ঢাকা ০১:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব শেখ হাসিনার বিচার করা: শফিকুল আলম পুতুলকে ডব্লিউএইচও থেকে অপসারণে অনলাইনে স্বাক্ষর জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে জনসাধারণের অভিমত চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা শাপলা চত্বরে হেফাজত দমন : অপারেশন ফ্ল্যাশ আউট বেগম জিয়াকে হিংসা করতেন হাসিনা ভারতের নাগরিকত্ব নিয়েছেন শেখ হাসিনা? পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ছাত্রদের ঘোষণাপত্র দিতে বারণের কারণ জানালেন ড. ইউনূস  ঐক্যবদ্ধভাবে দিতে না পারলে জুলাই ঘোষণাপত্রের দরকারই নাই রেস্তোরাঁ, ওষুধ ও মোবাইল রিচার্জে বাড়ছে না ভ্যাট ধর্মনিরপেক্ষতাসহ রাষ্ট্র পরিচালনার ৩ মূলনীতি বাদ পদত্যাগপত্রে যা বললেন টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক আমার মেয়ের খুনি কে, আমি কি বিচার পাব না: প্রশ্ন তিন্নির বাবার জয়ের বিবাহ বিচ্ছেদ ৩ বছর আগে, জানালেন নিজেই গণহত্যায় জড়িতদের গুরুত্বপূর্ণ কল রেকর্ড হাতে পেয়েছে প্রসিকিউশন ৫ আগস্ট: বাংলাদেশ ও ভারতের সেনাপ্রধানের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল ক্রসফায়ারে নিহতদের ৪ জন ছিলেন ডিবি হেফাজতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর অদৃশ্য নিয়ন্ত্রক ছিলেন শেখ রেহানা শনিবার স্কুল খোলা নাকি বন্ধ? ‘জমজমের’ নামে ট্যাপের পানি বিক্রি, আয় ৩০ কোটি টাকা!

শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুতে ‘সুর নরম’ বাংলাদেশের

বিডি সারাদিন২৪ নিউজ
  • আপডেট সময় : ০৯:২১:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 51
আজকের সারাদিনের সর্বশেষ নিউজ পেতে ক্লিক করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

 

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা, দুর্নীতিসহ নানা আভিযোগে মামলা করা হয়। যেসব মামলায় শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে দেশে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা চালাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।

তবে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে এতদিন বেশ তোড়জোড় চালালেও এখন নাকি সুর নরম করেছে বাংলাদেশ; এমন দাবি ভারতীয় গণমাধ্যম টেলিগ্রাম ইন্ডিয়ার।

শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ ভারত উপেক্ষা করলে বাংলাদেশ কঠোর কোনো পদক্ষেপ নাও নিতে পারে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের মন্তব্যের পর টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এমন কথা বলা হয়েছে।

যেখানে বলা হয়, হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যে মন্তব্য করেছেন, তাতে বাংলাদেশের ‘নরম সুর’ ফুটে উঠেছে।

গত ৫ আগস্ট ভারতে আশ্রয় নেওয়া হাসিনাকে ফেরত না দিলে দুই দেশের সম্পর্কে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে—এমন প্রশ্নের জবাবে গতকাল বুধবার ঢাকায় তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি (শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ) আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি মাত্র বিষয়। আমাদের দুই দেশের মধ্যে অনেক দ্বিপক্ষীয় ইস্যু আছে।’

তৌহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, উভয় ইস্যুই সমানতালে চলতে পারে (এগিয়ে নেওয়া যেতে পারে)। আমাদের পারস্পরিক স্বার্থের অনেক ক্ষেত্র রয়েছে এবং আমরা এগুলো সমানতালে এগিয়ে নেব।’ তিনি এ সময় আরও বলেন, ‘২০২৫ সালে ভারতের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখা সরকারের অন্যতম শীর্ষ অগ্রাধিকার হবে।’

ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে ভারতের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো সাড়া না পাওয়া যায়, তাহলে বিষয়টি ভারতকে নতুন করে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিতে সরকারের ওপর চাপ তৈরি করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দলগুলো।

উল্লেখ্য, এই ছাত্র আন্দোলনই শেখ হাসিনার সরকারের পতনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। ফলে এই ইস্যুতে তাদের চাপকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই।

তবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের এই মন্তব্যের গুরুত্ব আছে। কারণ, তার এই মন্তব্য শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুতে ঢাকার পক্ষ থেকে একটি বাস্তবধর্মী ও কৌশলগত অবস্থান তুলে ধরে। যদিও ইউনূস সরকারকে ক্ষমতায় আনতে সহায়ক ভূমিকা পালনকারী বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের একটি অংশ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতের সাবেক এক কূটনীতিক বলেন, ‘এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি বিষয়, যা কেবল দেশীয় রাজনীতির জন্যই নয়; বরং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) অত্যন্ত কুশলতার সঙ্গে বিষয়টি সামলাচ্ছে এবং এটিকে এমন কোনো বড় ইস্যুতে পরিণত করছে না, যা বুমেরাং হতে পারে।’

ভারতীয় এক কৌশলগত বিশ্লেষক নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, ‘ভারত যে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করতে বাধ্য নয়, তা অন্তর্বর্তী সরকার জানে। তাই তারা ইস্যুটিকে অযথা বড় করতে চাইছে না। কারণ, এটি করলে তাদের ধর্মীয় কট্টরপন্থীদের সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। আর হাসিনার প্রত্যর্পণ বাস্তবে সম্ভব নয়—এমনটা যখন স্পষ্ট হয়ে ওঠে, তখন তা আরও কঠিন।’

বাংলাদেশ বর্তমানে সরবরাহ-সংকটের কারণে মূল্যস্ফীতি চাপের মধ্যে আছে। এমন প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুতে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। উল্লেখ্য, খাদ্যদ্রব্যসহ গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের আমদানির জন্য বাংলাদেশ ভারতের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে ভারতকে পাঠানো ‘নোট ভারবাল’ মূলত সরকারের কট্টরপন্থী সমর্থকদের আপাতত শান্ত রাখার একটি কৌশল। (নোট ভারবাল মূলত, কোনো একটি বিষয়ে ত্বরিত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কোনো একটি দেশকে দেওয়া অপর দেশের সংক্ষিপ্ত কূটনৈতিক বার্তা।)

তৌহিদ হোসেনের মন্তব্য থেকে স্পষ্ট যে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক অবস্থান আরও বাস্তবসম্মত হয়ে উঠছে। এর আগে আরেকটি ঘটনা থেকে এই বাস্তবতার প্রমাণ পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘গত মঙ্গলবার অধ্যাপক ইউনূস প্রোটোকল ভেঙে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে যান। তিনি সেখানে মনমোহন সিংয়ের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং শোকবার্তা লিখে আসেন। এটি ভারতের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব প্রকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।’

তবে নয়াদিল্লির এক কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ঢাকার এই পদক্ষেপ এবং বক্তব্য উৎসাহব্যঞ্জক মনে হলেও, ইউনূস সরকারের প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে এখনই সিদ্ধান্তে আসা ঠিক হবে না। এ বিষয়ে ভারতীয় ওই কৌশলগত বিশ্লেষক বলেন, ‘তারা এখনো আমাদের প্রধান উদ্বেগগুলো—যেমন সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সন্ত্রাসবাদীদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে আনা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা অপেক্ষা করব এবং দেখব, তারা এসব ইস্যু কীভাবে মোকাবিলা করে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুতে ‘সুর নরম’ বাংলাদেশের

আপডেট সময় : ০৯:২১:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৫

 

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা, দুর্নীতিসহ নানা আভিযোগে মামলা করা হয়। যেসব মামলায় শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে দেশে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা চালাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।

তবে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে এতদিন বেশ তোড়জোড় চালালেও এখন নাকি সুর নরম করেছে বাংলাদেশ; এমন দাবি ভারতীয় গণমাধ্যম টেলিগ্রাম ইন্ডিয়ার।

শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ ভারত উপেক্ষা করলে বাংলাদেশ কঠোর কোনো পদক্ষেপ নাও নিতে পারে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের মন্তব্যের পর টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এমন কথা বলা হয়েছে।

যেখানে বলা হয়, হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যে মন্তব্য করেছেন, তাতে বাংলাদেশের ‘নরম সুর’ ফুটে উঠেছে।

গত ৫ আগস্ট ভারতে আশ্রয় নেওয়া হাসিনাকে ফেরত না দিলে দুই দেশের সম্পর্কে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে—এমন প্রশ্নের জবাবে গতকাল বুধবার ঢাকায় তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি (শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ) আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি মাত্র বিষয়। আমাদের দুই দেশের মধ্যে অনেক দ্বিপক্ষীয় ইস্যু আছে।’

তৌহিদ হোসেন আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, উভয় ইস্যুই সমানতালে চলতে পারে (এগিয়ে নেওয়া যেতে পারে)। আমাদের পারস্পরিক স্বার্থের অনেক ক্ষেত্র রয়েছে এবং আমরা এগুলো সমানতালে এগিয়ে নেব।’ তিনি এ সময় আরও বলেন, ‘২০২৫ সালে ভারতের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখা সরকারের অন্যতম শীর্ষ অগ্রাধিকার হবে।’

ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে ভারতের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনো সাড়া না পাওয়া যায়, তাহলে বিষয়টি ভারতকে নতুন করে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিতে সরকারের ওপর চাপ তৈরি করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দলগুলো।

উল্লেখ্য, এই ছাত্র আন্দোলনই শেখ হাসিনার সরকারের পতনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। ফলে এই ইস্যুতে তাদের চাপকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই।

তবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের এই মন্তব্যের গুরুত্ব আছে। কারণ, তার এই মন্তব্য শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুতে ঢাকার পক্ষ থেকে একটি বাস্তবধর্মী ও কৌশলগত অবস্থান তুলে ধরে। যদিও ইউনূস সরকারকে ক্ষমতায় আনতে সহায়ক ভূমিকা পালনকারী বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের একটি অংশ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতের সাবেক এক কূটনীতিক বলেন, ‘এটি অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি বিষয়, যা কেবল দেশীয় রাজনীতির জন্যই নয়; বরং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) অত্যন্ত কুশলতার সঙ্গে বিষয়টি সামলাচ্ছে এবং এটিকে এমন কোনো বড় ইস্যুতে পরিণত করছে না, যা বুমেরাং হতে পারে।’

ভারতীয় এক কৌশলগত বিশ্লেষক নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, ‘ভারত যে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করতে বাধ্য নয়, তা অন্তর্বর্তী সরকার জানে। তাই তারা ইস্যুটিকে অযথা বড় করতে চাইছে না। কারণ, এটি করলে তাদের ধর্মীয় কট্টরপন্থীদের সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। আর হাসিনার প্রত্যর্পণ বাস্তবে সম্ভব নয়—এমনটা যখন স্পষ্ট হয়ে ওঠে, তখন তা আরও কঠিন।’

বাংলাদেশ বর্তমানে সরবরাহ-সংকটের কারণে মূল্যস্ফীতি চাপের মধ্যে আছে। এমন প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুতে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। উল্লেখ্য, খাদ্যদ্রব্যসহ গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের আমদানির জন্য বাংলাদেশ ভারতের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে ভারতকে পাঠানো ‘নোট ভারবাল’ মূলত সরকারের কট্টরপন্থী সমর্থকদের আপাতত শান্ত রাখার একটি কৌশল। (নোট ভারবাল মূলত, কোনো একটি বিষয়ে ত্বরিত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কোনো একটি দেশকে দেওয়া অপর দেশের সংক্ষিপ্ত কূটনৈতিক বার্তা।)

তৌহিদ হোসেনের মন্তব্য থেকে স্পষ্ট যে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ ইস্যুতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক অবস্থান আরও বাস্তবসম্মত হয়ে উঠছে। এর আগে আরেকটি ঘটনা থেকে এই বাস্তবতার প্রমাণ পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘গত মঙ্গলবার অধ্যাপক ইউনূস প্রোটোকল ভেঙে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে যান। তিনি সেখানে মনমোহন সিংয়ের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং শোকবার্তা লিখে আসেন। এটি ভারতের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব প্রকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।’

তবে নয়াদিল্লির এক কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ঢাকার এই পদক্ষেপ এবং বক্তব্য উৎসাহব্যঞ্জক মনে হলেও, ইউনূস সরকারের প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে এখনই সিদ্ধান্তে আসা ঠিক হবে না। এ বিষয়ে ভারতীয় ওই কৌশলগত বিশ্লেষক বলেন, ‘তারা এখনো আমাদের প্রধান উদ্বেগগুলো—যেমন সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সন্ত্রাসবাদীদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে আনা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা অপেক্ষা করব এবং দেখব, তারা এসব ইস্যু কীভাবে মোকাবিলা করে।’