তাই তার ঠাঁই হলো এতিমখানায়। এসব কথা বলতে বলতেই একজন পুরোনো এলবাম খুলে ওর মায়ের ছবি বের করে দেখালো। কতদিন মাকে দেখে নি ফয়সাল! মায়ের ছবি দেখে হু হু করে কেঁদে ফেলে সে।

কেস স্টাডি ৩
রিতু ও কবিরের (ছদ্মনাম) সংসার ছয় বছরের। বেশ সুখী দম্পত্তি ওরা। ওদের ঘর আলো করে আছে দশ বছরের মেয়ে প্রিয়ন্তি (ছদ্মনাম)। ভাবছেন, ছয় বছরের সংসারে দশ বছরের সন্তান কী করে এলো? প্রিয়ন্তি রিতুর আগের ঘরে সন্তান। এটি ওর দ্বিতীয় বিয়ে। আর কবিরের প্রথম বিয়ে। বাবা হিসেবে কবির অসাধারণ। কবিরকে দেখলে কেউ বুঝতেই পারবে না, সে যে প্রিয়ন্তির সৎ বাবা! দুজনের মধ্যে খুব সুন্দর সম্পর্ক। এমন একজন ব্যক্তিকে নিজের সংগী হিসেবে পেয়ে রিতু ভীষণ আনন্দিত।

কেস স্টাডি ৪
উচ্চ মাধ্যমিকের পর ইমতিয়াজের (ছদ্মনাম) খুব ইচ্ছে ছিলো সেনাবাহিনীতে যোগদান করবে। সেভাবেই নিজেকে সে তৈরি করছিলো। কোনো দিক থেকেই তার যোগ্যতার ঘাটতি ছিলো না। সবকিছুতে উৎড়ে গেলেও বাদ পড়ে গেলো একটা কারণে। সে ব্রোকেন ফ্যামিলির সন্তান। শুধুমাত্র এই এক পারিবারিক কারণে নিজের স্বপ্নটাকে ছুঁতে পারলো না ইমতিয়াজ। অথচ বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পেছনে ওর কোনো হাত ছিলো না!

প্রতিটি মানুষের শৈশব বা কৈশোরের বর্ণালী দিনগুলো জীবনেমাত্র একবারই আসে। বারবার ফিরে পাওয়া যায় না এ সময়গুলো। তাইতো স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মানুষ সুন্দর এ দিনগুলোতে ফিরে ফিরে আসতে চায়। কিন্তু সবার শৈশব একই রকম থাকে না। শৈশবেই বাস্তবতার বিশ্রী দিকটি দেখে ফেলতে বাধ্য হয় কেউ কেউ। অথচ চাইলেই আমরা তা সহজেই সুন্দর রাখতে পারি।

বর্তমান সময়ে বিবাহ বিচ্ছেদের হার দিন দিন বাড়ছে। ২০২০ এর জুন থেকে অক্টোবরে দেশে ডিভোর্সের হার বেড়েছে ৩০% আর দৈনিক বিচ্ছেদ হচ্ছে ৩৯ টি (সূত্রঃ প্রথম আলো)। সঙ্গত কারণে নিশ্চয়ই এ বিচ্ছেদগুলো হচ্ছে। বিচ্ছেদ যেমন বাড়ছে, সেই সাথে বাড়ছে ব্রোকেন ফ্যামিলির সন্তানও।

বিচ্ছেদের ফলে ব্যক্তির নিজের উপর যেমন প্রভাব পড়ে, তেমনি পড়ে সন্তানদের উপর। বাবা মায়ের বিচ্ছেদের ফলে সন্তানদের মধ্যে সাধারণত কিছু প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। বাবা মায়ের বিচ্ছেদের ফলে তাদের মনে এমনিতেই এক ধরনের বিষাদতৈরি হয়। আর এর মধ্যে অতি উৎসাহী, কৌতুহলী আত্মীয়স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীরা তাদের সামনে বাবা মায়ের বিচ্ছেদ নিয়ে আলোচনা বা নানা রকম প্রশ্ন করে বিব্রত করে থাকে। এ শিশুদের শৈশব অন্যদের মতো নয়। তারা আর কখনোই বাবা মাকে আগের মতো কাছে পাবে না। স্কুলের অভিভাবকদের মিটিং বা নিজের জন্মদিন , কোন উৎসবে, কোথাও বেড়াতে গেলে বাবা মা দুজনকেই আর একত্রে পাবে না। স্কুলেও অন্যান্য জায়গায় অন্য বাবা-মা- সন্তানসহ পরিবার দেখলেও তাদের খারাপ লাগতে পারে। স্কুলের শিক্ষকেরাও এ শিশুদের অন্যদের চেয়ে ভিন্ন নজরে দেখে থাকেন। আমরা বলি বটে, সকল শিশু সমান। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমরা নিজেরাই শিশুদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করছি নানা ভাবে।

যে সময়টাতে প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়ানোর কথা, সে সময়টাতে এ শিশুরা নিজেদের আবেগ অনুভূতি শামুকের মতো গুটিয়ে রাখতেই বরং পছন্দ করে। ফলে তাদেরকে বাবা মা কিংবা শিক্ষকেরা ঠিকমতো বুঝতে পারেন না। বাবা /মার অভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে পারে শিশু। অনেক ক্ষেত্রে বাবা /মায়ের আবার বিয়েও তারা স্বাভাবিকভাবে নিতে পারে না। সৎ বাবা/মা মমতাময় না হলে তাদের জীবন হয়, আরো দূর্বিষহ। অনেক ক্ষেত্রে বাবা/মায়ের আবার বিয়ের কারণে নতুন পরিবারেও তাদের ঠাঁই হয় না। তারা যেন “না ঘর কা না ঘাট কা”। শিশুর ভরনপোষণের দায়িত্ব যথাযথভাবে নেয়া না হলে, আর্থিককারণেও শিশুটি অন্যের কাছে ছোট হয়ে থাকে। অনেকটা আশ্রিতের মতো বড় হয় আত্মীয়দের বাড়িতে। ফলে নিজের ব্যক্তিত্ব সুন্দরভাবে গড়ে ওঠে না। মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্থ হয়।

বাবা/মায়ের বিচ্ছেদের ফলে সন্তান কার কাছে থাকবে, সে সিদ্ধান্ত অনেক সময় শিশু নিজে নিতে পারে না। বাবা কিংবা মায়ের প্রভাবে, আইনি কোন সিদ্ধান্তের কারণে নিজের অনিচ্ছাতেও সে কারো কাছে থাকতে পারে। অনেক সময় বাবা/মা সন্তানকে কুক্ষিগত করে রাখতে চান। সন্তানের কাছে বাবা/মায়ের কুৎসা করেন। এসবেরও বিরূপ প্রভাব শিশুর মনে পড়ে।

আমাদের রক্ষণশীল সমাজ ব্যবস্থায় ডিভোর্সকে অত্যন্ত নেতিবাচকভাবে দেখা হয়। ফলে এ ধরনের ভাঙ্গা পরিবারকে, ঐ পরিবারের শিশুদেরকে সমাজ স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করে না।  নেতিবাচক চিন্তাভাবনার কারণে অন্য অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদেরকে মানা করে দেন, যেন ভাঙ্গা পরিবারের শিশুদের সাথে না মেশে। ফলে ওদের সামাজিক দক্ষতাও বাধাগ্রস্থ হয়। পড়ালেখার পাশাপাশি ক্যারিয়ারেও পরবর্তীতে এর বাজে প্রভাব পড়তে পারে।  অথচ বাবা মায়ের বিচ্ছেদের জন্য এ শিশু দায়ী নয়।

বাবা/মায়ের মধ্যকার সুন্দর সম্পর্ক বা পারিবারিক কোন সুন্দর মুহূর্তের স্মৃতি শিশুটির মধ্যে সেভাবে না থাকায়, সে নিজেও পরবর্তীতে কোনো সম্পর্ক তৈরিতে দক্ষ হয় না। রোমান্টিক কোন সম্পর্কে এগিয়ে যেতে তার মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব থাকে। এমন কি হতাশা বা বিষন্নতা থেকে মাদকাসক্তও হয়ে পড়তে পারে। এ শিশুরা যেমন অবহেলিত তেমনি আবার কখনো কখনো অতিরিক্ত প্রশ্রয়ও পেয়ে থাকে। শিশুর অভিভাবক বা শুভাকাঙ্খীরা ভাবেন, ‘’আহা, বাচ্চাটার মা/বাবা কাছে নেই।‘’ ফলে শিশুর আচরণ বা কাজের ত্রুটি থাকলে সংশোধন করেন না। কিংবা মা/বাবার অভাব অনেক বেশি দামী উপহার/চকলেট দিয়ে পূরণ করতে চান। না চাইতেই সব আবদার মিটিয়ে ফেলা হয়।অতিরিক্ত প্রশ্রয়ের ফল যে ভালো হয় না, সে কথা নতুন করে বলার কিছু নেই।

আবার অবহেলিত শিশুদের সংকট আরেক ধরনের। এই শিশুরা বাবা/মায়ের থেকে দূরে থাকতে পারে, যোগাযোগ না থাকতে পারে। ফলে তারা বাবা/মায়ের যথেষ্ঠ আদর বা মনোযোগ সেভাবে পায় না।তারা ঐ মনোযোগটা তখন অন্য কারো কাছ থেকে পেতে চাইবে। স্নেহ ভালোবাসার একরকম কাঙাল হয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে সুযোগসন্ধানী ব্যক্তিরা তাদেরকে খুব সহজেই আদর/স্নেহের মাধ্যমে বশ করে ফেলতে পারে। এতে সে শিশু অনেক ধরনের ঝুঁকিতে পড়ে যেতে পারে। যৌন নিগৃহ থেকে শুরু করে কোন নির্দিষ্ট মতবাদের উগ্রচরমপন্থী দলে ভীরে যেতে পারে খুব সহজেই। এটা যে শুধু ভাঙ্গা পরিবারগুলোতেই হবে এমন নয়। যেসব পরিবারে সন্তানদের সাথে বাবা/মায়ের সম্পর্ক সহজ সুন্দর নয়, সেখানেই এসবের ঝুঁকি বেশি। আর ভাঙ্গা পরিবারের সন্তানদের মধ্যে এ ঝুঁকি আরো বেশি কারণ, এমন শিশু কিশোরেরা সাধারণত দুর্বল ব্যক্তিত্বের হয়ে থাকে। আত্মবিশ্বাস কম থাকে তাদের। হীনমন্যতাতেও ভুগতে পারে।

ডিভোর্স পরবর্তী সন্তানের এতো সমস্যার কথা চিন্তা করে অনেকেই দূর্বিষহ পারিবারিক একটি জীবন যাপন করে যাচ্ছেন। নামে মাত্র পারিবারিক জীবন। যাতে কোন প্রাণ নেই। সঙ্গত কারণেই মানুষ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। কারণ, জীবনটা তার। আর যখন বিচ্ছেদ হয়ে গেছে, জীবনের বাস্তবতাকে মেনে নিয়েই সামনে পথ চলতে হবে।  আর সামনে এগিয়ে চলাটা শুধু নিজে জানলেই চলবে না, সন্তানকেও বোঝাতে হবে। সততার সাথে তাকে বুঝিয়ে বলতে হবে, কেন এ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে বা হয়েছে। কিন্তু তাই বলে অপরপক্ষের দূর্নাম করা উচিত হবে না। বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তে সন্তান যেন নিজেকে অবহেলিত না ভাবে। সন্তানের বিভিন্ন বিষয়ের সিদ্ধান্ত প্রয়োজনে দুজনে মিলেই নিতে হবে। প্রসঙ্গত বলা যায়, দেশের জনপ্রিয় গায়ক তাহসান ও অভিনেত্রী মিথিলার কথা। তাদের আলোচিত বিচ্ছেদের পরে, সন্তান নিয়ে পরস্পরেরপ্রতিসহযোগিতাপূর্ণ ও শ্রদ্ধাশীল মনোভাবথেকে আমাদের সবারই শেখার আছে।

সন্তানকে অবশ্যই কোয়ালিটি সময় দিতে হবে। জীবনে অনেক খারাপ সময় যায় মানুষের। কিন্তু সন্তানের শৈশব আর ফিরে আসবে না। আপনার খারাপ সময় এক দিন কেটে যাবে। সব দুঃখ জয় করে আবার উঠে দাঁড়াবেন। কিন্তু তাই বলে সন্তানের শৈশব যেন হারিয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। চারপাশে কৌতুহলী আত্মীয়দের নানা রকম প্রশ্ন ঠেকিয়ে রাখা যাবে না। কিন্তু এদের মাঝেই কিভাবে নিজেকে ঠিক রেখে চলতে হয়, তা শিখে নিতে হয়।কখনো যদি আবার নতুন সম্পর্ক বা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেবার প্রয়োজন হয়, সন্তানের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেই এগোতে হবে।

আর উৎসাহী জনগণ হিসেবে আমাদেরকেও কৌতুহলের লাগাম টেনে ধরা শিখতে হবে। একটি পরিবার ভাঙার জন্য স্বামী স্ত্রী দায়ী হতে পারেন, কিন্তু তাদের সন্তান নয়। সুতরাং সে শিশুটিকে আপনার নিজের সন্তানের মতোই সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে দিন। তাকে শান্তিতে দম নিতে দিন। প্রতিটি শিশুর শৈশব হোক সুন্দর।